পটুয়াখালীর বাউফলে যৌন নির্যাতনে এক মাদ্রাসাছাত্রের (১৩) মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
তবে ওই ছাত্রের বাবার ভাষ্য, যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে তার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় মাদ্রাসা পরিচালকের বিচার দাবি করেছেন তিনি।
নিহত শিক্ষার্থী নাজিরপুর তাঁতেরকাঠি ইউনিয়নের বড় ডালিমা মদিনাতুল উলুম কওমিয়া হাফেজিয়া নূরানি কিন্ডারগার্টেন মাদ্রাসা ও এতিমখানার হেফজ বিভাগের ছাত্র ছিল।
ছেলেটির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে অভিযুক্ত সেলিম গাজী মাদ্রাসা বন্ধ করে পালিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ছেলেটির পরিবারের ভাষ্য, ভর্তির পরই তাকে বিভিন্ন কৌশলে যৌন নির্যাতন করত মাদ্রাসার পরিচালক হাফেজ সেলিম গাজী। দুই সপ্তাহ আগে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দিয়ে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ছেলেটির বাবা বলেন, তার ছেলে মৃত্যুর আগে তাকে জানায়, ‘হাফেজ সেলিম গাজী ভর্তির পর থেকেই খুব আদর করত তাকে। পরে পরিচালক তার সঙ্গে রেখে প্রায় প্রতিদিনই তাকে যৌন নির্যাতন করত।’ এ বিষয়ে কাউকে কিছু বলতে নিষেধ করে ছেলেকে হত্যার ভয়ভীতি দেখায়। ছেলে বাড়িতে আসতে চাইলে সেলিম তাকে নিয়ে আসত। মা-বাবা ও দাদার সঙ্গে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে আবার সঙ্গে করে নিয়ে আসত। তিনি বলেন, ‘আমরা সরল বিশ্বাসে ছেলেকে হাফেজ তৈরি করার জন্য দিয়েছি। কিন্তু পশুটা মোর বাবাকে মেরে ফেলেছে।’ এর বিচার চাই বলে কেঁদে ফেলেন তিনি।
এ বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত সেলিম গাজীর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। তবে ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিচুল হক বলেন, বিষয়টি জেনে থানায় জিডি করে লাশ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ পটুয়াখালীর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে মাদ্রাসা পরিচালক সেলিম প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে পালিয়েছে বলে জানান ওসি।