The Hamas video showed the surviving American and Israeli hostages in Gaza

গাজায় দুই জিম্মিকে নিয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। উপত্যকাটিতে এখনো যে এ দুই জিম্মি বেঁচে আছেন, ভিডিওতে দেখা যাওয়া দৃশ্য তার প্রথম প্রমাণ।

এ ভিডিওর দৃশ্য কবে ধারণ করা হয়েছে, সেটি উল্লেখ নেই। ভিডিওতে ওমরি মিরান নামের একজন জিম্মিকে বলতে শোনা যায়, তিনি ২০২ দিন ধরে আটক হয়ে আছেন। অপর জিম্মি কিথ সিগেল এ সপ্তাহের পাসওভার উৎসবের ছুটির কথা বলেছেন। এতে এ ভিডিও সম্প্রতি ধারণ করা হয়েছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালানোর দিন অন্য জিম্মিদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের এ দুই নাগরিককেও গাজায় ধরে নিয়ে যান হামাস যোদ্ধারা।
এর আগে গত বুধবার জিম্মি থাকা ইসরায়েলি-আমেরিকান তরুণ হার্শ গোল্ডবার্গ-পোলিনের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে হামাস। ইসরায়েলে হামাসের হামলার দিন গুরুতর আহত হয়েছিলেন তিনি।

নতুন ভিডিও প্রকাশিত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় দুই জিম্মির পরিবার বলেছে, তাঁদের ফিরে পাওয়ার লড়াই চালিয়ে যাবেন তাঁরা। সেই সঙ্গে তাঁরা ইসরায়েল সরকারের প্রতি নতুন জিম্মিমুক্তি চুক্তি করারও অনুরোধ জানান।

নতুন এ ভিডিও এমন এক সময় প্রকাশিত হলো, যখন হামাস বলেছে, তারা যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরায়েলের সাম্প্রতিকতম প্রস্তাব খতিয়ে দেখছে। গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, এ নিয়ে সমঝোতা আলোচনায় গতি আনতে ইসরায়েলে প্রতিনিধি পাঠিয়েছে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টার মধ্যস্থতাকারী মিসর।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গতকাল শনিবার বলেছেন, গাজায় থাকা অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তির বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে এ ধরনের চুক্তি সই হলে ইসরায়েল দক্ষিণ গাজার রাফায় তার পরিকল্পিত স্থল অভিযান বন্ধ করতে পারে।

মার্কিন নাগরিক কিথ সিগেলকে তাঁর স্ত্রী আভিভাসহ জিম্মি করেছিল হামাস। পরে ইসরায়েলের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতির আওতায় আভিভাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

এক ভিডিও বার্তায় কিথের স্ত্রী বলেন, ‘কিথ, আমি তোমাকে ভালোবাসি। তুমি ফিরে না আসা পর্যন্ত আমরা লড়াই চালিয়ে যাব।’

এদিকে জিম্মিদের মুক্তিতে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় তেল আবিবে অনুষ্ঠিত সাপ্তাহিক বিক্ষোভে ইসরায়েলি জিম্মি ওমরি মিরানের বাবা ড্যানি মিরানও অংশ নেন। স্লোগানে নেতৃত্ব দেন তিনি। দেন আবেগপূর্ণ বক্তৃতাও।

প্রকাশিত ভিডিওতে কিথ সিগেল (৬৪) ও ওমরি মিরান (৪৬) দুজনই হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে উপনীত হয়ে জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য ইসরায়েল সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

ভিডিওতে ওমরি মিরান বলেন, ‘এখানকার পরিস্থিতি অস্বস্তিকর, কঠিন। এখানে রয়েছে অনেক বোমা।’

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আলোচনা চলার পরও ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা হয়নি। তবে সিগেল ও মিরানসহ অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্ত করতে দুপক্ষের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা অব্যাহত আছে।

অবশিষ্ট জিম্মিদের মধ্যে ৪০ জনকে মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠায় আগের একটি প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে হামাস।

হামাস এর আগে জোর দিয়ে বলেছে, নতুন কোনো চুক্তি করতে হলে তাতে স্থায়ীভাবে যুদ্ধের সমাপ্তি, গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের পুরোপুরি প্রত্যাহার ও বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের নিজ গৃহে নির্বিঘ্নে ফেরার বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আর গাজায় হামাসকে নির্মূল ও জিম্মিদের মুক্ত করার ওপর জোর দিয়েছে ইসরায়েল।

গত নভেম্বরে ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তির আওতায় ১০৫ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস। তাঁদের বেশির ভাগ ছিলেন নারী ও শিশু। বিনিময়ে দুপক্ষের মধ্যে এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা হয় এবং ইসরায়েলের কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দীদের মধ্যে ২৪০ জনকে মুক্তি দেয় দেশটির কর্তৃপক্ষ।

গাজায় এখনো ১৩৩ জনের মতো জিম্মি আছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ধারণা করা হয়, তাঁদের মধ্যে ৩০ জনের মতো মারা গিয়ে থাকতে পারেন।

Related Posts

en_USEnglish