রামগঞ্জে অবৈধভাবে মুক্তিযোদ্ধা গেজেটে নাম অন্তর্ভূক্ত করার অভিযোগ সুলতান মাহমুদের বিরুদ্ধে

image_pdfimage_print

আবু তাহের, রামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ না করেও সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা থাকার সুবাদে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায় সাবেক কর কমিশনার সুলতান মাহমুদ ক্ষমতার অপব্যবহার করে মুক্তিযোদ্ধা গেজেটে নিজের নাম অন্তর্ভূক্ত করার অভিযোগ উঠেছে।

এবিষয়টি ৯সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) স্থানীয় রামগঞ্জ উপজেলা বিভিন্ন মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে এসংবাদ ছড়িয়ে পড়লে উপজেলাব্যাপী সর্ব মহলে চরম ক্ষোভ এবং নানান সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয় একাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধাগন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়,জামুকা,লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক, রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর সাবেক কর কমিশনার সুলতান মাহমুদের মুক্তিযোদ্ধা গেজেট বাতিল চেয়ে আবেদন করেছেন। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয় এবং লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক ১৪ আগষ্ট ২০২২ইং এক স্বারক পত্রে  উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাচাই কমিটিকে তার মুক্তিযুদ্ধের সকল বিষয় যাচাই বাচাই করে দ্রুত রিপোর্ট পেশ করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন।

সূত্রে জানাযায়, তালিকাভূক্ত বীর মুক্তিযুদ্ধা তোসাদ্দেক হোসেন ও আবদুর রব গত ২ আগষ্ট ২০২২ইং সাবেক করকমিশনার সুলতান মাহমুদের মুক্তিযুদ্ধের গেজেট বাতিল চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক ও জামুকা বরাবর আবেদন। তারা অভিযোগে উল্লেখ করেন স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তাদের প্রত্যেকের সাথে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে একে অপরের সাথে চেনাজানা রয়েছে। কিন্তু সুলতান মাহমুদ তখন নোয়াখালীর মাইজদীতে অবস্থান করেছেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে নাই এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতাও করে নাই।

তারপরও সে দেশের সর্বচ্চ করকর্মকর্তা কর কমিশার থাকার সুবাদে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে নিজের নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকার গেজেট নং ৫৪ এ অন্তর্ভূক্ত করে নেয়। যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য তোসাদ্দেক হোসেন মানিক মাল বলেন, আমরা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছি, মুক্তিযুদ্ধ আমাদের চেতনা,স্বাধীনতার লাল-সবুজের পতাকা আমরা ছিনিয়ে এনেছি অনেক ত্যাগের মধ্য দিয়ে,এই স্বাধীন বাংলার ৫৬ হাজার বর্গমাইলের কেথাও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভুলুন্ঠিত করতে দেয়া হবেনা। সুলতান মাহমুদ মুক্তিযুদ্ধ করেননি,মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে অনৈতিকভাবে টাকার বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন। রামগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার আকম রুহুল আমিন বলেন, সুলতান মাহমুদ কোথায় যুদ্ধ করেছে তাহা আমার জানা নেই। যুদ্ধ চলাকালীন ডিপুটি কমান্ডার আবুল হোসেন সুফি বলেল,যুদ্ধের সময় আমি রামগঞ্জ- চাটখীল এলাকার সকল ক্যাম্প এবং গ্রুপের সাথে সার্বক্ষিক যোগাযোগ ও নির্দেশা দিয়েছি। কিন্তু সুলতান মাহমুদ কোথায়ও ছিলো না। অভিযুক্ত সাবেক করকমিশনার সুলতান মাহমুদ দেশের বাহিরে থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয় নি।

যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে হাবিবা মীরা বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশ মোতাবেক সুলতান মাহমুদ প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধা কিনা তা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনারের নেতৃত্বে তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

Related Posts

en_USEnglish