বেতাগির ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

image_pdfimage_print

মইনুল আবেদীন খান-
মোটা টাকার বিনিময়ে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার মিথ্যা ও বানোয়াট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার অভিযোগে বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী এক নারী। সোমবার বিকেল ৪টায় বরগুনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

বেতাগী উপজেলার বুড়ামজুমদার ইউনিয়নের বলইবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শাহ আলম হাওলাদারের কন্যা মোসা: রেকসনা আক্তার লিখিত বক্তব্য বলেন, খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার শিয়ালডাঙ্গী গ্রামের আতাউর রহমান প্রিন্সের সাথে ২০০৫ সালে প্রথম স্ত্রীর তথ্য গোপন করে বিয়ে হয়। বিয়ের পরপরই শারীরিক-মানসিক ওয়ার্থিক নানা প্রকার অত্যাচার ও নির্যাতন চলতে থাকে। এ বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। আমার স্বামী আতাউর রহমান প্রিন্সের বিরুদ্ধে যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা দায়ের করলেন আদালত বুড়ামজুমদার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নিকট তদন্তের দায়িত্ব দেন। তদন্ত প্রাপ্ত চেয়ারম্যান সৈয়দ আব্দুর রব আসামিদের সাথে যোগসাজসে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নারী শিশু নির্যাতন মামলা নং ৪০৭/২০২২ মোকদ্দমায় তদন্ত মিথ্যা ও বানোয়াট প্রতিবেদন দাখিল করেন।

ভুক্তভোগী রেকসনা আক্তার বলেন, আমি যখন তাদের বাড়িতে যাই তার দুইদিন পরে রেজিস্ট্রি করে কাজী অফিসের মাধ্যমে আমার স্বামী তালাকের নোটিশ পাঠায় চেয়ারম্যান বরাবরে। চেয়ারম্যান কারসাজি করে একমাস চাপিয়ে রাখে। আমি যাতে সহজে তালাকনামা হাতে না পাই সেকারণে কারসাজি করে ঠিকানায় ৫ নং বুড়ামজুমদার ইউনিয়নের পরিবর্তে ৮ নং বুড়ামজুমদার ইউনিয়ন লিখে। যার ফলে আমি আমার তালাকনামা হাতে পাইনি। আমি চেয়ারম্যান মহোদয়ের কাছে চেয়েছি, সে আমার হাতে দেয়নি। পরে আমি কোর্ট থেকে তালাকনামা উঠিয়ে নিয়েছি।
বেতাগী উপজেলার বুড়ামজুমদার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ আব্দুল রবের স্বেচ্ছাচারিতার বিবরণ দিয়ে ভুক্তভোগী রেকসনা আক্তার আরো বলেন, আমার যথেষ্ট সাক্ষী, মেডিকেল সার্টিফিকেট, কল রেকর্ড, সাউন্ড রেকর্ড, অঙ্গীকারনামাসহ আরো অনেক সঠিক তথ্য প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও চেয়ারম্যান আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করে। তিনি আরো বলেন, চেয়ারম্যান আমার কাছে ৩০ হাজার টাকা চেয়েছিল। আমি সম্পূর্ণ টাকা দিতে পারি নাই। আমি মাত্র চার হাজার টাকা দিয়েছিলাম। বাকি টাকা না দিতে পারা এবং আমাদের পাড়া-প্রতিবেশীর সাথে একখণ্ড জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল যা মামলা পর্যন্ত গড়ায়। সেই মামলা চেয়ারম্যান উঠিয়ে নিতে বলেছিল। মামলা না উঠানোর কারণে চেয়ারম্যান আমার প্রতি বিষোদগার হয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।

৫নং বুড়ামজুমদার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ গোলাম রবের মিথ্যা প্রতিবেদন এবং তার অবৈধ ও দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ এবং সুষ্ঠু বিচার ও ন্যায়সংগত তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আবেদন জানিয়েছেন রেকসনা আক্তার।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী রেকসনা আক্তারের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শাহ আলম হাওলাদার ও শিশু কন্যা আশিকা।

এ ব্যাপারে রেকসনা আক্তারের স্বামী আতাউর রহমান প্রিন্সের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ও একসময় আমার স্ত্রী ছিল। এখন আর সে আমার স্ত্রী নাই।

বুড়ামজুমদার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ গোলাম রব বলেন, আমি জেনে শুনেই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছি। প্রতিবেদন যার বিপক্ষে যাবে সে তো আমাকে দোষারোপ করবে, এটাই স্বাভাবিক।

Related Posts

en_USEnglish