বিশ্বের ১’শ প্রভাবশালী জলবায়ু যোদ্ধার তালিকায় দুই বাংলাদেশী

জুনাইদ আল হাবিব-

জলবায়ু সংকট নিয়ে ভাবেন এবং সংকট উত্তরণে কাজ করেন, বিশ্বব্যাপী এমন ১০০ প্রভাবশালী ক্লাইমেট ইনফ্রুয়েন্সারের তালিকায় স্থান পেয়েছে দুই বাংলাদেশির নাম। এদের একজন ব্রিটিশ বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ড. সালিমুল হক এবং অন্যজন উপকূল সাংবাদিকতা নিয়ে বিশ্বব্যাপি কাজ করা বাংলাদেশী সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম মন্টু।

এই তালিকায় রয়েছে জাতিসংঘের বর্তমান মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, বার্বাডোসের প্রধানমন্ত্রী মিয়া মটলে, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ইয়াং ক্লাইমেট একটিভিস্ট গ্রেটা থুনবার্গ, সহ আরো অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নাম।
শুক্রবার (৪ নভেম্বর) রাতে তালিকাটি প্রকাশ করে বৃটেনের অলাভজনক সংস্থা ‘এপলিটিক্যাল ফাউন্ডেশন’। এ বছর ৬ থেকে ১৮ নভেম্বর মিশরের শার্ম আল-শেখে অনুষ্ঠিতব্য ২৭তম জাতিসংঘ জলবাযু সম্মেলন (কপ২৭ বা কনফারেন্স অব পার্টিজ) সামনে রেখে তালিকাটি প্রকাশ করা হয়েছে।

তালিকাটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশের আগে শুক্রবার রাতে সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম মন্টু তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে বলে এপলিটিক্যাল ফাউন্ডেশন ই-মেইল পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

তালিকা প্রকাশকারী সংস্থা এপলিটিক্যাল ফাউন্ডেশন থেকে ড. সালিমুল হকের অবদান প্রসঙ্গে বলা হয়, ড. সালিমুল হক ‘বাংলাদেশ সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেইঞ্জ এন্ড ডেভলপমেন্ট’-এর পরিচালক। তিনি বৈশ্বিক জলবায়ু প্রশমন এবং অভিযোজন নিয়ে শক্ত ভূমিকার জন্য সুপরিচিত। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তঃসরকার প্যানেলের প্রধান লেখক। তিনি মহাকাশ নিয়ে অসংখ্য প্রতিবেদন এবং নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন এবং বার্টনি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তার কাজ জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজন বিজ্ঞানে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি দেয়।
রফিকুল ইসলাম মন্টুর অবদান প্রসঙ্গে তালিকা প্রকাশকারী সংস্থা বলেছে, উপকূলীয় জলবায়ু সাংবাদিকতা এবং ফটোগ্রাফির জন্য বিশ্ব ব্যাপী সুপরিচিত বাংলাদেশী সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম মন্টু। তিনি বাংলাদেশের ডুবে যাওয়া উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর উপর জলবায়ু পরিবর্তনের উদ্ভাসিত প্রভাব নথিভুক্ত করার জন্য নিখুঁত, অবিচ্ছিন্ন লিখে যাচ্ছেন এবং ফটোগ্রাফি করছেন। তার কাজ কপ-২৬ এ জলবায়ু অভিযোজনের জন্য জরুরী যোগাযোগের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল।

যে সকল সংস্থা, গোষ্ঠী এবং ব্যক্তি নিজ উদ্যোগে জলবায়ু সমাধান খুঁজে বের করেছে এবং বাস্তবায়নে কঠোর পরিশ্রম করেছে তাদের তালিকা করা হয়েছে। এ তালিকাটি গ্রিন ফাইন্যান্স থেকে আদিবাসী ভূমি সক্রিয়তা পর্যন্ত, এই তালিকাটি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সংগ্রামে সাফল্য অর্জনকারী ব্যক্তিদের কে উৎসাহিত করবে।
সংস্থাটি বলেছে, প্রত্যেক দেশের সরকার জলবায়ু কর্মের অগ্রভাগে রয়েছে। কিন্ত এ তালিকা প্রকাশের লক্ষ্য জলবায়ু নীতিনির্ধারকদের প্রোফাইল বাড়ানো। এই তালিকাটি গ্লোবাল সাউথ এবং তৃণমূল প্রচারাভিযানের কণ্ঠস্বর সহ জলবায়ু কর্মের নায়কদের উপরও দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।
কপ-২৭ হল জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত জাতিসংঘ ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের (ইউএনএফসিসি) কনফারেন্স অব দ্য পার্টির ২৭তম সভা। এই বার্ষিক সভাটি বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহনের উদ্দেশে আলোচনায় বসতে ইউএনএফসিসি কনভেনশনের ১৯৮ জন সদস্যকে একত্রিত করে থাকে।
বৈঠকে, বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিবেশগত প্রভাবগুলির সাথে অভিযোজন, জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার থেকে সরে আসা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের সাথে মানিয়ে নিতে আরো দুর্যোগ সহনশীল হবার ক্ষেত্রে সম্ভাব্য সহায়তার পথ চিহ্নিত করার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়ে থাকে।

Related Posts

en_USEnglish