বাড়ছে সরকারি খরচে আইনি সেবায় আগ্রহ

image_pdfimage_print

আইনি সহায়তা পাওয়া মানুষের মৌলিক অধিকার। সেই লক্ষে সরকার সামর্থ্যহীন ও অস্বচ্ছল মানুষকে নিজ খরচে আইনি সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।

সরকারের এই উদ্যোগ সম্পর্কে আগে মানুষের মধ্যে তেমন জানাশোনা না থাকলেও দিন দিন তা বাড়ছে। সরকারি খরচে আইনি সহায়তা নেওয়া মানুষের পরিসংখ্যান দেখলে সেটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার  সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সাড়ে ১৩ বছরে সরকারি খরচে সারাদেশে আইনি সহায়তা পেয়েছেন প্রায় আট লাখ মানুষ। একই সময়ে মামলার রায়ের আগেই বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের প্রায় ৯৯ কোটি ৬৭ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ টাকা আদায় করে দেওয়া হয়েছে।

পরিসংখ্যানে বলা হয়, এই সময়ে আইনি পরামর্শ পেয়েছেন তিন লাখ ১৮ হাজার ৬০৫ জন। তিন লাখ ২৮ হাজার ৫৮৩টি মামলায় সহায়তা করা হয়েছে। আর এসব মামলার মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে এক লাখ ৫৭ হাজার ৬২৪টি। মামলার রায়ের আগেই উভয় পক্ষের মধ্যে বিকল্পবিরোধ নিষ্পত্তির মাধ্যমে সেবা দেওয়া হয়েছে ৬৪ হাজার ১৪০টি মামলা।

এডিআরের মাধ্যমে উপকার পেয়েছেন এক লাখ ১২ হাজার ৩১৮ জন। হটলাইনের মাধ্যমে সেবা দেওয়া হয়েছে ১৭ হাজার ৩২৮ জনকে।

এই প্রতিবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে পাঠানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমবার সরকারে থাকাকালে আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায়সম্বলহীন এবং নানাবিধ আর্থসামাজিক কারণে বিচার পেতে অসমর্থ বিচারপ্রার্থী জনগণকে সরকারি খরচে আইনগত সহায়তা প্রদান করার উদ্যোগ নেন। সেই লক্ষ্যে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০’ প্রণয়ন করে দেন এবং জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা প্রতিষ্ঠা করে সরকারি আইনগত সহায়তা প্রদান কার্যক্রমকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেন।

তবে ২০০১ সালে সরকার পরিবর্তনের পর এই আইনের বাস্তবায়ন কার্যক্রম স্তিমিত হয়ে যায়। এরপর ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয়বার সরকার গঠন করলে আইনি সহায়তা কার্যক্রমকে গতিশীল ও সেবাবান্ধব করার লক্ষ্যে ঢাকার বেইলি রোডে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার প্রধান কার্যালয় স্থাপন করা হয় এবং এর অধীনে প্রত্যেক জেলায় লিগ্যাল এইড অফিস স্থাপনসহ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, চৌকি আদালত এবং শ্রম আদালতে লিগ্যাল এইডের কার্যক্রম চালু করা হয়।
বর্তমানে দেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে, এমনকি সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টেও লিগ্যাল এইড কমিটি গঠন করে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা আইনি সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম স্বপ্ন ছিল সবার জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার ও সুবিচার নিশ্চিত করা। সে লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ২০০০ সালে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান আইন প্রণয়ন করে। এ আইনের আওতায় জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থাও প্রতিষ্ঠা করা হয়। সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে এই সেবা পৌঁছে দিতে সরকার কাজ করছে।

Related Posts

en_USEnglish