লক্ষ্মীপুরে নামাযের সময় দোকানপাট বন্ধ, পৌর মেয়রের মহতী উদ্যোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক :
‘নামাজ বেহেস্তর চাবি’-নামাজ আদায়ে প্রত্যেক ধর্মাবলম্বী মুলমানদের উৎসাহিত করতে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব আবু তাহের নিয়েছেন এক মহতী উদ্যোগ। প্রতি ওয়াক্ত নামাজের সময় লক্ষ্মীপুর শহরের (হিন্দু মুসলিমসহ) সকল ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন। এতে লক্ষ্মীপুরের বণিক সমিতি, মুসলমান ব্যবসায়ীর পাশাপাশি হিন্দু ব্যবসায়ীরাও একমত পোষণ করেন। সোমবার দুপুরে যোহরের আযানের সাথে সাথে শহরের ব্যবসায়ীরা তাদের দোকনপাট বন্ধ করে দলে দলে মসজিদগামী হতে দেখা গেছে। এতে মসজিদ গুলোতে মুসল্লিদের ঢল নামে। এদিকে এমন ঘোষণায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীরাও নামাজের সময় তাদের দোকান বন্ধ রাখতে দেখা গেছে।
কয়েকজন মুসলমান ব্যবসায়ী জানান, লক্ষ্মীপুর শহরের বাজার গুলোতে নামাজের সময় দোকানপাট খোলা থাকলে দোকানী নিজেও অনেক সময় নামাজ আদায় করতে পারে না। তাই মেয়রের এমন মহতী সিদ্ধান্ত ভালোই হয়েছে। এতে ক্রেতা-বিক্রেতার মাঝে নামাজ আদায়ের আগ্রহ বাড়বে। তাছাড়া নামাজের সময় বাজারে আগত মহিলাদের জন্য লক্ষ্মীপুর চক বাজার জামে মসজিদের নিচ তলায় নামাজ আদায়ের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। যাতে কোন মহিলা নামাজের সময় বাড়ি ফেরত যেতে না হয়।
হিন্দু ব্যবসায়ী লিটন মজুমদার জানান, মুসলমানদের নামাজ চলাকালিন সময়ে আমরা কোন মুসল্লিকে দোকানে প্রবেশ করতে দেবো না। ওই সময় সাময়িক সময়ের জন্য দোকান বন্ধ রাখবে হিন্দুরা।
এদিকে জোহর ও আছরের নামাজের সময় পৌর শহরের বিভিন্ন স্থানের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ থাকতে দেখা যায়। তবে শহরের আজিম শাহ্ মাকের্ট এলাকায় কিছু দোকানপাট খোলা ছিলো। অপর দিকে লক্ষ্মীপুর পৌর মেয়র আবু তাহেরের এমন সিদ্ধান্তে লক্ষ্মীপুর বণিক সমিতি, ব্যবসায়ী, পৌর এলাকার মুসল্লি, সুশীল সমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ সাধুবাদ জানিয়েছেন।
লক্ষ্মীপুর আজিশ শাহ মার্কেটের ব্যবসায়ী তৌহিদুল ইসলাম শীর্ষ সংবাদকে বলেন, পৌর মেয়রের এমন সিদ্ধান্তে আমরা ব্যবসায়ীরা অনেক খুশি। তবে আমাদের মার্কেটে পাশাপাশি দুইটি মসজিদ। দুই মসজিদে নামাজ আদায়ের সময়ও ভিন্ন। ফলে একটি মসজিদে নামাজের সময় অন্য মসজিদের আশেপাশে কয়েকটি দোকান খোলা থাকে, এতে নিয়মের কিছুটা বিঘ্ন ঘটে।
লক্ষ্মীপুর বণিক সমিতির সভাপতি একেএম সালাহ্ উদ্দিন টিপু বলেন, মেয়রের এমন সিদ্ধান্তকে বণিক সমিতি স্বাগত জানিয়েছে। নামায আদায়ে উৎসাহিত করতে বণিক সমিতির পক্ষ থেকে বাজার এলাকায় ক্যাম্পিং করা হবে। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এতে সহযোগীতা করবেন বলে তিনি জানান।
লক্ষ্মীপুর পৌর মেয়র আবু তাহের জানান, নামাজের সময় সকল ধরনের দোকানপাট বন্ধ রাখতে শহরের ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করা হয়েছে। এমনকি মাইকিংও করা হয়েছে। আশাকরি মুসল্লি ক্রেতা-বিক্রেতারা মসজিদে এসে জামাতের সাথে নামাজ আদায় করবে।