Actor fainted while riding horse, taken to hospital

বলিউড অভিনেতা রণদীপ হুদা শুটিং করতে গিয়ে আহত হয়েছেন।  ‘বীর সভারকার’ ছবির দৃশ্যে অভিনয় করতে ঘটে বিপদ! ছবিটির একটি দৃশ্যে রণদীপকে ঘোড়ায় চড়ে শট দিতে হবে। সেটা করতে গিয়েই ঘোড়া থেকে পড়ে যান অভিনেতা। 

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, ঘোড়ায় চড়ার সময় হঠাৎ করেই অজ্ঞান হয়ে পড়েন রণদীপ। এই অবস্থায় নীচে পরে যান। আঘাত লেগেছে অভিনেতার। যথেষ্ট চোট লেগেছে তার। মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। 

রণদীপের বন্ধুর বরাতে গণমাধ্যমটি আরও জানায়, ঘোড়া থেকে পড়ে  হাঁটু এবং পায়ে চোট লেগেছে তার। হাঁটু ভেঙে গিয়েছে। 

বীর সভারকাদের  চরিত্রের জন্য ডায়েট প্ল্যান বদলেছিল তাঁর। যথেষ্ট রোগাও হয়ে গিয়েছিলেন। খাবার দাবারের পরিবর্তনকেও চিকিৎসকরা দায়ী করছেন। তবে, তার এই রোগা হওয়ার প্রচেষ্টা এই প্রথম নয়। এর আগেও সর্বজিত ছবিতে  রোগা হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। 




হাবিবি’র পর আসছে ফারিয়ার নতুন গান, ফেব্রুয়ারিতে শুটিং

মডেল ও অভিনেত্রী পরিচয়ের পাশাপাশি কণ্ঠশিল্পী হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেছেন নুসরাত ফারিয়া। সেই সুবাদে এবার শুরু করেছেন নতুন একক গানের আয়োজন। এরই মধ্যে নতুন গানের রেকর্ডিং শেষ করেছেন তিনি। মিউজিক ভিডিও নির্মাণের প্রস্তুতিও নিয়ে ফেলেছেন।

আগামী ৪ ও ৫ ফেব্রুয়ারি নতুন গানের ভিডিওর দৃশ্যধারণ করবেন বলে ফারিয়া জানান। তবে গানের শিরোনাম, গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালকের তথ্য পুরোপুরি গোপন রেখেছেন। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘দর্শক-শ্রোতাদের সারপ্রাইজ দিতেই আপাতত নতুন গানের শিরোনাম, গীতিকার, সুরকার ও সংগীতায়োজকের বিষয়টি গোপন রাখছি। কারণ, এখনই সব বলে দিলে চমক থাকবে না। শুধু এটুকু বলে রাখি, এবারের গানে সংগীতপ্রেমীরা নতুন এক নুসরাত ফারিয়ার দেখা পাবেন।’

মিউজিক ভিডিও নির্মাণ শেষ হওয়ার পর গান কবে কোন প্ল্যাটফর্মে প্রকাশ পাবে- তা চূড়ান্ত করা হবে বলেও তিনি জানান। ২০১৮ সালে নুসরাত ফারিয়া কণ্ঠশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তাঁর প্রথম গানের শিরোনাম ছিল ‘পটাকা’। এরপর ২০২০ সালে তিনি প্রকাশ করেন দ্বিতীয় একক গান ‘আমি চাই থাকতে’। সবশেষ গত বছর প্রকাশ পেয়েছিল তাঁর একক গান ‘হাবিবি’। গানটি দর্শক-শ্রোতার মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছিল।




Biden's 'top secret' document on talks

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাবেক ব্যক্তিগত অফিস ও বাড়ি থেকে গোপনীয় সরকারি নথি উদ্ধারের ঘটনা পুরোনো। তবে উদ্ধার হওয়া নথিগুলোর মধ্যে কিছু ছিল ‘অতিগোপনীয়’, যা পুরো দেশে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এ ঘটনা তদন্তে একজন সরকারি কৌঁসুলিকে দায়িত্ব দিয়েছে দেশটির বিচার বিভাগ। বিবিসির খবর।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিবিএসের বরাত দিয়ে খবরে বলা হচ্ছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বাইডেন। গোপন নথিগুলো সেই সময়ের। আইন অনুযায়ী, চাকরি শেষ হলে কেন্দ্রীয় সরকারে দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তিদের স্বেচ্ছায় দাপ্তরিক নথি ও গোপন দলিলপত্র জমা দিতে হয়। তবে বাইডেন তা জমা দেননি।

বাইডেনের অফিস ও বাসা থেকে প্রায় ২০টি নথি উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে অফিসে পাওয়া ১০টি নথির মধ্যে ছিল ‘অতিগোপনীয়’ নথি। তাঁর ডেলাওয়ারের বাসায়ও ১০টির মতো নথি পাওয়া গেছে। বলা হচ্ছে, অতিগোপনীয় নথিগুলো কোনোভাবে ফাঁস হয়ে গেলে ‘ভয়াবহ ক্ষতি’ হতে পারত।

নথিগুলো উদ্ধারের খবর প্রথম গণমাধ্যমে আসে গত সোমবার। গত নভেম্বরে ওয়াশিংটনে বাইডেনের সাবেক প্রতিষ্ঠান ‘পেন বাইডেন সেন্টার’-এর অফিস থেকে নথিগুলো উদ্ধার হয়।

নথি উদ্ধারের বিষয়ে বাইডেন বলেন, তিনি গোপন নথি ও জিনিসপত্র উদ্ধারের ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন এবং বিষয়টি নিয়ে বিচার বিভাগকে পূর্ণ সহযোগিতা দিচ্ছেন। 




Son B in subscription to that mass education minister: to

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী তার ছেলের বিয়ে উপলক্ষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদা তুলেছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন ছেলের বিয়ের মধ্যে ১৬৪ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদা তুলে সেই টাকা দিয়ে শিক্ষকদেরকে ফ্রিজ, টেলিভিশন গিফট দিতে বাধ্য করেছেন এবং সেই সঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখতেও বাধ্য করেছেন তিনি।’

তিনি বলেন, ‘এরা (আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা) এমন একটা পর্যায়ে চলে গেছে। আর তারা বলে শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়েছে। তারা বলে একটা করে আরেকটা। আওয়ামী লীগের হাত দুইদিকে থাকে কাউকে ভয় দেখাতে হলে ঘাড়ে চেপে ধরে আর বিপদে পড়লে পা চেপে ধরে।’

শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের উদ্যোগে বিএনপির চেয়াপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ আটক সকল দলীয় নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর কঠোর সমালোচনা করে আলাল বলেন, ‘শেখ হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে জামায়াত ও জাতীয় পার্টিকে সঙ্গে নিয়ে ১৩ মাস আগে সংসদ থেকে পদত্যাগ করেছিল। বাংলাদেশের অর্থনীতির লাইফ লাইন চট্টগ্রাম বন্দর বন্ধ করে দিয়েছিল। হরতাল ডেকে জনগণকে দুর্ভোগে ফেলেছিল। আজ সেই শেখ হাসিনাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করেছে এবং উল্টাপাল্টা কথা বলছেন।’

তিনি বলেন, ‘তাদের (আওয়ামী লীগ) ভালো হবে না এটা বলছি না। ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়ানোর কথা ছিল এখন ৭০ টাকা কেজি। এটা ভালো লক্ষণ না। ঘরে ঘরে চাকরি দেওয়ার কথা বলেছিল। তারা ঘরে ঘরে মামলা দিয়েছে। আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী জেলে। বিনামূল্যে সার দেওয়ার কথা বলেছিল, সারের দাম শতগুণ বেড়েছে। কৃষকরা তাদের ফসলের ন্যায্যমূল্য পায় না। বাসা বাড়ি থেকে যে ময়লা দেওয়া হয় সেখান থেকেও তারা ট্যাক্স নেয়। রাস্তাঘাটে ভিক্ষুকরা ভিক্ষা করে তাদের কাছ থেকেও চাঁদা নেয় ছাত্রলীগ।’

এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন খান, ওমর ফারুকসহ ঢাকা উত্তর দক্ষিণ মৎস্যজীবী দলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।




North, south-west increase in the winter of that

প্রবাদ আছে ‘মাঘের শীতে বাঘ পালায়’। কয়েক বছর ধরেই এমন শীতের আশায় ছিল মানুষ; কিন্তু দেখা মিলছিল না। শীত কেন নেই- এই প্রশ্নই কেবল ঘুরপাক খেয়েছে মনে। তবে এবার তাঁরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন ওই প্রবাদের মর্মার্থ।

আজ রোববার মাঘের শুরু হলেও এবার সেই মাঘের শীত শুরু হয়েছে পৌষ মাসের শুরু থেকে। টানা এক মাস পেরিয়ে গেলেও বিরতি দিচ্ছে না কনকনে শীত। দেশের বেশিরভাগ এলাকায় বইছে টানা শৈত্যপ্রবাহ। কয়েকটি জেলায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি জনজীবন আরও কাবু করে তুলেছে। পৌষের শীত পার হলেও কয়েক দিনের মধ্যে ‘মাঘের শীত’ জেঁকে বসবে আবার। তবে উত্তরাঞ্চলসহ গ্রামীণ জনপদ শীতে কাঁপলেও ঢাকাবাসী আর এ মৌসুমে হাড়কাঁপানো শীতের দেখা পাবে না।

গতকাল শনিবার পঞ্চগড়ের তেঁতুুলিয়ায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এ মৌসুমে সারাদেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। ঢাকায় গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে গত বৃহস্পতিবার মৌসুমের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল চুয়াডাঙ্গায়। গত ৬৮ বছরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায়। ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। সে বছর তাপমাত্রা ছিল ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

গতকাল দেশের আটটি জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় তাপমাত্রা কিছুটা বাড়বে এবং অনেক জেলায় তা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে চলে আসতে পারে। সোম ও মঙ্গলবার আবারও তাপমাত্রা কমে যেতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ বলেন, ‘ভারত থেকে পশ্চিমা মেঘের প্রভাবে আজ রোববার তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ১৬ ও ১৭ জানুয়ারি ভারতে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। তার প্রভাবে আমাদের এখানেও তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সময় বিক্ষিপ্তভাবে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে বৃষ্টিপাতের ক্ষীণ সম্ভাবনা রয়েছে। বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকলে ঢাকাতেও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, এই সময় তাপমাত্রা আরও কমে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে।’

কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, গতকাল বৃষ্টির সম্ভাবনা কেটে গেছে। দেশের মধ্যাঞ্চলের ভূ-পৃষ্ঠে কুয়াশার যে প্রভাব রয়েছিল তা কেটে উঠতে পারেনি ঊর্ধ্বাকাশে থাকা মেঘ। বঙ্গোপসাগর থেকে খুবই অল্প পরিমাণ জলীয়বাষ্প বাংলাদেশের স্থলভাগে প্রবেশ করছে। আজ সকালে নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জ জেলার সীমান্তসংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে। তিনি বলেন, ১৮ থেকে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত আবারও এক সপ্তাহের জন্য দেশব্যাপী কুয়াশা ও মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

ঢাকায় শীতের অনুভূতি কম থাকবে :রাজধানী ঢাকায় গত ৫ থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ছিল ঘন কুয়শার সঙ্গে হাড়কাঁপানো শীত। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০-এর নিচে না নামলেও সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য ছিল মাত্র ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানীতে গত ৭ জানুয়ারি চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ওই সময় উত্তুরে হাওয়ার কারণে ঢাকায় এবার শীতের অনুভূতি ছিল বেশি। ঢাকায় সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৭ জানুয়ারি তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামে। অর্থাৎ শৈত্যপ্রবাহ অনুভূত হয়।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান জানান, এ মৌসুমেও ঢাকায় শৈত্যপ্রবাহ আসার কোনো সম্ভাবনা নেই। আগামী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আরও কয়েকটি শৈত্যপ্রবাহ চললেও ঢাকা তার ছোঁয়া পাবে না। তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামবে না।

কাঁপছে পঞ্চগড় :গতকাল সারাদেশে তাপমাত্রা দুই থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়লেও পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। সকালে সূর্য উঁকি দিলেও সঙ্গে ছিল উত্তরের হাড়কাঁপানো হিমেল হাওয়া। এতে নিম্ন আয়ের মানুষ, কৃষি শ্রমিক, দিনমজুররা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। শীত এবং হিমশীতল বাতাসের কারণে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বের হননি।




The past returned to the past in the chat of the former

‘পুরানো সেই দিনের কথা, ভুলবি কিরে হায়…আয়রে সখা প্রাণের মাঝে আয়/ মোরা সুখের দুখের কথা কব, প্রাণ জুড়াবে তায়’। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত গানের আবেদনে আজ শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ চত্বরে বিভাগের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের সম্মিলন ঘটে। আড্ডায়, গল্পে তারা মেতে ওঠেন স্মৃতিচারণে, অতীত রোমন্থনে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভিদ বিজ্ঞান অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন (ডুবা) এ আয়োজন করে।

শীতের সকালে কুয়াশা কাটতে না কাটতে সকাল আটটা থেকে বিভাগ চত্বর মুখর হয়ে ওঠে প্রাক্তন গ্র্যাজুয়েটদের পদচারণায়। ১০টায় শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, সম্মানিত অতিথি হিসেবে ছিলেন সংসদ সদস্য ও বিভাগের সাবেক ছাত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, বিশেষ অতিথি ছিলেন হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান শিক্ষা ও গবেষণার গুণগতমান বৃদ্ধিতে বিভাগে মৌলিক ও প্রায়োগিক গবেষণা পরিচালনার লক্ষ্যে একটি করে গবেষণা ফান্ড প্রতিষ্ঠার জন্য অ্যালামনাইদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় যেমন সমৃদ্ধ হবে তেমনি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশের মর্যাদা আরও বৃদ্ধি পাবে।

হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ বলেন, আজ থেকে একশ বছর আগে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয় তখন প্রায় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী মফস্বল থেকে আসত। পাট, ধান বিক্রি করে বাবারা খরচ জোগাতেন। আজকেও পরিসংখ্যান তেমন বদলায়নি। মফস্বল থেকে শিক্ষার্থীরা প্রথম বর্ষে যখন ভর্তি হয়, তারা কিছুই জানে না। তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব।

তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমরা পাঁচ ভাই, চার বোন। যদি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হতো তাহলে আমার বাবা কিন্তু আমাদের পড়াতে পারতেন না। আমার বাবার সেই সক্ষমতা ছিল না। তাহলে আমারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া হতো না। অনেকে এখান থেকে অনার্স, মাস্টার্স পাস করে বিদেশে যাচ্ছে, প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। আমি বিভাগের চেয়ারম্যান-শিক্ষকদের আহ্বান করব, তাদের একটি ডাটাবেজ থাকবে, তাদের সঙ্গে যেন যোগাযোগ রাখা হয়। শিক্ষার্থীদের কাউন্সিলিং করতে হবে। তাদের বুঝাতে হবে সাধারণ মানুষের ট্যাক্সের টাকায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি দিয়েছে, সেই দায়িত্ববোধ থেকে সাবেকরা যদি পাশে এসে দাঁড়ায় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভূত উন্নয়ন সাধিত হবে।

এ সময় তিনি বিভাগের চেয়ারম্যানকে সাবেক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংযুক্ত থাকা এবং বিভাগের কাজে তাদের যুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগে ১০ লাখ টাকা প্রদান করেন।

মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, উন্নত বিশ্বে সাবেকদের অবদানে বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। আমাদেরও এ বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গবেষণা ও উদ্ভাবনে ভূমিকা রাখতে হবে।

বিভাগ থেকে ১৯৯৫ সালে পাস করেছিলেন গোলাম ফারুক। বর্তমানে তিনি দিনাজপুর জেলার শিক্ষা অফিসার পদে রয়েছেন। অনুভূতি ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে অনেক স্মৃতি। বন্ধুবান্ধবসহ একবার সুন্দরবন গিয়েছিলাম। এখনও মনে আছে। এখন সবাই ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় আছি। তাদের সবার সঙ্গে দেখা হলো, আড্ডা দিলাম। এ জন্যই এতদূর থেকে এলাম।

অনুষ্ঠানে বিভাগের সাবেক অধ্যাপক এ জেড এম নওশের আলী খান ও অধ্যাপক সৈয়দ হাদীউজ্জামান, ঢাকা আইডিয়াল কলেজের সাবেক অধ্যাপক এম এ বারী, দুর্নীতি দমক কমিশনের সচিব মো. মাহবুব হোসেনকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।

এ ছাড়া বিভাগের ২০১৯ সালে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ফলাফল অর্জন করায় শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌসীকে ড. মো. আতহার উদ্দিন স্বর্ণপদক এবং বিভাগের ৪৩ জন শিক্ষার্থীকে এককালীন বৃত্তি প্রদান করা হয়।

উদ্ভিদবিজ্ঞান অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আতহার উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা এবং সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আসফাক আহমদ।

এ ছাড়া শনিবার মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন এবং আরবী বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভা ও পুনর্মিলনী পৃথক পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত হয়।




The lowest temperature of the season is in Tetuliya, the life of the people is disrupted by the continuous cold current

পঞ্চগড়ে বইছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। এর মধ্যে আজ শনিবার সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এ মৌসুমে সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার মৌসুমের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল চুয়াডাঙ্গায়।

আজ সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৫ শতাংশ। এর আগে ৫ জানুয়ারি থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত পঞ্চগড়ে টানা চার দিন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। ৯ জানুয়ারি তাপমাত্রা আরও কমে শুরু হয় মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। এর পর থেকে আজ শনিবার পর্যন্ত তেঁতুলিয়ায় দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি থেকে ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করেছে। তবে প্রায় প্রতিদিনই সকাল সকাল রোদের দেখা মিলেছে।

আজ মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার দিনে সকালে সূর্য উঁকি দিয়েছে। তবে সঙ্গে ছিল উত্তরের হাড়কাঁপানো হিমেল হাওয়া। শীত উপেক্ষা করেই গরু নিয়ে হালচাষে নেমেছেন পঞ্চগড় সদর উপজেলার ডুডুমারী এলাকার কৃষক কবির হোসেন (৫৮)। আজ সকাল ৯টার দিকে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। শীতের প্রসঙ্গ তুলতেই কবির হোসেন বলেন, ‘রাতিত যে ঠান্ডা ছিল, ওইখান ঠান্ডা এলা (এখন) থাকিলে কাজ করা কঠিন হয়ে গেল হয় বাপু। ভাগ্য ভাল সকালে রোদ উঠিচে, কাজ-কাম করা যাছে, কিন্তু মাটির ঠান্ডায় পাওলা (পা) পটপট করেছে। কষ্ট হলে কী করিবেন! হামরা কৃষক মানসি (মানুষ), কাজ তো করিবায় নাগিবে।’

তীব্র এই শীতে কবির হোসেনের মতো নিম্ন আয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন। উত্তরের হিমেল বাতাসের সঙ্গে কুয়াশার দাপটে জবুথবু হয়ে পড়েছে জনজীবন। সকাল পৌনে ১০টার দিকে রিকশাচালক মো. নুরনবী বলেন, ‘প্রত্যেক দিন বিকাল হইলে যে একখান ঠান্ডা বাতাস আচ্চে, ওই বাতাসে খুব ঠান্ডা হচ্চে। বেশি রাইত পর্যন্ত রিকশা চালা যায় না। এইতানে (এ জন্য) সকালে রোদ দেখে বাইর হইচু। বিকাল হইতে হইতে বাড়ি যাবা নাগিবে (লাগবে)।’

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ প্রথম আলোকে বলেন, তেঁতুলিয়ায় বর্তমানে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাত পর্যন্ত শীত কিছুটা কম অনুভূত হয়েছিল। তবে আজ ভোর থেকেই হঠাৎ তাপমাত্রা কমতে থাকে। তবে সকাল সকাল রোদ ওঠায় মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে। আকাশ মেঘ ও কুয়াশামুক্ত থাকায় সূর্যের তাপ ভূপৃষ্ঠে ছড়াতে পারছে। এতে শৈত্যপ্রবাহ থাকলেও শীত তুলনামূলক কম অনুভূত হচ্ছে।




Human chain to prevent water pollution of Brahmaputra river

দখল-দূষণে দেশের বেশিরভাগ নদী স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য হারিয়েছে অনেক আগেই। বর্তমানে নদী দখলের মাত্রা এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে, অনেক নদী মরা খালে পরিণত হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলার ব্রামন্দী ইউনিয়নের উৎরাপুর গ্রামের পাশে বয়ে চলা ব্রহ্মপুত্র নদের পানিরও একই দশা। এই নদের পানি ও পরিবেশ দূষণ রোধে মানববন্ধন হয়েছে।

শনিবার ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে যৌথ উদ্যোগে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), রিভারাইন পিপল, সুবর্ণগ্রাম ফাউন্ডেশন, উৎরাপুর আদর্শ সমাজকল্যাণ সংঘ এবং পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ রক্ষা আন্দোলন।

মানববন্ধনে বক্তারা দাবি জানান, শিল্পকারখানার রাসায়নিক পদার্থের সামান্য অংশও যাতে খাদ্যচক্রে প্রবেশ করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। এ অবস্থায় ব্রহ্মপুত্র নদ দূষণ রোধে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। সারাদেশের শিল্পকারখানায় এসব ক্ষেত্রে বিদ্যমান অনিয়মগুলো খুঁজে বের করতে দেরি হলে দেশের বিভিন্ন নদীর বিস্তীর্ণ এলাকায় দূষণ ছড়িয়ে পড়বে। ব্রহ্মপুত্রসহ দেশের সব নদীর স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য ফিরিয়ে আনতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

উৎরাপুর আদর্শ সমাজকল্যাণ সংঘের সভাপতি মো. নাদিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মো. হামিদুল্লাহ সরকার। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং পবার নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক কবি ও মানবাধিকার কর্মী শাহেদ কায়েস, রিভারাইন পিপল-এর সোনারগাঁ শাখার কার্যনির্বাহী সদস্য লেখক শংকর প্রকাশ, গোলাম রাব্বানী শিমুল, উৎরাপুর আদর্শ সমাজকল্যাণ সংঘের সহসভাপতি মো. আলী আশরাফ, মো. ওমর ফারুক লিটন, মোহাম্মদ জোনায়েদ, নাহিদ সরকার, সজিব মিয়া, হাজী মো. সিরাজুল ইসলাম খোকন, মমতাজউদ্দিন মিয়া, মাহবুবুর রহমান শোয়েব প্রমুখ।




শাহরুখের ছবির অগ্রিম টিকিট কেটে নিচ্ছেন ৫০ হাজার ভক্ত!

তিন বছর পর বড় পর্দায় আসছেন শাহরুখ খান। তার আগেই যেনো গা জ্বালা ধরিয়েছেন সমালোচকদের। ‘পাঠান’ ছবির ‘বেশরম রং’ গানটি মুক্তির পর তুমুল সমালোচনার মুখে পড়ে। এর মাঝে সিনেমাটির ট্রেলার মুক্তির ঘোষণা দেয়া হয়। এরপর আসে ট্রেলার। । আগামী ২৫ জানুয়ারি মুক্তি পাচ্ছে ছবিটি। দিনটির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন শাহরুখ ভক্তরা।

এদিকে জানা গেছে, ২৫ জানুয়ারি ‘পাঠান’ মুক্তির প্রথম দিন শাহরুখের ফ্যান ক্লাব ‘এসআরকে ইউনিভার্স’ বিশেষ আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে। শাহরুখের সিনেমা মুক্তি পাওয়ার দিনটা ভক্তদের কাছে উৎসবের মতো। তাই ‘এসআরকে ইউনিভার্স’ ভারতে জুড়ে ৫০ হাজার ভক্তদের জন্য ফার্স্ট ডে ফার্স্ট শো-র আয়োজন করবে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম পিংকভিলাকে ফ্যানক্লাব এসআরকে ইউনিভার্সের সহ-প্রতিষ্ঠাতা যশ পারিয়ানি নিশ্চিত করেছেন যে, তারা ভারতের ২০০টিরও বেশি শহরে পাঠানের শো-র আয়োজন করবে। শুধুমাত্র এই শো থেকেই ন্যূনতম ১ কোটি টাকার বুকিং আশা করা হচ্ছে। যেখানে মুম্বাইতে প্রথমদিনে ৭ থেকে ৮টি ফার্স্ট ডে ফার্স্ট শো-র আয়োজন করা হয়েছে, দিল্লিতে হবে ৬টি। একইভাবে, অন্যান্য শহরেও একাধিক শো’র আয়োজন করা হচ্ছে।

তবে এই উদযাপন শুধুমাত্র প্রথম দিনেই হবে না, চলবে প্রজাতন্ত্র দিবস পর্যন্ত। যশ পারিয়ানি আরও জানান, ‘আমরা পাঠানের জন্য বিশেষ সামগ্রীও বিতরণ করব। বিশেষ কাট আউট আর ঢোল। আমার ধারণা, শাহরুখের সিনেমাগুলোকে উৎসবের মতো উদযাপন করা হয়। পাঠানের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হবে না।




Rahul's journey hints at a post-Modi India

ভারতের স্বাধীনতার নায়ক মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর সুস্পষ্ট অনুকরণে দেশটির প্রধান বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী বর্তমানে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে চলমান পদচারণার শেষ পর্যায়ে আছেন। সমালোচক ও সংশয়বাদীদের উপেক্ষা করে তাঁর কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটারেরও বেশি হেঁটে অতিক্রমের এ যাত্রা স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক না থাকলেও রাজনৈতিক প্রতিবাদ ও জনসমাবেশের দিক থেকে সফল হয়েছে। তিন মাস ধরে ভারত জোড়ো যাত্রা বা ভারতের ঐক্যের জন্য এ পদযাত্রা সচেতন মানুষদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ সৃষ্টি করেছে।

পদযাত্রাটি মঙ্গলবার রাতে উত্তরের পাঞ্জাব রাজ্যে প্রবেশ করেছে। এ পথেই এটি তার সমাপ্তি টানতে ভারত শাসিত কাশ্মীরের উচ্চশিখরে পৌঁছবে। এত দীর্ঘ পথ চলতে গিয়ে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের মুখ রাহুল বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রকে একটি নতুন রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি উপহার দিচ্ছেন; প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) রাজনৈতিক হিন্দুত্ববাদ বা হিন্দুত্বের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পথরেখাও তৈরি হচ্ছে এ পদযাত্রায়।

যাত্রা শব্দটি ভারতে সাধারণত হিন্দু তীর্থযাত্রা বোঝাতে ব্যবহূত হয়। তবে রাহুলের এ যাত্রার লক্ষ্য রাজনৈতিক মুক্তি। এটি কংগ্রেস দলকে পুনরুজ্জীবিত করেছে, যাঁকে ধারাবাহিক নির্বাচনী পরাজয় এক দশক ধরে প্রায় স্থবির করে রেখেছিল। বিজেপি যাঁকে বরাবর অপেশাদার রাজনীতিবিদ হিসেবে আখ্যায়িত শুধু নয়, নির্দয় উপহাসও করে আসছে; সেই রাহুল আজ গণআবেদনধারী একজন নেতা হিসেবে আবির্ভূত।

আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি এবং সবার জন্য সমৃদ্ধির একটি সহজ বার্তা নিয়ে চলমান এ মহাকাব্যিক পদযাত্রার মূল মনোযোগ হলো সাধারণ মানুষের সঙ্গে জঙ্গমক্রিয়ার ওপর। প্রতিদিন প্রতিটি যাত্রাবিরতিতে রাহুলের সহকারীরা তাঁদের নেতার সঙ্গে কৃষক ও শ্রমিক, যুবক ও বৃদ্ধ, পুরুষ ও নারী, এমনকি শিশুদের সঙ্গেও মোদি সরকারের অধীনে তাদের ছিন্নভিন্ন স্বপ্ন সম্পর্কে যে কথোপকথন হয়, তা নথিবদ্ধ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। এগুলো ভারতীয় অর্থনীতির জীবন্ত বাস্তবতার খণ্ড খণ্ড চিত্র তুলে ধরে; যেখানে উচ্চ বেকারত্ব ও মুদ্রাস্ম্ফীতির কথা উঠে আসে। যে সরকারের আমলে এটা ঘটছে, সে প্রতিশ্রুতিতে চ্যাম্পিয়ন হলেও তার বাস্তবায়নে খুবই দুর্বল।

রাহুল গান্ধীর বার্তা হলো- মোদির প্রবল হিন্দুত্ব ভারতের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সম্ভাবনাকে দুর্বল করে দিচ্ছে। এসব বার্তার পাশাপাশি দাড়িওয়ালা বিরোধী নেতার সঙ্গে মানুষের আলিঙ্গন ও সেলফির জন্য হুড়াহুড়ি রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের পাশাপাশি মিডিয়াতেও নতুন এক ল্যান্ডস্কেপ তৈরি করেছে, যা এতদিন ছিল মোদির একচেটিয়া দখলে। আট বছর আগে ক্ষমতায় আরোহণের পর এই প্রথম মোদি এক ধরনের নীরবতা পালন করছেন। রাহুলের ভারত জোড়ো যাত্রা নিয়ে কিছুই বলছেন না তিনি।

রাজনৈতিক এ বার্তা প্রকৃতপক্ষে বহুসংস্কৃতি বা ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি এবং হিন্দু আধিপত্যবাদী নীতির মধ্যে সংঘর্ষের কথা বলছে। কিন্তু এটি স্পষ্ট- এ পদযাত্রা সেই যুদ্ধের কাঠামো তৈরি করে দিয়েছে; যার এক প্রান্তে আছেন একজন, যিনি ভারতীয়দের চাঙ্গা করছেন এবং অপর প্রান্তে আছেন তিনি, যিনি তাঁদের বিভক্ত করছেন।

মোদি ও বিজেপি দীর্ঘকাল ধরে ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করে আসছে; যে ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির কার্যত প্রতিনিধি গান্ধী পরিবার। ওদের বক্তব্য হলো, গান্ধী পরিবার ভারতকে দুর্নীতিগ্রস্ত ও ক্ষয়িষুষ্ণ করে দিয়েছে এবং এর মাধ্যমে দেশটিকে বিশ্বব্যবস্থায় তার যোগ্য স্থান থেকে বঞ্চিত করেছে। রাহুল গান্ধীর প্রমাতামহ জওহরলাল নেহরু, দাদি ইন্দিরা গান্ধী এবং বাবা রাজীব গান্ধী- সবাই ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

এসব জপেই মোদি ২০১৪ ও ‘১৯ সালের নির্বাচনে বিশাল ম্যান্ডেট পেয়ে যান এবং বিদ্যমান ব্যবস্থার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গি যুক্ত রাজনৈতিক অভিজাতদের বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভকে ব্যবহার করে তাঁর সহিংস হিন্দুত্বকে আড়ালের সুযোগ তৈরি করেন। মোদি নিজেকে একজন শক্তিশালী কিন্তু জনতুষ্টিবাদী হিসেবে তুলে ধরেছেন, যিনি এই তথাকথিত প্রাচীন শাসনের বিরুদ্ধে উঠে এসেছেন। বর্তমানে আইন থেকে রাজনৈতিক বক্তৃতাবাজি- সবখানেই মোদি ভারতের জন্য একটি আগ্রাসী ‘হিন্দু প্রথম’ এজেন্ডা মূর্ত করে চলেছেন। নাগরিকত্বে ধর্মীয় বৈষম্য প্রবর্তনকারী প্রস্তাবিত আইন থেকে শুরু করে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নিয়মিত সহিংসতা- সবখানে মোদির এজেন্ডা হলো, ভারতকে ঢেলে সাজিয়ে একটি মাত্র সংস্কৃতির উন্নয়ন ঘটানো।

৫২ বছর বয়সী রাহুল গান্ধী দীর্ঘদিন ধরে একটি রাজবংশের চতুর্থ প্রজন্ম হিসেবে নিন্দিত হয়েছেন। তবুও বিশেষত তাঁর পারিবারিক ইতিহাসের কারণে ক্ষমতা ও সহিংসতা সম্পর্কে রাহুলেরই দীর্ঘ ও নিবিড় জ্ঞান রয়েছে। তাঁর দাদি ও বাবা দু’জনকেই হত্যা করা হয়। রাজনৈতিক পদ-পদবি ও ক্ষমতার ফাঁদ এড়িয়ে জনগণের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক স্থাপনে তিনি নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। তিনি বুঝতে পেরেছেন, মোদির শক্তিশালী কৌশলগুলো সফলভাবে মোকাবিলা তখনই করা যাবে যখন এসব অপকৌশলের ভুক্তভোগী মানুষ একসঙ্গে দাঁড়াবে এবং হিন্দুত্বের বিরুদ্ধে সামান্যতম সমালোচকদেরও- যাঁরা এ হিন্দুত্বের কারণে জনজীবন বিপন্ন হয়ে পড়ছে বলে মনে করেন; এক ছাতার নিচে আনা যাবে।

মোদি কর্তৃত্ব ও জনতুষ্টিবাদের মাধ্যমে তাঁর রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রকাশ করে চলেছেন। অন্যদিকে রাহুল জনগণের সঙ্গে একটি সহানুভূতিশীল সংযোগ তৈরি করতে চাচ্ছেন। ভারতের বিভিন্ন অংশের মানুষের মধ্যে একটি আনুভূমিক মৈত্রীর সন্ধানরত এ যাত্রার বার্তা হলো- নির্ভীকতার রাজনীতিকে শক্তিশালীকরণ। এটি করার মাধ্যমে যাত্রা স্বাধীন ভারতের ভিত্তি বলে পরিচিত বৈচিত্র্য ও ন্যায্যতার নীতিগুলোকে পুনঃআবিস্কার করতে চায়। লক্ষণীয়, এ যাত্রা সহিংসতা এবং পরিচয়ভিত্তিক রাজনীতির প্রভাবশালী আখ্যানকে ভোঁতা এবং মোকাবিলা করার জন্য প্রেম, মৈত্রী ও ত্যাগের মতো আবেগধর্ম এক সহজ রাজনৈতিক চিত্রনাট্যের ওপর জোর দিয়েছে।

প্রায় এক শতক আগে জাতির পিতা গান্ধীর বিখ্যাত লবণ যাত্রা (সল্ট মার্চ) ব্রিটিশ সাম্রাজ্য এবং ভারতীয় রাজনৈতিক অভিজাতদের একইভাবে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। কারণ তিনি রাজনৈতিক পদ-পদবি ও ক্ষমতা পরিত্যাগ করেছিলেন, কিন্তু সাধারণ ভারতীয়দের সাহসী আশায় আলোকিত করেছিলেন। তিনি রাজনীতির রূপান্তর এবং রাজনৈতিক সম্পর্কের নতুন সংজ্ঞা খুঁজছিলেন। নিঃসন্দেহে তিনি তাতে সফল হয়েছিলেন।

দুই গান্ধীর মধ্যে তুলনা করা হলে তা নিশ্চয়ই হাস্যকর ও বোকামি হবে। আজকের প্রতিযোগিতা কোনো বিদেশি সাম্রাজ্যিক শক্তিকে উৎখাত করা নিয়ে নয়। এটি ভারতের ভবিষ্যৎ পরিচয় সম্পর্কে সম্পূর্ণ অভ্যন্তরীণ ও নিবিড় পছন্দ-অপছন্দের বিষয়।

কিন্তু মোদি ও বিজেপির দেখানো পথের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি পথ দেখানোর মাধ্যমে ভারত জোড়ো যাত্রা ২০২৪ সালের নির্বাচনী যুদ্ধে লড়ার একটি মোক্ষম কৌশল পেতে সাহায্য করেছে। প্রায় এক দশক ধরে মোদি ও হিন্দুত্ব দ্বারা আচ্ছন্ন থাকার পর ভারতীয় গণতন্ত্র শেষ পর্যন্ত আদর্শ, আবেগ ও ব্যক্তিত্বকেন্দ্রিক একটি সত্যিকারের প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে বলে মনে হয়।

স্রুতি কাপিলা: ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারতীয় ইতিহাস ও রাজনীতিবিষয়ক অধ্যাপক; আলজাজিরা ডটকম থেকে ভাষান্তর সাইফুর রহমান তপন