শেষ মুহূর্তে ভারত সফর স্থগিত করলেন ইলন মাস্ক

বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার মালিক ইলন মাস্ক ভারতে তাঁর নির্ধারিত সফর স্থগিত করেছেন। টেসলার বিভিন্ন কাজ নিয়ে ব্যস্ততা থাকায় সফর স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, চলতি বছরের শেষের দিকে তাঁর ভারত সফরে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

ভারতে লোকসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার দুই দিনের মাথায় আগামীকাল রোববার ইলন মাস্কের ভারত সফর করার কথা ছিল। ১০ এপ্রিল বার্তা সংস্থা রয়টার্সে ইলন মাস্কের ভারত সফরের পরিকল্পনার খবর প্রকাশ হয়। এরপর এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মাস্ক লিখেছিলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করার অপেক্ষায় আছি।’

তবে শেষ মুহূর্তে সফর স্থগিত করার ঘোষণা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট দিয়েছেন মাস্ক। লিখেছেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত টেসলায় প্রচুর কাজ জমে থাকায় ভারত সফর পিছিয়ে দিতে হচ্ছে। কিন্তু চলতি বছরের শেষেই ভারতে যাওয়ার ইচ্ছা আছে।’

মাস্কের এমন সময়ে ভারত সফর করার কথা ছিল, যখন কিনা ভারতে লোকসভা নির্বাচন চলছে। এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নরেন্দ্র মোদি তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন বলে আভাস রয়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মোদি ভারতকে বৈশ্বিক উৎপাদনের কেন্দ্রে পরিণত করার প্রতিশ্রুতি পূরণের অগ্রগতিগুলো সামনে আনতে চান।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত সফরে আসার পর মাস্ক দুই-তিন শ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবেন বলে আশা করা হচ্ছিল। বিশেষ করে ভারতে একটি কারখানা গড়ে তোলার জন্য এ বিনিয়োগ করবেন তিনি। কারণ, ভারত সরকার ঘোষিত এক নীতিমালায় বলা হয়েছে, কোম্পানিগুলো যদি স্থানীয়ভাবে বিনিয়োগ করে, তাহলে আমদানি করা গাড়ির ওপর শুল্ক হার কমিয়ে দেওয়া হবে




নাগাল্যান্ডের ছয় জেলায় কী কারণে কেউ-ই ভোট দিলেন না

ভারতের নির্বাচনী ইতিহাসে এমন এক ঘটনা ঘটল, যা অতীতে কখনো শোনা যায়নি। লোকসভার প্রথম ধাপের ভোটে পূর্ব নাগাল্যান্ডের ছয় জেলায় ৪ লাখ ৬৩২ ভোটারের মধ্যে কেউ ভোট দেননি। নির্বাচন কমিশনের এক কর্মকর্তা অবশ্য দাবি করেন, দু–একজন ভোট দিয়ে থাকতে পারেন, কিন্তু শতাংশের হিসাবে তা শূন্য।

সুতরাং বলা যায়, ওই ছয় জেলায় আনুষ্ঠানিকভাবে শূন্য শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছেন অথবা কেউই ভোট দেননি। এটা ভারতে অতীতে কবে ঘটেছে, তা চট করে বলা সম্ভব নয়।

ভোট বর্জনের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছয় জেলায় যে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছিল, বর্জন সফল হওয়ার পরে আজ শনিবার সকালে তা তুলে নেওয়া হয়েছে। যে সংগঠনের ডাকে ভোট বর্জন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল এবং তা সফলভাবে গতকাল শুক্রবার ভোটের দিন পালন করা হয়েছে, সেই সংগঠনের নাম ইস্টার্ন নাগাল্যান্ড পিপলস অর্গানাইজেশন (ইএনপিও)। ইএনপিওর ডাকা কর্মসূচিকে সমর্থন জানিয়েছিল ছয় জেলার একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

পূর্ব নাগাল্যান্ডের যে ছয় জেলায় ভোট বর্জনের এমন অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে সেগুলো হচ্ছে কিপিরে, লংলেং, মোন, নকলাক, শামাটোর ও টুয়েনসাঙ। নাগাল্যান্ডের মোট ১৩ লাখ ২৫ হাজার ভোটারের মধ্যে ৪ লাখ ৬৩২ অর্থাৎ ৩০ শতাংশ ভোটার এই ছয় জেলার বাসিন্দা।




উত্তেজনা বাড়াতে চায় না ইরান-ইসরায়েল

ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় শহর ইস্পাহানের কাছে সামরিক ঘাঁটিতে ইসরায়েলি ড্রোন হামলার চেষ্টা মূলত প্রতিশোধের অংশ। কারণ, গত ১৩ এপ্রিল অন্তত ৩০০ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে নজিরবিহীন হামলা চালায় ইরান। ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া নিয়ে বিশ্বনেতারা শঙ্কিত হলেও শুক্রবারের এই হামলার চেষ্টায় সামরিক স্থাপনার কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। অন্যদিকে, নতুন করে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি তেহরান। যদিও ইরানের কর্মকর্তারা বলে আসছিলেন, ইসরায়েল হামলা চালালে এক সেকেন্ডের মধ্যেই কঠিন জবাব দেওয়া হবে। দুই দেশের কর্মকর্তাদের ভাষ্যেই পরিষ্কার, নতুন করে উত্তেজনা বাড়াতে চায় না ইরান ও ইসরায়েল। খবর নিউইয়র্ক টাইমসের

টেলিভিশনের সংবাদ ও উভয় দেশের কর্মকর্তারা শুক্রবারের ওই হামলাকে খুব একটা গুরুত্ব দেননি। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা হামলাকে উত্তেজনা বৃদ্ধি এড়াতে পরিকল্পিত একটি সীমিত জবাব হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

ইসরায়েলের মর্নিং নিউজ শোতে বিশ্লেষকরা বলেছেন, এই হামলায় ইরানের সামরিক স্থাপনাগুলোতে উল্লেখ করার মতো কোনো ক্ষতি করতে পেরেছে বলে মনে হচ্ছে না।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলা হয়, ইসফাহানে সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনা নিরাপদ রয়েছে। হামলার চেষ্টাকে ‘বড় কিছু নয়’ বলে উল্লেখ করা হচ্ছে খবরে।

এদিকে ইরানের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত কিছু ব্যক্তিসহ দেশটির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা ইসরায়েলের এমন হামলার চেষ্টাকে উপহাস করে চলেছেন। শুক্রবার ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কোনো এক মেয়ে বিশাল আবাসিক ভবনে কাগজের তৈরি বিমান ছুড়ে মারছে। এ সময় এটিকে ইসরায়েলি হামলার সঙ্গে তুলনা করছে সে। কাগজের ওই বিমান যখন ভবনে আঘাত করে, তখন সে হাসছে।

ইরানের কর্মকর্তারা বলেছেন, ইসফাহানের কাছে একটি সামরিক বিমানঘাঁটিতে হামলা হয়েছে। কিন্তু ইস্পাহানের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল সিয়াভাশ মিহানদুস্ত রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, শুক্রবার সেখানে হওয়া বিস্ফোরণ ইসরায়েলি হামলার কারণে নয়। বরং তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘উড়ন্ত বস্তু’ গুলি করে ভূপাতিত করায় ওই শব্দ হয়েছে।

ইসরায়েল প্রতীকী এ হামলার কথা প্রকাশ্যে স্বীকার না করলেও দেশটির কিছু লোক আনন্দ-উল্লাস করেছেন। তাদের মধ্যে ডানপন্থি দলগুলোর নির্বাচিত নেতারাও ছিলেন। লিকুদ পার্টির এমপি ট্যালি গোটলিভ এক্সের পোস্টে লিখেছেন, ‘একটি সকাল, যেখানে আমাদের মাথা গর্বিত। ইসরায়েল শক্তিশালী দেশ।’ তবে ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন নিজেই ইরানে কথিত ইসরায়েলি হামলাকে ‘দুর্বল’ বলে অভিহিত করে তাদের উচ্ছ্বাসে পানি ঢেলে দিয়েছেন।

দ্বন্দ্বের শুরু যেভাবে

নতুন করে হামলা-পাল্টা হামলা মূলত দুই দেশের পুরোনো বিরোধের কারণে। মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ইসরায়েলকে ‘ছোট শয়তান’ এবং যুক্তরাষ্ট্রকে ইরান ডাকে ‘বড় শয়তান’ বলে। ইসরায়েলের অভিযোগ, ইরান ‘সন্ত্রাসী’ গোষ্ঠীকে অর্থায়নের পাশাপাশি ইহুদি বিরোধিতাকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে তাদের বিরুদ্ধে হামলা চালায়।
ইরান ও ইসরায়েলের সম্পর্ক ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত বেশ সৌহার্দ্যপূর্ণ ছিল। তবে আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি ইসলামী বিপ্লবের মাধ্যমে দেশটির ক্ষমতায় আসার পর সম্পর্ক খারাপ হয়। শুরুর দিকে ফিলিস্তিনকে ভাগ করে ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র গঠনের বিরোধিতা করেছিল ইরান। কিন্তু মিসরের পর তেহরান আবার স্বীকৃতিও দেয়। সেই সময় মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান মিত্র ছিল ইরান।

১৯৭৯ সালে পরিস্থিতি পুরোপুরি বদলে যায়। খোমেনি বিপ্লবের মাধ্যমে ইসরায়েল ও পাশ্চাত্য সমর্থিত রাজবংশ উৎখাত করে ইরানে ইসলামী প্রজাতন্ত্র গঠন করেন।

এই নতুন সরকারের পরিচয়ের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র ইসরায়েলের সাম্রাজ্যবাদ প্রত্যাখ্যান করা। এরপর নতুন সরকার ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে, ইসরায়েলের নাগরিকদের পাসপোর্টের বৈধতা বাতিল ও তেহরানে ইসরায়েলি দূতাবাস দখল করে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) কাছে হস্তান্তর করে। ওই সময় পিএলও ইসরায়েলি সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নেতৃত্বে ছিল।




এই গরমে ঘামাচি হলে কী করবেন

প্রচণ্ড গরম আর বিরক্তিকর ঘামের সঙ্গে যন্ত্রণার অনুষঙ্গ হয়ে আসে ঘামাচি বা হিট র‍্যাশ। যাঁরা প্রচুর ঘামেন ও গরমে কাজ করেন, তাঁদের ঘামাচি হয় বেশি। শিশুদেরও ঘামাচি হওয়ার প্রবণতা বেশি। একে প্রিকলি হিট বা মিলিয়ারিয়াও বলে।

ঘামাচি দেখতে কেমন

ত্বকে লাল লাল দানার মতো করে ঘামাচি দেখা দেয়। কখনো এগুলো ব্লিস্টার বা ছোট ফোঁড়ার মতো হতে পারে। এগুলো প্রচণ্ড চুলকায়। মাঝেমধ্যে গোটা ত্বক লালচে হয়ে পড়ে।

কোথায় বেশি হয়

যেসব জায়গা বেশি ঘামে, যেমন বগল, হাঁটু বা কনুইয়ের ভাঁজে ঘামাচি বেশি হয়। এ ছাড়া পিঠেও বেশি হতে দেখা যায়। শিশুদের ডায়াপার পরার স্থানে, মুখে এবং মাথায়ও ঘামাচি হয়।

কেন হয় ঘামাচি

ত্বকের লোমকূপে যে ঘর্মগ্রন্থি থাকে, গরম ও ঘামের কারণে তার মুখ বন্ধ হয়ে গেলে সে জায়গা লাল হয়ে ফুলে ওঠে। এটাই ঘামাচি। নবজাতক ও ছোট শিশুদের ঘর্মগ্রন্থি পুরোপুরি তৈরি নয় বলে তাদের এই সমস্যা হয় বেশি।

কী করবেন

শরীর ও ত্বক শীতল রাখতে পারলে ঘামাচি এমনিতেই সেরে যায়। সারতে তিন সপ্তাহের মতো লাগতে পারে। পানি দিয়ে গোসল করলে একটা স্বস্তিকর অনুভূতি হয়, তবে বারবার গোসল করলে ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়তে পারে। নখ দিয়ে আঁচড়ালে বা চুলকালে সংক্রমণ হতে পারে। তীব্রতা বেশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শে লোশিও ক্যালামাইন বা প্রয়োজনে স্টেরয়েড ক্রিম ব্যবহার করা যায়

ঘামাচি থেকে বাঁচতে আপনি কী করতে পারেন

যেখানে বসবাস করেন বা কাজ করেন, সেখানে মুক্ত বাতাস চলাচল নিশ্চিত করুন। পাতলা ঢিলেঢালা সুতির কাপড় পরুন, যার মধ্য দিয়ে বাতাস চলাচল করতে পারবে। খুব ঘেমে গেলে পোশাক পরিবর্তন করুন। শিশুদের ডায়াপার ভিজে গেলেই ঘন ঘন পরিবর্তন করবেন। ত্বকের ভাঁজগুলো কাপড় চেপে শুষ্ক করে নেবেন। শিশুদের পরিষ্কার পাতলা সুতির কাপড় পরাবেন বা দরকার হলে খালি গায়ে ফ্যানের নিচে রাখুন। সিনথেটিক কাপড় পরাবেন না। তাদের শোয়ানোর সময় প্লাস্টিকের মেট্রেস ব্যবহার করবেন না।




তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও গরমের কষ্ট কমছে না

দুপুরের রোদ থেকে যেন বের হচ্ছিল আগুনের হলকা। এমন রোদে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে গায়ে ফোসকা পড়ার মতো অনুভূতি হচ্ছিল। রাজধানীতে গতকাল বুধবার আগের দিনের তুলনায় তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমলেও গরমের কষ্ট কমেনি। আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, বাতাসে আর্দ্রতা বা জলীয় বাষ্প বেড়ে যাওয়ায় গরমে অস্বস্তিকর অনুভূতি বেড়ে গেছে।

গতকাল দেশের বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৭ শতাংশ। এ কারণে দেশের প্রায় অর্ধেক এলাকাজুড়ে গরমের অস্বস্তিকর অনুভূতি টের পাওয়া গেছে।

আর্দ্রতা ৫০ শতাংশের বেশি হলে তা জলীয় বাষ্পসহ শরীরে ঘাম ও চটচটে গরমের কষ্ট তৈরি করে। আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, সাধারণত গ্রীষ্মের এই সময়টাতে বাতাসে আর্দ্রতা ২০ থেকে ৩০ শতাংশের মধ্যে থাকে। ফলে তাপমাত্রা বাড়লেও তা বৃক্ষ আচ্ছাদিত এলাকায় থাকা ব্যক্তিদের জন্য খুব কষ্টের হয় না। আজ বৃহস্পতিবার আর্দ্রতার পরিমাণ আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহিনুর ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দেশের অনেক এলাকাজুড়ে যে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তা আজ কিছুটা কমতে পারে। অনেক এলাকায় তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসতে পারে। কিন্তু আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় গরমের কষ্ট কমার সম্ভাবনা নেই। আগামী তিন-চার দিন এমন অবস্থা চলমান থাকতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, গতকাল দেশের সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৩৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজশাহী, পাবনা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়ার ওপর দিয়ে তীব্র এবং ঢাকা, রংপুর, বরিশাল, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আজও ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও দমকা হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও কালবৈশাখী হতে পারে।

গতি কমানোর নির্দেশনা

বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, চলমান গরমে দেশের রেললাইনগুলোতে তাপমাত্রা গিয়ে ঠেকছে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তারও বেশি। এতে কোথাও কোথাও লাইন বেঁকে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ জন্য কর্তৃপক্ষ স্থান ও রেললাইনের বয়স বিবেচনায় ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানোর নির্দেশনা দিয়েছে।




ভ্যাপসা গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ

তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। গরমে সবচেয়ে কষ্টে আছেন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। জীবিকার তাগিদে তীব্র রোদেই কাজে বের হতে হচ্ছে তাঁদের। বিস্তারিত দেখুন ভিডিওতে




প্রচণ্ড দাবদাহে চুয়াডাঙ্গায় ‘মরুর উষ্ণতা’, জনজীবনে অস্বস্তি

চুয়াডাঙ্গায় টানা তিন দিন ধরে প্রচণ্ড দাবদাহ বইছে। বাতাসের আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় জেলাজুড়ে অনুভূত হচ্ছে ‘মরুর উষ্ণতা’। আজ বৃহস্পতিবার বেলা তিনটায় জেলায় সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ নিয়ে টানা তিন দিন জেলায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি অতিক্রম করল। আজ বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৫ শতাংশ।

এদিকে বাতাসের আর্দ্রতা বেশি থাকায় ভ্যাপসা গরমে জনজীবনে অস্বস্তি নেমে এসেছে। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন কৃষক-শ্রমিকসহ খেটে খাওয়া মানুষ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গ্রীষ্মকালীন ছুটির আগেই গরমে ছুটির দাবি করেছেন কেউ কেউ। দাবদাহের ব্যাপারে ইতিমধ্যে অধিদপ্তরে জানিয়েছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। তবে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি।

পৌর এলাকার হাটকালুগঞ্জে অবস্থিত প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বাতাসের আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় বেশি গরম অনুভূত হচ্ছে। গত মঙ্গল ও বুধবার জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল যথাক্রমে ৪০ দশমিক ৬ ও ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বছরের ১৯ ও ২০ এপ্রিল মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা অতি তীব্র দাবদাহ। কাছাকাছি সময়ে বৃষ্টি না হলে গত বছরের রেকর্ড এবার ভেঙে যেতে পারে।

প্রচণ্ড দাবদাহ ও ভ্যাপসা গরমের কারণে গায়ে ঘাম বসে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বাসিন্দারা। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জ্বর, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়ায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এ ছাড়া অ্যাজমা, হাঁপানিসহ শ্বাসকষ্টের রোগীদের ভোগান্তি বেড়েছে।

সদর হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের পরামর্শক মো. আবুল হোসেন বলেন, হাসপাতালের অন্তর্বিভাগ ও বহির্বিভাগ ছাড়াও ব্যক্তিগত চেম্বারে গরমজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীদের চাপ বাড়ছে। রোগীদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে যত্নশীল হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে দাবদাহ চলাকালে ভাজা-পোড়া, চা-কফি ও কোমল পানীয় এড়িয়ে বেশি বেশি পানি, খাওয়ার স্যালাইনসহ তরল খাবার খেতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।




সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়, তীব্র তাপপ্রবাহে বিপাকে খেটে খাওয়া মানুষেরা

চুয়াডাঙ্গায় ৯ দিনের ব্যবধানে আবারও তীব্র তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। পৌর এলাকার হাটকালুগঞ্জে অবস্থিত প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার আজ মঙ্গলবার বেলা তিনটায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমানের ভাষ্যমতে, চলতি মৌসুমে রেকর্ড করা এটিই দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এর আগে ৬ এপ্রিল জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জামিনুর বলেন, বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা ক্রমে বাড়তে থাকবে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ৩৬ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত মাঝারি তাপপ্রবাহ, ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ওপরের তাপমাত্রাকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়ে থাকে।

এদিকে তাপমাত্রার তীব্রতা বাড়ায় বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাইরে বের হচ্ছে না। অতিরিক্ত গরমে গা ঘেমে শরীরে বসে যাওয়ায় জ্বর, সর্দি, ডায়রিয়া, হিটস্ট্রোকসহ রোগবালাই বেড়ে চলেছে। শিশু ও বৃদ্ধদের প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। এই আবহাওয়ায় খেটে খাওয়া মানুষেরা চরম বিপাকে পড়েছেন।

বেলা সাড়ে তিনটার দিকে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর গ্রামে মিলন হোসেন, সেলিম হোসেন ও সাজেদুর রহমান নামে চার শ্রমিক পেঁপের বস্তা ট্রাক ভর্তি করছিলেন। তাঁরা পার্শ্ববর্তী লোকনাথপুর ও জয়নগর গ্রাম থেকে শ্রম বিক্রি করতে এসেছেন। চারজনই ঘেমেনেয়ে একাকার। তাপমাত্রার প্রসঙ্গ তুলতেই সাজেদুর বলেন, ‘আমাগের তো তাপমাত্রা মাপার যন্তর নেই। তাই কিচুই জানিনে। যন্তর থাকলিই–বা কী কত্তাম। তাপমাত্রার ভয় পালি হবে না। আমাগের শীতিই কি আর গরমই কি? কর্ম করেই খাতি হবে। কর্ম না কল্লি প্যাটে ভাত জোটপেনানে।’

সদর হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের পরামর্শক মো. আবুল হোসেন বলেন, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় শ্বাসকষ্ট ও হৃদ্‌রোগীর চাপ বেড়ে চলেছে। হিটস্ট্রোক থেকে রক্ষা পেতে অন্তত দুবার গোসল করা, খাবার স্যালাইন, সাধারণ পানিসহ তরল খাবার বেশি বেশি খাওয়া, চা-কফি-কোমল পানীয় এড়িয়ে চলা, ঘরের ভেতর বা ছায়াশীতল পরিবেশে অবস্থান করার পাশাপাশি জরুরি প্রয়োজনে ছাতা মাথায় বের হতে হবে।

হাটকালুগঞ্জের প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, মার্চ মাসের প্রথম দিন থেকে গ্রীষ্মকাল গণনা শুরু হয়। জেলায় চলতি বছরের মার্চ মাসের ৩১ দিনে গড়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর মধ্যে ৩০ মার্চ ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ২০ মার্চ ২২ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গত বছরের মার্চে গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এদিকে চলতি এপ্রিল মাসের প্রথম ১৬ দিনে জেলায় গড়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বছরের এপ্রিল মাসের প্রথম ১৬ দিনে গড়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

গত বছরের তুলনায় তাপমাত্রা এ বছর কম হলেও প্রচণ্ড গরম অনুভূত হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, চলতি মৌসুমে বাতাসের আর্দ্রতা বেশি হওয়ায় চরম গরম অনুভূত হচ্ছে।

 




ঢাকায় গরমে কষ্টের দিন বেড়েছে ৩ গুণ

গত দুই বছরের মতো এ বছরও মার্চ থেকে রাজধানীসহ দেশের বেশির ভাগ এলাকায় গরম অসহনীয় হয়ে উঠেছে। দিনের তীব্র খরতাপের পর বিকেলে দমকা হাওয়া বা কালবৈশাখী হলেও তা গরমের কষ্ট খুব বেশি কমাতে পারছে না। গবেষকেরা বলছেন, গত ছয় দশকে শুধু ঢাকায় তীব্র এবং অসহনীয় গরমের দিনের সংখ্যা তিন গুণ বেড়েছে।

ঢাকার বাইরের বড় শহরগুলোতেও আরামদায়ক দিন কমে, তীব্র কষ্টকর গরমের দিন সাত গুণ পর্যন্ত বেড়েছে। বিশ্বের চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এমন তথ্য সামনে এনেছেন।

যদি কোনো একটি এলাকার তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায় এবং বাতাসে আর্দ্রতা বা জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ৭০ থেকে ৯০ শতাংশের মধ্যে থাকে, এমন অবস্থাকে আবহাওয়াবিদেরা তীব্র কষ্টকর দিন হিসেবে চিহ্নিত করেন। অপর দিকে তাপমাত্রা যখন ২০ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে এবং আর্দ্রতা ৫০ শতাংশের কম থাকে, এমন অবস্থাকে আরামদায়ক দিন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

গবেষক দলটি বাংলাদেশের ৬০ বছরের (১৯৬১-২০২০) আবহাওয়া এবং তাপমাত্রার ধরন ব্যাখ্যা করে বলেছেন, বাংলাদেশে গ্রীষ্মকাল আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। বিশেষ করে রাজধানীসহ দেশের মধ্যাঞ্চল এবং দেশের উপকূলীয় এলাকা হিসেবে চিহ্নিত দক্ষিণাঞ্চলে ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের পর উষ্ণতার বিপদ দ্রুত বাড়ছে। গত ২৯ মার্চ আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী আরবান ক্লাইমেট–এ গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণাটির শিরোনাম ‘চেঞ্জেস ইন হিউম্যান ডিসকমফোর্ট অ্যান্ড ইটস ড্রাইভার ইন বাংলাদেশ’।

গবেষণায় বলা হয়েছে, ১৯৬১ সালে ঢাকায় সারা বছরে আরামদায়ক দিনের সংখ্যা ছিল ৮০। আর তীব্র গরমে কষ্টকর দিনের সংখ্যা ছিল ৭। ২০২০ সালে আরামদায়ক দিনের সংখ্যা কমে ৬৬ এবং কষ্টকর দিন বেড়ে হয়েছে ২১। একই সময়ে সিলেটে আরামদায়ক দিন ৮০ থেকে কমে ৬৭ এবং কষ্টকর দিন ১৪ থেকে বেড়ে ২০ হয়েছে। চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতেও গরমের কষ্টের দিনের সংখ্যা তিন ও দুই গুণ বেড়েছে।

বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, মিসর, পাকিস্তান ও ইরাকের পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে ওই গবেষণা হয়েছে। এতে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের কাছে থাকা দেশের ১৭টি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে তাপমাত্রার তথ্য নেওয়া হয়েছে। তাঁরা ১৯৬১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তাপমাত্রা ও আবহাওয়ার এসব তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। সাধারণভাবে গ্রীষ্মের গরমের ক্ষেত্রে কোনো একটি এলাকার তাপমাত্রা কত বাড়ল এবং তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছাল কি না, অর্থাৎ তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে কি না, তা বিবেচনায় নিয়ে আবহাওয়ার অবস্থাকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

এই গবেষণায় মূলত তিনটি বিষয়কে আমলে নিয়ে উষ্ণতার প্রভাবকে বোঝানো হয়েছে। প্রথমত গরমে অস্বস্তি সূচক-ডিআই, দ্বিতীয়ত আর্দ্রতার ঘনীভূত রূপ বা হিউমিডেক্স ও তৃতীয়ত তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতার মিশ্রণে যে কষ্টের তীব্রতা বাড়ে, যাকে গবেষকেরা বলছেন ওয়েট বাল্ব টেম্পারেচার (ডব্লিউবিটি)। ওই তিনটি সূচকে সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশে গ্রীষ্মকালীন গরমের কষ্ট বা অনুভূতি দ্রুত বাড়ছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি ১০ বছরে বাংলাদেশে দশমিক ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস করে তাপমাত্রা বাড়ছে। আর আর্দ্রতা বাড়ছে দশমিক ৩ শতাংশ হারে। আর আর্দ্রতার মিশ্রণে কষ্টের তীব্রতা (ডব্লিউবিটি) বেড়েছে দশমিক ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তীব্র দাবদাহের এমন পরিস্থিতিতে মানুষের কর্মক্ষমতা কমে যাচ্ছে। বিশেষ করে শ্রমজীবী ও গ্রামের মানুষ ওই গরমে কষ্টে ভোগার পাশাপাশি নানা ধরনের রোগবালাইয়ে আক্রান্ত হচ্ছে। গবেষণা দলের অন্যতম সদস্য ও বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী কামরুজ্জামান মিলন প্রথম আলোকে বলেন, গ্রীষ্মের এই সময়টাতে শহরের শ্রমজীবী মানুষের পাশাপাশি কৃষকদের মাঠে কাজ করতে হয়। তাদের জন্য গরমের কষ্ট কমাতে শহর ও গ্রামে প্রচুর পরিমাণ গাছ রোপণ করতে হবে। একই সঙ্গে জনপরিসরে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ, ওই গরম থেকে মানুষের হিটস্ট্রোকসহ নানা ধরনের প্রাণঘাতী সমস্যা হতে পারে।




রেললাইনের তাপমাত্রা উঠেছে ৫০ ডিগ্রিতে, গতি কমানোর নির্দেশ

বৈশাখের গরমে চারদিকে হাঁসফাঁস অবস্থা। রাজধানী ঢাকাতেই তাপমাত্রা ৪০ ছুঁই ছুঁই। এই গরমে দেশের রেললাইনগুলোতে তাপমাত্রা গিয়ে ঠেকছে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তারও বেশি। এতে লাইন বেঁকে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ জন্য কর্তৃপক্ষ গতি কমিয়ে ট্রেন চালানোর নির্দেশনা দিয়েছে।

রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, সারা দেশে স্থান ও রেললাইনের বয়স বিবেচনায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এটাকে রেলের ভাষায়, স্ট্যান্ডিং অর্ডার বা স্থায়ী আদেশ বলা হয়। কারণ, প্রতিবছরই গরমের সময় এই ধরনের নির্দেশনা দিয়ে থাকে রেল কর্তৃপক্ষ। মূলত বেলা ১১ টাকা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত গতি কমানো হয়। কারণ, এই সময়টাতেই রেললাইন বেশি গরম হয়।