মুজিববর্ষে পাকা ঘর পাচ্ছে আরও এক লাখ পরিবার

মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে দ্বিতীয় ধাপে আরও এক লাখ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পাকা ঘর পাচ্ছে। এর মধ্যে ৫০ হাজার পরিবারকে আগামী এপ্রিলে এবং ৫০ হাজার পরিবারকে জুনে ঘর দেবে সরকার। এর আগে জানুয়ারিতে প্রথম ধাপে প্রায় ৭০ হাজার পরিবারকে ঘর উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঘর নির্মাণ প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে আয়োজিত সমন্বয় সভায় এ তথ্য জানানো হয়।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে সভায় ভূমি সচিব মোস্তাফিজুর রহমান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. মোহসীন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মাহবুব হোসেনসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন প্রত্যেক বিভাগের কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

সভায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া দ্বিতীয় ধাপে ৫০ হাজার নতুন ঘর নির্মাণ কাজ ৭ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করতে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার এই ৫০ হাজার ঘরের জন্য ১ হাজার কোটি টাকা ছাড় করা হয়েছে। ১৫ এপ্রিলের দিকে এই ঘরগুলো উদ্বোধন করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। আর পরবর্তী ৫০ হাজার ঘর হয়তো জুলাই মাসে উদ্বোধন করতে পারব।

প্রথম পর্যায়ে গৃহনির্মাণ কার্যক্রমের মান প্রশংসা পেয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, কাজের এই গুণগত মান ধরে রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম সহ্য করা হবে না।

ডিভিও কনফারেন্সে যুক্ত কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, আরও উপকারভোগী চিহ্নিত করে আগামী ৭ দিনের মধ্যে আরও নতুন ঘর নির্মাণের প্রস্তাব পাঠাতে হবে। প্রস্তাব পাঠানোর ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষকে গুরুত্ব দিয়ে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে কাজ করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মাহবুব হোসেন বলেন, এবারের নির্মাণাধীন ঘরের নকশায় ছোটখাটো কিছু পরিবর্তন এসেছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ঘরপ্রতি ২০ হাজার টাকা বাজেট বাড়ানো হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে প্রতিটি ঘরের জন্য পরিবহন খরচসহ ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছিল। এবার তা বাড়িয়ে ১ লাখ ৯৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৯৭ হাজার টাকা করা হয়েছে।

‘মুজিববর্ষে বাংলাদেশে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’- প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারগুলোকে এসব ঘর দেওয়া হচ্ছে।




Complaints of obstruction in the human chain of Pahari Chhatra Parishad in Chabi

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের মানববন্ধনে প্রশাসন বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ে পাঁচতারকা হোটেল নির্মাণের প্রতিবাদে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। তবে ১৫-২০ মিনিট পর আয়োজকদের প্রক্টর অফিসে ডেকে মানববন্ধন না করে চলে যাওয়ার জন্য বলা হয়।

মানববন্ধন বন্ধের এই ‘আচমকা স্থগিতাদেশের’ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে সংগঠনটি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক রুমেন চাকমা সমকালকে বলেন, ‘চিম্বুক পাহাড়ে ম্রো জনগোষ্ঠীর জায়গায় পাঁচতারকা হোটেল বানানোর প্রতিবাদে আমরা মানববন্ধনের ডাক দিয়েছিলাম। আগের দিন প্রক্টরের কাছ থেকে লিখিত অনুমতিও নেওয়া হয়েছিল। তবে ওইদিন রাত ১১টায় প্রক্টর ফোন দিয়ে মানববন্ধন না করার জন্য বলেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এটা বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্নিষ্ট ইস্যু নয়। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের মানববন্ধন করা যাবে না। মানববন্ধন করতে হলে বাইরে করতে হবে। তবে আমরা আজ (বুধবার) সকাল ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে ২৫-৩০ শিক্ষার্থী প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। ১৫-২০ মিনিট পর প্রক্টর ডেকে পাঠান। আমরা প্রক্টর অফিসে গেলে শহীদ মিনার থেকে চলে যেতে বলেন। তারপর আমরা চলে আসি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, ‘এটি একটি ভুল বোঝাবুঝি। বাধা দেওয়া বা দাঁড়াতে না দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। যেহেতু এটি আমাদের অ্যাকাডেমিক বা বিশ্ববিদ্যালয় রিলেটেড নয়, তাই তাদের ফোন করে অনুরোধ করেছিলাম না করার জন্য। তারা সকালে আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল এবং আমি তাদের ধন্যবাদ দিয়েছি।’




অনন্ত হত্যায় ম্যাজিস্ট্রেটসহ দু’জনের সাক্ষ্য

সিলেটে ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ দু’জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। বুধবার সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ারুল হক ও পূবালী ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সিরাজুল হক চৌধুরী।

এই মামলার অন্যতম আসামি মান্নান ইয়াহিয়া ওরফে মান্নান রাহীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেছিলেন আনোয়ারুল হক। অন্যদিকে ব্যাংক কর্মকর্তা সিরাজুল হক নিহত অনন্ত বিজয়ের বাসার কম্পিউটারের সিপিইউ ও কয়েকটি বইয়ের জব্দ তালিকার সাক্ষী ছিলেন। এই মামলায় সম্পূরক অভিযোগপত্রে সর্বমোট ২৯ জন সাক্ষী রয়েছেন।

বুধবার দু’জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরুল আমিন বিপ্লব দিনের কার্যক্রম স্থগিত করে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্য গ্রহণের দিন নির্ধারণ করেন।

২০১৫ সালের ১২ মে নগরীর সুবিদবাজারের নুরানী আবাসিক এলাকায় নিজ বাসা থেকে কয়েকশ গজ দূরে পূবালী ব্যাংক কর্মকর্তা অনন্ত বিজয়কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তিনি লেখালেখির পাশাপাশি ‘যুক্তি’ নামে বিজ্ঞানবিষয়ক একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বেও ছিলেন তিনি। এসব কারণে ‘নাস্তিক’ ট্যাগ দিয়ে তাকে হত্যা করে জঙ্গিরা।

অনন্ত বিজয় হত্যা মামলার আসামিরা হলো- সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার আবুল হোসেন, খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমদ, সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বিরেন্দ্রনগরের মামুনুর রশীদ, কানাইঘাটের পূর্ব ফালজুর গ্রামের মান্নান ইয়াইয়া ওরফে মান্নান রাহী ওরফে এবি মান্নান ইয়াইয়া ওরফে ইবনে মঈন, কানাইঘাটের ফালজুর গ্রামের আবুল খায়ের রশীদ আহমদ ও সিলেট নগরীর রিকাবীবাজার এলাকার সাফিউর রহমান ফারাবী ওরফে ফারাবী সাফিউর রহমান।