কমলনগরে ঝরাজীর্ন ঘরে থাকেন শহীদ বীর মুক্তিযুদ্ধা পরিবার

image_pdfimage_print

লক্ষ্মীপুর:
লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগরে ঝরাজীর্ন ঘরে থাকেন শহীদ বীর মুক্তিযুদ্ধা পরিবার। উপজেলার চর লরেঞ্চ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড তোরাবগঞ্জ বাজার সংলগ্ন শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমানের বাড়ী। ৬জন সদস্য নিয়ে ০৬শতাংশ জমির উপর একটি টিনের দোচালা ছাপড়া ঘরে বসবার করছে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমানের পরিবার।
জানা যায়, শহীদ মোস্তাফিজুর রহমানের জন্ম ১৯৪৬ সালে শহীদ হন ০৩/১০/১৯৭১ইং তারিখ। মৃত্যু কালে তার ১ছেলে ও স্ত্রী রেখে যান। বর্তমানে তার ১ছেলে মোঃ শাহজাহান (৪৭) ৩ নাতি মোঃ রাশেদ নবম শ্রেণীর ছাত্র, রেদওয়ান ২য় শ্রেনীর ছাত্র, শাহীন (৬) নাতনি জান্নাতুল ফেরদাউস ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী ও ১স্ত্রীসহ মোট ৬সদস্য। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাক বাহিনী এদেশের নিরস্ত্র জনতার উপর ঝাপিয়ে পড়ার পর পরই মোস্তাফিজুর রহমান তার সাথীদের নিয়ে ভারতে গিয়ে যুদ্ধের উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহন করে ২নং সেক্টরের অধীন রনক্ষেত্রে কৃতিত্বের সাথে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন। ০৩-১০-১৯৭১ ইং তারিখ সকাল বেলা মোস্তাফিজুর রহমান ও তার ১সাথী লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি থানা (বর্তমানে কমলনগর উপজেলা) করইতলা ও তোরাবগঞ্জ রাজাকার মিলিটারী ক্যাম্প পর্যবেক্ষনে গিয়ে পাশ্ববর্তী খামার বাড়ীতে অবস্থান গ্রহন করেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল মিলিটারীর গতিবিধি পর্যবেক্ষন করে তাদের উপর আক্রমন করা। ঐ খামার বাড়ীতে ২জন মুক্তিযোদ্ধার অবস্থান রাজাকাররা টের পেলে তারা মিলিটারীকে খবর পাঠায়, মিলিটারী তাৎক্ষনিক খামার বাড়ী ঘেরাও করে তাদের ধরে ফেলে অকথ্য নির্যাতনের মাধ্যমে গুলি করে হত্যা করে। তার একমাত্র পুুত্র সন্তান তেমন কোন পড়ালেখা করতে পারেন নাই বর্তমানে সে অসুস্থ অবস্থায় আছে। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় এই মুক্তিযোদ্ধা শহীদ পরিবারটি একটি দোচালা টিনের ছাপড়া ঘরে অবস্থান করছে। আধুনিক সুযোগ সুবিধা বলতে কোন কিছুই তাদের ভাগ্যে জোটে নাই। ছেলে শাহজাহানের সাথে একান্ত আলাপে বলেন আমি নিজেই অসুস্থ তার মধ্যে আমার চার ছেলে মেয়ে নিয়ে ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করি। সরকার শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য শুনেছি অনেক কিছু করছে কিন্তু আমি তার কিছুই পাই নাই। আমার বাবার নামে রাস্তায় তোরণ নির্মান করা হয়েছে কিন্তু আমাদের খোজ কেউ নিচ্ছে না। বতর্মানে আমার সন্তানদের লেখাপাড়া ও বসতঘর নিয়ে আমি দুঃচিন্তায় আছি। যদি সরকার বীর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমানের নাতি ও নাতনিদের পড়ালেখার দায়িত্ব নেয় ও তাদের মাথা গোজার একটু ঠাই দেয় তাহলে এই শহীদের আত্মা শান্তি পাবে বলে আমি মনে করি।

Related Posts

en_USEnglish