লক্ষ্মীপুর: আজ ভয়াল ১২ নভেম্বর। এ দিনটি উপকূলীয় এলাকার জন্য ভয়ঙ্কর এক দিন। ১৯৭০ সালের এই দিনে মহাপ্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস দ্বীপ জেলা লক্ষ্মীপুরের রামগতির উপর দিয়ে বয়ে যাওয়ায় ব্যাপক প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞ ঘটে।
লাশের মিছিলে উপকূলীয় জনপদ পরিণত হয় ধ্বংসস্তুপে। স্মরণকালের ভয়াবহ এই দুর্যোগে জেলার রামগতি ও বর্তমান কমলনগর উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চল লন্ডভন্ড হয়ে যায়। প্রাণ হারায় প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। মেঘনা নদীর উত্তাল ঢেউয়ের প্রবল স্রোতের টানে ভাসিয়ে নিয়ে যায় গবাদি-পশু, ঘর-বাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অনেক গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা। বিলীন হয়ে যায় দুই উপজেলার বেঁড়িবাধসহ অনেক জনপদ। যত দুর চোখ পড়তো চারিদিকে শুধু লাশ আর লাশ।
৮ থেকে ১০ ফুটের জলোচ্ছাসের কারণে দাফন করা যায়নি নিহত সেই মানুষগুলোকে। মহাপ্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ের সময় একই পরিবারের ১০/১৫ জন লোক নিহতসহ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে অনেক পরিবার। ৪৭ বছর আগের ধ্বংসযজ্ঞের কথা এখনো ভুলতে পারেনি স্বজন হারা সেসব মানুষেরা। বিভৎসময় সেই দিন গুলোর কথা মনে করে বাকরুদ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে উপকূলীয় এলাকার মানুষজন। তখনকার সময়ে সর্বস্ব হারিয়ে এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি অনেকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সেই সময়ের ঘূর্ণঝড়ের কবলে পড়ে ৬০ ভাগ মানুষ, গরু-মহিষ, গাছ-পালা ইত্যাদি পানিতে ভেসে গেছে। এক পরিবার থেকে ৭ থেকে ৮ জন মানুষ পানিতে ভেসে গেছে। নদীতে নৌকা লঞ্চ চলতে পারেনি লাশের স্তুপের কারণে।
এদিকে দিনটিকে জাতীয়ভাবে উপকূল দিবস হিসেবে ঘোষাণার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় উপকূলবাসীরা। এরইমধ্যে বিভিন্নস্থানে উপকূল দিবস হিসেবে দিনটি পালন করার প্রস্তুতি নিয়েছে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষেরা।