নদীতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় মানিকগঞ্জ আদালতে মামলা করেন বাবা। এতে শিশুটির তিন বন্ধুকেও আসামি করা হয়েছে। তাদের বয়স যথাক্রমে ১২, ১০ ও ৯ বছর।
এর প্রতিবাদে জেলার সাটুরিয়া উপজেলার তিল্লি এলাকার বাসিন্দারা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন। সোমবার তসভি ডাঙ্গা এলাকায় পালিত হয় এ কর্মসূচি।
আসামি করা শিশুদের স্বজন ও এলাকাবাসীর ভাষ্য, ২০ আগস্ট ওই চার শিশু স্থানীয় কালিগঙ্গা নদীর সেতুর নিচে গোসলে যায়। সেখানে দাপাদাপির সময় নিখোঁজ হয় অপূর্ব (১১)। তিন বন্ধু বিষয়টি টের পেয়ে বড়দের ডেকে আনে। তাদের সহায়তায় নৌপুলিশের ডুবুরিদল উদ্ধার অভিযান চালিয়েও সেদিন অপূর্বর খোঁজ পায়নি। এর দু’দিন পর ঘটনাস্থলের কয়েক কিলোমিটার দূরে শিশুটির লাশ ভেসে ওঠে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, লাশ শনাক্তের জন্য অপূর্বর স্বজনদের সংবাদ পাঠানো হলেও তারা আসেননি। পরে তিন বন্ধু লাশটি অপূর্বর বলে শনাক্ত করে। ময়নাতদন্তের পর পুলিশ বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে দাফন করে। পরিচয় নিশ্চিত হতে তারা ডিএনএ পরীক্ষার সিদ্ধান্তও নেয়।
এ ঘটনায় মানিকগঞ্জ আদালতে মামলা করেন অপূর্বর বাবা আব্দুল মালেক। তিনি ছেলেকে হত্যা ও গুমের অভিযোগ আনেন। এতে ৯ বছর বয়সী শিশুটিকে পাঁচ নম্বর, ১২ বছর বয়সী শিশুকে ৬ নম্বর ও ১০ বছর বয়সী শিশুটিকে ৭ নম্বর আসামি করা হয়। ওই শিশুরা স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় পড়ে। তাদের বাবা-মাকেও আসামি করা হয় এ মামলায়।
সোমবারের বিক্ষোভে স্থানীয় বিশিষ্টজন অভিযোগ করেন, স্থানীয় এক প্রভাবশালীর ইশারায় মৃত শিশুটির বাবা মিথ্যা মামলা করেছেন। এর মাধ্যমে তিন শিশুর পরিবারকে হয়রানি করা হচ্ছে। সেখানে বক্তব্য দেন তিল্লী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক খান, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মুরছালিন বাবুসহ অন্যরা।
বক্তব্য জানতে মামলার বাদী আব্দুল মালেকের মোবাইল ফোন নম্বরে কল দিয়ে বন্ধ পাওয়া যায়। তাঁকে বাড়িতেও পাওয়া যায়নি। স্বজনরাও কোনো বক্তব্য দিতে চাননি।
সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকুমার বিশ্বাস বলেন, শিশু নিখোঁজের বিষয়ে থানায় কোনো মামলা হয়নি। আদালতে মামলা হয়েছে বলে শুনেছেন। তবে গতকাল পর্যন্ত আদালত থেকে এ বিষয়ে কোনো কাগজপত্র থানায় আসেনি।