হামাগুড়ি দিয়ে এইচএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে যান শারীরিক প্রতিবন্ধী আজহারুল

আব্দুর রহমান ঈশান, নেত্রকোণা প্রতিনিধি:

নেত্রকোণার মদনে হামাগুড়ি দিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে যান শারীরিক ভাবে প্রতিবন্ধী আজাহারুল

জন্ম থেকেই তার পা দুটো উল্টা, সরু ও বাঁকা। দুটি হাতও বাঁকা। এ দুই হাতের ওপর ভর করে হামাগুড়ি দিয়ে রবিবার (৬ নভেম্বর) মদন সরকারি হাজী আব্দুল আজিজ খান ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন শারীরিক প্রতিবন্ধী আজহারুল। তার শারীরিক প্রতিবন্ধকতা হার মেনেছে স্বপ্ন জয়ের অদম্য ইচ্ছাশক্তির কাছে। আজহারুলের লক্ষ্য একটি ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করার ।

আজহারুল ইসলামের বাড়ি নেত্রকোণা জেলার মদন উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের বনতিয়শ্রী গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের দিনমজুর মনির উদ্দিন এর ছেলে। তিনি এ বছর বালালী বাঘমারা শাহজাহান মহাবিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন। এর আগে আজহারুল প্রাথমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জিপিএ ২.৮৩ পেয়ে কৃতকার্য হন। জেএসসিতে পান জিপিএ ২.৫৫ পয়েন্ট ও এসএসসি পরীক্ষায় তার জিপিএ ছিল ২.৮৯।

পারিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বালালী বাঘমারা শাহজাহান কলেজের নিয়মিত ছাত্র আজহারুল ইসলাম। দুই হাতে ভর করে হামাগুড়ি দিয়ে প্রায় তিন কিলোমিটারএর অধিক রাস্তা প্রতিদিনই অতিক্রম করতেন তিনি। এর আগেও তিনি একইভাবে বালালী বাঘমারা উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়মিত আসা যাওয়া করেছেন। রিকশা বা অটো দিয়ে যাতায়াত করলে প্রতিদিন খরচ হতো ৫০-৭০ টাকা। বাবা দিনমজুর, তাই গাড়ি ভাড়া দিতে না পারায় হামাগুড়ি দিয়েই প্রতিদিন যাতায়াত করতেন তিনি।

শারীরিক প্রতিবন্ধী আজহারুল ইসলাম বলেন, আমার ইচ্ছা ভালো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। লেখাপড়া শেষ করে পরিবারের জন্য কিছু একটা করাই আমার লক্ষ্য।

মদন সরকারি হাজী আব্দুল আজিজ খান ডিগ্রি কলেজের কেন্দ্র সচিব মো. শফিকুর রহমান জানান, হামাগুড়ি দিয়ে চলে আজহারুল আজ আমাদের কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে এসেছে। সে অতিরিক্ত সময়ের জন্য একটি আবেদন করেছে। আমি আবেদনটি মঞ্জুর করেছি এবং তাকে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সার্বিক তাকে সার্বিক সহযোগিতা করেছি।

Related Posts

en_USEnglish