এ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেবল সড়কের উন্নয়ন করে দুর্ঘটনা রোধ করা বা কমানো সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন সমন্বিত পদক্ষেপ আর রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। সেটি করা না গেলে সড়ক ব্যবস্থার আধুনিকায়ন হলেও দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব নয়।
বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের প্রকৃত সংখ্যা নিরূপণ করা সম্ভব হয় না। কয়েকটি সংগঠন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য সমন্বয় করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তবে গণমাধ্যমে সব দুর্ঘটনার তথ্য প্রকাশ না হওয়ায় অনেক দুর্ঘটনার তথ্য অন্তরালেই থেকে যায়।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) দেওয়া ঈদকেন্দ্রিক সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য মতে, দেশে ঈদের আগে-পরে ১৭ দিনে সব মিলিয়ে ২৮৬টি সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে। এসব দুর্ঘটনায় ৩২০ জন নিহত ও ৪৬২ জন আহত হয়েছেন। এসময়ে গড়ে প্রতিদিন ১৭টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। প্রতিদিন গড়ে ১৯ জন নিহত ও ২৭ জন আহত হয়েছেন।
গত বছরের (২০২৩) তুলনায় এবার ঈদুল ফিতরে গড় দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়েনি। তবে গড় নিহতের সংখ্যা প্রায় তিনজন বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এবার নিহত বেড়েছে গড়ে ১৮ দশমিক ১৫ শতাংশ।
সরকারি এ সংস্থাটির তথ্য বলছে, ঈদে ঢাকা বিভাগে ৫৮ দুর্ঘটনায় ৭৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৭ দুর্ঘটনায় ৪৭, রাজশাহী বিভাগে ৩৮ দুর্ঘটনায় ৪৩, খুলনায় ২৯ দুর্ঘটনায় ৩১, বরিশালে ২৫ দুর্ঘটনায় ৩৪, সিলেটে ১৪ দুর্ঘটনায় ১৭, রংপুরে ১৯ দুর্ঘটনায় ২০ ও ময়মনসিংহে ২৪ দুর্ঘটনায় ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের প্রতিবেদন বলছে, ঈদযাত্রা শুরুর দিন অর্থাৎ ৪ এপ্রিল থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা অর্থাৎ ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সড়ক-মহাসড়কে ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত ও ১৩৯৮ জন আহত হয়েছেন। একই সময়ে রেলপথে ১৮টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত ও ২১ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে দুটি দুর্ঘটনায় সাতজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন। সব মিলিয়ে সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বমোট ৪১৯টি দুর্ঘটনায় ৪৩৮ জন নিহত ও ১ হাজার ৪২৪ জন আহত হয়েছেন।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এবারের ঈদে লম্বা ছুটি থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ শতাংশ মানুষের বেশি যাতায়াত হয়েছে।