The highest temperature is in Chuadanga, people suffering from severe heat wave

image_pdfimage_print

চুয়াডাঙ্গায় ৯ দিনের ব্যবধানে আবারও তীব্র তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। পৌর এলাকার হাটকালুগঞ্জে অবস্থিত প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার আজ মঙ্গলবার বেলা তিনটায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমানের ভাষ্যমতে, চলতি মৌসুমে রেকর্ড করা এটিই দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এর আগে ৬ এপ্রিল জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জামিনুর বলেন, বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা ক্রমে বাড়তে থাকবে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ৩৬ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত মাঝারি তাপপ্রবাহ, ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ওপরের তাপমাত্রাকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়ে থাকে।

এদিকে তাপমাত্রার তীব্রতা বাড়ায় বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাইরে বের হচ্ছে না। অতিরিক্ত গরমে গা ঘেমে শরীরে বসে যাওয়ায় জ্বর, সর্দি, ডায়রিয়া, হিটস্ট্রোকসহ রোগবালাই বেড়ে চলেছে। শিশু ও বৃদ্ধদের প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। এই আবহাওয়ায় খেটে খাওয়া মানুষেরা চরম বিপাকে পড়েছেন।

বেলা সাড়ে তিনটার দিকে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর গ্রামে মিলন হোসেন, সেলিম হোসেন ও সাজেদুর রহমান নামে চার শ্রমিক পেঁপের বস্তা ট্রাক ভর্তি করছিলেন। তাঁরা পার্শ্ববর্তী লোকনাথপুর ও জয়নগর গ্রাম থেকে শ্রম বিক্রি করতে এসেছেন। চারজনই ঘেমেনেয়ে একাকার। তাপমাত্রার প্রসঙ্গ তুলতেই সাজেদুর বলেন, ‘আমাগের তো তাপমাত্রা মাপার যন্তর নেই। তাই কিচুই জানিনে। যন্তর থাকলিই–বা কী কত্তাম। তাপমাত্রার ভয় পালি হবে না। আমাগের শীতিই কি আর গরমই কি? কর্ম করেই খাতি হবে। কর্ম না কল্লি প্যাটে ভাত জোটপেনানে।’

সদর হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের পরামর্শক মো. আবুল হোসেন বলেন, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় শ্বাসকষ্ট ও হৃদ্‌রোগীর চাপ বেড়ে চলেছে। হিটস্ট্রোক থেকে রক্ষা পেতে অন্তত দুবার গোসল করা, খাবার স্যালাইন, সাধারণ পানিসহ তরল খাবার বেশি বেশি খাওয়া, চা-কফি-কোমল পানীয় এড়িয়ে চলা, ঘরের ভেতর বা ছায়াশীতল পরিবেশে অবস্থান করার পাশাপাশি জরুরি প্রয়োজনে ছাতা মাথায় বের হতে হবে।

হাটকালুগঞ্জের প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, মার্চ মাসের প্রথম দিন থেকে গ্রীষ্মকাল গণনা শুরু হয়। জেলায় চলতি বছরের মার্চ মাসের ৩১ দিনে গড়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর মধ্যে ৩০ মার্চ ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ২০ মার্চ ২২ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গত বছরের মার্চে গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এদিকে চলতি এপ্রিল মাসের প্রথম ১৬ দিনে জেলায় গড়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বছরের এপ্রিল মাসের প্রথম ১৬ দিনে গড়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

গত বছরের তুলনায় তাপমাত্রা এ বছর কম হলেও প্রচণ্ড গরম অনুভূত হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, চলতি মৌসুমে বাতাসের আর্দ্রতা বেশি হওয়ায় চরম গরম অনুভূত হচ্ছে।

 

Related Posts

en_USEnglish