নিজস্ব প্রতিবেদক :
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চর পলোয়ান গ্রামে সুপারি চুরির অপবাদ দিয়ে পিএসসি পরীক্ষার্থী শিশু শাওনকে (১০) পিলারে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। এ ঘটনায় নির্যাতনকারী ইমরান হোসেন (৫০)কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রোববার সকালে নির্যাতনকারী ইমরানকে ওই গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় এসআই মো. এরশাদ বাদী হয়ে শিশু আইনে মামলা করে ইমরানকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠান।
নির্যাতনের শিকার মোঃ শাওন ওই এলাকার মৃত মুনছুর আলীর ছেলে ও চর পলোয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিএসসি পরীক্ষার্থী। অভিযুক্ত ইমরান হোসেন একই এলাকার মৃত সানাউল্যাহ খানের ছেলে। শনিবার সকালে ইমরান শিশুটিকে মারধর করে কাঁধে সুপারীর ছড়া বসিয়ে ছবি তুলে চোর সম্মোধন করে তা ফেসবুকে প্রচার করে।
শিশুর পরিবার, এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রায়পুর ইউনিয়নের চর পলোয়ান গ্রামের মৃত মুনছুর মিয়ার পরিবারের সাথে একই এলাকার নুর মোহাম্মদ মিয়ার জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। নুর মোহাম্মদ নির্যাতিত শিশুটির ফুফা হন। শনিবার সকালে শাওন ওই তর্কিত জমি থেকে সুপারী পাড়তে গেলে সুপারী বাগানের ইজাড়াদার প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ইমরান হোসেন শিশু শাওনকে আটক করে মারধর শেষে সিমেন্টের পিলারের সাথে বেঁধে কাঁধে সুপারীর ছড়া বসিয়ে ছবি তুলে। এ সময় স্থানীয় যুবক খান মাহমুদ নামক ফেইসবুক আইডি থেকে শিশুটির নির্যাতনের ছবিটি ভাইরাল হয়ে যায়। খবর পেয়ে চর পলোয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবির পাটওয়ারী ঘটনাস্থলে গিয়ে শাওনকে উদ্ধার করেন।
এ ঘটনায় শিশুটির মা হোসনেয়ারা বেগম বলেন, আমার স্বামী মারা যাওয়ায় জোরপূর্বক নুর মোহাম্মদ মিয়ার পরিবার আমাদের সম্পত্তি জবরদখল করছেন। ওই জমির সুপারী গুলো ইমরানের কাছে ইজারা লাগিয়েছেন। শিশু সন্তান শাওন সুপারী চুরি করেনি, পকিল্পিতভাবে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে তাকে পিলারের সাথে বেঁধে নির্যাতন করা হয়। আমি সমাজের কাছে বিচার চাই।
অভিযুক্ত ইমরান বলেন, স্থানীয় নুর মোহাম্মদ এর কাছ থেকে সুপারী বাগান ইজাড়া নিয়েছি। সকালে বাগানে এসে দেখি শাওন সুপারী পেড়ে নিয়ে যাওয়ার সময় আটক করে হালকা পাতলা মার দেওয়া হয়েছে। সে চুরি করায় তার ছবি ফেসবুকে দেওয়া হয়েছে।
রায়পুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম আজিজুর রহামান মিয়া বলেন, ঘটনা জানতে পেরে শিশু নির্যাতনের অভিযোগে ইমরান হোসেনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।