লক্ষ্মীপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে শাওন নামে এক কলেজছাত্রকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে শাহাদাত হোসেন শাকিল নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
দণ্ডপ্রাপ্ত শাহাদাত লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের অভিরখিল গ্রামের মৃত আবু তাহেরের ছেলে। এছাড়া হত্যা মামলায় তিন নারীসহ আট আসামিকে খালাস দেন আদালত।
আজ সোমবার (৩১ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, দণ্ডপ্রাপ্ত শাহাদাত ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন। খালাসপ্রাপ্তরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
তারা হলেন- সোহেল পাটওয়ারী (৩৬), পরান পাটওয়ারী (৩১), পারভেজ পাটওয়ারী (৩৩), নুর আলম দুদী (৬১), নাজিম উদ্দিন (৪৯), তানিয়া আক্তার (২৬), ফেরদৌস বেগম (৩৭), সামছুর নাহার (৫৬)। এরা জামিনে মুক্ত ছিলেন।
ভিকটিম মো. শাওন (১৮) সদর উপজেলার বাঙাখাঁ ইউনিয়নের রাধাপুর গ্রামের তোফায়েল আহম্মদের ছেলে।
মামলার এজাহার এবং আদালত সূত্রে জানা গেছে, হত্যার শিকার শাওন লেখাপড়ার সুবাধে তার খালার বাড়ি লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের অভিরখিল গ্রামের আব্দুল হালিম মাস্টারের বাড়িতে থাকতেন।
অভিযুক্তদের সঙ্গে তার খালাদের জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। ২০১৬ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ঈদুল আজহার পরদিন দুপুরে অভিযুক্তরা লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে শাওনের খালাতো ভাই সালাহউদ্দিনসহ তাদের পরিবারের লোকজনের ওপর হামলা করেন।
এসময় শাওন এগিয়ে গেলে অভিযুক্তরা শাওনকে মারধর করেন। একপর্যায়ে শাহাদাত হোসেন শাকিল ধারালো অস্ত্র দিয়ে শাওনকে কুপিয়ে জখম করেন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় তিন নারীসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন শাওনের খালাতো ভাই সালাহউদ্দিন।
সদর থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ ময়নাল হোসেন খান ২০১৭ সালের ৩১ জানুয়ারি আদালতে মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। এতে মামলার ১০ নম্বর আসামি সাহাবুদ্দিনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আবেদন জানিয়ে বাকি নয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আদালত দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে একজনকে যাবজ্জীবন ও আটজনকে খালাস দেন।
এদিকে মামলার রায়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী সালাহউদ্দিন ও নিহত শাওনের বাবা তোফায়েল আহম্মদ।