লক্ষ্মীপুরে আবারও সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা

image_pdfimage_print

নিজস্ব প্রতিবেদক :
লক্ষ্মীপুরে পুলিশকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ঘর তল্লাশীর পর আবারও সাংবাদিককে জড়িয়ে বোনকে দিয়ে মামলা দিয়েছে ভূমিদস্যু আজাদ। গত (৮ নভেম্বর) সাংবাদিক রাকিব হোসেন রনিসহ ৯ জনকে আসামী করে মামলাটি দায়ের করে আজাদের বোন আনোয়ারা বেগম। আজ (১৩ নভেম্বর) সোমবার সাংবাদিক রনি আদালতে আত্মসমর্থন করে জামিনের জন্য আবেদন করেন। অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক মনছুর উদ্দিন জামিন মঞ্জুর করেন।
সাংবাদিক রাকিব হোসাইন রনি লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের শিল্পী কলোনী এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে। সে জাতীয় দৈনিক বণিক বার্তা পত্রিকার লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল (পত্রিকা) শীর্ষ সংবাদ ডটকম এর নির্বাহী সম্পাদক। ভূমিদস্যু আজাদ সোনালী কলোনী এলাকার মোহাম্মদ উল্যার ছেলে। সে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী এবং কিছু প্রভাবশালীর চত্র ছায়ায় এলাকায় সে ত্রাস সৃষ্টি করে আসছে।
এদিকে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে লক্ষ্মীপুরের সাংবাদিক মহল। লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাব ও জেলা রিপোটার্স ক্লাবসহ কয়েকটি সংগঠন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারে জোর দাবী জানান।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৮ নভেম্বর বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাংবাদিক রনি সহ অন্যান্য বিবাদীরা দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে মোহাম্মদ উল্ল্যার বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাংচুর, নগদ অর্থ লুটপাট ও হত্যার উদ্দেশ্যে পিটিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটায়।
মূল ঘটনা হলো, ওই দিন আজাদ নিজের এবং পরিবারের লোকজনের শরীরের জামাকাপড় ছিড়ে মিথ্যা নাটোক সাজিয়ে পুলিশ দিয়ে সাংবাদিকের বাড়ি তল্লাশিও চালায়। অথচ ওই সময় সাংবাদিক রনি পেশাগত দায়িত্ব পালনে ফোকাস বাংলা ও বৈশাখী টিভির ক্যামেরা সাংবাদিক কিশোর কুমার দত্তের সাথে অবস্থান করছিলেন। মামলার ৬নং আসামী প্রবাসী জহির এমন ঘটনার পূর্বেই ওমান চলে যান। এছাড়াও মামলার অন্যান্য আসামীরা এ সময় পূর্বে আজাদের দেওয়া অভিযোগের জবাব দিতে লক্ষ্মীপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে অবস্থান করছিলেন। এমন ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা যায়, জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে ভূমিদস্যু আজাদ পৌর শহরের সোনালী কলোনী এলাকায় জহির নামে এক প্রবাসীর ভাউন্ডারি দেওয়াল ভাংচুর, লুটপাট ও আহত করার ঘটনায় সাংবাদিক রনি তথ্য সংগ্রহ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আজাদ ওই সাংবাদিককে পরপর দু’টি মিথ্যা সাজানো মামলা দিয়ে সাংবাদিককে হয়রানি করছে।
সাংবাদিক রাকিব হোসাইন রনি বলেন, ওই সময় তথ্য সংগ্রহে সাংবাদিক কিশোরের সাথে অন্যত্র অবস্থান করছিলাম। মিথ্যা তথ্য দিয়ে পুলিশ এনে আজাদ আমার ঘর তল্লাশি চালায়। পরে বিষয়টি জানতে তদন্তকারী এএসআই মুকবুলের সাথে ফোন যোগাযোগ হলে তিনি জানান, বাড়িটি সাংবাদিকের কিনা তিনি তা জানেন না। তাছাড়া সাংবাদিক রনির বিরুদ্ধেও কোন অভিযোগ নেই। অথচ পরের দিন আমাকে জড়িয়েই হামলার ঘটনা সাজিয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের করানো হয়। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তপূর্বক বিচারের দাবী জানাই।
লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লোকমান হোসেন জানান, হামলার অভিযোগে এক মহিলা থানায় মামলা করেছেন। তবে এতে কোন সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করা হয়নি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লক্ষ্মীপুর জেলা রিপোটার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম জয় বলেন, সাংবাদিক ইসমাইল হোসেন জবুর পর এবার সাংবাদিক রনির বিরুদ্ধে পর পর দু’টি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
লক্ষ্মীপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি হোসাইন আহাম্মদ হেলাল বলেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা ও হয়রানি মূলক মামলা দায়ের করা হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় উদিয়মান সাংবাদিক রাকিব হোসাইন রনির বিরুদ্ধে মামলা করেছে একটি কু-চক্রী মহল। এমন ষড়যন্ত্রমূলক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। অভিলম্বে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবী জানান তিনি।

Related Posts

en_USEnglish