রাশিয়ার পরবর্তী টার্গেট কী জানালেন জেলেনস্কি

চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দেশ ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ চালাচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পরাশক্তি রাশিয়া। বিগত আট মাসের যুদ্ধে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে ইউক্রেন। এই সময়ে দেশটির পূর্ব ও দক্ষিণ অঞ্চল কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এরই মধ্যে দেশটির চারটি অঞ্চল ডোনেটস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসন- গণভোটের মাধ্যমে রাশিয়ার সঙ্গে একীভূত করে নিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

কিন্তু বর্তমানে এই অঞ্চলগুলো পুনরুদ্ধ জোর তৎপরতা চালাচ্ছে ইউক্রেন। এতে হামলার পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ। এরই অংশ হিসেবে সম্প্রতি রাজধানীর কিয়েভসহ বিভিন্ন শহরে ৮০টির বেশি মিসাইল হামলা চালিয়ে দেশটির বিদ্যুৎ খাতে বিপর্যয় নামিয়ে আনে রাশিয়া।

বর্তমানে কার্যত খুঁড়িয়ে চলা ইউক্রেনের শেষ ভরসা হাতের লাঠিটাও এবার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টায় রুশ বাহিনী। সামনে শীত। বরফে ঢেকে যাবে দেশটি। বিদ্যুৎ ছাড়া জীবনধারণ অসম্ভব। এ অবস্থায় পাওয়ার গ্রিডগুলোতে হামলা শুরু করেছে তারা। ইউক্রেনের ৪০ শতাংশ পাওয়ারগ্রিড ইতোমধ্যেই ধ্বংস হয়ে গেছে।

ধারণা করা যাচ্ছে, মস্কোর পরবর্তী নিশানা ইউক্রেনের একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প লাগোয়া জলাধার। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এমন অভিযোগ করেছেন। তিনি সতর্ক করেছেন, রাশিয়া যদি এই কাজ করে, তা বড়সড় বিপর্যয় ডেকে আনবে।

সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, নিপ্রো নদীতে মাইন ফেলেছে রুশ বাহিনী। তাদের পরবর্তী লক্ষ্য, নিপ্রো নদীর উপরে কাখোভকা ড্যাম। জলাধারটি রুশ নিয়ন্ত্রিত এলাকাতে রয়েছে। কিন্তু ক্রমশ সেদিকে এগিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। কাখোভকা ড্যাম মস্কোর হাত থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে।

জেলেনস্কির দাবি, এর জন্যই পাল্টা রণকৌশল নিয়েছে ক্রেমলিন। তারা উল্টো অভিযোগ করা শুরু করছে যে, কাখোভকা ড্যাম লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছে কিয়েভের সেনারা। জেলেনস্কি বলেন, এই জলাধার যদি কোনওভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে দেশের দক্ষিণ অংশে পানিসরবরাহ প্রায় বন্ধ হয়ে যাবে। জাপোরিঝঝিয়ায় ইউরোপের সর্ববৃহৎ পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিও পানির অভাবে স্থবির হয়ে যাবে।

জেলেনস্কির কথায়, “এই জলাধারে যে পরিমাণ পানি ধরে, তাতে এটি বিস্ফোরণে উড়িয়ে দেওয়া হলে খেরসন-সহ ৮০টি এলাকা পানি তলায় চলে যাবে। ভয়াবহ বন্যা দেখা দেবে। হাজার হাজার মানুষের চরম পরিণতি হবে।”

Related Posts

en_USEnglish