বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারকে খুনের নায়ক জিয়াউর রহমান। তার পুত্র তারেক রহমান টেমস নদীর পাশে বসে হুংকার দিয়েছেন ‘ভারতের কোনো পণ্য বাংলাদেশে বিক্রি করতে দেয়া হবে না।’ এটাই যদি বিএনপির লাইন হয়, তাহলে আমাদের স্মরণ করতে হবে, গত বছরের আগস্টে তার দলের প্রথমসারির ৩ জন নেতাকে সিঙ্গাপুরে ভারতের দুজন ‘অসুস্থ’ আমলার কাছে পাঠিয়েছিলেন কেন? তারাই-বা কী বলেছিলেন? সেটা এবার খুলে বলা যাক।
তারা বলেছিলেন, চলতি বছর জানুয়ারির নির্বাচনে ভারত সরকার যেন সর্বতোভাবে বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে সাহায্য করে। ওই দুজন আমলা এর উত্তরে তারেকের প্রতিনিধিদের বলে দিয়েছিলেন, আপনার বাবা জিয়া বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছেন। আর আপনার মা সামরিক কর্তৃপক্ষের সাহায্য নিয়ে হাজার হাজার হিন্দু-মুসলমানকে বাংলাদেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে সন্ত্রাসবাদী পাঠিয়ে তছনছ করে দিয়েছেন স্থিতিশীলতা। আপনি কি পারবেন লন্ডনে বসে ভারতের পণ্য বর্জন করতে? পারবেন না।
তারেক সাহেব, আপনি যে থ্রি-পিস স্যুট লন্ডনে পরছেন, তার কাপড় তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে। আপনি বহুগুণ দাম দিয়ে সেটি লন্ডনে বসে ক্রয় করেছেন।
আপনার বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন আদালতে বহু খুনের অভিযোগ রয়েছে। আপনি একবার আয়নার দিকে তাকিয়ে দেখুন, আপনি নিজে আপনার দেশের কী কী ক্ষতি করেছেন। আপনার সম্পর্কে আমাদের হাতে বহু তথ্য আছে। তার কিছুটা উল্লেখ করছি মাত্র।
বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে আপনি কোনো দায়িত্বশীল পদে ছিলেন না। কিন্তু বনানীর ‘হাওয়া ভবন’ থেকে ছায়া সরকার চালাতেন। দুর্নীতি ও অবৈধভাবে বিদেশে অর্থ পাচার ও চাঁদাবাজির অভিযোগে আপনার বিরুদ্ধে কমপক্ষে ১৫টি মামলা আছে।
২০১৪ সালে ইতিহাস বিকৃতি করেছিলেন আপনি। সেই বছর ২৬ মার্চ এক অনুষ্ঠানে আপনি দাবি করেছিলেন, আপনার বাবা জিয়াউর রহমানই বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি। এই দাবি তুলে আপনি একটা গোটা বইও লিখে ফেলেছেন। একাধিক মামলায় জামিন নিয়ে আপনি চিকিৎসার দোহাই দিয়ে লন্ডনে পালিয়ে যান। আপনার কথা বাংলাদেশের কেউ আর বিশ্বাস করে না।
ভারতের কাছে তথ্য-প্রমাণ আছে, চোরাকারবারিরা ব্যবসা করে আপনাকে কোটি কোটি টাকা পাঠায়। ভারতীয়রা মনে করেন যারা চোরাকারবার করে, তারাই ঢাকা থেকে আপনাকে টন টন পাউন্ড পাঠায়। সেই পাউন্ড দিয়ে আপনি মাসে মাসে লন্ডন থেকে বিবৃতি দেন।
আপনার যদি সৎ সাহস থাকে, তাহলে আপনার দল কেন নির্বাচন থেকে পালিয়ে গেল? নির্বাচনই তো গণতন্ত্রের হাতিয়ার। আপনি নির্বাচনে অংশ নিয়ে আপনার হিম্মত দেখাতেন। তা না করে এখন আপনি ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছেন। আপনি যতই চেষ্টা করুন, লন্ডনে বসে ভারতীয় পণ্য বয়কট করতে পারবেন না। কারণ, আপনার দেশের মানুষ তা চায় না।
তারেক সাহেব, আপনি ভুলে যাননি, আপনার মাতৃদেবী খালেদা জিয়ার আমলে বাংলাদেশে কীভাবে গণতন্ত্র ধ্বংস হয়েছে। তাই আবার বলছি, দয়া করে আগুন নিয়ে খেলবেন না। ১৮ কোটি বাঙালি তা চায় না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপনার দলবল যে ভারতীয় পণ্য বর্জনের প্রচার করছে, তাতে আপনার দল আরও অধঃপতনে যাচ্ছে। যত দ্রুত আপনি ও আপনার দল তা বুঝতে পারেন ততটাই ভালো।
ভারতের গোয়েন্দারা মনে করেন, পবিত্র রমজান মাসে আপনি ভারত থেকে সব ধরনের আদান-প্রদান বন্ধ করতে চাইছেন। কিন্তু বাংলাদেশে এখন একটি শক্তিশালী ও স্থিতিশীল সরকার আছে। তারা কিছুতেই চোরাকারবারিদের মদত দেবে না। দিল্লির সাউথ ব্লক এবং ঢাকার গণভবন একই সঙ্গে চোরাকারবার বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছে।