একজন নির্ভীক ও মানবিক জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ

image_pdfimage_print

আব্দুর রহমান ঈশান, নেত্রকোণা প্রতিনিধি:

অঞ্জনা খান মজলিশ নেত্রকোণায় জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেছেন এবছরের পহেলা জুলাই। চাঁদপুর থেকে নেত্রকোণায় দ্বিতীয় মেয়াদের জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেন। মাত্র এই পাঁচ মাসের মধ্যেই জেলার সর্বসাধারণের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন তাঁর অসাধারণ প্রতিভা ও কর্মদক্ষতায়।

সাধারণ, শ্রমজীবী, কর্মজীবী মানুষের কাছে প্রিয় মানুষ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। তিনি যেমন অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে দাঁড়িয়েছেন, তেমনি সাধারণ মানুষের কাছেও একজন জনপ্রিয় ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন।

যোগদানের পরপরই আমন মৌসুম শুরু হলো। সারাদেশে সার সংকট সৃষ্টি হলো। কৃষক সাধারণের মাঝে উৎকন্ঠা দেখা গেল। তিনি কঠোর হস্তে প্রত্যেকটি উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তাদের নিয়ে ইউনিয়নের গ্রাম পর্যায়ে সার বাজার মনিটরিং করেন।

বিশেষ করে ধান উদ্ধৃত জেলা হিসেবে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ ও তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়, শুধু চাহিদামাফিক নয় তার অতিরিক্ত সার বরাদ্দ এনেছেন নেত্রকোনায়। বর্তমানে জেলায় চাহিদার চেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে। উৎপাদনও হচ্ছে অধিক। এটা এই জেলা প্রশাসক এর অন্যতম সফলতা।

শুধু তাই নয়, নেত্রকোণার সীমান্ত এলাকার সোমেশ্বরী নদী ও মহাদেও নদের ইজারাদারদের কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে থামিয়েছেন অবৈধ বালু ও পাথর উত্তোলন, করেছেন জরিমানা ও ড্রেজার বিনষ্ট এমনকি বাতিল করেছেন ইজারাও।

তাঁর নেতৃত্বে বিগত পাঁচ মাসে গ্রাম্য আদালতের মাধ্যমে সারাদেশের সালিশ মিমাংসায় প্রথম হয় নেত্রকোণা জেলা। এটা অন্যরকম দৃষ্টান্ত। তিনি জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনেও অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেন।

কলমাকান্দা সীমান্তের রাস্তা দীর্ঘ পাঁচ বছর যাবত ভুমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত নানা জটিলতায় ছিলো, তিনি যোগদানের পরপরই এই জটিলতা নিরসন করে কয়েক কোটি টাকা রাজস্ব সরকারকে ফেরৎ দিয়ে সমাধান করেছেন দীর্ঘদিনের সীমান্তবাসীর সমস্যা।

এছাড়াও প্রতি বুধবার সারা জেলার মানুষ আশায় থাকে, কখন দেখা হবে জেলা প্রশাসকের সাথে। প্রতি বুধবার গণশুনানি হয়, পারিবারিক ও ব্যক্তি সমস্যা গুলো যখন আইনের সাহায্যে বা অন্য কোন উপায়ে সমাধান করতে পারেন না, সেই অব্যক্ত কথাগুলো নিয়ে গণ শুনানিতে আসেন একজন ভুক্তভোগী। আর তাৎক্ষণিক সমাধান করে দেন তিনি।

গত ২৯ জন ২০২২ থেকে ১৬ নভেম্বর ২০২২ পর্যন্ত মোট ২৭৯টি অভিযোগ নিষ্পত্তি করেছেন। বিভিন্ন বিষয়ের অভিযোগ ৬৭টি, আর্থিক সহযোগিতা ও অনুদান ৮৮টি এবং অনান্য ১২৪ টি। গণশুনানিতে অংশ নিয়ে অতি অল্প সময়ে সমাধান পেয়ে এই অভাব অভিযোগের মানুষগুলো অত্যান্ত আনন্দিত এবং সুখী জীবন যাপন করছে।এনিয়ে জেলাজুড়ে সারা পড়ে গেছে মানবিক জেলা প্রশাসক হিসেবে। দীর্ঘদিনেও যাদের নিষ্পত্তি হয়নি সমস্যা, তাদের সমস্যার সমাধান কোন শুনানিতে অংশগ্রহণ করে পেয়েছেন এমন অনেক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন তাদের এই অভিব্যক্ত।

সাহসী পদক্ষেপের জন্য ম্যাকিয়াভেলির ভাষ্য অনুযায়ী তিনি একজন নির্ভীক, বলিষ্ঠ এবং বুদ্ধিমান প্রশাসক। আমরা সর্বোপরি মানবিক ও নির্ভীক এই সাহসী মানুষটির সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।

Related Posts

en_USEnglish