আইএমএফ’র ঋণ পেতে আরও শর্ত বাস্তবায়ন করবে সরকার

image_pdfimage_print

ডলারের সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) আরও কিছু শর্ত মানতে যাচ্ছে সরকার।

এর মধ্যে ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি থাকছে। বেসরকারি খাতে জ্বালানি আমদানির অনুমোদন, খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়টিও এতে আছে।

এছাড়া জ্বালানি পণ্যসহ আমদানি পণ্যের দাম ব্যবহারভিত্তিক করা এবং কর জিডিপি অনুপাত বাড়াতে দীর্ঘমেয়াদি একটি পরিকল্পনা তৈরি করা হবে। এসব শর্ত বাস্তবায়নের ব্যাপারে ইতোমধ্যে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ব্যাংক খাতে আইএমএফ বড় আকারের সংস্কারের শর্ত দিয়েছে। তবে সরকার থেকে এখনই এ ব্যাপারে বড় কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। তবে সীমিত পর্যায়ের সংস্কারের প্রক্রিয়া শুরু করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, বৈশ্বিক মন্দা ও দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে সৃষ্ট নেতিবাচক প্রভাব এবং বৈদেশিক মুদ্রার সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ আইএমএফ-এর কাছে দুটি খাতে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চেয়েছে। এ ঋণের ব্যাপারে আলোচনা করতে ২৬ অক্টোবর থেকে ৯ নভেম্বর আইএমএফ-এর মিশন বাংলাদেশ সফর করেছে। ওই সময়ে তারা সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করে বেশকিছু শর্ত আরোপ করেছে। এর মধ্যে বেশকিছু শর্ত সরকার ঋণের আলোচনা শুরুর আগেই বাস্তবায়ন করেছে। কেননা আইএমএফ-এর ঋণের প্রধান শর্তই হচ্ছে ভর্তুকি কমানো। ভর্তুকি কমাতে সরকার গত আগস্টেই জ্বালানি তেল, গ্যাস ও সারের দাম বাড়িয়েছে।

আইএমএফ-এর সঙ্গে ঋণ আলোচনা শুরু হলে আবার তারা এসব পণ্যের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করে। কিন্তু সরকারপক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এগুলোর দাম একদফা বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এখন আর বাড়ানো সম্ভব নয়। তবে আইএমএফ বিদ্যুতের দাম বাড়াতেও বলেছিল। এর অংশ হিসাবে ইতোমধ্যে পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। এখন খুচরা বা ভোক্তা পর্যায়ে বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে। ১২ শতাংশ দাম বাড়তে পারে বলে জানা গেছে। এটি বাড়ানো হলে আইএমএফ-এর বড় একটি শর্ত বাস্তবায়ন হবে।

সংস্থাটির আরও একটি শর্ত ছিল জ্বালানি পণ্য আমদানির সুযোগ উন্মুক্ত করে দেওয়া। বর্তমানে জ্বালানির বড় অংশই সরকার আমদানি করে। সীমিত পর্যায়ে কিছু এলএনজি বেসরকারি খাতে আমদানি হয়। আইএমএফ চাচ্ছে, জ্বালানি পণ্যের মধ্যে জ্বালানি তেল, গ্যাস বেসরকারি খাতেও আমদানির সুযোগ দেওয়া হোক। এসব বিষয়েও সরকার থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। তবে এ ব্যাপারে একটি নীতি করে বেসরকারি খাতে জ্বালানি পণ্য উন্মুক্ত করা হবে। আইএমএফ শর্ত অনুযায়ী আমদানি পণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়েও একটি নীতিমালা করা হবে। কোন জ্বালানির দাম কত বাড়লে দেশের বাজারে কোন খাতে এর কী ধরনের প্রভাব পড়বে, তা সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে। এ বিষয়ে ভারতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

Related Posts

en_USEnglish