মইনুল আবেদীন খান,বরগুনা প্রতিনিধিঃ
যৌতুকের টাকা না দেওয়াই স্ত্রী মেহেরুন্নেছাকে মারধর করেছে স্বামী শাজাহান মৃধা। ঘটনাটি ঘটেছে বরগুনা সদর উপজেলার ৬ নং বুড়িশ্চর ইউনিয়নের পুরাকাটা গ্রামে। এতে মেহেরুন্নেছা বাদি হয়ে চারজনের নামে বরগুনায় সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় তিন ও চার নাম্বার যে আসামি করা হয়েছে তারা ২ জন এই মারামারির সাথে যুক্ত ছিলেন না বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। তারা বলেন পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ইউনুছ হাওলাদার ও জহিরুলকে আসামি করা হয়েছে।
সূত্রে জানা যায়, ১৫ আগস্ট ২০২১ সালে মেহেরুন্নেছা সাথে আনুষ্ঠানিক ভাবে শাজাহান মৃধার দ্বিতীয় বিবাহ হয়। বিবাহের পর থেকেই বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকদের টাকা আনার জন্য শাজাহান মৃধা বিভিন্ন কারণে-অকারণে শারীরিক মানুষিক এভাবে নির্যাতন করে আসছে। আপায় উপায় না পেয়ে বাবার বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা এনে দেয় মেহেরুন্নেছা। সেই টাকা খরচের পরে আবার মারধর শুরু করে আরো দুই লক্ষ টাকা বাবার বাড়ি থেকে নিয়ে আসতে বলে।
এ নিয়ে এলাকার চেয়ারম্যান ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সালিশি করে মীমাংসা করেও দেয়। পরে গত ২৫ সেপ্টেম্বর সকাল ১০ টার দিকে শাহজাহান মৃধা বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল যোগে কেনাকাটা করার জন্য বরগুনা শহরে রওনা হলে নাপিতখালী হানিফ মিয়ার বাড়ির উত্তর পার্শ্বে রাস্তার উপরে মোটরসাইকেল থামিয়ে শাজাহান মৃধা ও তার ছেলে রবিউল মৃধাসহ পাঁচ ছয় জনে মিলে এলোপাথাড়ি ভাবে মেহেরুন্নেছাকে মারধর করে। তার ডাক চিৎকারের স্থানীয় ছুটে আসলে সকলে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় তাকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। মেহেরুন্নেছা সুস্থ হয়ে ৩ অক্টোবর সোমবার ৪ জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। আসামিরা হলে শাজাহান মৃধা তার ছেলে রবিউল মৃধা, প্রতিবেশী ইউনুছ হাওলার ও জহিরুল।
এ বিষয়ে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।এবং তারা বলেছেন,ইউনুছ ও জহিরুল মারামারির সাথে। তাদের কোন সম্পৃক্ততা নেই এমন কি মেহেরুন্নেছাকে তারা কখনো দেখেওনি। স্বামী, স্ত্রীর যৌতুক নিয়ে মারামারি সেখানে প্রতিবেশীদেরকে আসামি করায় এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি আমরা। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করছি সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদেরকে আইনের আওতায় আনা হোক। আর এর সাথে যারা জড়িত নয় তাদেরকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক।
এ ব্যাপারে বগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মেহেদী হাসান বলেন, যৌতুক মামলা সাধারণত স্বামীর বিরুদ্ধেই হয়। অন্যদেরকে অহেতুক ভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। তা ছাড়া প্রতিবেশীকে কেন জড়ানো হয়েছে বিষয়টা তদন্ত করে দেখা হবে। যদি তারা এর সাথে জড়িত না থাকে, তাদেরকে এই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।