সাংবাদিকদের মোটরসাইকেল ব্যবহারে ইসির ‘নিষেধাজ্ঞা’

ঢাকা: আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সাংবাদিক নীতিমালা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এতে সাংবাদিকরা যাতে মোটরসাইকেল ব্যবহার করে সংবাদ সংগ্রহ করতে না পারেন, সে ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করা হয়েছে।

নীতিমালায় ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে ছবি তোলা, ভিডিও করা এবং তথ্য সংগ্রহ করতে পারার কথা বলা আছে। তবে একসঙ্গে একাধিক সাংবাদিক একই ভোটকেন্দ্রের একই ভোটকক্ষে একসঙ্গে প্রবেশ করতে পারবেন না। এমনকি ভোটকক্ষ থেকে সরাসরি সম্প্রচার বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সরাসির প্রচার করা যাবে না।

নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব (জনসংযোগ শাখা) এসএম আসাদুজ্জামানের ২১ ডিসেম্বরের স্বাক্ষরে জারি করা ওই নীতিমালায় সাংবাদিক এক ডজনের বেশি দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যা অমান্য করলে বা ব্যত্যয় ঘটলে সংশ্লিষ্ট সংবাদ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আইন, বিধি ও কোড অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলা হয়েছে নীতিমালায়।

নীতিমালাটি ইতিমধ্যে সংসদ নির্বাচনের সব রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে- সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ভোটগ্রহণের দিনসহ বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকরা যাতে সহজে নির্বিঘ্নে নির্বাচনী সংবাদ সংগ্রহ করতে পারেন সেজন্য সহযোগিতা দেওয়ার প্রয়োজন আছে, তবে তা অবশ্যই নির্বাচনের সময়, ভোটগ্রহণ ও ভোট গণনার সময় প্রযোজ্য বিধি নিষেধ মেনে করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের অনুমোদিত ব্যক্তি ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন। এজন্য ভোটকেন্দ্রের সংবাদ সংগ্রহের জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে সাংবাদিকদের বিশেষ কার্ড সরবরাহ করা হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তারা তাদের সংশ্লিষ্ট এলাকার কার্ড দেবেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাকে সংশ্লিষ্ট উপজেলার সাংবাদিকদের কার্ড দেওয়ার ক্ষমতা দিতে পারবেন। এছাড়া ঢাকা থেকে যেসব সাংবাদিক দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনী সংবাদ সংগ্রহ করতে যাবেন, তাদের কার্ড নির্বাচন কমিশন থেকে দেওয়া হবে। সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকরা নির্বাচন কমিশন অনুমোদিত এবং অনুমোদন সূচক স্টিকারযুক্ত যানবাহন ব্যবহার করতে পারবেন। মোটরসাইকেল ব্যবহার করার জন্য কোনো স্টিকার ইস্যু করা হবে না।

সাংবাদিকদের মোটরসাইকেলের স্টিকার না দেওয়ার বিষয়টি এবারই প্রথম। তবে অন্য যানবাহন ব্যবহার করলে স্টিকার দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন ভোটের সময় মোটরসাইকেল চালনার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এক্ষেত্রে ২৯ ডিসেম্বর মধ্যরাত থেকে ২ জানুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত ক্ষেত্রবিশেষ আরো অধিককাল মোটরসাইকেল বা অনুরূপ যানচলাচলের নিষেধ থাকবে। ফলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের আগে পরে মোট ৪ দিন সাংবাদিকরা মোটরসাইকেল ব্যবহার করতে পারছেন না।

ভোটের দিন ঢাকা থেকে গণমাধ্যগুলোর প্রতিনিধিরা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সংশ্লিষ্ট করেসপন্ডেন্টদের নিয়ে মোটরসাইকেলে করেই বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রের খবর সংগ্রহ করে থাকে।

নীতিমালায় আরো বলা হয়েছে-
# নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রদত্ত বৈধ কার্ডধারী সাংবাদিক সরাসরি ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন।

# ভোট কেন্দ্রে প্রবেশের পর প্রিজাইডিং অফিসারকে অবহিত করে ভোটগ্রহণ কার্যক্রমের তথ্য সংগ্রহ, ছবি তোলা এবং ভিডিও ধারণ করতে পারবেন। তবে কোনো ক্রমেই গোপন কক্ষের ছবি সংগ্রহ কিংবা ধারণ করতে পারবেন না।

# একই সঙ্গে একাধিক মিডিয়ার সাংবাদিক একই ভোট কক্ষে প্রবেশ করতে পারবেন না।

# ভোট কক্ষের ভেতর হতে কোনোভাবেই সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না।

# ভোট কেন্দ্রের ভেতর হতে সরাসরি সম্প্রচার করতে হলে ভোট কক্ষ হতে নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে তা করতে হবে।

# কোনোক্রমেই ভোটগ্রহণ কার্যক্রমে বাধার সৃষ্টি করা যাবে না।

# সাংবাদিকগণ ভোট গণনা কক্ষে গণনা দেখতে পারবেন, তবে সরাসরি সম্প্রচার করতে পারবেন না।

# ভোট কক্ষ হতে ফেসবুকসহ কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি প্রচার করা যাবে না।

# ভোট কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ কার্যক্রম ব্যাহত হয় এমন সব কাজ থেকে বিরত থাকবেন।

# ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকরা প্রিজাইডিং অফিসারের আইনানুগ নির্দেশ মেনে চলবেন।

# নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না।

# কোনো প্রকার নির্বাচনী উপকরণ স্পর্শ বা অপসারণ করতে পারবেন না।

# নির্বাচনে সংবাদ সংগ্রহের সময় প্রার্থী বা কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে যে কোনো ধরনের প্রচারণা বা বিদ্বেষমূলক প্রচারণা হতে বিরত থাকবেন।

# নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচনী আইন ও বিধিবিধান মেনে চলবেন।

নীতিমালা দেখতে ক্লিক করুন

Journalist_Guide_Line20181222215718




লক্ষ্মীপুর-০৪, রব-মান্নার মর্যাদার লড়াই

লক্ষ্মীপুর:একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি-কমলনগর) আসনে দুই হেভিয়েট প্রার্থী রব ও মান্নান নির্বাচনে লড়ছে। এদের একজন বিএনপির শরিক ঐক্যফ্রন্টের নেতা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব। অপরজন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিক যুক্তফ্রন্ট নেতা ও বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান। এরা লড়ছেন নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে।
জেলার মেঘনা উপকূলীয় এ আসনে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল্লাহ নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগে, ২০০১ ও ০৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন বিএনপির প্রার্থী আশরাফ উদ্দিন নিজান। জোটগত কারণে এদের দু’জনই এবার দলীয় চূড়ান্ত মনোনয়ন থেকে বাদ পড়েছেন। এখন ভোটের মাঠে লড়ছেন ঐক্যফ্রন্ট ও যুক্তফ্রন্টের দুই নেতা। তারা দু’জনই সাবেক মন্ত্রী ছিলেন।
আ স ম রব লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি-কমলনগর) আসন থেকে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে মেজর (অব.) আবদুল মান্নান এ আসনে বিকল্পধারার কুলা প্রতীকে নির্বাচন করে হেরেছেন। ওই নির্বাচনে রব ভোট করেছেন জেএসডি থেকে ‘তারা’ প্রতীকে। তাদের দু’জনকেই পরাজিত করে বিএনপি প্রার্থী আশরাফ উদ্দিন নিজান নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগে, মেজর মান্নান ১৯৯১ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে ঢাকা-১০ আসন থেকে নির্বাচিত হন।
বিগত সব কয়েকটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল পর্যাবেক্ষণ করলে দেখা যায়, এখানে বিএনপির শক্ত অবস্থান। যে কারণে এটি বিএনপির ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত। এখানকার ভোটাররা প্রার্থী নয়; ধানের শীষ প্রতীক দেখে ভোট দেয়। তবে ব্যক্তি রবেরও নিজস্ব ভোট ব্যাংক রয়েছে। জেএসডি ও বিএনপি জোটের ভোটে ঐক্যফ্রন্টের এ নেতা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
এদিকে, মেজর (অব.) আবদুল মান্নানের জনপ্রিয়তা আছে। তিনি নিজ উদ্যোগে মেঘনা নদী ভাঙনরোধে উদ্যোগ নিয়েছেন। কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করেছেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দান অনুদান দিয়ে বিগত সময় বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন। তবে এখানে তার দলীয় ভিত মজবুত নয়। তাকে পুরোপুরি নির্ভর করতে হচ্ছে আওয়ামী লীগের ওপর।
নৌকা প্রতীকের এ প্রার্থী জানান, স্বাধীনতার পর থেকে তিনটি রাজনৈতিক দল পালাক্রমে সরকার গঠন করেছে। সব সরকারের কর্মকান্ড বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরপর দুই মেয়াদে দেশে যে উন্নয়ন হয়েছে তা বাংলাদেশে ইতিহাসে প্রথম। তাই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়তে তারই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনাকে আবারও সরকার প্রধান করতে হবে।
নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হলে রামগতি ও কমলনগরের নদী ভাঙনরোধে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। অস্বচ্ছল পরিবারগুলোর তালিকা করে প্রতিটি পরিবার থেকে অন্তত একজনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। কৃষকদের জন্য সার-বীজের সহজ প্রাপ্তি ও মৎস্যজীবীদের জন্য মৎস্য সংরক্ষণ ও বিপণন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
আসম আবদুর রব বলেন, মা-বোনেরা যেন ঘর থেকে বেরিয়ে নিরাপদ থাকতে পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। ভোটের দিন গণজাগরণ সৃষ্টির মাধ্যমে ভোট বিপ্লব ঘটাতে হবে।
রামগতি উপজেলার আটটি ও কমলনগর উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত লক্ষ্মীপুর-৪। এ আসনে বর্তমান ভোটার তিন লাখ ১০ হাজার ৮৪৭ জন। গত সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলো দুই লাখ ৬৬ হাজার ৭২৬ জন। সে হিসেবে এ আসনে গত পাঁচ বছরে ভোটার বেড়েছে ৪৪ হাজার ১২১ জন।




কমলনগর মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্পে “শিখন কেন্দ্রের পাঠদান” কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন।

আমজাদ হোসেন আমু, লক্ষ্মীপুর
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে নিরক্ষরতা দুর করার লক্ষে মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্পে শিখন পাঠদান কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করা হয়।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার উত্তর পশ্চিম চর জাংগালিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে স্কুল গুলোর আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম চালু করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সহকারী পরিচালক উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো জেলা শাখার, বিদ্যুৎ রায় বর্মন, জেমস পরিচালক আসাদুজ্জামান চৌধুরী, প্রেস ক্লাব সাধারন সম্পাদক মো. ওয়াজি উল্যাহ জুয়েল, সাংবাদিক মিজান মানিক, স্কুল সভাপতি আবুল কালাম, সমন্বয়ক, রাশেদুল আমিন সহ প্রমুখ।
এসময় জেমস পরিচালক বলেন, কমলনগরে (জেমস) এনজিও কতৃক নারী-পুরুষের জন্য তিন’শ স্কুল স্থাপন করা হয়েছে। এসব স্কুলে এ অঞ্চলে যাদের নূন্যতম অক্ষর জ্ঞান নেই। তাদের শিক্ষাও পাঠদান করা হবে। কোন লোক যেন অক্ষর জ্ঞানহীন না থাকে। তার জন্য সর্বচ্চো কাজ করবে জেমস। বই দেওযার মাধ্যমে শুভ উদ্বোধন করা হয়।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, প্রতিটি স্কুলে সুপারভাইজার, শিক্ষক বৃন্দ।
আযোজনে – জেন্ডার এন্ড এ্যানভারমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সোসাইটি ( জেমস্)




যা আছে বিএনপির নির্বাচনী ইশতেহারে

ঢাকা: নাগরিকের শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ মৌলিক অধিকারকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির ইশতেহারে। তরুণ ও যুবকদের চাকরি নিশ্চিত করাসহ তাদের উচ্চশিক্ষার পথ সুগম ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে দলটি।

ক্ষমতায় গেলে শিক্ষাখাতে জিডিপির অর্থের ৫ শতাংশ এবং স্বাস্থ্য খাতেও ৫ শতাংশ ব্যয় করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিএনপি। পররাষ্ট্রনীতিতে অন্য দেশের জন্য হুমকি হয়, এমন কাজের সুযোগ না দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে দলটি। এছাড়াও সংবিধান সংশোধন করে নিম্ন আদালতের নিয়ন্ত্রণ রাষ্ট্রপতির হাত থেকে সুপ্রিম কোর্টের হাতে ন্যস্ত করারও কথা বলা হয়েছে ইশতেহারে।

মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় রাজধানীর গুলশানে হোটেল লেকশোরে ইশতেহার ঘোষণা করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দলের চেয়ারপারসন কারাবন্দি খালেদা জিয়ার পক্ষে তিনি ইশতেহার পাঠ করেন।

ইশতেহার ঘোষণার সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মইন খান, নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

ইশতেহারে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন, বিচার বিভাগ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতাসহ ১৯ দফায় গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। ইশতেহারে গুরুত্বারোপ করা ১৯ দফার অন্যান্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে—ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, অর্থনীতি, মুক্তিযোদ্ধ, যুব নারী ও শিশু, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান, জ্বালানি, তথ্য ও প্রযুক্তি, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি, বৈদেশিক ও প্রবাসী কল্যাণ, কৃষি ও শিল্প, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা, প্রতিরক্ষা ও পুলিশ, আবাসন, পেনশন ফান্ড ও রেশনিং ফান্ড প্রতিষ্ঠা, পরিবেশ, পররাষ্ট্র এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়।

‘ভিশন ২০৩০’-এর আলোকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার তৈরি করেছে বিএনপি। ‘এগিয়ে যাবো একসাথে, ভোট দেবো ধানের শীষে’- স্লোগানকে সামনে রেখে নির্বাচন উপলক্ষে দলটির ইশতেহার তৈরি করা হয়েছে। বিএনপির সম্পূর্ণ ইশতেহার তুলে ধরা হলো।

গণতন্ত্র ও আইনের শাসন
১. বিএনপি নির্বাচনের দিনের গণতন্ত্রকে নিত্যদিনের অনুশীলনে পরিণত করবে।

২. সংবিধানে প্রয়োজনীয় সংশোধনীর মাধ্যমে প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী ক্ষমতার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা হবে।

৩. একাধারে পরপর দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী না থাকার বিধান করা হবে।

৪. মন্ত্রিসভাসহ প্রধানমন্ত্রীকে সংসদের কাছে দায়বদ্ধ থাকার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করা হবে।

৫. বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার নিয়োগ দেওয়া হবে।

৬. সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে শর্তসাপেক্ষে সংসদ সদস্যদের স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার নিশ্চিত করা হবে।

৭. বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত করে ‘জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ’ প্রতিষ্ঠা করা হবে। সংবিধানে ‘গণভোট’ ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন করে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃস্থাপন করা হবে।

৮. সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হবে।

৯. জাতীয় সংসদকে সকল জাতীয় কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করা হবে।

১০. নির্বাচন পরিচালনার জন্য একটি সরকার ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে যাতে ক্ষমতা কুক্ষিগতকরণের পুনরাবৃত্তি না ঘটে। এই তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য অতীতের সমস্যার আলোকে নিরূপণ করা হবে এবং এই লক্ষ্যে সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে স্বচ্ছ আলাপ-আলোচনা করা হবে।

১১. প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতির বিপরীতে ভবিষ্যতমুখী এক নতুন ধারার রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করার জন্য নতুন এক সামাজিক চুক্তিতে পৌঁছাতে একটি জাতীয় কমিশন গঠন করা হবে। এই কমিশনের সদস্য থাকবেন সংসদে সরকারি দলের নেতা, বিরোধী দলের নেতা এবং সর্বজনশ্রদ্ধেয় জাতীয় ব্যক্তিত্ব।

১২. একদলীয় শাসনের পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে তা নিশ্চিত করা হবে।

১৩. জাতীয় নেতৃবৃন্দের আপত্তিকর সমালোচনা রোধে সহিষ্ণুতার সংস্কৃতি উৎসাহিত করা হবে।

১৪. ব্যক্তির বিশ্বাস-অবিশ্বাস এবং দলীয় আনুগত্যকে বিবেচনায় না নিয়ে কেবলমাত্র সততা, দক্ষতা, মেধা, যোগ্যতা, দেশ-প্রেম ও বিচার ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে রাষ্ট্রের প্রশাসনযন্ত্র, পুলিশ এবং প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যকারিতা নিশ্চিত করা হবে।

১৫. প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য সংবিধান অনুযায়ী ‘ন্যায়পাল’ নিয়োগ দেওয়া হবে।

১৬. র‌্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। র‌্যাবের বর্তমান কাঠামো পরিবর্তন করে অতিরিক্ত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন গঠন করা হবে। এই ব্যাটেলিয়ন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকবে। রাষ্ট্রের সকল সামরিক ও বেসামরিক প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা স্ব স্ব চার্টার অনুযায়ী পরিচালিত হবে।

১৭. চাকরি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে সকল ধরনের তদবির ও চাঁদাবাজি নিষিদ্ধ এবং দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। দেশরক্ষা, পুলিশ ও আনসার ব্যতীত শর্তসাপেক্ষে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোনো সময়সীমা থাকবে না।

১৮. বিডিআর হত্যাকাণ্ডের এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি সংক্রান্ত সকল অনুসন্ধান রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে এবং অধিকতর তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

১৯. রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর চলাচলের সময় যেন সাধারণ মানুষের কোনো ভোগান্তি না হয় সে জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

২০. প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, এমপি এবং উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব প্রতিবছর প্রকাশ করা হবে।

২১. সড়ক পথে চলাচলে বিরাজমান বিশৃঙ্খলার অবসান ঘটানো হবে এবং সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাসে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

২২. দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সর্বাত্মক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

বিচার বিভাগ
১. সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে নিম্ন আদালতের নিয়ন্ত্রণ রাষ্ট্রপতির হাত থেকে সুপ্রিম কোর্টের হাতে ন্যস্ত করা হবে।

২. মামলার জট দূর করার জন্য যোগ্য বিচারক নিয়োগ দেওয়া হবে এবং এর জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে।

৩. বর্তমান বিচার ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য একটি জুডিশিয়াল কমিশন গঠন করা হবে।

মতপ্রকাশের স্বাধীনতা
১. মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে। সরকারের সঙ্গে কোনো বিষয়ে মতভিন্নতা থাকলেও কারো কণ্ঠরোধ করা হবে না। অনলাইন মনিটরিং তুলে দিয়ে জনগণকে অবাধে কথা বলার ও মতপ্রকাশের সুযোগ দেওয়া হবে।

২. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টসহ সকল প্রকার কালা-কানুন বাতিল করা হবে। তথ্য অধিকার আইনে তথ্য প্রাপ্তি দ্রুততর করার জন্য বিদ্যমান বাধাসমূহ পুরোপুরি দূর করা হবে।

৩. মানুষের জীবনের মূল্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, খুন এবং অমানবিক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অবসান ঘটানো হবে।

৪. বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ বাতিল করা হবে।

৫. রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের যুক্তিসংগত সমালোচনার অবাধ অধিকার থাকবে।

ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ
১. দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের দায়িত্ব থাকবে নির্বাচিত স্থানীয় সরকারের হাতে।

২. বর্তমানে কমবেশি ৫ শতাংশ বাজেট স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে ব্যয় এর পরিবর্তে প্রতিবছর ৫ শতাংশ হারে বাড়িয়ে পাঁচ বছরে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ বাজেট স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে ব্যয়ের বিধান করা হবে।

৩. জেলা পরিষদ জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবে।

৪. পৌর এলাকাগুলোতে সব সেবা সংস্থা মেয়রের অধীনে রেখে সিটি গভর্নমেন্ট চালু করা হবে।

৫. জনকল্যাণে প্রশাসনিক কাঠামো পুনঃবিন্যাস করা এবং স্থানীয় সরকারের স্তর নির্ধারনের লক্ষ্যে কমিশন গঠন করা হবে।

অর্থনীতি
১. জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ১১ শতাংশে উন্নীত করা হবে।

২. রফতানি প্রবৃদ্ধির হার তিন গুণ বাড়ানো হবে। রফতানি পণ্যের বহুমুখীকরণ করা হবে।

৩. শেয়ার মার্কেট, ব্যাংক এবং সামাজিক নিরাপত্তা তহবিলের অর্থ লুটের তিক্ত অভিজ্ঞতার আলোকে ভবিষ্যতে যাতে কেউ এমন দুর্নীতি-অনাচার করতে না পারে সেই লক্ষ্যে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংক পরিচালনা বোর্ডে যোগ্য, সৎ ও দক্ষ ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়া হবে। ব্যাংক কার্যক্রম পরিচালনায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করা হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং ডিভিশন বিলুপ্ত করে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকসমূহ পরিচালনা ও তদারকির ভার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে ন্যস্ত করা হবে।

৪. বর্তমানে চলমান কোনও উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ করা হবে না। তবে মেগা প্রকল্পে ব্যয়ের আড়ালে সংগঠিত দুর্নীতি নিরীক্ষা করে দেখা হবে এবং এজন্য দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

৫. বর্তমান সরকারের শেষ দুই বছরে তড়িঘড়ি করে নেওয়া প্রকল্পগুলো পুনঃবিবেচনা করার জন্য কমিটি গঠন করা হবে।

৬. দেশে কর্মরত সকল বিদেশিদের ওয়ার্ক পারমিটের আওতায় এনে মুদ্রা পাচার রোধ করা হবে এবং তাদেরকে করের আওতায় আনা হবে।

৭. একটি টাস্কফোর্স রেন্টাল পাওয়ার প্রজেক্টের উচ্চ ব্যয়ের কারণ তদন্ত করে দেখবে।

মুক্তিযোদ্ধা
১. সকল মুক্তিযোদ্ধাকে ‘রাষ্ট্রের সম্মানিত নাগরিক’ হিসেবে ঘোষণা করা এবং মুক্তিযোদ্ধা তালিকা প্রণয়নের নামে দুর্নীতির অবসান ঘটানো হবে। মূল্যস্ফীতির নিরিখে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ভাতা বৃদ্ধি করা হবে।

২. দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষা ও মুক্তিযুদ্ধকালীন বধ্যভূমি ও গণকবর চিহ্নিত করে সেসব স্থানে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হবে। রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে নিবিড় জরিপের ভিত্তিতে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের একটি সঠিক তালিকা প্রণয়ন করা হবে এবং তাদের যথাযথ মর্যাদা ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান করা হবে।

যুব, নারী ও শিশু
১. জাতীয় উন্নয়নে যুব, নারী ও শিশুদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে।

২. ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত তরুণদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য ইয়ুথ পার্লামেন্ট গঠন করা হবে।

৩. দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য বিএনপি সকল কর্মকাণ্ডে নারী সমাজকে প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত করবে। এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে সকল বাধা অপসারণ করা হবে।

৪. ক্রীড়া ক্ষেত্রে নারীদের উন্নয়নে পৃষ্ঠপোষকতা করা হবে।

৫. নারী নির্যাতন, যৌতুক প্রথা, এসিড নিক্ষেপ, যৌন হয়রানি, ধর্ষণ, নারী ও শিশু পাচাররোধে কঠোর কার্যকর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শিশু-শ্রম রোধে কার্যকর বাস্তবানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

৬. শিশু সন্তান রেখে নারীরা যাতে নিশ্চিন্তে কাজে মনোনিবেশ করতে পারে সেই লক্ষ্যে অধিক সংখ্যক দিবাযত্ন কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

৭. নারী উদ্যোক্তাদের অধিকতর উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে প্রকল্প প্রস্তাব প্রণয়নে প্রয়োজনীয় সমর্থন, স্বল্প-সুদে ব্যাংক ঋণ এবং কর-ছাড় দেয়া হবে।

৮. এক বছরব্যাপী অথবা কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত, যেটাই আগে হবে, শিক্ষিত বেকারদের বেকার ভাতা প্রদান করা হবে। এদের যৌক্তিক অর্থনৈতিক উদ্যোগে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

৯. নারীদেরকে ন্যায়সঙ্গত সম্পত্তির উত্তরাধিকার প্রদান করা হবে। এই লক্ষ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বিদ্যমান আইন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হবে।

শিক্ষা ও কর্মসংস্থান
১. শিক্ষাখাতে জিডিপির ৫ শতাংশ অর্থ ব্যয় করা হবে।

২. উচ্চতর পর্যায়ের শিক্ষা হবে জ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষে সমৃদ্ধ। বিষয়ভিত্তিক শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে। গড়ে তোলা হবে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়।

৩. শিক্ষার মানোন্নয়ন ও সম্প্রসারণের জন্য জাতীয় টিভিতে একটি পৃথক শিক্ষা চ্যানেল চালু করা হবে।

৪. বিশ্বের মেধা জগৎ ও আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে বাংলাদেশের একটি নতুন মাত্রা যোগের জন্য বাংলা ভাষার পাশাপাশি ইংরেজিসহ অন্যান্য বিদেশি ভাষা শেখার জন্য অধিকতর সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।

৫. স্বল্পআয়ের পরিবারের ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্বল্প সুদের শিক্ষা ঋণ চালু করা হবে।

৬. বিদেশের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জনের সুবিধার্থে মেধাবীদের বৃত্তি প্রদানের জন্য একটি বিশেষ তহবিল গঠন করা হবে।

৭. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-সংসদের নির্বাচন নিশ্চিত করে ছাত্রদের মধ্য হতে ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব বিকাশের পথ সুগম করা হবে।

৮. মাদ্রাসা শিক্ষাকে আরো আধুনিক ও যুগোপযোগী করা হবে। তাদের কারিকুলামে পেশাভিত্তিক ও বৃত্তিমূলক বিভিন্ন বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

৯. সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে উপজেলা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে মসজিদের খতিব, ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের জন্য সম্মানজনক ‘সম্মানীভাতা’ চালু করা হবে।

১০. বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারণে শিক্ষাক্ষেত্রে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে এবং শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছে তা প্রতিরোধ করার জন্য সকল প্রকার আইনি, প্রতিকারমূলক এবং প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

১১. শিক্ষার্থীদের ওপর থেকে সকল ধরনের ভ্যাট বাতিল করা হবে। ভ্যাট বিরোধী, কোটা সংস্কার এবং নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের বিরুদ্ধে আনীত সকল মামলা প্রত্যাহার এবং এসব আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

১২. সরকারি এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গরীব মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আসন সংরক্ষণ করা হবে। পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা ব্যবস্থা বিলোপ করা হবে।

১৩. প্রথম তিন বছরে দুর্নীতি মুক্ত ব্যবস্থায় মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকারি চাকরিতে দুই লাখ মানুষকে চাকরি দেওয়া হবে।

১৪. তরুণ দম্পতি ও উদ্যোক্তাদের সাবলম্বী হওয়ার জন্য ২০ বছর মেয়াদী ঋণ চালু করা হবে।

১৫. আগামী পাঁচ বছরে এক কোটি নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

১৬. এক বছরব্যাপী অথবা কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত, যেটাই আগে হবে, শিক্ষিত বেকারদের বেকার ভাতা প্রদান করা হবে। এদের যৌক্তিক অর্থনৈতিক উদ্যোগে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

জ্বালানি
১. অদক্ষ পুরনো বিদ্যুৎ কেন্দ্রসমূহ অতি জরুরি ভিত্তিতে আধুনিকায়ন এবং পুনর্বাসনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। দেশীয় গ্যাস এবং ফার্নেস-অয়েল-এর ওপর নির্ভরশীলতা ক্রমান্বয়ে হ্রাস করা হবে। বিদ্যুৎ সংকট স্থায়ীভাবে নিরসন এবং কার্বন নিঃস্বরণ হ্রাস করার লক্ষ্যে ছোট, মাঝারি ও বৃহদাকার পরিবেশ বান্ধব বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানি আহরণ বিশেষ করে সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জিও-থারমাল, সমুদ্র তরঙ্গ, বায়োগ্যাস, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

২. বড় বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র, জলাধার, গ্যাস উত্তোলন ও সরবরাহ শিল্প সরকারি খাত এবং প্রয়োজনবোধে সরকারি/বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে স্থাপন করা হবে।

৩. ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম বছরে বিদ্যুৎ ও আবাসিক গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করা হবে না। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যে সকল প্রকার অসঙ্গতি দূর করা হবে।

তথ্য ও প্রযুক্তি
১. তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে বিদেশ হতে অর্জিত অর্থ দেশে আনয়নের ক্ষেত্রে সকল প্রকার অযৌক্তিক বাধা দূর করা হবে। ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং-এর সাথে জড়িত সকলকে সুবিধা দেওয়ার উদ্দেশ্যে স্বল্প চার্জে Global Payment Gateway দেওয়া হবে।

২. Nationwide Telecommunication Transmission Network (NTTN), Internet Service Provider (ISP) এবং International Internet Gateway (IIG) মার্কেট উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এর ফলে প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হবে, দক্ষতা বাড়বে এবং ইন্টারনেট ব্যয় হ্রাস পাবে।

৩. অগমেনটেড রিয়্যালিটি, এ্যানিমেশন এবং রোবটিকস তৈরি খাতে গবেষনা ও বিনিয়োগে উৎসাহিত করা হবে। START UP FUND এবং IT Innovation Fund এবং Venture Capital দিয়ে দেশের স্থানীয় সমস্যার জন্য তথ্য প্রযুক্তির সলিউশান ডেভেলাপ করতে উৎসাহ দেয়া হবে।

৪. পাঁচ বছরের মধ্যে সম্পূর্ণভাবে ই-গভর্নমেন্ট চালু করার জন্য ক্লাউড ভিত্তিক এন্টারপ্রাইজ এপ্লিকেশন ডেভেলপ করতে সরকার দেশি প্রযুক্তি ব্যবহারে সর্বোচ্চ মনোযোগ দেবে।

৫. ভিওআইপি ব্যবস্থা উন্মুক্ত করে এই খাতে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে।

৬. সৃজনশীল ব্যক্তির মেধাস্বত্বের অধিকার নিশ্চিত করা হবে। শুধু সাব-কন্ট্রাক্ট নয়, আন্তর্জাতিক চুক্তি সম্পাদনে স্থানীয় কোম্পানিগুলোকে সহায়তা দেওয়া হবে। একইসঙ্গে স্থানীয়ভাবে উদ্ভাবিত সফটওয়ার ব্যবহারে স্থানীয় কোম্পইনগুলোকে উৎসাহিত করা হবে। প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ত্বরান্বিতকরণ তহবিল সহ আইটি ইনকিউবেটর এবং ল্যাবরেটরি ব্যবস্থা সংযোজিত হবে।

৭. ইন্টারনেট অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে মোবাইল ডাটার জন্য এবং ব্রডব্যান্ডের ক্ষেত্রে সাশ্রয়ী মূল্যে সময়োপযোগী সর্বোচ্চ গতির ইন্টারনেট নিশ্চিত করা হবে।

৮. তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে ব্যবহৃত সকল প্রকার উপকরণ সামগ্রীর ওপর শূন্য শুল্ক সুবিধা বজায় রাখা হবে।

৯. মেট্রোপলিটন এলাকা, পৌরসভা, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য প্রশাসনিক কেন্দ্রসমূহকে ক্রমান্বয়ে স্মার্ট সিটি, স্মার্ট পৌরসভা, স্মার্ট গ্রাম ও স্মার্ট ক্যাম্পাসে রূপান্তরিত করা হবে।

ক্রীড়া ও সংস্কৃতি
১. আগামী ৫ বছরের মধ্যে খেলাধুলার কয়েকটি ক্ষেত্রে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ যাতে একটি গ্রহণযোগ্য স্থান করে নিতে পারে সে লক্ষ্যে পরিকল্পিত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। খেলাধুলায় আন্তর্জাতিক মান অর্জনের জন্য প্রতি জেলায় একটি আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর ক্রীড়া একাডেমি প্রতিষ্ঠা করা হবে।

২. জাতীয় ভাবধারার পরিপন্থি অপসংস্কৃতি চর্চাকে নিরুৎসাহিত করা হবে। সংস্কৃতির মাধ্যমে স্বাধীন চিন্তাধারা ও মতাদর্শের যেন সুষ্ঠু প্রতিফলন হয় তার জন্য গণতান্ত্রিক রীতি পদ্ধতির অনুসরণ করা হবে।

বৈদেশিক ও প্রবাসী কল্যাণ
১. বৈদেশিক কর্মসংস্থান সম্প্রসারণ, ঝুঁকিমুক্ত অভিবাসন নিশ্চিতকরণ ও অভিবাসন ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা হবে। প্রবাসীরা যাতে তাদের কষ্টার্জিত আয় বৈধ পথে বাংলাদেশে প্রেরণ করতে পারে সেজন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক এক্সচেঞ্জ হাউস/ব্যাংকের সঙ্গে প্রণোদনা সুবিধাসহ রেমিট্যান্স প্রেরণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। বিদেশে বাংলাদেশি দূতাবাসগুলো যাতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিশেষ করে প্রবাসী শ্রমিকদের কল্যাণে যথাযোগ্য ভূমিকা পালন করে তা নিশ্চিত করা হবে।

২. বিদেশফেরত প্রবাসীদের বিমানবন্দরে বিদ্যমান হয়রানি বন্ধ করা হবে। বিদেশ থেকে ফেরত আসা প্রবাসীদের যথাযথ তালিকা প্রস্তুত করে তাদের কল্যাণে নানামুখী প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে।

৩. প্রবাসী বাংলাদেশিদের জাতীয় নির্বাচনে ভোট প্রদানের সুযোগ সৃষ্টি করে দেশ পরিচালনায় তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে। বিদেশে বিপদগ্রস্ত বা আটকে পড়া নাগরিকদের রক্ষা ও ফিরিয়ে আনতে যথোপযুক্ত কনস্যুলার সহায়তা ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

কৃষি ও শিল্প
১. মূল্য-সমর্থন এবং উপকরণ ভর্তুকির সঠিক সংমিশ্রণ ঘটিয়ে কৃষক যাতে তার ফসলের ন্যায্য মূল্য পায় সে ব্যবস্থা করা হবে। প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদে উন্মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে ডাটাবেইজ গড়ে তুলে রাষ্ট্রীয় সমর্থন পাওয়ার যোগ্য কৃষকদের তালিকা প্রণয়ন করা হবে। কৃষিতে নানা ধরনের ঝুঁকি মোকাবেলা করার জন্য প্রয়োজনে ভর্তুকি দিয়ে হলেও শস্য বীমা, পশু বীমা, মৎস্য বীমা এবং পোল্ট্রি বীমা চালু করা হবে।

২. গরিব এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগকবলিত কৃষকের কৃষি ঋণের সুদ মওকুফ করা হবে।

৩. দু’বছরের মধ্যেই গার্মেন্টস শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি ১২ হাজার টাকা করা হবে। গার্মেন্টসসহ অন্যান্য সকল শিল্প এলাকায় শ্রমিকদের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণের মাধ্যমে আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

৪. সকল খাতের শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি নির্ধারণ করা হবে।

৫. কৃষি উৎপাদনকে লাভজনক পেশায় পরিণত করার লক্ষ্যে উৎপাদন খরচের সঙ্গে যৌক্তিক মুনাফা নিশ্চিত করে সকল কৃষি পণ্যের মূল্য নির্ধারিত হবে স্থানীয় সমবায় সমিতির মাধ্যমে।

৬. শ্রমিক ও ক্ষেত মজুরসহ গ্রাম ও শহরের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য সুলভ মূল্যে রেশনিং চালু করা হবে।

৭. কৃষি ভর্তুকি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বাড়িয়ে সার, বীজ ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ সহজলভ্য করা হবে।

৮. জলমহাল এবং হাওরের ইজারা সম্পূর্ন বাতিল করে মৎসজীবী ও দরিদ্র জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

৯. পুনর্বাসন ছাড়া শহরের বস্তিবাসী ও হকারদের উচ্ছেদ করা হবে না।

১০. স্বাস্থ্যবীমার মাধ্যমে শ্রমিকগণ মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ প্রিমিয়ামের মাধ্যমে সব চিকিৎসা সুবিধা পাবেন।

১১. এক বছরের মধ্যে মানুষকে ভেজাল ও রাসায়নিক মুক্ত নিরাপদ খাদ্য পাবার নিশ্চয়তা দেওয়া হবে।

স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা
১. জিডিপির ৫ শতাংশ অর্থ স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করা হবে। উৎপাদনকারী, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতার যুক্তিসঙ্গত মুনাফা নিশ্চিত করে ওষুধের মূল্য যুক্তিসঙ্গত হারে হ্রাস করা হবে।

২. বিশিষ্ট চিকিৎসক ও চিকিৎসা শিক্ষাবিদদের সমন্বয়ে চিকিৎসা শিক্ষার মান উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে জাতীয় এক্রেডিটেশন কাউন্সিল (Accreditation Council) গঠন করা হবে।

৩. মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং বয়োঃবৃদ্ধদের জন্য বিশেষ স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

৪. চিকিৎসার ক্ষেত্রে সিংহভাগ খরচ হয় ডায়াগনস্টিক পরীক্ষায়। এক্ষেত্রে জনদুর্ভোগ কমানোর জন্য সরকারি উদ্যোগে পর্যাপ্ত ডায়াগনস্টিক বুথ স্থাপন করা হবে।

৫. শিশুদের ডায়াবেটিস ও বেড়ে ওঠার সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।

প্রতিরক্ষা ও পুলিশ
১. একটি দক্ষ, স্বচ্ছ, গতিশীল, মেধাবী, জবাবদিহি মূলক যুগোপযোগী ও গণমুখী জনপ্রশাসন গড়ে তোলা হবে। মেধার মূল্যায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যথাযথ সংস্কার করা হবে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, নারী ও প্রান্তিক জাতি-গোষ্ঠী কোটা ব্যতিরেকে কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হবে। গতিশীল বিশ্বায়নের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সংবিধানের আলোকে একটি যথোপযুক্ত সিভিল সার্ভিস আইন প্রণয়ন করা হবে। প্রতিরক্ষা বাহিনীর জন্য প্রয়োজনীয় যুদ্ধাস্ত্র এবং অন্যান্যসব সরঞ্জাম অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কেনা হবে। সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য কল্যাণমূলক প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।

২. পরিকল্পিতভাবে সশস্ত্রবাহিনীতে কর্মরত সকল পর্যায়ের কর্মকর্তাদের আবাসন সমস্যার সমাধান করা হবে। সশস্ত্রবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের জন্য যৌক্তিক রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা হবে।

৩. পুলিশ বাহিনীর ঝুঁকি ভাতা বৃদ্ধি করা হবে। পুলিশ বাহিনীর পেশাদারিত্ব বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। জাতিসংঘ বাহিনীতে পুলিশের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পুলিশের জন্য কল্যাণমূলক প্রকল্প গৃহীত হবে।

৪. ইন্সপেক্টর ও সাব-ইন্সপেক্টরদের বেতন ছয় মাসের মধ্যে আপগ্রেড করা হবে এবং পুলিশ বাহিনীর সদস্যগণ অবসরে গেলেও তাদেরকে রেশন সুবিধা প্রদান করা হবে।

আবাসন, পেনশন ফান্ড ও রেশনিং ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা
১. দুঃস্থ বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তা মহিলা এবং অসহায় বয়স্কদের ভাতার পরিমাণ মূল্যস্ফীতির নিরিখে বৃদ্ধি করা হবে। বেসরকারি ও স্বনিয়োজিত খাতে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য বার্ধক্যের দুর্দশা লাঘবের উদ্দেশ্যে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে একটি ‘পেনশন ফান্ড’ গঠন করা হবে। গরিব ও নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা হবে।

পরিবেশ
১. জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার জন্য টেকসই কৌশল গ্রহণ করা হবে। উপকূল এলাকাসহ সারাদেশে নিবিড় বনায়ন ও সুন্দরবনসহ অন্যান্য বনের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পররাষ্ট্র
১. বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেওয়া হবে।

২. বিএনপি অন্য কোনো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না এবং অন্য কোনো রাষ্ট্রের জন্য নিরাপত্তা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে এমন কোনও কর্মকাণ্ডকে কোনো স্পেস দেবে না। একইভাবে অন্য কোনো রাষ্ট্রও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তায় হুমকি সৃষ্টি করলে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।

৩. মুসলিম দেশসমূহ ও প্রতিবেশী দেশসমূহের সাথে বিশেষ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদার করা হবে। বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিজ বাসভূমিতে নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের জন্য শক্তিশালী দ্বি-পাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক উদ্যোগ নেওয়া হবে।

৪ জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক সংস্থা যেমন- সার্ক, বিমসটেক, বিসিআইএম, বিবিআইএন প্রভৃতি সংস্থাগুলোকে সুসংহত করা এবং কার্যকরভাবে গড়ে তোলার জন্য সক্রিয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

৫. বিআরআই, ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিক ইনশিয়েটিভসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

৬. বাংলাদেশের সঙ্গে অন্যান্য দেশের সংযোগ বৃদ্ধি করা হবে এবং বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ত্রিপুরা, মেঘালয়, নেপাল, ভুটান ও উন্নয়নের জনগণের সংযোগ সহজতর করা হবে।

৭. আন্তর্জাতিক নদী আইন অনুযায়ী বাংলাদেশে বহমান আন্তর্জাতিক নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে আঞ্চলিক ও পারস্পরিক সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে আলাপ-আলোচনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়
১. পাহাড়ি ও সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জীবন, সম্পদ, সম্ভ্রম ও মর্যাদার সুরক্ষা করা হবে। অনগ্রসর পাহাড়ি ও সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর চাকরি ও শিক্ষাক্ষেত্রে সব সুবিধা এবং পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়ন কার্যক্রম জোরদার করা হবে।

২. দল, মত, জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে ক্ষুদ্র-বৃহৎ সকল জাতি গোষ্ঠীর সংবিধান প্রদত্ত সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মকর্মের অধিকার এবং জীবন, সম্ভ্রম ও সম্পদের পূর্ণ নিরাপত্তা বিধান করা হবে। এই লক্ষ্যে ধর্মীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে।




ইশতেহারে আ.লীগের ২১ অঙ্গীকার

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনী ইশতেহারে ২১টি অঙ্গীকার তুলে ধরেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

আজ মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ইশতেহার পাঠ শুরু করেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ শীর্ষক ইশতেহারে আওয়ামী লীগ যেসব লক্ষ্য ও অঙ্গীকার তুলে ধরেছে, সেগুলো হচ্ছে:

১. প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণ

২. তরুণ যুব সমাজকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত করা এবং কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা

৩. দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ

৪. নারীর ক্ষমতায়ন, লিঙ্গ সমতা ও শিশুকল্যাণ

৫. পুষ্টিসম্মত ও নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা

৬. সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও মাদক নির্মূল

৭. মেগা প্রকল্পগুলোর দ্রুত ও মানসম্মত বাস্তবায়ন

৮. গণতন্ত্র ও আইনের শাসন সুদৃঢ় করা

৯. দারিদ্র নির্মূল

১০. সব স্তরে শিক্ষার মানবৃদ্ধি

১১. সবার জন্য মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবার নিশ্চিয়তা

১২. সার্বিক উন্নয়নে ডিজিটাল প্রযুক্তির অধিকতর ব্যবহার

১৩. বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিরাপত্তার নিশ্চয়তা

১৪. আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা- লক্ষ্য যান্ত্রিকীকরণ

১৫. দক্ষ ও জনসেবামুখী প্রশাসন

১৬. জনবান্ধব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা গড়ে তোলা

১৭. ব্লু-ইকোনমি- সমুদ্র সম্পদ উন্নয়ন

১৮. নিরাপদ সড়কের নিশ্চয়তা

১৯. প্রবীণ, প্রতিবন্ধী ও অটিজম কল্যাণ

২০. টেকসই উন্নয়ন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ

২১. সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি




কমলনগরে বিজয় দিবস পালিত

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে নানা আয়োজনে পালিত হয়েছে মহান বিজয় দিবস। দিবসটি উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচির আয়োজন করে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কুচকাওয়াজ, বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, ১০৪জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা, আলোচনা সভা, বিশেষ প্রার্থনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

রোববার সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে উপজেলার হাজিরহাট উপকূল সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে অবস্থিত উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ৩১বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির শুভ সূচনা হয়। ওই সময় উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, পুলিশ প্রশাসন, আ.লীগ, যুবলীগ, জেএসডি ও হাজিরহাট উপকূল সরকারি কলেজসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়।

পরে উপজেলা পরিষদ মাঠে পুলিশ, আনসার-ভিডিপি ও শিক্ষার্থীদের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। চলছে ডিসপ্লে প্রদর্শনসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতা। এসব উপভোগ করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমতিয়াজ হোসেন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন প্রমুখ। পরে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।




আ স ম রবের নির্বাচনী অফিসে ভাঙচুর, তালা

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি-কমলনগর) আসনে ধানের শীষ প্রতীক জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ও জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রবের নির্বাচনী অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছে। এরপর ওই অফিসে তালা মেরে দেওয়ার দাবিও করা হচ্ছে জেএসডির তরফ থেকে।

রোববার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রামগতি উপজেলার বড়খেরী ও চরগাজী ইউনিয়নে রবের নির্বাচনী অফিস দু’টিতে ভাঙচুর চালিয়ে তালা মেরে দেওয়া হয়। এজন্য আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীদের দোষারোপ করছে ঐক্যফ্রন্ট।

এ বিষয়ে জেএসডির সহ-সভাপতি তানিয়া রব বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে আমাদের অফিস ভাঙচুর করে তালা দেয়। তারা জেএসডি ও বিএনপি নেতাকর্মীদের এলাকা ছাড়তে হুমকি দিচ্ছে। এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করতে মহড়া দিচ্ছে। এ বিষয়ে থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিছুল হক বলেন, হামলা-ভাঙচুর নয়। অফিসে তালা দিয়েছে বলে শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন মহাজোটের শরিক বিকল্প ধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান




সড়ক সংস্কারে অনিয়ম, কমলনগরে বাঁধার মুখেও কাজ করছেন প্রভাবশালী ঠিকাদার!

লক্ষ্মীপুর : লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার তোরাবগঞ্জ-মতিরহাট সড়কে ব্যাপক অনিয়মের মধ্যে দিয়ে সংস্কার কাজ চলছিলো। নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে সিডিউল বহিঃভূতভাবে দরপত্রের শর্তভঙ্গ করে কাজ করায় স্থানীয়রা বাঁধা দেয়। এ বিষয়ে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন কর্তৃপক্ষের কাছে। ৬ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার উপজেলা প্রকৌশলী সরেজমিন গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়। ১০দিন কাজ বন্ধ রেখে কৃর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই ঠিকাদার শনিবার (১৫ ডিসেম্বর) রাত শুরু করে। রাতের আধাঁরে আবারও নিন্মমানের কাজ করায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দেয়।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এজিইডি) কমলনগর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ওই সড়কে ২ হাজার ৫ মিটার সংস্কারের জন্য টেন্ডার হয়। যার প্রাক্কলিত ব্যায় ধরা হয়েছে প্রায় ৪০লাখ টাকা। কাজটি পায় রেভ আরসি লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। তবে কাজটি করেছেন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বাসিন্দা ঠিকাদার মোহাম্মদ সবুজ। তিনি প্রভাবশালী হওয়ায় কোনো সিডিউল অনুসরণ না করে নিয়ম বহিঃভূতভাবে দায়সারাভাবে কাছ করছিলেন। নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে সড়কের সংস্কার কাজ করায় স্থানীয়রা কাছে বাঁধা দেয় ও অভিযোগ করে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ওই সড়কের সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালকরা বলেন, সংস্কার নিন্মমানের ইট ব্যবহার করা হচ্ছে। নামেমাত্র বিটুমিন দিয়ে কাছ করছে; তাও নিন্মমানের। রাস্তায় পাতলা করে কার্পেটিং দেওয়া হচ্ছে। ব্যাপক অনিয়মের মধ্যে দিয়ে নিন্মমানের কাজ হওয়ায় অল্পকয়েক দিনের মধ্যে সড়কটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়বে। এতে দুর্ভোগের অন্ত থাকবে না।
কমলনগর উপজেলা প্রকৌশলী সোহেল আনোয়ার বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে সরেজমিন গিয়ে অনিয়মের সত্যতা পেয়ে কাজ বন্ধ করে উর্ধ্বতন কৃর্তপক্ষ জানানো হয়েছে। বর্তমানে কাজ বন্ধ থাকার কথা। ফের কাজ শুরু হওয়ার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। দরপত্রের চুক্তির শর্ত অনুযায়ী রাস্তার কাজ ঠিকঠাকমতো বুঝে নেওয়া হবে।
ঠিকাদার সবুজ বলেন, বেশ কিছুদিন তিনি অসুস্থ থাকায় কাজ বন্ধ ছিলো। সুস্থ হওয়ায় আবারও কাজ শুরু হয়েছে। কাজ বন্ধ রাখার বিষয়ে কোনো চিঠি পাননি বলে জানান তিনি।




লক্ষ্মীপুরে বিজয় দিবস উদযাপিত

রোববার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল দিবসটি উপলক্ষে স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী একেএম শাহাজাহান কামাল।

এছাড়াও স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ করেন জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আ স ম মাহাতাব উদ্দিন, লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র আবু তাহের, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন।

এরপর পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা শহীদদের বেদীতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন।

সকাল ০৭ টায় শহরের বাগবাড়িস্থ গণকবরের পুষ্পার্ঘ অর্পণ শেষে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। সকাল ৮টার দিকে লক্ষ্মীপুর স্টেডিয়ামে শতাধিক শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে কুচকাওয়াজ ও শারীরিক কসরত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেওয়া হয়।




জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে একাত্তরের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রবিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা ৩৫ মিনিট নাগাদ জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদীতে প্রথমে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি। এরপর পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় তারা ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে কয়েক মিনিট নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয় এবং সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল অভিবাদন জানায়।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সরকারের পদস্থ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা ও মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, সরকার দলীয় শীর্ষ নেতারা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান প্রধান বিচারপতি, জাতীয় সংসদের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার। এরপর সকাল ৭টায় শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সর্বস্তরের মানুষের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।