স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের গুরুত্ব বিবেচনায় কর অব্যাহতির মেয়াদ বাড়ানো হোক

সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপরেখা দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বৈপ্লবিক ভূমিকা রেখেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের সফল বাস্তবায়নের পর আমরা এখন ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ রূপান্তরের পথে। আর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে তথ্যপ্রযুক্তি খাত। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের পরামর্শে এই খাতে করারোপ করা হলে সেটি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে। এমন বিবেচনায় স্থানীয় সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার এবং তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবার প্রসার এবং সম্ভাবনাময় এই খাত থেকে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কর অব্যাহতির মেয়াদ বৃদ্ধি সময়ের বড় দাবি।




তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর অব্যাহতি চালু রাখা কেন জরুরি

২০১১ সাল থেকে ২৭টি ডিজিটাল পরিষেবা খাতে কর অব্যাহতি দিয়েছিল সরকার। ২০২০-২১ অর্থবছরে সে কর অব্যাহতির মেয়াদ শেষ হলে তা আবার চার বছরের জন্য বাড়ানো হয়। নতুন কোনো ঘোষণা না এলে চলমান এই কর অব্যাহতির মেয়াদ এ অর্থবছরে শেষ হবে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতসংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো ইতিমধ্যে এই অব্যাহতির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছে। অতীতেও বাজেট ঘোষণার আগে সংগঠনগুলো থেকে বিভিন্ন ধরনের আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু তাতে খুব একটা কাজ হয়েছিল বলে মনে হয় না। অবশ্য সেসব আবেদন যতটুকু না আবেদন, তার চেয়ে বেশি ‘আবদার’ বলে প্রতীয়মান হয়। তথ্য-উপাত্তনির্ভর যুক্তির চেয়ে আবেগের প্রাধান্য সেখানে বেশি।

সরকার কেন কর অব্যাহতি দেবে? সরকারকে তো হিসাবটা করে দেখাতে হবে যে কর অব্যাহতি না দিলে সম্ভাব্য কত টাকা রাষ্ট্রের ক্ষতি হবে, আর অব্যাহতি দিলে কত টাকা লাভ হবে। এ খাতে লাভ-ক্ষতি, আমদানি-রপ্তানি ইত্যাদি ডেটা সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর কাছেই সবচেয়ে বেশি থাকার কথা। প্রতিবছর বিভিন্ন ধরনের মেলা আয়োজনের পাশাপাশি সংগঠনগুলো যদি তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই সমীক্ষাগুলো (স্টাডি) করিয়ে ফেলত, তাহলে সরকারের কাছে দাবিদাওয়াগুলো আরও কার্যকরভাবে পেশ করা যেত।

তথ্য উপস্থাপনের ক্ষেত্রে সেটির উৎস সম্পর্কে অবহিত করাও আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। বিভিন্ন দায়িত্বশীল অবস্থান থেকে বলা হয়, সরকারি (অফিশিয়াল) হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশি সফটওয়্যার এবং প্রযুক্তি পরিষেবা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের একটি স্থানীয় বাজার গড়ে তুলেছে, রপ্তানি ছাড়িয়েছে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। এটা কোন সরকারি হিসাব? কোন প্রতিবেদনে, কোন পদ্ধতিতে এই হিসাবে এসেছে? এসব তথ্য দেওয়ার সময় স্পষ্টভাবে সেগুলোর গ্রহণযোগ্য উৎস উল্লেখ করতে হবে। তাহলে তথ্যের উপস্থাপনা আরও বলিষ্ঠ হবে।

গত ১২-১৩ বছর কর অব্যাহতি দেওয়ার পর এখনো কেন কর অব্যাহতির দাবি করা হচ্ছে, সেটি একটু স্পষ্ট করা দরকার। সরকার এক যুগ ধরে ডিজিটাল বাংলাদেশ ভিশন নিয়ে এগিয়েছে, সেটির মূল প্রযুক্তিই ছিল তথ্যপ্রযুক্তি। এক যুগ পর সরকার তো থেমে যায়নি, নতুন করে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ ভিশন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। সরকার যদি থেমে না যায়, কর অব্যাহতি কেন থেমে যাবে?

তথ্যপ্রযুক্তি খাতের এই কর অব্যাহতির সঙ্গে ডিজিটালাইজেশন এবং স্মার্টাইজেশনের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক আছে। এর বাস্তবায়ন তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবা, সংশ্লিষ্ট পণ্য ও সরঞ্জামাদির সহজলভ্যতার ওপর নির্ভরশীল। যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি রাজ্যে চালানো সমীক্ষায় দেখা গেছে, শুধু নেটওয়ার্ক সরঞ্জামের ওপর বিক্রয় কর বাদ দেওয়ার প্রভাবে প্রথম বছর শেষে ৩ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার এবং দুই বছরে ৯ দশমিক ৯২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে (কাটজ্‌ ও ক্যালোর্ডা, ২০১৯)।

আরও পড়ুন

আমরা কেবল তথ্যপ্রযুক্তির সুফল পেতে শুরু করেছি। আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে আইসিটি ল্যাব যুক্ত হচ্ছে, পাঠ্যক্রমে যুক্ত হচ্ছে প্রোগ্রামিং। ফ্রিল্যান্সিংয়ে যুক্ত হতে শুরু করেছেন লাখো তরুণ। বাড়তে শুরু করেছে ই-কমার্স লেনদেন। বাংলাদেশ ব্যাংক জানাচ্ছে, কার্ডে লেনদেন বাড়ার খবর, ক্যাশলেস সোসাইটি করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। দেশি প্রতিষ্ঠানগুলো উৎপাদন করতে শুরু করেছে ইলেকট্রনিক ও আইসিটি পণ্য। এসব অর্জনের পেছনে সন্দেহাতীতভাবে সরকারের নেওয়া কর অব্যাহতির ভূমিকা আছে। সে ভূমিকাটুকু পরিমাপ করে তথ্যটুকু উপস্থাপন করতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। কিন্তু এটুকু বোঝার জন্য সমীক্ষার প্রয়োজন হয় না যে এখনই এই কর অব্যাহতি উঠিয়ে নিলে মুখ থুবড়ে পড়বে গোটা তথ্যপ্রযুক্তি খাত।

এইচএসবিসি বৈশ্বিক গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের নবম বৃহত্তম ভোক্তা বাজারে পরিণত হতে যাচ্ছে, যেটি ছাড়িয়ে যাবে যুক্তরাজ্যকেও। এ বাজারের বড় একটি অংশ দখলে থাকবে ডিজিটাল পণ্যের। উপযুক্ত নীতির অভাবে অন্যের দখলে যেতে পারে আমাদের এ বৃহৎ বাজার।

২০২২ সাল পর্যন্ত এশিয়ায় ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের অর্থাৎ ইউনিকর্নের সংখ্যা ছিল ৩২৭টি, সেখানে ২০২৫ সালের মধ্যে আমাদের লক্ষ্যই নির্ধারিত আছে মাত্র ৫টি। ২০২২ সালে ভারতীয় স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলো সংগ্রহ করেছে ২১ বিলিয়ন ডলার, যেখানে আমরা করেছি মাত্র ১২৫ মিলিয়ন ডলার। ২০২২ সালে ভারত ও চীনের স্টার্টআপে মাথাপিছু বিনিয়োগ প্রায় ১৫ ডলার ও ৩৩ ডলার, যেখানে আমাদের বিনিয়োগ ১ ডলারের কম (বাংলাদেশ স্টার্টআপ বিনিয়োগ রিপোর্ট, ২০২৩)।

এ অবস্থায় যদি প্রথমে একটু কর আরোপ করে ধীরে ধীরে বাড়ানোর পরিকল্পনাও যদি করা হয়, সেটিও ভালো বার্তা দেবে না। বিশেষ করে মনস্তাত্ত্বিকভাবে প্রভাব ফেলবে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে। বরং পর্যালোচনা বা পুনর্বিচার করা যেতে পারে এক যুগের বেশি সময় ধরে যে ২৭টি পরিষেবাকে করের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে, সেখানে কোনো সংযোজন-বিয়োজনের প্রয়োজন আছে কি না।

বিশেষ করে স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরিতে যেসব উদীয়মান প্রযুক্তি লাগবে, সেগুলোকে কীভাবে আরও সহজলভ্য করা যেতে পারে, ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের ক্ষেত্রে যে মানবসম্পদ তৈরির সূচকে আমরা পিছিয়ে ছিলাম, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ওপর বিভিন্ন ধরনের কর অব্যাহতি দিয়ে সেটিকে কী করে আরও বেগবান করা যেতে পারে, সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়াটাই এখন বেশি জরুরি।




উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের স্বজনদের সরে দাঁড়াতে হবে: ওবায়দুল কাদের

মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের আত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, যাঁরা প্রার্থী হতে চান (পরবর্তী পর্বে), তাঁদের নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। যাঁরা প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদের তালিকা তৈরি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।

আজ শনিবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে দেশের ১৫০ উপজেলায় নির্বাচন হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে আরও তিন ধাপে বাকি সব উপজেলার নির্বাচন হবে। অনেক উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে আওয়ামী লীগের দলীয় ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের সন্তান, নিকটাত্মীয় ও স্বজনেরা মাঠে রয়েছেন। অনেকে প্রথম পর্বের জন্য মনোনয়নপত্রও দাখিল করেছেন। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ থেকে এমপি-মন্ত্রীদের স্বজনদের ভোটের মাঠ থেকে সরে দাঁড়াতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ২২ এপ্রিল প্রথম পর্বের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন।

নির্দেশনা দেওয়া হলেও অনেকের এখনো নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ানো বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রত্যাহারের তারিখ শেষ হোক, তার আগে এ বিষয়ে কীভাবে বলা যাবে।

সংসদ সদস্য পরিবারের সদস্য হলেই উপজেলা নির্বাচন করা যাবে না, বিষয়টি কতটুকু যুক্তিযুক্ত—এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, ‘এটা ঠিক নয়, আপনি সব যুক্তি উত্থাপন করতে পারেন; কিন্তু আপনার যুক্তি জনগণ কি চোখে দেখছে? দেশের ভোটাররা কি চোখে দেখছে? আওয়ামী লীগের এই সিদ্ধান্তে তৃণমূল পর্যন্ত মানুষ কিন্তু খুশি হয়েছে। দলের তৃণমূলের কর্মীরা তাদের মত–প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। তার কারণ হচ্ছে, একটা দলে আমি এমপি, আমি মন্ত্রী, আবার আমার ভাই, ছেলে—এরাও পদ নিয়ে যাবে সব, তাহলে তৃণমূলের কর্মীরা কী করবে? তাদের পদে যাওয়ার কোনো অধিকার নেই? সে সুযোগ করে দেওয়ার জন্যই এই সিদ্ধান্ত।’

উপজেলা নির্বাচন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সব পর্যায়ের সম্মেলন, কমিটি গঠনপ্রক্রিয়া বন্ধ থাকবে বলে জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচন হচ্ছে। সামনে প্রথম পর্যায়ের নির্বাচন হবে। এই নির্বাচন চলাকালে উপজেলা বা জেলা পর্যায়ে কোনো সম্মেলন, মেয়াদোত্তীর্ণ সম্মেলন, কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া বন্ধ থাকবে।

বিএনপিকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত আমাদের এখনো হয়নি। তবে জনগণের কাছে আমরা বিএনপির সন্ত্রাসী রাজনীতির ব্যাপারে ঘৃণার আগুন ছড়িয়ে দিতে পারি। তাদের জনগণের কাছে আরও বিচ্ছিন্ন, আরও অপ্রাসঙ্গিক করার বিষয়ে প্রয়াস আমরা চালাতে পারি। কারণ, বিএনপি রাজনৈতিক দলের পরিচয় দেওয়ার মতো গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে। বিএনপিকে কানাডার ফেডারেল আদালত পর্যন্ত সন্ত্রাসী দল হিসেবে চিহ্নিত করেছে। আসলে বিএনপি কোনো রাজনৈতিক দলের কোনো বৈশিষ্ট্য এখন প্রকাশ করে না। তাদের কর্মকাণ্ডে তারা একটা সন্ত্রাসী দল, এটাই তাদের পরিচয়।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।




এখন রাষ্ট্রযন্ত্রকেই একটা ঝাঁকি দিতে হবে: মির্জা ফখরুল

শুধু রাজপথে বেরিয়ে নয়, এখন রাষ্ট্রযন্ত্রকে একটা ঝাঁকি দিতে হবে—এই মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, নাগরিকদের মধ্যে যাঁরা দেশকে ভালোবাসেন, যাঁরা দেশে গণতান্ত্রিক একটা ব্যবস্থা তৈরি করতে চান, তাঁদের এখন সবাইকে এক হয়ে সোচ্চার কণ্ঠে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ঝাঁকি দিতে হবে।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকীতে আজ এক নাগরিক স্মরণসভায় বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এই স্মরণসভার আয়োজন করে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণসভা আয়োজক কমিটি।

বর্তমানে দেশে একটা দুঃসময় চলছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এই দুঃসময়কে অতিক্রম করতে হবে। আজকে অর্থনীতিকে পুরোপুরি নিজেদের মতো করে লুটপাট করা হচ্ছে। রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে। নির্বাচনের ব্যবস্থাকে একেবারেই উপড়ে ফেলা হয়েছে। এখন অবশিষ্ট কিছু নেই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার লেশমাত্র অবশিষ্ট নেই।




সরকারি হাসপাতালে ৭ হাজার ৪৫৯ জন চিকিৎসক ওএসডি হয়ে আছেন

‘যেখানেই যাই, সেখানেই হাসপাতালে ডাক্তার থাকে না শুনতে পাই’—এ আক্ষেপ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনের। যদিও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরই ৭ হাজার ৪৫৯ জন চিকিৎসককে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করে রেখেছে, যা সরকারি চিকিৎসক সংখ্যার ২১ শতাংশ।

বিশেষ ভারপ্রাপ্ত মানে হলো, এই চিকিৎসকেরা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দেওয়া থেকে দূরে রয়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসক–স্বল্পতার এটি অন্যতম কারণ। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক–স্বল্পতার কারণে রোগীরা অনেক ক্ষেত্রে সেবা পান না। উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে ভালো চিকিৎসা না পেয়ে রোগীদের নিয়ে ঢাকায় আসার প্রবণতা রয়েছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূলত চারটি কারণে সরকারি কর্মক্ষেত্রের চিকিৎসকেরা ওএসডি হন। প্রথমত, উচ্চশিক্ষার জন্য প্রশিক্ষণ বা শিক্ষা ছুটি নেন চিকিৎসকেরা। দ্বিতীয়ত, লিয়েন বা ছুটি নিয়ে অন্য প্রতিষ্ঠানে (সরকারি প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসার বাইরে) কাজ করা। তৃতীয়ত, অনুমোদিত পদের চেয়ে পদোন্নতি পাওয়া চিকিৎসকের সংখ্যা বেশি হলে কাউকে কাউকে ওএসডি করে রাখতে হয়। চতুর্থত, অপরাধ করলে শাস্তি হিসেবে ওএসডি করা হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কারণে ওএসডি হওয়া চিকিৎসকের সংখ্যা ৫০ জনের কম। অন্যদিকে প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার জন্য ওএসডি হওয়া চিকিৎসকের সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার হাজার। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে কোনো কোনো ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা ওএসডির সুবিধা ভোগ করছেন। অনেকে যোগ্য হয়েও সেই সুবিধা পাচ্ছেন না। এ ক্ষেত্রে কার্যকর নীতিমালা দরকার।

চিকিৎসকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ইহতেশামুল হক চৌধুরী মনে করেন, চিকিৎসকদের বড় সংখ্যায় ওএসডি হিসেবে রাখার প্রবণতার অবসান হওয়া উচিত। এত অধিকসংখ্যক চিকিৎসককে ছুটিতে রাখার সামর্থ্য বাংলাদেশের নেই। তিনি বলেন, অনুমোদিত পদ অনুযায়ী জনবল থাকার পরও সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের স্বল্পতার একটি বড় কারণ অধিকসংখ্যক ওএসডি।

চিকিৎসকদের সমস্যাটি পুরোনো। জেলা-উপজেলায় চিকিৎসকদের নিয়োগ দেওয়ার পর দেখা যায়, কয়েক মাস থেকেই তাঁরা ওএসডি হয়ে চলে আসেন। এ নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে, সভা হয়েছে। তবে সমস্যা সমাধানের কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

এরই মধ্যে ৫ মার্চ রাজধানীর বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত স্নায়ুরোগবিশেষজ্ঞদের সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘জাতীয় সংসদে গেলে সংসদ সদস্যরা আমাকে বলেন তাঁর এলাকায় চিকিৎসক থাকে না। যেখানেই যাই, সেখানেই হাসপাতালে ডাক্তার থাকে না শুনতে পাই। এগুলো তো ভালো কথা না। উপজেলা হাসপাতালে যদি ডাক্তার থাকতে না চায়, তাহলে গ্রামের মানুষ কোথা থেকে ভালো চিকিৎসা পাবে?’

বিপুলসংখ্যক চিকিৎসককে ওএসডি করে রাখার বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন গত বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগামী রমজান মাসে বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনায় বসব।’

ডিগ্রির জন্য বেশি ওএসডি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র, উপজেলা হাসপাতাল, জেলা বা সদর হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসকদের জন্য অনুমোদিত পদের সংখ্যা ৩৫ হাজার ৫০৩। গত বৃহস্পতিবারের হিসাব অনুযায়ী, ৭ হাজার ৪৫৯ জন চিকিৎসক ওএসডি হয়ে আছেন। তাঁরা প্রত্যেকেই নিয়মিত বেতন-ভাতা পান।

নিয়ম অনুযায়ী, অনুমোদিত পদের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কর্মকর্তাকে ওএসডি করা যায়। তবে অন্য কোনো মন্ত্রণালয়ে ১০ শতাংশ কর্মকর্তাকে ওএসডি করার কোনো নজির শোনা যায়নি। সরকারের নিয়ম মানলে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৫৫০ জন চিকিৎসককে ওএসডি করার সুযোগ ছিল। কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দ্বিগুণের বেশি চিকিৎসককে ওএসডি করেছে।

এক বছর আগে, ২০২৩ সালের ২০ মার্চ মাঠপর্যায়ে চিকিৎসক–সংকট নিরসনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে একটি সভা হয়েছিল। সভায় সভাপতিত্ব করেছিলেন তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ওই সভার কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, বিপুলসংখ্যক চিকিৎসক ওএসডি থাকার কারণে মাঠপর্যায়ে আশঙ্কাজনকভাবে চিকিৎসক সংকট তৈরি হয়েছে।

কার্যবিবরণীতে দেখা যায়, ওই সভায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) বলেছিলেন, শিক্ষার জন্য ওএসডি হওয়া চিকিৎসকদের অনেকে কোর্স শেষ হওয়ার পরও যথাসময়ে কাজে যোগদান করেন না। তিনি আরও বলেন, ‘কোনো কোনো চিকিৎসক কোর্সে উত্তীর্ণ হতে অসমর্থ হলে তারা পর্যায়ক্রমে শিক্ষাছুটি, অর্জিত ছুটি, এমনকি অসাধারণ ছুটি গ্রহণ করেও ডিউটি পোস্টের (কর্মস্থল) বাইরে অবস্থান করেন।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহায়তায় কোনো কোনো চিকিৎসক দফায় দফায় ছুটি নিতে থাকেন। অধিদপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা একজন চিকিৎসকের উদাহরণ উল্লেখ করে প্রথম আলোকে বলেন, ওই চিকিৎসক প্রথমে স্ত্রীরোগ বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির জন্য সব মিলিয়ে তিন বছর ছুটি নিয়েছিলেন। ডিগ্রি শেষে কাজে যোগ দেওয়ার কিছুদিনের মধ্যে স্ত্রীরোগের ‘সাব-স্পেশালিটি’ বন্ধ্যত্বের ওপর উচ্চতর পড়াশোনার জন্য আবার দুই বছরের ছুটি নেন। এ রকম উদাহরণ অনেক আছে।

২০২১ সালে একজন কর্মকর্তাকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ‘লিভ রিজার্ভ’ হিসেবে উপপরিচালক পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। অর্থাৎ পদোন্নতি হলেও পদ না থাকায় তাঁকে ওএসডি করে রাখা হয়। তাঁকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সংযুক্তিতে রাখা হয়েছিল। ওই চিকিৎসক চট্টগ্রাম চলে যান। তিনি চট্টগ্রামে থাকেন ও পেশা চর্চা করেন। তিনি এখনো ওএসডি হিসেবে বেতন-ভাতা তুলছেন বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

অবশ্য ওএসডি হওয়া ওই চিকিৎসক গতকাল শুক্রবার প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করেন, তাঁকে কাজের সুযোগই দেওয়া হচ্ছে না। কোথাও পদায়ন করা হচ্ছে না। তাঁর প্রতি অন্যায় করা হচ্ছে।

নানা করণে অন্যান্য পেশার মতো সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা নিয়মিত কর্মক্ষেত্রে হাজির থাকেন না—এমন অভিযোগ নতুন নয়। তবে সরকারের কাছ থেকে নেওয়া বেতনের টাকা ফেরত দিয়েছেন সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ছয়জন চিকিৎসক।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নজরদারিতে ধরা পড়েছিল যে ওই ছয়জন চিকিৎসক গত বছর ছুটি না নিয়েই বেশ কয়েক দিন হাসপাতালে অনুপস্থিত ছিলেন। অধিদপ্তর তাঁদের অনুপস্থিতির দিনগুলোর সমান বেতন ফেরত দিতে বলে। এতে কেউ ২৬ হাজার, কেউ ৪০ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন।

শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ আমিরুল হোসেন চৌধুরী গত বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই ছয়জন আগের চেয়ে সেবাদানের ক্ষেত্রে নিয়মিত হয়েছেন, এটা বলা যায়।’

ওএসডি ‘দরকার আছে’, তবে…

প্রথম আলোতে গত ৩ ডিসেম্বর ‘গ্রামে চিকিৎসক নেই, শহরে রোগীর চাপে হিমশিম’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে প্রথম আলোর বাগেরহাট প্রতিনিধি সরদার ইনজামামুল হক দেখিয়েছিলেন, জেলাটিতে সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সব মিলিয়ে চিকিৎসক পদ আছে ৩১০টি। কিন্তু কর্মরত ছিলেন ১৪২ জন।

বাগেরহাটে এখনকার পরিস্থিতি কী জানতে খোঁজ নেওয়া হয় জেলার সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে। সেখানকার সূত্র জানায়, অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে।

জনস্বাস্থ্যবিদ অধ্যাপক বে-নজির আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্নাতকোত্তর চিকিৎসাশিক্ষার জন্য চিকিৎসকদের ওএসডির দরকার আছে। তবে সেই উচ্চতর শিক্ষা হাসপাতালের সেবায় ছাড় দেওয়ার বিনিময়ে যেন না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।’ তিনি বলেন, কোন কোন বিষয়ে কতজন চিকিৎসকের উচ্চতর ডিগ্রি দরকার, তা নির্ধারণ করা নেই, পরিকল্পনাও নেই। সেটাও দরকার।




ড্রোন হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইসরাইলকে ইরাকের পাল্টা জবাব

ইসরাইলের ইলাত শহরে পাল্টা ড্রোন হামলার দাবি করেছে ইরাকের রাষ্ট্রায়ত্ত প্যারা মিলিশিয়া বাহিনী। শনিবার (২০ এপ্রিল) চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিজিটিএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সেস নামে ওই প্যারা মিলিশিয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, লোহিত সাগরের তীরবর্তী ইসরাইলের ইলাত শহরে একটি ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। সেনাঘাঁটিতে হামলার জবাবে  ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে বলে ওই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

 

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) গভীর রাতে প্যারা মিলিশিয়া বাহিনীর সেনাঘাঁটিতে বিমান হামলার ঘটনা ঘটে। ওই হামলায় এক সেনা নিহত ও ৬ জন আহত হয়েছেন।
 

পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সেস নামে ওই প্যারা মিলিশিয়া বাহিনী ইরানের মদতপুষ্ট এবং প্রধানত শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে নিয়ে গঠিত।
 
রয়টার্সের প্রতিবেদন মতে, ইরাকের রাজধানী বাগদাদের ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত কালসো নামে একটি সেনাঘাঁটিতে অবস্থানরত পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সের সেনাদের ওপর আকাশ থেকে বোমা হামলা হয়েছে।
 
ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্র জানিয়েছে, বিমান থেকে এ হামলা চালানো হয়েছে। এ হামলায় পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সেসের এক সেনা নিহত ও ৬ জন আহত হয়েছেন। আহতদের স্থানীয় হিলা শহরের একটি হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুটি সূত্র জানিয়েছে, কারা এ বিমান হামলার জন্য দায়ী তা জানা যায়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্র এ হামলার দায় অস্বীকার করেছে। ইরাকে অবস্থানরত এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘ইরাকে কোনো মার্কিন সামরিক তৎপরতা ছিল না।’
 
গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরাইল ও ইরানের মধ্যকার উত্তেজনার মধ্যে এ হামলার ঘটনা ঘটে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার ভোরে ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরাইল। তবে এই দাবি অস্বীকার করে ইরান।
 
ইরান-ইসরাইলের পাল্টাপাল্টি সংঘাতের মধ্যেই এবার ইরাকের রাষ্ট্রায়ত্ত প্যারা মিলিশিয়া বাহিনীর সেনাঘাঁটিতে বিমান হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সেসের এক সেনা নিহত ও ৬ জন আহত হয়েছেন।



ইলন মাস্কের ভারত সফর পেছানোর কারণ কী

টেসলা ও স্পেসএক্সের মালিক মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের আগামীকাল রোববার দুই দিনের সফরে ভারতে আসার কথা ছিল। ঠিক ছিল এই সফরে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করবেন। আরও ঠিক ছিল, তিনি ভারতে ২০০ থেকে ৩০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিতে পারেন।

কিন্তু আজ শনিবার সকালে ইলন নিজেই জানিয়েছেন, বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার কাজেই তিনি আটকে পড়েছেন। তাই এখনই ভারত সফরে যেতে পারছেন না।

সিএনবিসির খবর অনুযায়ী, ২৩ এপ্রিল টেসলার এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে ইলনকে উপস্থিত থাকতে হবে। তাই এখনই তাঁর ভারতে যাওয়া হচ্ছে না। বছরের শেষের দিকে এ সফরের সম্ভাবনা রয়েছে।

১০ এপ্রিল ইলন জানিয়েছিলেন, ভারতে গিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করতে উৎসুক। এখন প্রশ্ন উঠছে, এত বড় সংস্থার প্রধান ২৩ এপ্রিলের বৈঠকের কথা না জেনেই সফরের দিনক্ষণ তৈরি করে ফেলবেন? এতখানি এগিয়ে সফর পিছিয়ে দিলেন?

এই প্রশ্নের কোনো আনুষ্ঠানিক সদুত্তর কারও কাছে নেই। যদিও সফর পেছানোর নেপথ্য কারণ হিসেবে উঠে আসছে ভারতের নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আপত্তির কথা। ভারতে এই মুহূর্তে লোকসভার নির্বাচন চলছে। মোট সাত দফার মধ্যে প্রথম দফার ভোট হয়েছে গতকাল শুক্রবার। সারা দেশে এখন নির্বাচনী আচরণবিধি বহাল। এই সময় সরকার নীতিগত কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। এমন কিছু ঘোষণা করতে পারে না, যা নির্বাচনে প্রত্যক্ষ প্রভাব ফেলতে পারে। তেমন কিছু করার অর্থ নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ হওয়া। সেই অপরাধে প্রার্থীর পদ খারিজ করে দেওয়ার ক্ষমতাও ইসির আছে।

বিভিন্ন রাজনৈতিক সূত্র অনুযায়ী, ইলন ভারতে এসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে ২০০ থেকে ৩০০ কোটি ডলার লগ্নির কথা ঘোষণা করলে তাতে আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ হতো। সে ক্ষেত্রে দায় থেকে অব্যাহতি পেতেন না প্রধানমন্ত্রী মোদি। তাই এ বিষয়ে সরকারকে ইসি নাকি মৌখিকভাবে সতর্কও করেছে। তারপরই তড়িঘড়ি সফর পেছানোর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। যদিও এই জল্পনার সত্যতা নিয়ে ইসি বা সরকার কোনো মহলই মন্তব্য করেনি।

মাত্র কয়েক দিন আগে ভারতীয় গণমাধ্যম এএনআইকে প্রধানমন্ত্রী মোদি এক সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। তাতে ইলন সম্পর্কে প্রশ্ন করে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তিনি নাকি মোদির সমর্থক? ইলন নিজেই নাকি তা বলেছিলেন? জবাবে মোদি বলেন, সেটা একটা দিক। কিন্তু অন্য দিকটা হলো, ইলন ভারতের সমর্থক। সাক্ষাৎকারে মোদি বলেছিলেন, ২০১৫ সালে তিনি যখন ইলনের কারখানা দেখতে গিয়েছিলেন, তখন তিনি বাইরে ছিলেন, কিন্তু সব কাজ ফেলে চলে এসেছিলেন।

যেসব বিদেশি গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা ভারতে লগ্নি করবে, তাদের রপ্তানি করা গাড়ির ওপর শুল্ক কমানোর নীতির কথা সরকার ঘোষণা করেছে। বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির সংস্থা টেসলা তারপরই ভারতে বিনিয়োগ করার কথা ভাবে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পর ভারতের বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারের দিকে তারা নজর দিয়েছে। মহাকাশসংক্রান্ত ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ নীতিতেও ভারত সরকার বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে। ইলনের কাছে সেটাও বিনিয়োগের বড় ক্ষেত্র।




ম্যানহাটনের আদালতের বাইরে নিজের গায়ে আগুন দেওয়া ব্যক্তির মৃত্যু

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের আদালতের বাইরে নিজের গায়ে আগুন দেওয়া ব্যক্তি মারা গেছেন।

ম্যানহাটনের এই আদালতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার বিচারকাজ চলছিল। এ সময় আদালতের বাইরে ম্যাক্সওয়েল অ্যাজারেলো (৩৭) নামের ব্যক্তি নিজের শরীরে আগুন দেন।

স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার ঘটনাটি ঘটে। এ সময় ট্রাম্প আদালতকক্ষে ছিলেন। ঘটনার পরপর ট্রাম্প আদালত ত্যাগ করেন।

ম্যাক্সওয়েল প্রথমে বাতাসে ‘ষড়যন্ত্র-তত্ত্বের’ প্রচারপত্র ছুড়ে দেন। এরপর নিজের শরীরে দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন।

গুরুতর অবস্থায় ম্যাক্সওয়েলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে তিনি মারা যান।

তদন্তকারীরা বলছেন, পরিবারের সঙ্গে ফ্লোরিডায় থাকতেন ম্যাক্সওয়েল। তিনি গত সপ্তাহে ফ্লোরিডার থেকে নিউইয়র্কে এসেছিলেন।

ম্যাক্সওয়েলের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার কোনো তথ্য নিউইয়র্ক পুলিশের কাছে নেই।

ম্যাক্সওয়েল যে ফ্লোরিডা থেকে নিউইয়র্কে এসেছিলেন, তা তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানতেন না।




এরদোয়ানের সঙ্গে আলোচনার জন্য হামাস নেতা হানিয়া তুরস্কে

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের নেতা ইসমাইল হানিয়া গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় তুরস্কের ইস্তাম্বুলে পৌঁছেছেন।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে আলোচনার জন্য দেশটিতে গেছেন হানিয়া।

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ব্যক্তির সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এমন প্রেক্ষাপটে এরদোয়ানের সঙ্গে আলোচনার জন্য হানিয়া তুরস্কে গেলেন।

গতকাল হামাসের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, এরদোয়ান ও হানিয়া চলমান গাজা সংঘাত নিয়ে আলোচনা করবেন।




প্রচণ্ড গরম দেশজুড়ে, ৩ দিনের সতর্কতা

Extreme heat across the country, 3-day warning

The temperature may rise in the next three days. Also, the excess of water vapor can increase the discomfort. 

  • The temperature in the capital increased by about 2 degrees in a span of 24 hours. 
  • Areas of mild to moderate heat waves may increase.
  • Doctors advise drinking plenty of water. 

Three people were working to dry corn in a paddy field in Subdia area of ​​Chuadanga Sadar Upazila. They were doing this work with towels tied on their heads in the intense sun of Friday afternoon. Raju Miah, the owner of Bhutta, said, ‘If the pumpkin grows hot, it will not get any fruit. Bhuttogunu brought two people to the house with many requests.’

Very hot all over the country. In the meantime, working people have to work in the fields. Their suffering is more. But everyone is tired in summer.

Chuadanga, where the report started, recorded the highest temperature in the country yesterday – 41.5 degrees Celsius. This is the highest temperature so far this year. Chuadanga falls under Khulna division. Severe heatwave swept through this section yesterday.

An area with maximum temperature above 40 degrees Celsius is considered a severe heat wave. In addition to Khulna division, Rajshahi, Tangail and Pabna districts also experienced severe heat waves. Other parts of the country experienced mild to moderate heat waves. A moderate heat wave swept through the capital Dhaka. 

In such a situation, the Meteorological Department issued a heatwave warning in the country for the next three days yesterday. Muhammad Abul Kalam Mallick, a meteorologist of the Department of Meteorology issued this warning. He told Prothom Alo yesterday that the temperature is unlikely to drop in the next three days; Rather, it may increase. In fact, there will be a heat wave throughout the month of April. However, its level may be more or less from time to time. Also, the excess of water vapor can increase the discomfort.

This meteorologist did not rule out the possibility of extreme heat wave in this month. If the temperature exceeds 42 degrees Celsius, then it is considered as severe heat wave. On April 17 last year, the temperature in Pabna’s Ishwardi was 43 degrees Celsius. This was the highest temperature last year. 

April is the hottest month in the country. The average maximum temperature in this month is 33.2 degrees Celsius. 

The Meteorological Department monitors the weather conditions of 44 stations in the country and presents them daily. According to the notification given yesterday evening, among these 44 stations, only Netrakona and Sylhet had the maximum temperature below 33 degrees Celsius yesterday. Due to the low temperature in Sylhet, it rained yesterday. Sylhet received the highest rainfall in the country yesterday – 13 mm. 

According to the forecast given by the Department of Meteorology, the regions of the country including Khulna division, which are experiencing severe heat waves, may continue. Apart from this, mild to moderate heat waves are flowing over Chandpur, Moulvibazar districts along with rest of Dhaka and Rajshahi divisions and Barisal division. This situation may remain the same today.

AKM Nazmul Haque, meteorologist of Meteorological Department told Prothom Alo yesterday that the area of ​​severe heat wave may not increase on Saturday (today). However, areas of mild to moderate heat waves may increase.

Mymensingh and Sylhet divisions are out of mild to moderate heat wave. Meteorologist Nazmul Haque said that such conditions may exist even today in these two sections.

However, even in this heat, the Meteorological Department has predicted rain in some areas. Accordingly, there may be temporary gusty or gusty wind or rain with thunder in two places of Mymensingh and Sylhet divisions including Comilla, Kishoreganj region. Along with that, there may be scattered hailstorms at some places. Apart from this, the weather may remain mainly dry with partly cloudy sky elsewhere in the country. 

The temperature in the capital increased by 2 degrees

Yesterday, the maximum temperature of the capital was recorded at 38.4 degrees Celsius. In the previous 24 hours, the temperature was 36.8 degrees Celsius. In other words, the temperature has increased by about 2 degrees Celsius in a span of 24 hours. 

According to the Meteorological Department, the water vapor content in the air is very high during this heat wave. Sweating more. And for that, people feel uncomfortable inside.

Dr. Bangabandhu Sheikh Mujib Medical University Emeritus Professor of Medicine Department advised to drink a lot of water, not to wear colored clothes and to drink salted water. ABM Abdullah. He told Prothom Alo yesterday that the sun should be avoided as far as possible. But working people have to stay in the sun. They should try to stay in the shade without being in the sun continuously. 

Professor Abdullah also warned that heatstroke may occur at this time. He said, prolonged exposure to the sun, especially working people, the elderly and children can cause this problem.

[Reporting assisted by Representative , Chuadanga ]