অ্যামনেস্টির প্রতিবেদন: হুমকির মুখে মুক্তমত

মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে আসা লাখো রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে আশ্রয় দিয়েছিল। এই জনগোষ্ঠীর সব মিলিয়ে প্রায় ১০ লাখ সদস্য এখনো এ দেশে আশ্রিত। অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার অনুধাবনের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এখনো হুমকিতে রয়েছে। সব মিলিয়ে ২০১৯ সালে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ছিল মিশ্র।

যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বার্ষিক প্রতিবেদনে এসব মন্তব্য করেছে। এশিয়া–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ‘এশিয়া–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মানবাধিকার পরিস্থিতি: ২০১৯ সালের পর্যালোচনা’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দমনমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, যাতে ভিন্নমতের কণ্ঠস্বরকে ভয়ভীতি দেখাতে ব্যবহার করার সুযোগ রয়েছে, তার আওতায় ২০১৯ সালে অন্তত ২০ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। প্রায় ৪০০ জনের বিরুদ্ধে এই আইনে অভিযোগ করা হয়েছে। আইনটি পুলিশকে গ্রেপ্তার ও আটক করার ব্যাপক ক্ষমতা দিয়েছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পাঁচ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়। তাঁদের মধ্যে একজনকে আটক করা হয়েছিল পুলিশের দুর্নীতির খবর প্রকাশের জন্য। পরে অবশ্য ওই সাংবাদিককে ছেড়ে দেওয়া হয়। এই আইনের কারণে সাংবাদিকেরা স্বনিয়ন্ত্রণে (সেলফ সেন্সর) বাধ্য হচ্ছেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বিরোধী রাজনীতিকদের সভা–সমাবেশ ও মিছিল করতে দেওয়া হয়নি, যা তাঁদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার অধিকারের লঙ্ঘন। গত সেপ্টেম্বরে অন্তত ১৪টি জেলায় বিএনপিকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনের অনুমতি দেয়নি পুলিশ। অক্টোবরে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের চুক্তির সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় আবরার ফাহাদ নামের বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক শিক্ষার্থীকে হলে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অংশ হিসেবে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে গত বছর ৩৮৮ জনের বেশি বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে কোনো কোনো ক্ষেত্রে হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তিকে ঘটনার কয়েক মাস আগেই গুম করার অভিযোগ আছে। এ ছাড়া গত বছর অন্তত ১৩ জন গুম হয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ গত বছরও রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া অব্যাহত রেখেছে। তবে রোহিঙ্গাদের মধ্যে ভয় রয়েছে যে তাদের জোরপূর্বক মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হতে পারে কিংবা ভাষানচরে স্থানান্তর করা হতে পারে। সেপ্টেম্বরে রোহিঙ্গা শিবিরে মুঠোফোন সেবা বন্ধে মুঠোফোন কোম্পানিগুলোকে নির্দেশ দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এ ছাড়া নিরাপত্তা বাহিনী রোহিঙ্গা শিবিরে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ারও উদ্যোগ নিয়েছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক গবেষক সুলতান মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, কঠোর আইনের মাধ্যমে মতপ্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা সীমিত করা হয়েছে। এই আইন ভিন্নমতকে কার্যকরভাবে সংকুচিত করেছে। বাংলাদেশে মুখ খোলার জন্য মানুষের হয়রানি ও গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড বিষয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন ঘটনা প্রমাণ করেছে যে দৃষ্টিভঙ্গি ও নীতির সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করা ব্যক্তিদের ব্যাপারে তাঁদের খুব সহজেই ধৈর্যচ্যুতি ঘটে।

সুলতান মোহাম্মদ জাকারিয়া আরও বলেন, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধে, অপরাধীদের সাজা দেওয়ার ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থতা এবং সরকারের প্রতিশ্রুতির ঘাটতি দায়মুক্তির সংস্কৃতি গড়ে তুলছে বাংলাদেশে।




ক্যাসিনো–কাণ্ডের সেই সেলিম প্রধান এবার উপজেলা ভোটে প্রার্থী

ক্যাসিনো–কাণ্ডে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় চার বছর সাজাও খেটেছেন। আরও তিনটি মামলা বিচারাধীন। অনলাইন ক্যাসিনোর মূল হোতা সাজাপ্রাপ্ত সেলিম প্রধান এবার উপজেলা নির্বাচন করছেন। তিনি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা থেকে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন।

এরই মধ্যে আলোচিত এই ব্যক্তির গণসংযোগের কিছু ভিডিও চিত্র সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় এ নিয়ে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে উৎসুক্য তৈরি হয়েছে।

তবে উপজেলা পরিষদ আইন বলছে, কোনো নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে দুই বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে এবং মুক্তিলাভের পর পাঁচ বছর অতিবাহিত না হলে কোনো ব্যক্তি চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার এবং থাকবার যোগ্য হবেন না।

এ বিষয়ে সেলিম প্রধান প্রথম আলোকে বলেন, দুদকের মামলায় আপিল ও সাজা স্থগিত করতে তিনি হাইকোর্টে আবেদন করেছেন। তাই নির্বাচন করতে তাঁর আইনগত কোনো বাধা নেই।

ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থাইল্যান্ডগামী বিমান থেকে নামিয়ে এনে সেলিম প্রধানকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এরপর তাঁর বাসা ও অফিসে অভিযান চালিয়ে দেশি–বিদেশি মুদ্রা ও বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ জব্দ করা হয়। তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলেছিল, সেলিম প্রধান বাংলাদেশে অনলাইন ক্যাসিনো বা অনলাইন জুয়ার মূল হোতা। তিনি প্রচুর টাকা বিদেশে পাচার করেছেন।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সেলিম প্রধান বাংলাদেশে প্রথম অনলাইন ক্যাসিনো চালু করেন। তিনি গুলশান ও বনানীতে পি ২৪ এবং টি ২১ অনলাইন নামে অনলাইনে ভিডিও গেম খেলার প্ল্যাটফর্ম চালু করেন। পরে ২০১৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর সেগুলোকে অনলাইন ক্যাসিনোয় রূপান্তর করেন। ওই অনলাইন ক্যাসিনোর প্রধান কেন্দ্র ছিল ফিলিপাইনে।

সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা ছাড়াও ঢাকার গুলশান থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনে তিনটি মামলা হয়। বিচারাধীন এসব মামলায় জামিনে রয়েছেন তিনি।

২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল দুদকের করা মামলার রায় দেন বিচারিক আদালত। তাতে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের দুই ধারায় সেলিম প্রধানকে চার বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। ইতিমধ্যে তাঁর সাজাভোগ শেষ হওয়ায় এবং বাকি মামলায় জামিন পাওয়ায় গত বছরের অক্টোবরে মুক্তি পান তিনি। সাজার বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে যে আপিল করেছেন, সেটা শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

এদিকে ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রায়ে বলেছেন, কোনো ব্যক্তির দুই বছরের বেশি দণ্ড ও সাজা হলে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। সাজা স্থগিত থাকলেও নির্বাচনে অংশ নেওয়া যাবে না; যদি সাজা উপযুক্ত আদালতে বাতিল না হয়।

এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, অতীতে সাজাপ্রাপ্ত হলেও আপিল করে নির্বাচন করতে পারতেন। কিন্তু হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী এখন মনে হয় না সেলিম প্রধান নির্বাচন করতে পারবেন। খালেদা জিয়াও এ কারণে নির্বাচন করতে পারেননি।

 




আবদুল আউয়াল মিন্টু হাসপাতালে ভর্তি

হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবদুল আউয়াল মিন্টুকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফিরে বাসায় ঘুমাতে যাওয়ার পর তিনি বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন। একপর্যায়ে অজ্ঞান হওয়ার মতো অবস্থা হয়। এ সময় দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

আবদুল আউয়াল মিন্টুর বড় ছেলে বিএনপির নেতা তাবিথ আউয়াল প্রথম আলোকে বলেন, ‘চিকিৎসকেরা আশঙ্কা করছেন উনি হৃদ্‌রোগে রোগে আক্রান্ত হয়েছেন কি না। ওনার রক্তের তিনটি পরীক্ষা হয়েছে। দুটিতে নেগেটিভ এসেছে। তৃতীয়টির রিপোর্ট হাতের পাওয়ার পর আমরা নিশ্চিত হতে পারব আসলে কী হয়েছে। তবে এখন ওনার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল আছে।’

আবদুল আউয়াল মিন্টুকে দেখতে আজ শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে হাসপাতালে যান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

৭৪ বছর বয়সী আবদুল আউয়াল মিন্টু মাল্টিমোড গ্রুপের কর্ণধার। তিনি দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি ছিলেন।

আবদুল আউয়াল মিন্টুর পরিবার তাঁর দ্রুত সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।




মিশা-ডিপজলকে জয়ের মালা পরিয়ে দেন নিপুণ, বললেন

শেষ হলো বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্প সমিতির ২০২৪-২৬ নির্বাচন। ভোটে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর আগেরবারের সাধারণ সম্পাদক নিপুণ আক্তার ও সভাপতি প্রার্থী মাহমুদ কলিকে হারিয়ে জয়ের মালা ছিনিয়ে নিয়েছে মিশা সওদাগর ও মনোয়ার হোসেন ডিপজল প্যানেল।
শুক্রবার ভোট গ্রহণ শেষে শনিবার সকালে ঘোষিত হয় ফলাফল। প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, সভাপতি পদে মিশা সওদাগর ২৬৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। ১৭০ ভোট পেয়ে পরাজিত তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী মাহমুদ কলি। সাধারণ সম্পাদক পদে অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল পেয়েছেন ২২৫ ভোট। ১৬ ভোট কম পেয়ে হেরেছেন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী নিপুণ আক্তার। পেয়েছেন ২০৯ ভোট।
ভোটে হেরেই গণমাধ্যমের কাছে নিজের অনুভূতির কথা জানান নিপুণ। নিপুণের ভাষ্য, ‘ভেবেছিলাম ডিপজল সাহেবের বিপরীতে আমি যখন দাঁড়াব, ভোট পাব সর্বোচ্চ ৫০টি। সেখানে ভোট পেলাম ২০৯টি। হেরেছি মাত্র ১৬ ভোটে। এতেই প্রমাণিত হলো যে শিল্পী সমিতির ভাই-বোনেরা আমাকে কতটা ভালোবাসেন। এত সম্মান দেওয়ার জন্য তাঁদের ধন্যবাদ জানাই।’ এমনকি নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার জন্য নিজেকেই কৃতিত্ব দেন নিপুণ। অথচ নির্বাচনের আগে নিজের জয় নিয়ে শতভাগ আশাবাদী ছিলেন এই অভিনেত্রী।

নির্বাচনে হেরে গেলেও মিশা-ডিপজলকে জয়ের মালা পরিয়ে দেন নিপুণ। পাশাপাশি পরাজিত নিপুণকেও মালা পরিয়ে দিয়েছেন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী খলনায়ক ডিপজল।

অন্যদিকে নির্বাচনে জিতেই নিপুণ আক্তার এবং ডিপজলকে হাতে হাত মিলিয়ে সবাই একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন মিশা। ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে পাশে থাকার জন্য সবাইকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন অভিনেতা। নিপুণের প্রশংসা করে মিশা সওদাগর বলেন, ‘আমরা জিতেছি, এটা বড় কথা নয়, নিপুণসহ তাঁর প্যানেলের সবাই আমাদের পাশে থাকবেন। আমরা সবাই এক।’

নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী হয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া জানান মনোয়ার হোসেন ডিপজলও। তিনি বলেন, ‘নিপুণকে আমি এনেছিলাম চলচ্চিত্রে। তাতে হার–জিত বড় কথা নয়। ওকে আমি মেয়ের মতোই স্নেহ করি। আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে থাকতে চাই। কোনো ভাগাভাগি চাই না।’
যদিও নির্বাচিত প্রার্থী এবং হেরে যাওয়াদের মধ্যে মালাবদল হলেও নিপুণ প্যানেলের ভরাডুবি নিয়ে চলছে জল্পনা–কল্পনা। নিপুণের এবার যে ভরাডুবি হচ্ছে, তা আগেই আন্দাজ করেছেন অনেকে। কারণ, নির্বাচনের আগেই বহু জটিলতায় পড়তে হয়েছিল অভিনেত্রীকে। তাঁর হাত ছেড়ে দিয়েছিলেন নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। তখনই অথই সাগরে পড়ে যান চিত্রনায়িকা। এরপর মাহমুদ কলিকে নিয়ে মাঠে নামলেও খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারেননি অভিনেত্রী। যার ফল এই নির্বাচন।



আলেকজান্ডার বো সবচেয়ে বেশি ভোট, অন্যরা কে কয়টি পেলেন

দেশীয় চলচ্চিত্রে একসময় আলেকজান্ডার বোর ব্যস্ততা ছিল চোখে পড়ার মতো। এখন আর চলচ্চিত্রে তাঁকে খুব একটা দেখা যায় না। নির্বাচন ও চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আয়োজনে মাঝেমধ্যে তাঁকে দেখা যায়। সেই আলেকজান্ডার বো এবারের চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে চমকে দিলেন। বিজয়ী সব সদস্যের মধ্যে সর্বোচ্চ ২৮৬ ভোট পেয়ে আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আলেকজান্ডার বো বলেন, ‘ভোটাররা আমার প্রতি আস্থা রেখেছেন। তাঁদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।’

আলেকজান্ডার বো বলেন, ‘প্রায় ২৫ বছর ধরে চলচ্চিত্রে কাজ করে আসছি। এই জায়গাটা একটা পরিবারের মতো। এখন কিছুটা কমে গেলেও একসময় এই পরিবারের বন্ধনটা আরও বেশি শক্তিশালী ছিল। আমরা আগে যখন কাজ করেছি, সবাই সুখে–দুঃখে একসঙ্গে থেকে কাজ করে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। সেই জায়গা থেকে ভোটাররা আমাদের মতো শিল্পীদেরকে ভালো করেই চেনেন, জানেন। হয়তো সে কারণেই এত ভোটের ব্যবধানে আমাকে জয়ী করেছেন।’

এর আগেরবারের নির্বাচনে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে চিত্রনায়িকা শাহনূরের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন আলেকজান্ডার বো। তবে তারও আগে দুবার সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এই অভিনেতা। আলেকজান্ডার বো এবার মিশা-ডিপজল প্যানেল থেকে আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক হিসেবে নির্বাচন করেন।

তিনি তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী আরেক নায়ক মারুফ আকিবকে হারিয়েছেন ১৩৭ ভোটে, মারুফ পেয়েছেন ১৪৯ ভোট। ১৯৯৫ সালে শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত ‘লম্পট’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে যাত্রা করেন আলেকজান্ডার বো। পরিচালক শহীদুল ইসলাম খোকনের ‘ম্যাডাম ফুলি’ ছবিতে শিমলার বিপরীতে আলেকজান্ডারের অভিনয় প্রশংসিত হয়।

গতকাল শুক্রবার চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪-২৬ মেয়াদের নির্বাচনের ভোট হয়। ভোট গণনা শেষে আজ শনিবার সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটের দিকে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ৫৭০ ভোটের মধ্যে ভোট পড়েছে ৪৭৫টি। বৈধ ব্যালট ৪৩৪টি, বাতিল ব্যালট ৪১টি। জানা গেছে, ২৬৫ ভোট পেয়ে এ মেয়াদের নতুন সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেতা এবং বিগত দুই মেয়াদের সভাপতি মিশা সওদাগর। মাহমুদ কলি ১৭০ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। ২২৫ ভোট পেয়ে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল। তাঁর কাছে পরাজিত হয়েছেন নিপুণ আক্তার, তিনি পেয়েছেন ২০৯ ভোট। সহসভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন মাসুম পারভেজ রুবেল ও ডি এ তায়েব। রুবেল পেয়েছেন ২৩১ ভোট, ডি এ তায়েব ২৩৪ ভোট।

এ ছাড়া সহসাধারণ সম্পাদক আরমান ২৩৭, সাংগঠনিক সম্পাদক জয় চৌধুরী ২৫৫, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক আলেকজান্ডার বো ২৮৬, দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক জ্যাকি আলমগীর ২৪৫, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক মামনুন হাসান ইমন ২৩৫ ও কোষাধ্যক্ষ পদে কমল ২৩১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এবার কার্যনির্বাহী সদস্য পদে মিশা-ডিপজল পরিষদ থেকে নির্বাচিত হয়েছেন নয়জন। তাঁদের মধ্যে সুচরিতা ২২৮, রোজিনা ২৪৩, আলীরাজ ২৩৯, সুব্রত ২১৮, দিলারা ইয়াসমিন ২১৮, শাহনূর ২৪৫, নানা শাহ ২১০, রত্না কবির ২৬৩ ও চুন্নু ২৪৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। কলি-নিপুণ পরিষদ থেকে রিয়ানা পারভিন পলি ২২০ ও সনি রহমান ২৩০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।

গতকাল সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে ভোট গ্রহণ শেষ হয়। এর আগে ব্যাপক নিরাপত্তার মধ্যে সকাল সাড়ে নয়টায় এফডিসির শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। এবারের নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন খোরশেদ আলম। সদস্য হিসেবে ছিলেন এ জে রানা ও বি এইচ নিশান।

 




নির্বাচনে মাহমুদ কলি–নিপুণদের ভরাডুবির যত কারণ

নানা জল্পনার পর চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪-২৬ মেয়াদের নির্বাচন হয়ে গেছে। এতে নিপুণ পরাজিত হয়েছেন খল চরিত্রের অভিনেতা ডিপজলের কাছে। মাহমুদ কলি হেরেছেন মিশা সওদাগরের কাছে। শুধু কলি– নিপুণ নয়, তাঁর প্যানেলের রীতিমতো ভরাডুবি হয়েছে—যা সংশ্লিষ্ট অনেককে অবাক করেছে। নির্বাচনে এমন ভরাডুবির বেশ কয়েকটি কারণ আছে বলে মনে করছেন চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টরা।

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিতে গেল মেয়াদে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনয়শিল্পী শিল্পী সমিতির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নতুন করে আলোচনায় আসেন। একই আসনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন জায়েদ খান। ভোটে এই পদের জটিলতার নিরসন হয়নি। ভোট শেষে এই পদের জটিলতা সমাধানে আদালতের দ্বারস্থ হন নিপুণ ও জায়েদ। শেষ পর্যন্ত আদালতের রায়ে নিপুণ দুই বছর দায়িত্ব পালন করেন। সমিতির দায়িত্ব পালনের পুরো দুই বছর সময়ে জায়েদ খান সমালোচনা করেন নিপুণের। হাত গুটিয়ে বসে থাকেননি নিপুণও, তিনি জায়েদের সমালোচনার পাল্টা জবাব দিয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে শিল্পী সমিতির এসব সদস্যের অসংলগ্ন কথাবার্তায় বিরক্ত ছিলেন জ্যেষ্ঠ অভিনয়শিল্পী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষেরাও।

গেল মেয়াদের সাধারণ সম্পাদক নিপুণ আক্তার এবারও চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তবে সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন নির্বাচনের আগ মুহূর্তে জানান, এই মেয়াদের শিল্পী সমিতির নির্বাচনে তিনি আর অংশ নেবেন না। হঠাৎ করে সভাপতির এমন ঘোষণায় বেকায়দায় পড়েন নিপুণ। এমনকি কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেলের সাইমন সাদিকসহ কয়েকজন সদস্যের সরে যাওয়াটা এবারের নির্বাচনে নিপুণ প্যানেলে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

অন্যদিকে মিশা-ডিপজল তাঁদের গুছিয়ে ফেললেও নিপুণকে সভাপতি প্রার্থী খুঁজে পেতে বেগ পেতে হয়। অনেক তারকাকে রাজি করানোর চেষ্টার খবর এলেও শেষ পর্যন্ত দেখা যায়, নিপুণ সভাপতি হিসেবে পান একসময়ের আলোচিত নায়ক মাহমুদ কলিকে। তারপরও যেন নির্বাচনী মাঠ জমাতে পারেননি তিনি। প্যানেলের অন্য প্রার্থীরা মিশা-ডিপজল প্যানেলের প্রার্থীদের চেয়ে অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রার্থী ছিল বলেও কেউ কেউ মত দেন, যা নিপুণের জন্য ভালো ফল বয়ে আনেনি। তা ছাড়া গেল মেয়াদে নিপুণের সঙ্গে যাঁরাই ছিলেন, তাঁদের মধ্যে শাহনূর, নানা শাহ ও ডি এ তায়েবের মতো অনেকেই যখন তাঁকে ছেড়ে মিশা-ডিপজলের সঙ্গে যোগ দেন, তা সবচেয়ে নেতিবাচক ছিল। এসব নির্বাচনের সময় ভোটারদের মধ্যে প্রভাব ফেলেছে।

২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচনে নিপুণ সভাপতি হিসেবে পাশে পেয়েছিলেন জ্যেষ্ঠ অভিনয়শিল্পী ইলিয়াস কাঞ্চনকে। এ বছরের মার্চে হঠাৎ করে শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসেন তিনি। ইলিয়াস কাঞ্চন প্রথম আলোকে জানান, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে টাকার ছড়াছড়ি হয়। ভোটাররা প্রতিটি প্যানেল থেকে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা নেন। হঠাৎ করে সভাপতির এমন বক্তব্য সাধারণ সম্পাদকসহ সেই প্যানেলের জন্য মন্দ বার্তা বয়ে আনে, যা ভোটে প্রভাব ফেলেছে।

নির্বাচনের আগে নিপুণের ক্ষমতা প্রদর্শনের ব্যাপারটি সামনে এসেছে। এবারের মেয়াদের নির্বাচন শুরুর আগ মুহূর্তে নিপুণ তাঁর ক্ষমতাবলে কয়েকজনকে শিল্পী সমিতির সদস্যপদ দিয়েছেন, এমন কথা চলচ্চিত্রের অনেকে বলেছেন। আবার ফেসবুক দেওয়া পোস্টকে ঘিরে সদস্যপদ বাতিলের ব্যাপারটিও নিপুণের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনেনি। প্রতারণা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে করা মামলায় আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীরের সদস্যপদ এবং তাঁর নির্বাচনের বিষয়টিও নিপুণকে সমালোচনায় ফেলে। নিপুণের প্যানেল থেকে নির্বাচন করার ঘোষণা যখন আসে, তখন চলচ্চিত্র শিল্পীদের নিয়ে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বেফাঁস মন্তব্যও নির্বাচনে নিপুণ প্যানেলের জন্য নেতিবাচক হয়েছে।

গেল মেয়াদে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন পীরজাদা শহীদুল হারুন। তাঁর সঙ্গে নিপুণের দ্বন্দ্ব ছিল প্রকাশ্যে। দুজন দুজনকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করতেও ছাড়েননি। সেই পীরজাদাকে এবার দেখা গেছে কলি-নিপুণ প্যানেলে। হঠাৎ করে নির্বাচনের আগ মুহূর্তে ‘চিরশত্রু’ হিসেবে পরিচিত পীরজাদা হারুনের সঙ্গে হাত মেলানো এবং একই প্যানেল থেকে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত ভোটারদের মধ্যে নিপুণকে নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। কারও কারও মতে, নিপুণ শিল্পী সমিতির চেয়ারে বসে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন, যা মোটেও ঠিক হয়নি। জোর খাটিয়েছেন।

নিপুণের এমন আচরণের ইঙ্গিত পাওয়া যায় গেল মেয়াদে তাঁরই প্যানেল থেকে নির্বাচিত প্রার্থী চিত্রনায়িকা শাহনূরের একটি ফেসবুক পোস্ট থেকে। এবার তিনি নিপুণের বিপরীত প্যানেল থেকে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন। এরপর তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘জোর করে কারও মনে স্থান পেতে যাবেন না। আপনাকে যদি তাঁর প্রয়োজন থাকে, তাঁর মনে এমনিতেই আপনার জন্য জায়গা থাকবে।’ অনেকে ফেসবুকে এমনও লিখেছেন বিগত সময়ে বিভিন্ন সময়ে সংবাদ সম্মেলন বা অন্য অনুষ্ঠানে চিত্রনায়িকা নিপুণ ‘ঔদ্ধত্যপূর্ণ’ আচরণ করেছেন।

আবার কারও কারও মতে, গেল মেয়াদে বিজয়ী হয়ে আসার আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেননি নিপুণ। তাঁরই প্যানেলে সদস্য নানা শাহ এ বিষয়টি সবার সামনে তুলে ধরেছেন এভাবে, ‘আগেরবার আমি এবং ডি এ তায়েব নিপুণের সঙ্গে নির্বাচন করেছিলাম। ভালো কিছু কাজের আশা করেই তাদের সঙ্গে নির্বাচন করেছিলাম। তারা কথা দিয়েছিল সিনেমা নির্মাণ করবে। একটি কথা মনে রাখবেন, শিল্পী সমিতি সিনেমা নির্মাণ করতে পারে না। কিন্তু নিপুণ কথা দিয়েছিল ছয়টি সিনেমা নির্মাণ করবে। আমি তার কথা অনুযায়ী এগিয়ে ছিলাম। দুটি সিনেমায় এন্ট্রি করেছিলাম। কিন্তু তারা আমার পাশে কেউ আসেনি। নিপুণ কথা রাখেনি। তার প্যানেলে গিয়ে ভুল করেছিলাম। আমরা শিল্পীরা সম্মান ও ভালোবাসা চাই। এটা যখন আমরা হারিয়ে ফেলি তখন খুব কষ্ট পাই।সবচেয়ে দুঃখজনক হচ্ছে আমাদের অনেক শিল্পী এখন বেকার। তাদের জন্য শিল্পী সমিতি দুই বছরে কী করতে পেরেছে? দুই বছরে শিল্পী সমিতির সফলতা দেখছি না।’




প্রথম আইএম নর্ম করেছে মনন রেজা, হতে পারে জিএম নর্মও

কদিন আগেই নিজের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার নর্ম করেছেন ফাহাদ রহমান। দাবার জন্য এবার এসেছে আরেকটি সুখবর—আন্তর্জাতিক মাস্টার নর্ম করেছে ১৪ বছর বয়সী ফিদে মাস্টার মনন রেজা (নীড়)।

থাইল্যান্ডে ২১তম ব্যাংকক চেস ক্লাব ওপেন টুর্নামেন্টে এক রাউন্ড বাকি থাকতেই নর্ম পূরণ হয়েছে তার। আজ অষ্টম রাউন্ডে ফিলিপাইনের আন্তর্জাতিক মাস্টার ড্যানিয়েল কুইজনকে হারিয়ে ৮ ম্যাচে মননের পয়েন্ট হয়েছে সাড়ে ৬। টুর্নামেন্টে একটি করে ড্র ও হার। বাকি ৬ ম্যাচে জয় কিশোর এই দাবাড়ুর। আগামীকাল শেষ রাউন্ডে প্রতিদ্বন্দ্বী যদি উচ্চ রেটিংয়ের কেউ হন এবং তাঁকে যদি হারাতে পারে মনন রেজা, তাহলে গ্র্যান্ডমাস্টার নর্মও হতে পারে।

তবে শেষ রাউন্ডে হারলেও আইএম নর্ম নিশ্চিত বলে থাইল্যান্ড থেকে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক মাস্টার আবু সুফিয়ান শাকিল। তিনি নিজেও এই টুর্নামেন্টে খেলছেন। বাংলাদেশ থেকে টুর্নামেন্টে আরও খেলছেন ফিদে মাস্টার নাঈম হক, তৈয়বুর রহমান সুমন ও তাসরিক শায়ান। ১৩ এপ্রিল টুর্নামেন্টটা শুরু হয় ব্যাংকক থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টার দূরত্বের শহর হুয়া হিনে।

মনন রেজা ফিদে মাস্টার হয়েছে গত বছর। এটি তার প্রথম আইএম নর্ম। আইএম হতে হলে তিনটি নর্মের পাশাপাশি ২৪০০ রেটিং লাগে। মনন ২২৮৫ রেটিং নিয়ে থাইল্যান্ডে খেলতে যায় মনন। সেখানে দুটি টুর্নামেন্টে তার রেটিং বেড়েছে ১৫৪। ফলে তার রেটিং ২৪০০ পার হয়ে হয়ে গেছে। এখন তার আর দুটি নর্ম দরকার।

সেটি সহসাই অর্জনের আশা মননের। থাইল্যান্ড থেকে প্রথম আলেকে সে বলেছে, ‘এই টুর্নামেন্টে আমার আসারই কথা ছিল না। শেষ দিনে ভিসা হয়েছে। তাই আসতে পেরেছি। তবে টুর্নামেন্টটার কথা জানতাম না। শাকিল স্যার (দাবাড়ু আবু সুফিয়ান) বিস্তারিত বলার পর আসি। এখানে আমি দুজন গ্র্যান্ডমাস্টারকে হারাই। একজন ভারতের, আরেকজন কাজাখস্তানের। দুজন আইএমকে হারাই। আরেকজন আইএমের সঙ্গে ড্র করেছি। আরেকজন আইএমের কাছে হেরেছি। দুজন সাধারণ রেটেড প্লেয়ার। আজ আমার প্রথম আইএম নর্ম হয়েছে। আমি খুব খুশি।’

মনন রেজা নারায়ণঞ্জের ফিলোসোফিয়া স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ছে।




পাওয়ার প্লেতে হায়দরাবাদের ১২৫, টি–টোয়েন্টির বিশ্ব রেকর্ড

২০১৭ সালের আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে প্রথম ৬ ওভারে ১০৫ রান করেছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। পাওয়ার প্লেতে এটিই ছিল আইপিএল রেকর্ড। সাত বছর পর আজ সেই রেকর্ড তো বটেই স্বীকৃত টি-টোয়েন্টির পাওয়ার প্লেতে রান তোলার রেকর্ড ভেঙে দিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষে পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে ১২৫ রান তুলেছে হায়দরাবাদ।

আগের বিশ্ব রেকর্ডটা ছিল নটিংহামশায়ারের। ২০১৭ সালে ন্যাটওয়েস্ট টি-টোয়েন্টি ব্ল্যাস্টে ডারহামের বিপক্ষে প্রথম ৬ ওভারে ১০৬ রান তুলেছিল নটিংহামশায়ার।

ইনিংসের দ্বিতীয় বলে খলিল আহমেদকে ছক্কা মেরে ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করেন ট্রাভিস হেড। ওই ওভারে আসে ১৯ রান। ললিত যাদবের করা দ্বিতীয় ওভারে আসে ২১ রান। ওই ওভারে ২টি ছক্কা মারেন অস্ট্রেলীয় ওপেনার। আনরিখ নর্কিয়ার করা তৃতীয় ওভারে আসে ২২ রান, ২২ রানই তোলেন হেড। ফিফটিও পেয়ে যান আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি পাওয়া এই ব্যাটসম্যান। ১৬ বলে ৫০ ছোঁয়া হেড ছক্কা মেরেই পৌঁছান এই মাইলফলকে

ললিতের করা পরের ওভারে হেড-অভিষেক শর্মারা তোলেন আরও ২১ রান। পরের ওভারে আক্রমণে এসে কুলদীপ যাদব দেন ২০ রান। ওভারের শেষ বলে ১০০ ছোঁয় হায়দরাবাদ। আইপিএর ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে ৫ ওভারের মধ্যে ১০০ রান করার কীর্তি গড়ে দলটি। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে আসে ২২ রান।

পাওয়ার প্লে শেষে হেড ২৬ বলে ৮৪ ও অভিষেক ১০ বলে ৪০ রান করে অপরাজিত ছিলেন। সপ্তম ওভারের দ্বিতীয় বলে অভিষেককে (১২ বলে ৪৬) অক্ষর প্যাটেলের ক্যাচ বানিয়ে ১৩১ রানের জুটি ভাঙেন কুলদীপ। ওই ওভারের শেষ বলেই অক্ষর-কুলদীপের যুগলবন্দীতে আউট এইডেন মার্করামও (৩ বলে ১ রান)। কুলদীপর আরেকটি উইকেট নিয়েছেন নবম ওভারের শেষ বলেও। এবার লং অনে ক্যাচ তুলে বিদায় হেডের (৩২ বলে ৮৯)। অভিষেক ও হেড, দুজনই মেরেছেন ৬টি করে ছক্কা।

দিল্লি ক্যাপিটালসকে পরের বলেই আরেকটি উইকেট এনে দেন অক্ষর প্যাটেল। তিনি বোল্ড করেছেন হাইনরিখ ক্লাসেনকে। বিনা উইকেটে ১২৫ রান তুলে পাওয়া প্লে শেষ করা হায়দরাবাদ ক্লাসেনের বিদায়ে হয়ে যায় ১৬২/৪।

হঠাৎ খেই হারানো হায়দরাবাদ এবারই নিজেদের গড়া আইপিএলের সর্বোচ্চ দলীয় ইনিংসের রেকর্ড ভাঙার আশা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত থেমেছে তা থেকে ২১ রান দূরে। শেষ দিকে শাহবাজ আহমেদের আরেকটি ঝোড়ো ইনিংসে ৭ উইকেটে ২৬৬ রান তুলেছে হায়দরাবাদ। আইপিএল ইতিহাসে যা চতুর্থ সর্বোচ্চ। ২ চার ও ৫ ছক্কায় ২৯ বলে ৫৯ রানে অপরাজিত ছিলেন শাহবাজ।

দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড না ভাঙতে পারলেও আইপিএলে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড গড়েছে হায়দরাবাদ। মোট ২২টি ছক্কা মেরেছে দলটি। আইপিএল ইতিহাসে যা যৌথভাবে রেকর্ড। এ বছরই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে ২২টি ছক্কা মেরেছিল হায়দরাবাদই।




ক্যাচ মিস করে ‘ধোনিকে ৫ বল কম খেলতে দেওয়ায়’ সেরা ফিল্ডার হুদা

ম্যাচের শেষে একজনকে ‘সেরা ফিল্ডার’–এর পুরস্কার দেওয়াটা রীতি বানিয়ে নিয়েছেন লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের ফিল্ডিং কোচ জন্টি রোডস। ফিল্ডিংয়ের জন্য বিখ্যাত এই সাবেক ক্রিকেটার চেন্নাই–লক্ষ্ণৌ ম্যাচের পরেও ড্রেসিংরুমে একজনের নাম ঘোষণা করেছেন।

এ ধরনের ক্ষেত্রে যা হয়, ম্যাচে দুর্দান্ত ক্যাচ নেওয়া বা দারুণ ফিল্ডিংয়ে রান আটকানো কাউকে দেওয়া হয় সেরা ফিল্ডারের স্বীকৃতি। কিন্তু চেন্নাইয়ের বিপক্ষে ম্যাচের পর রোডস লক্ষ্ণৌর সেরা ফিল্ডার হিসেবে বেছে নিয়েছেন দীপক হুদাকে, যিনি ফিল্ডিংয়ের সময় রবীন্দ্র জাদেজার ক্যাচ মিস করেছেন! হুদার ক্যাচ মিসের বলটি ছয়ও হয়েছে।




দেশে ইন্টারনেট সেবায় বিঘ্ন

দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন কেব্‌লের (সিমিউই-৫) সংযোগ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দেশে ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হচ্ছে।

গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার পর এ সমস্যা শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানসহ গ্রাহকেরা ইন্টারনেটে ধীরগতি পাচ্ছেন।

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যান্ডউইডথ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্‌লস পিএলসি (বিএসসিপিএলসি) জানিয়েছে, সিঙ্গাপুরে ফাইবার কেব্‌ল ‘ব্রেক’ করায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।