শিল্পা শেঠির মেদহীন শরীর ও লাবণ্যময় ত্বকের গোপন রহস্য

লিউড অভিনেত্রী শিল্পা শেঠির বয়স প্রায় পঞ্চাশ ছুঁইছুঁই। তিনি দুই সন্তানের মা। বয়স কিংবা জীবনের চাপ তার চেহারা ও শরীরে প্রভাব ফেলতে পারেনি। তিনি ধরে রেখেছেন চেহারার লাবণ্য এবং মেদহীন শরীর। শিল্পার রূপলাবণ্য ও সৌন্দর্যের নেপথ্যে অনেকাংশ জুড়ে রয়েছে তার ডায়েট ও শরীরচর্চার অভ্যাস। তিনি নিয়ম করে যোগাসন, কার্ডিয়ো, ওয়েট ট্রেনিংয়ের পাশাপাশি খাওয়াদাওয়া নিয়ে অতিমাত্রায় সচেতন।

তিনি খুবই ভোজনরসিক। ফুচকা, চটপটি, রসগোল্লা সবই খান তিনি। শিল্পার মতে, ডায়েট করা মানে না খেয়ে থাকা নয়।

শিল্পার সকাল শুরু হয় ঈষদুষ্ণ জলে লেবুর রস পান করে। কাঠবাদাম দুধ, কলা, মধু ও ওটস দিয়ে বানানো বিশেষ এক রকম স্মুদিও থাকে তার সকালের নাশতায়। জলখাবার ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খেতে পছন্দ করেন শিল্পা। কড়া করে ব্রাউন ব্রেড সেঁকে তাতে মোটা করে সাদা মাখন লাগিয়ে বেশ ভালবাসেন তিনি। প্রায়শই তার জলখাবারে এই পদটি থাকে। তা ছাড়া দোসা, সবজি দিয়ে স্যান্ডউইচও খান তিনি।
দুধ খেতে ভালবাসেন শিল্পা। গরুর দুধ নয়, বেশি আয়রনের জন্য মহিষের দুধই পছন্দ তার। তবে শিল্পার পরামর্শ, শরীর বুঝেই তা খাওয়া উচিত। গ্যাস-অম্বলের সমস্যা বা বদহজমের সমস্যা না থাকলে মহিষের দুধ খাওয়া যেতেই পারে।

ভালোমন্দ খেলেও বাড়িতে তৈরি খাবার খেতেই পছন্দ করেন অভিনেত্রী। মাঝেমধ্যে কেক-পেস্ট্রি খেলেও, তা পরিমিত পরিমাণে খেতেই পছন্দ করেন তিনি। যারা ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য শিল্পার পরামর্শ, পছন্দের খাবার সপ্তাহে এক দিন খাওয়া যেতেই পারে, তবে তা খেতে হবে পরিমিত।

যতই ব্যস্ততা থাক, দুপুরের খাবার ১২টা থেকে ১টার মধ্যেই খেয়ে নেন শিল্পা। সবজি দিয়ে খিচুড়ি এক কাপ, একটি সেঁকা পাঁপড় আর সামান্য রসুনের আচার— তার খুব প্রিয়। শিল্পা বলছেন, সাদামাঠা ভাত, ডাল আর সবজি খেতেই পছন্দ করেন তিনি। রাজমা-চালের সঙ্গে মাখো মাখো পনির খেতে দ্বিধা করেন না তিনি।

সারা দিনে যা-ই খান না কেন, রাতের খাবার নিয়ে যথেষ্ট সচেতন শিল্পা। রাত ৮টার পর পানি ছাড়া আর কিছুই খান না। সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে সামান্য স্যুপ খান। এ অভিনেত্রীর পরামর্শ, ওজন কমাতে হলে রাত ৮টার পরে আর কিছুই খাওয়া যাবে না। ফল বা দুধও না। ওই সময় পাকস্থলীকে বিশ্রাম দিতে হবে। তা হলে সারা দিনের খাবার ভালোভাবে হজম হবে।




গ্যাস সরবরাহ শুরু করেছে সামিটের এলএনজি টার্মিনাল

কক্সবাজারের মহেশখালীতে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সামিটের এলএনজি টার্মিনাল সাড়ে তিন মাস ধরে বন্ধ থাকার পর গ্যাস সরবরাহ আবার শুরু হয়েছে।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরু করেছে সামিট কর্তৃপক্ষ। দিনে ৫০ কোটি ঘনফুট সরবরাহ সক্ষমতা থাকলেও ৬ কোটি ঘনফুট সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে ধীরে ধীরে সরবরাহ বাড়বে বলে জানিয়েছে সামিট।

বুধবার পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে টার্মিনাল প্রস্তুতের তথ্যটি জানায় সামিট। এতে বলা হয়, বিদ্যুৎ, সার ও শিল্প খাতে গ্যাসের চাহিদা মেটাতে জাতীয় গুরুত্ব বিবেচনায় সামিটের কর্মীরা ও আন্তর্জাতিক অংশীদারেরা পুনরায় গ্যাস সরবরাহ চালু করতে দিনরাত কাজ করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সময় থেকে টার্মিনাল মেরামতসংক্রান্ত খরচ ও কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সামিটের প্রায় শতাধিক কোটি ডলারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এখন এটি ৫০ কোটি ঘনফুট করে গ্যাস সরবরাহের জন্য প্রস্তুত।

তবে পেট্রোবাংলা সূত্র বলছে, সামিটের টার্মিনালের মজুত থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। গ্যাসের প্রবাহ বাড়াতে একটু সময় লাগতে পারে। এ ছাড়া খোলাবাজার থেকে নতুন করে এলএনজি কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নতুন এলএনজির জাহাজ এলে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গত ২৭ মে বন্ধ হয়ে যায় সামিটের টার্মিনাল। এটি সিঙ্গাপুরে মেরামত শেষে জুলাইয়ের শুরুতে চালুর কথা ছিল। তবে মেরামত শেষে দেশে ফেরার পর গ্যাস সরবরাহ চালুর আগেই আবার দুর্ঘটনায় পড়ে সামিটের টার্মিনাল।

দেশে দিনে গ্যাসের চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট। দিনে সর্বোচ্চ সরবরাহ করা হয় ৩০০ থেকে ৩১০ কোটি ঘনফুট পর্যন্ত। এর মধ্যে এলএনজি থেকে আসে ১১০ কোটি ঘনফুট। একটি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় এখন দিনে এলএনজি সরবরাহ হচ্ছে ৬০ কোটি ঘনফুট। দিনে মোট গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে ২৬০ কোটি ঘনফুট। এতে বিদ্যুৎ খাত, শিল্পকারখানাসহ বিভিন্ন খাতে গ্যাসের সরবরাহ কমে গেছে।

 

 




হজের নিবন্ধন শুরু ১ সেপ্টেম্বর

২০২৫ সালের হজের প্রাথমিক নিবন্ধন শুরু হবে ১ সেপ্টেম্বর থেকে। সরকারি-বেসরকারি দুই মাধ্যমেই এই নিবন্ধন কার্যক্রম চলবে এবছরের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। প্রাথমিক নিবন্ধনের সময় পরে আর বাড়ানো হবে না।

পূর্বের কিংবা নতুন প্রাক-নিবন্ধিত যেকোন ব্যক্তি তিন লক্ষ টাকা জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন করতে পারবে।  হজ প্যাকেজ মূল্যের অবশিষ্ট টাকা প্যাকেজে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। এ বছরের হজ প্যাকেজ মূল্য সৌদি পর্বের ব্যয় ও বিমান ভাড়া নির্ধারণ সাপেক্ষে ঘোষণা করা হবে। তবে ২০২৫ সনের সাধারণ হজ প্যাকেজ মূল্য গত বছরের চেয়ে কমানোর চেষ্টা করা হবে।

সরকারি ও বেসরকারি উভয় মাধ্যমের প্রাক-নিবন্ধন ফি ৩০ হাজার টাকা।২০২৫ সনে বাংলাদেশের জন্য হজযাত্রীর কোটা এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। এই কোটা পূর্ণ হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রাথমিক নিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে।

সাধারণ প্যাকেজে’র বাড়ি কিংবা হোটেলে একরুমে সর্বোচ্চ ৬ সিট থাকবে। তবে প্যাকেজ আপগ্রেডেশন সুবিধা থাকবে। হজ এজেন্সিগুলো বিশেষ প্যাকেজের সুবিধা দিয়ে হজযাত্রী প্রেরণ করতে পারবে। হজ কার্যক্রম পরিচালনায় প্রাথমিকভাবে যোগ্য এজেন্সির তালিকা www.hajj.gov.bd এ পাওয়া যাবে। তাছাড়া, ১৬১৩৬ নম্বর ফোন করে জানা যাবে হজ সংক্রান্ত যেকোন তথ্য।

ই-হজ সিস্টেম (www.hajj.gov.bd), e-Hajj BD মোবাইল অ্যাপ থেকে সরকারি মাধ্যমে হজে গমনেচ্ছু ব্যক্তিরা সকল ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, বায়তুল মোকাররম মসজিদ এবং ঢাকার আশকোনার  হজ অফিস হতে প্রাক-নিবন্ধন ও প্রাথমিক নিবন্ধন করতে পারবে। বেসরকারি মাধ্যমের হজযাত্রীদেরকে অনুমোদিত এজেন্সি কর্তৃক প্রাথমিক নিবন্ধন করতে হবে। প্রাথমিক নিবন্ধনের সময় প্রাক-নিবন্ধন সনদ ও পাসপোর্ট প্রয়োজন হবে।

সরকারি মাধ্যমে হজে গমনেচ্ছু ব্যক্তিদেরকে সোনালী ব্যাংক পিএলসি, স্থানীয় কার্যালয় শাখা, মতিঝিল ঢাকার Sale Proceeds of Hajj Deposit শীর্ষক হিসাবে ০০০২৬৩৩০০০৯০৮ হিসাব নম্বরের অনুকূলে টাকা জমা দিতে হবে। সোনালী ব্যাংকের যে কোন শাখায় ভাউচারের মাধ্যমে প্রাথমিক নিবন্ধনের টাকা জমা দেওয়া যাবে। বেসরকারি মাধ্যমের হজযাত্রীদেরকে এজেন্সির নির্ধারিত ব্যাংক হিসাবে প্রাথমিক নিবন্ধনের টাকা জমা দিতে হবে।

ক্যান্সার, অ্যাডভান্সড কার্ডিয়াক, লিভার সিরোসিস, কিডনি রোগ, সংক্রামক যক্ষা, ডিমেনশিয়া প্রভৃতি দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত এবং গর্ভবতী মহিলা ও চলাচলে অক্ষম ব্যক্তিদেরকে হজের নিবন্ধন না করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় রোববার এ সংক্রান্ত একটি পত্র জারি করেছে।

 




২০ সেপ্টেম্বর থেকে প্রতিদিন চলবে মেট্রোরেল

আগামী ২০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থেকে সপ্তাহে প্রতিদিন মেট্রোরেল চলবে। শুক্রবার বিকেল ৩টা ৩০ মিনিট থেকে রাত ৯টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত চলাচল করবে। এছাড়া সপ্তাহে বাকি ৬ দিন আগের মতোই মেট্রোরেল চলাচল করবে।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) মেট্রোরেল পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) কোম্পানি এক অফিস আদেশে এ কথা জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ডিএমটিসিএল এর আওতায় পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণাধীন এমআরটি লাইন-৬ এর মেট্রো ট্রেন আগামী ২০ সেপ্টেম্বর থেকে প্রতি শুক্রবার উত্তরা উত্তর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত বিকেল ৩টা ৩০ মিনিট থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এবং মতিঝিল থেকে উত্তরা উত্তর পর্যন্ত বিকেল ৩টা ৫০ মিনিট থেকে রাত ৯টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত নির্ধারিত হেডওয়েতে চলাচলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

অফিস আদেশে আরও বলা হয়, এই প্রেক্ষাপটে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর থেকে প্রতি শুক্রবার মেট্রোরেল উপরোল্লিখিত সময় অনুযায়ী চলাচলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।

 




সেপ্টেম্বরে একদিন ছুটি নিলেই মিলবে টানা ৪ দিনের ছুটি

চলতি সেপ্টেম্বর মাসে একদিনের ছুটির ব্যবস্থা করতে পারলে টানা চার দিন ছুটি কাটানোর সুযোগ পাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা।

বুধবার সন্ধ্যায় দেশের আকাশে রবিউল আউয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। সেই হিসেবে আগামী  ১৬ সেপ্টেম্বর দেশে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী পালিত হবে।সেদিন সরকারি সকল অফিস-আদালত বন্ধ থাকবে। এর আগে ১৩ ও ১৪ সেপ্টেম্বর সাপ্তাহিক ছুটি। পরদিন ১৫ সেপ্টেম্বর  অফিস খোলা। এই দিনটি ছুটি নিতে পারলেই মিলবে টানা চার দিনের ছুটি।




তীব্র দাবদাহে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থী অজ্ঞান

মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ীতে তীব্র তাপদাহে বিদ্যালয়ে পাঠদানের সময় শ্রেণিকক্ষে সুমি আক্তার (১৪) নামে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী অজ্ঞান হয়ে গেছে। রোববার দুপুরে উপজেলার হাসাইল বানারী ইউনিয়নের বানারী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার পরপরই ওই শিক্ষার্থীকে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

শিক্ষার্থী সুমি আক্তার হাসাইল বানারী ইউনিয়নের আটিগাঁও গ্রামের সুমন মুন্সীর মেয়ে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ কায়েসুর রহমান জানান, প্রচণ্ড গরমে বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী অসুস্থ হলে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।




৪০০ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ, গ্রেফতার ৩

নেত্রকোনায় সোমবার ভোরে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৪০০ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ করেছে পুলিশ। এ সময় তিন চোরাকারবারিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, পুলিশের বিশেষ অভিযানে শহরের রাজুরবাজার এলাকায় একটি ট্রাকের গতিরোধ করে তল্লাশি করা হয়।  এ সময় চোরাচালানের মাধ্যমে ভারত থেকে আসা ৪০০ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ করা হয়। যার বাজারমূল্য প্রায় ২৪ লাখ টাকা। জব্দকৃত ট্রাকটির মূল্য প্রায় ১৮ লাখ টাকা।

পুলিশ আরও জানায়, চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে জেলা সদরের চকপাড়া এলাকার মৃত মতি মিয়ার ছেলে মো. মাসুম মিয়া, গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার উলুখলা গ্রামের স্বপন মিয়ার ছেলে মো. জায়েদ মিয়া ও পূবাইল থানার হারবাইত গ্রামের মৃত বারেক মিয়া ছেলে বাবু মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়।

ওসি আবুল কালাম বলেন, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মামলার পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

 




নির্বাচনে ভারতের অনুকম্পা চেয়ে ব্যর্থ হয়ে পণ্য বর্জনের ডাক বিএনপির, তারেক-রিজভীর দ্বিচারিতা

বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারকে খুনের নায়ক জিয়াউর রহমান। তার পুত্র তারেক রহমান টেমস নদীর পাশে বসে হুংকার দিয়েছেন ‘ভারতের কোনো পণ্য বাংলাদেশে বিক্রি করতে দেয়া হবে না।’ এটাই যদি বিএনপির লাইন হয়, তাহলে আমাদের স্মরণ করতে হবে, গত বছরের আগস্টে তার দলের প্রথমসারির ৩ জন নেতাকে সিঙ্গাপুরে ভারতের দুজন ‘অসুস্থ’ আমলার কাছে পাঠিয়েছিলেন কেন? তারাই-বা কী বলেছিলেন? সেটা এবার খুলে বলা যাক।

তারা বলেছিলেন, চলতি বছর জানুয়ারির নির্বাচনে ভারত সরকার যেন সর্বতোভাবে বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে সাহায্য করে। ওই দুজন আমলা এর উত্তরে তারেকের প্রতিনিধিদের বলে দিয়েছিলেন, আপনার বাবা জিয়া বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছেন। আর আপনার মা সামরিক কর্তৃপক্ষের সাহায্য নিয়ে হাজার হাজার হিন্দু-মুসলমানকে বাংলাদেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে সন্ত্রাসবাদী পাঠিয়ে তছনছ করে দিয়েছেন স্থিতিশীলতা। আপনি কি পারবেন লন্ডনে বসে ভারতের পণ্য বর্জন করতে? পারবেন না।


তারেক সাহেব, আপনি যে থ্রি-পিস স্যুট লন্ডনে পরছেন, তার কাপড় তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে। আপনি বহুগুণ দাম দিয়ে সেটি লন্ডনে বসে ক্রয় করেছেন।
আপনার বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন আদালতে বহু খুনের অভিযোগ রয়েছে। আপনি একবার আয়নার দিকে তাকিয়ে দেখুন, আপনি নিজে আপনার দেশের কী কী ক্ষতি করেছেন। আপনার সম্পর্কে আমাদের হাতে বহু তথ্য আছে। তার কিছুটা উল্লেখ করছি মাত্র।

বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে আপনি কোনো দায়িত্বশীল পদে ছিলেন না। কিন্তু বনানীর ‘হাওয়া ভবন’ থেকে ছায়া সরকার চালাতেন। দুর্নীতি ও অবৈধভাবে বিদেশে অর্থ পাচার ও চাঁদাবাজির অভিযোগে আপনার বিরুদ্ধে কমপক্ষে ১৫টি মামলা আছে।
২০১৪ সালে ইতিহাস বিকৃতি করেছিলেন আপনি। সেই বছর ২৬ মার্চ এক অনুষ্ঠানে আপনি দাবি করেছিলেন, আপনার বাবা জিয়াউর রহমানই বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি। এই দাবি তুলে আপনি একটা গোটা বইও লিখে ফেলেছেন। একাধিক মামলায় জামিন নিয়ে আপনি চিকিৎসার দোহাই দিয়ে লন্ডনে পালিয়ে যান। আপনার কথা বাংলাদেশের কেউ আর বিশ্বাস করে না।

ভারতের কাছে তথ্য-প্রমাণ আছে, চোরাকারবারিরা ব্যবসা করে আপনাকে কোটি কোটি টাকা পাঠায়। ভারতীয়রা মনে করেন যারা চোরাকারবার করে, তারাই ঢাকা থেকে আপনাকে টন টন পাউন্ড পাঠায়। সেই পাউন্ড দিয়ে আপনি মাসে মাসে লন্ডন থেকে বিবৃতি দেন।

আপনার যদি সৎ সাহস থাকে, তাহলে আপনার দল কেন নির্বাচন থেকে পালিয়ে গেল? নির্বাচনই তো গণতন্ত্রের হাতিয়ার। আপনি নির্বাচনে অংশ নিয়ে আপনার হিম্মত দেখাতেন। তা না করে এখন আপনি ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছেন। আপনি যতই চেষ্টা করুন, লন্ডনে বসে ভারতীয় পণ্য বয়কট করতে পারবেন না। কারণ, আপনার দেশের মানুষ তা চায় না।
তারেক সাহেব, আপনি ভুলে যাননি, আপনার মাতৃদেবী খালেদা জিয়ার আমলে বাংলাদেশে কীভাবে গণতন্ত্র ধ্বংস হয়েছে। তাই আবার বলছি, দয়া করে আগুন নিয়ে খেলবেন না। ১৮ কোটি বাঙালি তা চায় না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপনার দলবল যে ভারতীয় পণ্য বর্জনের প্রচার করছে, তাতে আপনার দল আরও অধঃপতনে যাচ্ছে। যত দ্রুত আপনি ও আপনার দল তা বুঝতে পারেন ততটাই ভালো।
ভারতের গোয়েন্দারা মনে করেন, পবিত্র রমজান মাসে আপনি ভারত থেকে সব ধরনের আদান-প্রদান বন্ধ করতে চাইছেন। কিন্তু বাংলাদেশে এখন একটি শক্তিশালী ও স্থিতিশীল সরকার আছে। তারা কিছুতেই চোরাকারবারিদের মদত দেবে না। দিল্লির সাউথ ব্লক এবং ঢাকার গণভবন একই সঙ্গে চোরাকারবার বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছে।



ভালো থেকো; দেখা হবে জান্নাতে

সৈয়দ আফসার উদ্দিন। পরিবার ও স্বজনদের কাছে মিঠু নামেই যার পরিচিতি। ব্রিটিশ গণমাধ্যমের অত্যন্ত পরিচিত ও প্রিয়মুখ, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, ব্রডকাস্টার এবং কমিউনিটি কর্মী। অন্য আর দশজনের মতো অফুরন্ত প্রাণ নিয়ে এসেছিলেন এই দুনিয়ায়। তার মৃত্যু চুরমার করে দিয়েছে আমার ভেতরটা। এই ব্যথা কাউকে বোঝানোর না। আমার গর্ব করার জায়গাটা হারিয়ে ফেলেছি।

তুমি চলে যাওয়ার পরে ভাবী (প্রয়াত সৈয়দ আফসার উদ্দিন মিঠুর স্ত্রী) আম্মাকে বলেছে, ‘আপনি অনেক ভাগ্যবতী যে আপনার ছেলে মা ছাড়া কিছুই বুঝত না। আল্লাহ্ যেন সকল মাকে আপনার এই ছেলের মতো সন্তান দান করেন।’ তুমি জীবনের চেয়েও বড় ছিলে। তুমি ছিলে ভালোবাসায় ভরা একটা মানুষ। তুমি তোমার ক্যান্সারকে পরাজিত করে প্রায় ৯ বছর আমাদের সময় ও ভালোবাসা দিয়েছো। কথা আর লেখা দিয়ে তোমার ভালোবাসার ঋণ কখনও শোধ হবে না।


আমরা কাছের অনেকেই তোমাকে সঠিক মূল্যায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছি, তুমি না থাকলে আমার জাপান থেকে ইংল্যান্ডে আসা হতো না। আমার কোয়ালিফিকেশন ও প্রফেশন নিয়ে তুমি ছিলে গর্বিত, যেমন গর্ব করতা তোমার দুই ভাতিজা ও ভাগিনা-ভাগনিকে নিয়ে। তোমার কাছ থেকে অনেক শিখেছি, ধন্যবাদ। তুমি আমাদের নিয়মিত হাসিয়েছিলে এবং জীবনকে মজার বানিয়েছিলে। তুমি ছিলে আমাদের যেকোনো পারিবারিক অনুষ্ঠানের তারকা। তোমাকে কখনও একজন বাবা হিসেবে, কখনও একজন স্বামীর ভূমিকায়, কখনও সন্তান, ভাই, চাচা, মামা, খালু এবং ফুপা হিসেবে দেখে অনেক শিখেছি।
তুমি সর্বদাই তোমার সন্তানদের বুকে রেখেছিলে। মা-বাবার প্রতি তোমার শ্রদ্ধা ও ভালবাসা ছিলো অতুলনীয়। এমন দিন নেই যে তুমি আম্মাকে ফোন দাওনি। তোমার সমান কখনও হতে পারব না, আল্লাহর প্রতি তোমার অনেক অনেক ভয় ছিল। এই ভয়কে কাজে লাগিয়ে তোমাকে কিছু বোঝানো ছিল আমার জন্য পানিভাত। একটি মানুষ তোমার বিরুদ্ধে পেলাম না, এটা ছিল তোমার বিরাট অর্জন। তুমি আল্লাহর একজন প্রিয় বান্দা ছিলে। তুমি জুমার রাতে দুনিয়া ছাড়তে চেয়েছিলে, মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন তা কবুল করেছেন।

তুমি অনেক বিনয়ী ছিলে। মূলত আমি ছিলাম তোমার আদরের ছোট ভাই। কিন্তু তোমার অতি বিনয়ের কারণে আমি বড় ভাইয়ের ভূমিকা রাখতাম। আমরা দুজন বন্ধুও ছিলাম বটে! আরও ছিলাম দুজনে দুজনার ভায়রা ভাই। আমাদের ভুল বোঝাবুঝি একটা ফোন কলে শেষ হয়ে যেতো। তোমার খবর পড়ার স্টাইল ছিল ইউনিক। আমার চোখে, ‘আপনি কেবল যুক্তরাজ্যের সেরা বাংলা সংবাদ পাঠক ছিলেন’। খবর পড়ার প্রতি তোমার উৎসর্গ বলে শেষ হবে না।
তিন দশকেরও অধিক সময় ধরে বিলেতে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে বাংলা ভাষা শিক্ষা এবং ব্রিটিশ বাংলা মিডিয়াতে অসাধারণ অবদান রাখার স্বীকৃতস্বরূপ আজীবন সম্মাননা পাওয়া চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার চিনকি আস্তানার তাকিয়া বাড়িতে (সৈয়দ বাড়ি) এই সন্তানের জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঢাকায়। আমরা ছয় ভাই-বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। ১৯৯৯ সালে ব্রিটেনের প্রথম স্যাটেলাইট বাংলা টিভি চ্যানেল, বাংলা টিভিতে সংবাদ পাঠক হিসেবে তিনি নিজেকে সংযুক্ত করেন।

বাংলাদেশে থাকাকালীন সংবাদ ও সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত ছিলেন। ইত্তেফাক গ্রুপের স্পোর্টস রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনে ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার ও উপস্থাপক হিসেবে কাজ করেছেন। বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতির সক্রিয় সদস্য ছিলেন। ব্রিটেনে বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস রেডিওতে কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স, খেলাধুলা এবং ম্যাগাজিন প্রোগ্রামে কাজ করেছেন আট বছর। চার বছরের জন্য ভয়েস অব আমেরিকা রেডিওর লন্ডন প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন। শিক্ষকতায় তার রয়েছে ৩০ বছরের অভিজ্ঞতা। বাংলাসহ পাঁচটি বিষয়ে ইয়ার সেভেন থেকে এ লেভেল পর্যন্ত শিক্ষা দেয়ার পাশাপাশি তিনি দীর্ঘদিন হেড অব ইয়ার এবং ডাইরেক্টর অব স্কুল হিসেবে কাজ করেছেন।
শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিন বছর আগে বাধ্য হয়ে তাকে অবসরে যেতে হয়। পাশাপাশি জিসিএসই বাংলার পরীক্ষক হিসেবে একিউএ এক্সাম বোর্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৯৬ সালে সন্ধ্যাকালীন চাকরি হিসেবে ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত তিনি ইএসওএল লেকচারার হিসেবে টাওয়ার হ্যামলেটস্ কলেজে কাজ করেন।

তোমার প্রতি তোমার সহকর্মীদের প্রাণভরা ভালবাসা দেখে প্রাণ ছুঁয়ে গেছে। আত্বীয়-স্বজন ও তোমার দেশ-বিদেশের বন্ধুরা তোমাকে হারিয়ে পাগলপ্রায়। আমার নিয়মিত খোঁজ নেয়ার কিংবা আবেগ দেখানোর আর কেউ রইল না। কেউ আর জানতে চাইবে না, কবে আবার ব্রিস্টল থেকে লন্ডনে যাব, কিংবা লন্ডন থেকে বাসায় গিয়ে ঠিকঠাকমতো ফিরেছি কিনা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আর কথা বলা হবে না। অভিমান-অভিযোগও আর কেউ করবে না।

হাসপাতালে আমার কপালে দেয়া তোমার শেষ চুমু আজীবন আমার সঙ্গে থাকবে। মহান আল্লাহ্ তোমাকে বেহেস্ত নছিব করুন। তোমার মতো ভালো লোকদের আল্লাহ অবশ্যই মূল্যায়ন করবেন। ইনশাআল্লাহ্, তোমার সঙ্গে দেখা হবে জান্নাতে।



বাংলাদেশকে এখনো কেউ আইসিটি গন্তব্য হিসেবে মনে করে না

দেশের সফটওয়্যার ব্যবসা খাতের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৮ সালের ১৩ আগস্ট। সম্প্রতি ২৫ বছর পূর্তি উদ্‌যাপন করেছে সংগঠনটি। দেশের সফটওয়্যার খাতের উন্নয়নে বেসিস কী ভূমিকা রাখছে, ভবিষ্যতে কী ভূমিকা রাখবে, সেসব নিয়ে কথা বলেছেন বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ। ২০ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেসিস কার্যালয়ে এই সাক্ষাৎকার নিয়েছেন পল্লব মোহাইমেন ও ইশতিয়াক মাহমুদ।

নব্বইয়ের দশকের শেষভাগে জেআরসি (জামিলুর রেজা চৌধুরী) কমিটির সুপারিশ থেকে ভারতের ন্যাসকমের আদলে বেসিসের প্রতিষ্ঠা। মূলত দেশের সফটওয়্যার রপ্তানি বাড়ানোর যে উদ্দেশ্য নিয়ে বেসিসের যাত্রা শুরু হয়েছিল, ২৫ বছর পর এসে তা সফল হয়েছে কি?

রাসেল টি আহমেদ: সফলতার মাপকাঠি অনেকগুলো। জেআরসি কমিটি মূলত গঠন করা হয়েছিল দেশ থেকে সফটওয়্যার রপ্তানি করতে করণীয় নির্ধারণের জন্য। সেই কমিটির বিভিন্ন সুপারিশের মধ্যে একটি ছিল সফটওয়্যার রপ্তানির জন্য তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) ও তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক (আইটিইএস) সেবাগুলোর জন্য আলাদা সংগঠন প্রতিষ্ঠা করা। সেই সুপারিশের আলোকে ১৯৯৮ সালে যাত্রা শুরু করে বেসিস। বেসিসের সদস্যরা বর্তমানে বছরে ১৮০ কোটি ডলারের সফটওয়্যার বিদেশে রপ্তানি করছে। সংগঠনটি বর্তমানে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শীর্ষ সংগঠন হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের সফটওয়্যার খাতের উন্নয়নে ২৫ বছর ধরে ভূমিকা রাখা বেসিস ভবিষ্যতে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

বেসিস প্রতিষ্ঠার পর বছরে ১০০ কোটি ডলারের সফটওয়্যার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রার কথা আমরা শুনেছি। কয়েক বছর ধরে এই লক্ষ্যমাত্রা ৫০০ কোটি ডলার বলা হচ্ছে। বাংলাদেশ আসলে কী পরিমাণ সফটওয়্যার রপ্তানি করে? বর্তমান পরিস্থিতিতে সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবা খাত থেকে ৫০০ কোটি ডলার রপ্তানি করা কি আদৌ সম্ভব?

রাসেল টি আহমেদ: লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ছুটতে হলে কিছু কর্মপরিকল্পনা করতে হয়। এ ক্ষেত্রে হয়তো আমাদের কিছু ঘাটতি ছিল। আমাদের সফটওয়্যার রপ্তানির প্রধান চারটি বাজার হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য ও জাপান। দেশগুলোর প্রযুক্তি খাতে এখন প্রায় এক কোটি দক্ষ কর্মীর চাহিদা রয়েছে। আমরা যদি ১০ লাখ কর্মীর কাজও দেশে বসে করে দিতে পারি, তবে বছরে দুই হাজার কোটি ডলার আয় করা সম্ভব। বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা কর্মপরিকল্পনা ও কৌশল নির্ধারণ করেছি। আমরা ৩/৩ একটা সূত্রের কথা বলছি। সফটওয়্যার খাত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকার—এ তিন খাতকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আর তিনটি কাজ করতে হবে। এক. গবেষণা। ধরুন ডটনেটে দক্ষ মানুষ প্রয়োজন জাপানের। আমাদের সেই দক্ষ জনবল আছে, কিন্তু জাপানে তাঁদের জাপানি ভাষা জানতে হবে, নিয়োগ পাওয়ার আগেই। কোথায় কেমন মানুষ পাঠাতে পারব বা কোন বাজার কীভাবে ধরতে পারব, সে জন্য নির্দিষ্টভাবে গবেষণা প্রয়োজন। দুই. দেশের ব্র্যান্ডিং। বাংলাদেশকে এখনো কেউ আইসিটি গন্তব্য (ডেস্টিনেশন) হিসেবে মনে করে না। তাহলে কাজ দেওয়ার জন্য আমাদের কথা কীভাবে ভাববে? এ জন্য প্রযুক্তিতে বাংলাদেশের সক্ষমতা তুলে ধরে বিদেশে ‘বাংলাদেশ ব্র্যান্ডিং’ করতে হবে। ৩/৩ সূত্রের তিন নম্বরে রয়েছে বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা বাড়ানো। কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতকদের নিয়ে শুধু ভাবলে হবে না, গ্রাফিক ডিজাইনার, ইউআই (ইউজার ইন্টারফেস) ডিজাইনার এমন দক্ষ মানুষের চাহিদাও বাইরে রয়েছে।

সরকার ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং হালের স্মার্ট বাংলাদেশ লক্ষ্য অর্জনে সফটওয়্যার ও আইটিইএস ব্যবসা খাত কতটা ভূমিকা রাখতে পারে?

রাসেল টি আহমেদ: ডিজিটাল বাংলাদেশ শুধু তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) ভিত্তিক। কিন্তু স্মার্ট বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সব খাতকে স্মার্ট হতে হবে। প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে সব খাতে। আর এ ক্ষেত্রে আইসিটি খাত হবে সবকিছুর নিউক্লিয়াস।

বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ সফটওয়্যার ও আইটিইএস বাজার কত বড়?

রাসেল টি আহমেদ: প্রায় ২০০ কোটি ডলারের অভ্যন্তরীণ বাজার আমাদের রয়েছে। ভবিষ্যতে এর পরিমাণ হতে পারে ৪০০ থেকে ৬০০ কোটি ডলার।

বেসিসের সদস্য কারা হতে পারে? সদস্যরা কীভাবে লাভবান হয়?

রাসেল টি আহমেদ: বর্তমানে ২ হাজার ৩০০–এর বেশি সহযোগী বা অ্যাসোসিয়েট, সাধারণ বা জেনারেল, অ্যাফিলিয়েট ও আন্তর্জাতিক সদস্য রয়েছে বেসিসের। সফটওয়্যার ও আইটিইএস নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলো বেসিসের সদস্য হতে আবেদন করতে পারে। তবে এ জন্য ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে। বেসিস মূলত সরকারের সঙ্গে বাণিজ্য–সংশ্লিস্ট নীতিমালা নিয়ে কাজ করে। যার সুফল সদস্যরা ভোগ করে। বেসিসের সদস্য হলে সফটওয়্যার রপ্তানির ক্ষেত্রে সরকারি প্রণোদনা পাওয়া যায়। সফটওয়্যারভিত্তিক সরকারি টেন্ডারে অংশ নিতে বেসিসের সদস্য হওয়া বাধ্যতামূলক। এসবের পাশাপাশি সদস্যদের উন্নয়নে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় বেসিস থেক। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মেলায় অংশগ্রহণের সুযোগও পায় সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো।

তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় জনশক্তি উন্নয়নে বেসিস কি কোনো ভূমিকা রাখে কিংবা বেসিসের ভূমিকা রাখার কোনো সুযোগ আসলে আছে কি?

রাসেল টি আহমেদ: তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দক্ষ জনবল তৈরির জন্য আমাদের বেসিস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (বিআইটিএম) নামের একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। ১২ বছর ধরে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর বিভিন্ন পেশাদার ও স্বল্পমেয়াদি কোর্স পরিচালনা করছে কেন্দ্রটি। বিআইটিএম থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া কোনো শিক্ষার্থী বেকার নেই। ভবিষ্যতে বিআইটিএমকে আরও পরিসরে পরিচালনা করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রশিক্ষণের বিষয় হিসেবে বাজারে চলতি চাহিদা রয়েছে, এমন বিষয়কে বেছে নেওয়া হয়।