‘হোম ডেলিভারি’ দিতে এসে ৫ হাজার পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার যুবক

কক্সবাজার থেকে ভাঙ্গায় মাদকের ‘হোম ডেলিভারি’ দিতে এসে পাঁচ হাজার পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হয়েছেন এক যুবক। শনিবার সন্ধ্যায় ফরিদপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক অভিযানে বঙ্গবন্ধু মহাসড়কের ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা টোল প্লাজা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার যুবকের নাম নুরুল হাকিম (৩১)। তিনি কক্সবাজারের উখিয়া থানার পাগলীর বিল গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ফরিদপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামীম হোসেন এর নেতৃত্বে এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজার সামনে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা কোটালি পাড়া স্টার এক্সপ্রেস নামের একটি বাসে যাত্রী বেশে আসা নুরুল হাকিম এর দেহ তল্লাশি করা হয়। পরে তার কাছে পাঁচ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।

এ সময় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নুরুল হক জানায়, সে কক্সবাজার থেকে বিশেষ পদ্ধতিতে প্যাক করা ইয়াবা গিলে তার পেটের মধ্যে বহন করে। পরে বিমানে ঢাকায় এসে মলত্যাগের মাধ্যমে সেই ইয়াবা বের করে। এরপর পরিষ্কার করে পুনরায় প্যাক করে এবং শরীরে বিশেষ কায়দায় স্কচটেপ দিয়ে পেঁচিয়ে ভাঙ্গায় নিয়ে আসে।

ফরিদপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামিম হোসেন জানান, অভিনব কৌশলে এই মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডকেট মাদক পাচার করছিল। অবশেষে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের জালে ধরা পড়ে এই মাদক ব্যবসায়ী।

তিনি বলেন, মাদক ব্যবসায়ীরা যতই কৌশল অবলম্বন করুক, তাদের আইনের আওতায় আনতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে। আসামির বিরুদ্ধে ভাঙ্গা থানায় একটি নিয়মিত মামলা করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।




আখেরি মোনাজাতে শেষ হলো বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব

দেশের কল্যাণ, দুনিয়া ও আখেরাতের শান্তি কামনা করে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো মাওলানা জুবায়ের অনুসারীদের আয়োজনে ৫৬তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। আখেরি মোনাজাতে আত্মশুদ্ধি ও নিজ নিজ গুনাহ মাফের পাশাপাশি দুনিয়ার সব বালা-মুসিবত থেকে হেফাজত করার জন্য দুই হাত তুলে মহান আল্লাহর দরবারে রহমত প্রার্থনা করা হয়। এ সময় ‘আমিন, আল্লাহুম্মা আমিন’ ধ্বনিতে আকাশ-বাতাস মুখরিত হয়ে ওঠে।

মোনাজাত পরিচালনা করেন বিশ্ব তাবলিগ জামাতের শীর্ষস্থানীয় মুরব্বি বাংলাদেশের কাকরাইল মসজিদের ইমাম মাওলানা মুহাম্মদ জুবায়ের। ৯টা ৫৮ মি‌নি‌টে মোনাজাত শুরু ক‌রে ১০টা ২২ মি‌নি‌টে শেষ ক‌রেন। তিনি আরবি ও বাংলা ভাষায় মোনাজাত পরিচালনা করেন। ২২ মিনিটব্যাপী মোনাজাতে মাওলানা জুবায়ের প্রথম ৯ মিনিট মূলত পবিত্র কোরআনে বর্ণিত দোয়ার আয়াতগুলো উচ্চারণ করেন। শেষ ১৩ মিনিট দোয়া করেন বাংলা ভাষায়।

মুঠোফোন ও স্যাটেলাইট টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারের সুবাদে দেশ-বিদেশের আরও লাখ লাখ মানুষ একসঙ্গে হাত তোলেন আল্লাহর দরবারে। আজ আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে টঙ্গী, গাজীপুর, উত্তরাসহ চারপাশের এলাকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, মার্কেট, বিপণিবিতান, অফিসসহ সবকিছু বন্ধ রাখা হয়।

সকাল ৯টার আগেই ইজতেমা মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। মুসল্লিরা মাঠের আশপাশের রাস্তা, অলি-গলি, বিভিন্ন ভবনের ছাদে অবস্থান নেন। ইজতেমাস্থলে পৌঁছাতে না পেরে কয়েক লাখ মানুষ কামারপাড়া সড়ক ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে মোনাজাত শেষ করেন।

চারদিন বিরতি শেষে ২০ জানুয়ারি বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে। ২২ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে এ বছরের জন্য বিশ্ব ইজতেমা শেষ হবে।




নিউইয়র্কে স্কুলে নিষিদ্ধ হলো ‘চ্যাটজিপিটি’

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি মেধা বিকাশে বিঘ্ন ঘটাতে পারে— এমন শঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের সরকারি স্কুলে নিষিদ্ধ হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর সফটওয়্যার ‘চ্যাটজিপিটি’।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ওপেনএআই’ গত ৩০ নভেম্বর উন্মোচন করে ‘চ্যাটজিপিটি’। এটি নিয়ে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। এর জেরে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের সরকারি স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্য ‘চ্যাটজিপিটি’ ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

‘চ্যাটজিপিটি শিক্ষার্থীদের শেখার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে’ উল্লেখ করে গত ৩ জানুয়ারি ‘নিউইয়র্ক সিটি ডিপার্টমেন্ট অব এডুকেশন’ আনুষ্ঠানিকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

সংস্থাটির বক্তব্য হচ্ছে, ‘শিক্ষার্থীদের শিখনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চ্যাটবটে ফলাফল হিসেবে দেখানো বিষয়বস্তুর নিরাপত্তা ও নির্ভুলতার বিষয়ে উদ্বেগের কারণে নিউইয়র্ক শহরের সরকারি স্কুলগুলোর নেটওয়ার্ক এবং ডিভাইসগুলোতে চ্যাটজিপিটি অ্যাক্সেস বাতিল করা হয়েছে। টুলটি প্রশ্নের দ্রুত এবং সহজ উত্তর দিতে সক্ষম হলেও এটি চিন্তা এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতা তৈরি করে না। এসব দক্ষতা শিক্ষা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে আজীবন সাফল্যের জন্য অপরিহার্য।’

চ্যাটবটটির আগের সংস্করণগুলোকে ভুল প্রশ্ন করা হলেও মনগড়া উত্তর দিত। তবে নতুন এই সংস্করণ প্রশ্নের ভুল ধরতে সক্ষম। ইন্টারনেটে প্রাপ্ত তথ্য ব্যবহারের মাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাটিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে ওপেন এআই। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই লেখকদের থেকে অনুমতি নেয়নি। এ নিয়ে সমালোচনার মুখেও পড়েছিল প্রতিষ্ঠানটি।

সম্প্রতি নিজস্ব সার্চ ইঞ্জিন ‘বিং’-এর নতুন সংস্করণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) যুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে সফটওয়্যার জায়ান্ট মাইক্রোসফট। নতুন সংস্করণে ব্যবহার করা হবে চ্যাটবট ‘চ্যাটজিপিটি’। আগামী মার্চের শেষ নাগাদ নতুন এই ফিচার চালু করতে পারে মাইক্রোসফট। ওপেন এআইয়ের চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি বিনামূল্যে ব্যবহার করা যাচ্ছে।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান




ঠিকানাহীন দল আর জোট জোড়াতালি

আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ভোটের মাঠে পরস্পরের প্রবল প্রতিপক্ষ। প্রতিবারই সংসদের ভোট সামনে রেখে এই দুই রাজনৈতিক দল নতুনভাবে সাজায় জোটের মঞ্চ। এবারও জোটে একের পর এক দল ভিড়িয়ে শক্তির জানান দিতে চাইছে দু’দলই। তবে তারা জোটের পাল্লা ভারী করতে এমন নামসর্বস্ব দল বা সংগঠনকে টানছে, যা নিয়ে চলছে হাস্যরস, দেখা দিয়েছে নানামুখী প্রশ্ন। এমনও দল আছে যাদের শুধু এক নেতাই আছেন, আর কেউ নেই। দলীয় কার্যালয়, সাংগঠনিক কমিটি কিছুই নেই। ‘খুচরা’ এসব দল নিয়ে আওয়ামী লীগ নির্বাচনমুখী আর বিএনপি আন্দোলনমুখী।

গুনে গুনে সাড়ে চার ডজন, সংখ্যাটা ৫৪। সবাই সরকারবিরোধী। এর মধ্যে আছে ‘এক নেতার এক দল’! সংগঠনের শীর্ষ নেতা হিসেবে আছেন পল্টন মোড়ের মোজা বিক্রেতা, আছেন আদম কারবারিও। কর্মসূচিতে ব্যানার ধরার মতো কর্মী নেই এমন দলও আছে। এই ৫৪ দলে যেমন আছে রাজপথের প্রধান বিরোধী শক্তি বিএনপি; তেমনি রয়েছে ঢাল নেই, তলোয়ার নেই, নিধিরাম সর্দারের মতো সংগঠন। তাদের নেই দলীয় কার্যালয়, জোটেনি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন। তবু আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে বিএনপির নেতৃত্বে যুগপৎ আন্দোলনে রয়েছে এসব রাজনৈতিক দল ও সংগঠন।

বিএনপির নেতারা বলছেন, দেশের চলমান রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক সংকট কাটাতে ডান, বামসহ সব দল, সংগঠন, সুশীল, বুদ্ধিজীবী ছাড়াও সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে জাতীয় ঐক্যের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। এখানে নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তি কিংবা গোষ্ঠী নয়, সবাইকে নিয়েই এগোতে চাইছে দলটি। তাই জোট, দল, সংগঠন কিংবা ব্যক্তির সংখ্যাতত্ত্ব দিয়ে বিএনপি তাদের চলমান গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনকে পরিমাপ করছে না; গুরুত্ব দিচ্ছে ঐক্যকে।

এ প্রসঙ্গে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘এখন দেশে রাজনীতিতে অনেক রকম খেলা হয় এবং হচ্ছে। আসলে এ দেশের রাজনৈতিক দলগুলো নীতি-আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে শুধু ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করছে। নীতি-আদর্শ থাকলে দেশের রাজনৈতিক অবস্থা এমন হতো না। সুবিধা আদায়ের জন্য রাজনৈতিক কর্মসূচির বাইরে এ রকম আরও অনেক দলের সৃষ্টি হচ্ছে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, জনগণের ভোটাধিকার থেকে শুরু করে সব নাগরিক অধিকার ক্ষুণ্ণ করা হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যার যে অবস্থান থেকে প্রতিবাদ করতে হবে। সেখানে কে কত বড়, সেটা মুখ্য বিষয় নয়। মূলত এই সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে যারাই এগিয়ে আসবে, তাদেরই সাধুবাদ জানাব। সেটা সংগঠন হতে পারে, পেশাজীবী কিংবা ব্যক্তিও হতে পারেন।

জানা গেছে, বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনে সাতদলীয় জোট গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, ১২ দলীয় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, চার দলের বাম গণতান্ত্রিক ঐক্য, ১৫ সংগঠনের সমমনা গণতান্ত্রিক জোট ছাড়াও এলডিপি, গণফোরাম রয়েছে। বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না থাকলেও একই দাবিতে ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আন্দোলন করছে জামায়াত। এসব জোট ও দলের মধ্যে মাত্র সাতটি ইসি নিবন্ধিত। ১৩টি বিভিন্ন দলের খণ্ডিত অংশ। আবার সাম্যবাদী দল ও ইসলামী ঐক্যজোট রয়েছে দুই জোটেই। সমমনা গণতান্ত্রিক জোটের ১৫ সংগঠন কোনো রাজনৈতিক দল নয়। তারা বিভিন্ন ইস্যুতে জাতীয় প্রেস ক্লাবকেন্দ্রিক আলোচনা সভা, মানববন্ধনের মতো বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে।

৫৪ ঘোড়ার ডিম!: সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে ৫৪ দল গণমিছিল ও গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও বিএনপিসহ কয়েকটি দল বাদে এসব জোটের নেতাকর্মীর উপস্থিতি ছিল হতাশাজনক। ১২ দলীয় দুই জোটের সর্বশেষ গণঅবস্থানে ১০০ নেতাকর্মীও ছিল না। এ নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা যেমন ঠাট্টা-বিদ্রুপ করছেন, তেমনি বিএনপির নেতাকর্মীরাও এসব জোটের অস্তিত্ব নিয়ে অসন্তোষ দেখিয়েছেন।

জোটের এই অবস্থা নিয়ে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও উষ্ফ্মা প্রকাশ করেন নেতারা। বিশেষ করে ১৫ সংগঠনের জোট নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা। কার পরামর্শে, কার উদ্যোগে এই কাজ করা হয়েছে- তা নিয়েও নেতারা কথা বলেন।

এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি উপহাস করে বলেছেন, ৫৪ রাজনৈতিক দল আজকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তাদের অবস্থানে কী হবে? ঘোড়ার ডিম পাড়বে। ৫৪টা ঘোড়ার ডিম পাড়বে ৫৪ বিরোধী দল। এর মধ্যে নয়াপল্টনে মোটামুটি অবস্থান ছিল, অন্যরা ভুয়া।

জোটে যারা, কেমন কারা: গণতন্ত্র মঞ্চের সাত দলের মধ্যে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ইসিতে নিবন্ধিত। এর বাইরে নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন রয়েছে নিবন্ধনের বাইরে।

জোটের নেতা আ স ম আবদুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, কমরেড সাইফুল হক, জোনায়েদ সাকি, ড. রেজা কিবরিয়া আর ভিপি নুরুল হক নুরের মতো হেভিওয়েট নেতা থাকলেও রাজপথে তাঁদের কর্মী নেই। শেষ গণমিছিল আর গণঅবস্থানের মতো বড় দুটি কর্মসূচিতে নেতাকর্মীর অবস্থানের প্রতিফলন ঘটাতে পারেনি এ জোট। এ নিয়ে এরই মধ্যে জোটের ভেতর সন্দেহ-অবিশ্বাস আর দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে।

জোটের শরিক পাঁচ রাজনৈতিক দল বেশ কয়েক বছর রাজপথে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলেও অন্য দুটি সংগঠন হিসেবেই কাজ করেছে বিগত দিনে। এর মধ্যে ভাসানী অনুসারী পরিষদের কমিটি ভেঙে সম্প্রতি রাজনৈতিক আদল দেওয়া হয়েছে। ইসিতে নিবন্ধনের জন্য আবেদনও করা হয়েছে। রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনও একই অবস্থা। তবে এই দলটির ব্যাপ্তি মুষ্টিমেয় কয়েকজন নেতাকর্মীতেই সীমাবদ্ধ।

১২ দলীয় জোটের মধ্যে কল্যাণ পার্টি ও মুসলিম লীগ ইসি নিবন্ধিত। তবে মুসলিম লীগ দ্বিখণ্ডিত হয়ে উভয় জোটের মধ্যেই আছে। কোন পক্ষের হাতে নিবন্ধন রয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। দলটির সভাপতি এইচ এম কামরুজ্জামান খান মারা যাওয়ার পর এর জৌলুস আরও কমেছে। নেতাকর্মী নেই বললেই চলে। দশম সংসদ নির্বাচনের আগে জাতীয় পার্টি থেকে বেরিয়ে আসা নেতাদের নিয়ে জাপা (কাজী জাফর) অংশ রাজনীতিতে সক্রিয়। তবে হেভিওয়েট নেতা থাকলেও কর্মী নেই অবস্থা দলটির। নেই দলীয় কার্যালয়ও। প্রয়াত নেতা শফিউল আলম প্রধানের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তাঁর গড়া জাতীয় গণতান্ত্রিক দলও (জাগপা) দুই টুকরা। বাতিল হয় ইসির নিবন্ধনও। এর একটি অংশে তাঁর মেয়ে ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অন্য অংশে রয়েছেন খন্দকার লুৎফর রহমান। পুরোনো হলেও এখন কর্মী সংকটে ভুগছে দলটি।

এ ছাড়া জোটের এনডিপির আবু তাহের আদম ব্যবসায়ী। গিয়েছিলেন কারাগারেও। নেই নিজস্ব কার্যালয়। ইসলামী ঐক্যজোট, ইসলামিক পার্টি দলগুলো মূল দলের খণ্ডিত অংশ। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট থেকে এসব দল বেরিয়ে যাওয়ার পর খণ্ডিত এসব দলকে জোটে রেখে জোটের কলেবর ঠিক রাখা হয় তখন। নেতাসর্বস্ব এসব দলের কর্মী নেই। সাম্যবাদী দলেরও একই হাল। কেউ চেনেন না এর নেতা কিংবা কর্মীকে। তবে সাম্যবাদী দলটি এখন এই জোটে নেই। লেবার পার্টি, জাতীয় দল, বাংলাদেশ এলডিপি নিজেদের অস্তিত্ব প্রমাণে কাজ করছে। কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালনে লেবার পার্টি তৎপর রয়েছে। সাবেক এমপি আবদুল করিম আব্বাসী ও সাবেক ছাত্রনেতা শাহাদাৎ হোসেন সেলিমের নেতৃত্বে কর্নেল (অব.) অলি আহমদের এলডিপি থেকে বেরিয়ে নতুন বিএলডিপি দল গঠন করেন তাঁরা।

১২ দলীয় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের অন্তর্ভুক্ত কোনো শরিক দলেরই নিবন্ধন নেই। কার্যালয় নেই বেশিরভাগ দলের। আবার বেশিরভাগ দলই মূল দল থেকে ছিটকে আসা খণ্ডিত অংশ। প্রয়াত শেখ শওকত হোসেন নীলুর এনপিপি থেকে বেরিয়ে আসা একটি অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ। তিনি নীলুর নেতৃত্বাধীন দলের মহাসচিব ছিলেন। এখন তিনি এই জোটের সমন্বয়ক। জাগপার সাবেক মহাসচিব খন্দকার লুৎফর রহমানের নেতৃত্বাধীন একটি অংশ এই জোটে রয়েছে। জাগপার বেশিরভাগ নেতাকর্মী এই অংশের সঙ্গে রয়েছে। তবে নেই নিজস্ব কার্যালয়। অনেক পুরোনো দল এবং নব্বই দশকের সাবেক ছাত্রনেতা সাইফুদ্দিন আহমেদ মনির নেতৃত্বাধীন ডেমোক্রেটিক লীগ এখন আর আলোচনায় নেই। ২০ দলীয় জোট থেকে ইসলামী ঐক্যজোট বেরিয়ে গেলে একটি খণ্ডিত অংশ জোটের সঙ্গে থেকে যায়। এই অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন দলটির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাওলানা আবদুর রকিব। দলটির এমনই হাল- সংগঠনের ব্যানার পর্যন্ত সভাপতিকে টানতে হয়। আবার তাঁর দলটি ১২ দলীয় জোট ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট- দুটোতেই রয়েছে। এ প্রসঙ্গে মাওলানা আবদুর রকিব বলেন, দুই জোটের উদ্দেশ্য একই হওয়ায় তিনি দুই জোটেই রয়েছেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়া ইসি নিবন্ধিত বাংলাদেশ ন্যাপের ঢাকা মহানগরের একজন সম্পাদক পর্যায়ের নেতা এম এন শাওন সাদেকীর নেতৃত্বে গঠিত একটি অংশ জোটে থেকে যায়। তাঁর যেমন রাজনৈতিক পরিচিতি নেই, তেমন নেই কোনো কার্যালয়। একাদশ নির্বাচনের আগে বি. চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিকল্পধারা বাংলাদেশ থেকে বেরিয়ে যাওয়া দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বেপারী এবং দলটির যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক ছাত্রনেতা অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদলের বিকল্পধারার নেই কোনো কার্যালয়। নেই গঠনতন্ত্র। নেতাকর্মীর উপস্থিতিও দেখা যায় না। নোটারি পাবলিক সংগঠনের নেতা আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ন্যাপ-ভাসানীর নেই কোনো দলীয় কার্যালয় ও নেতাকর্মী। জাতীয় পার্টির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন গণদল। ‘গণদল’ নাম রাখলেও সংগঠনটির নেই কোনো নেতা, নেই কর্মী।

১৫ সংগঠনের সমমনা গণতান্ত্রিক জোটে বেশিরভাগেরই অস্তিত্ব নেই। ওয়ান-ইলেভেনপরবর্তী বছরগুলোতে জাতীয় প্রেস ক্লাবভিত্তিক কোনো কর্মসূচিও ছিল না তাদের। এরপরও কী প্রক্রিয়ায় এসব সংগঠনকে নিয়ে জোট গঠন করা হয়েছে, তা নিয়ে খোদ বিএনপির মধ্যেই তুষের আগুন জ্বলছে। এমনকি প্রেস ক্লাবভিত্তিক জাতীয়তাবাদী আদর্শের অন্য সংগঠনের নেতাকর্মীও এ নিয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের কাছে অভিযোগ তুলেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামে বিষয়টি উত্থাপন করেন তাঁরা।

জানা গেছে, এই জোটের সমন্বয়ক ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি সাইদুর রহমান। আগে কিছু সংগঠনের ইস্যুভিত্তিক তৎপরতা থাকলেও বেশিরভাগেরই পরিচিতি নেই। এমনকি তাঁদের কোনো কর্মকাণ্ডও ছিল না। যাদের পরিচয় নিশ্চিত করা গেছে, তাদের মধ্যে ‘ঘুরে দাঁড়াও বাংলাদেশ’ সংগঠনের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় ধর্মবিষয়ক সম্পাদক। তিনি এ সংগঠনের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান। ‘মুভমেন্ট ফর ডেমোক্রেসি’ সংগঠনের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ মাগুরা কৃষক দলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক। ‘বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদ’ সংগঠনের সভাপতি ওমর ফারুক একসময় পল্টন মোড়ে মোজা বিক্রি করতেন। ‘জাতীয়তাবাদী চালক দলের সভাপতি হিসেবে মো. শাহজাহানের নাম উল্লেখ থাকলেও মূলত এই সংগঠনের সভাপতি বাবু রেজা। এসব সংগঠনের বাইরে গণতন্ত্র রক্ষা মঞ্চ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী নাগরিক দল বিভিন্ন সময় কর্মসূচির আয়োজন করে বলে জানা গেছে।

এই জোটের সমন্বয়ক সাইদুর রহমান জানান, তাঁর জোটের সবক’টি সংগঠনই সক্রিয়। বিগত দিনে তাঁরা অনেক কর্মসূচি পালন করেছে। যেটা বলা হচ্ছে, সেটা অপপ্রচার।




কক্সবাজারে আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠক

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রায়ই ঘটছে গোলাগুলি ও হত্যাকাণ্ড। টেকনাফে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা ঘটছে একের পর এক। সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে সংঘর্ষ, গোলাগুলির কারণে উখিয়া ও টেকনাফের বাসিন্দাদের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক। এ পরিস্থিতিতে আজ রোববার কক্সবাজারে বসছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক। এ বৈঠক নিয়মিত ঢাকায় হলেও বিশেষ কারণে এবার হচ্ছে কক্সবাজারে।

বৈঠকের আলোচ্য সূচিতে সীমান্ত এলাকায় মাদক চোরাচালান, সেন্টমার্টিন দ্বীপসহ সীমান্ত এলাকায় বিজিবি এবং কোস্ট গার্ডের কার্যক্রমের বিষয় থাকলেও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি গুরুত্ব পাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে যোগ দিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্যরা কক্সবাজারে পৌঁছেছেন।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আমিন আল পারভেজ জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ২৬তম বৈঠক সকাল ১১টায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে।




পুরুষদের আমি ঘৃণা করি: মধুমিতা

আগামী ২০ জানুয়ারি মুক্তি পেতে যাচ্ছে মধুমিতা সরকার অভিনীত ছবি ‘দিলখুশ’। রাহুল মুখোপাধ্যায় পরিচালনায় এতে তিনি অভিনয় করেছেন সোহম মজুমদারের সঙ্গে। এই সিনেমা মুক্তির আগে কলকাতার গণমাধ্যম আনন্দবাজার অনলাইনের মুখোমুখি হয়েছিলেন মধুমিতা।

সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি প্রচুর কাজ করতে চেয়েছিলাম। নিজেকে সারাক্ষণ ব্যস্ত রাখতে চেয়েছিলাম। তেমনটাই হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে কাজ করছি। তবে মুড়িমুড়কির মতো সবই এক ধরনের কাজ করছি না। বিভিন্ন ধরনের কাজ করছি, সেটাই ভালো লাগছে।’

মধুমিতার নিজের লক্ষ্য কতটা পূরণ হলো? এমন প্রশ্নের জবাবে অভিনেত্রী বলেন, ‘এখনও কিছুই হয়নি। আমি শুধু এগিয়ে চলেছি। কিন্তু গতি এখনও লক্ষ করছি না। ঠিক যতটা গতিতে এগোনো দরকার, ঠিক ততটা হচ্ছে না। শুধু তো বাংলায় নয়, আমি বাংলার বাইরেও কাজ করতে চাই। অন্য ভাষায়, অন্য ইন্ডাস্ট্রিতে।’

তেলুগু ছবিতে অভিনয়ের বিষয়ে মধুমিতা সরকার বলেন, ‘সেটা এক অন্য জগৎ। আমায় মার্শাল আর্টস শিখতে হয়েছে। তাই জন্য আমায় অনেকটা ওজন বাড়াতেও হয়েছিল। আমার এই বিষয়টা শিখতে দারুণ লেগেছে। ওরা সময় নিয়ে কাজ করে। আমায় এক মাস দিয়েছিল মার্শাল আর্টস শেখার জন্য। তার জন্য রক্তারক্তি, কালশিটে কী হয়নি আমার সঙ্গে। আমিও আবার অনেক সময় কারও বুকে লাথি মেরে দিয়েছি।’

এখনো সিঙ্গেল কিনা এমন প্রশ্নে মধুমিতার উত্তরটা ছিল অপ্রত্যাশিতই। অভিনেত্রী বললেন, ‘আমি কাজের সঙ্গে কমিটেড। আর বিশ্বাস করুন, আই হেট ম্যান (আমি পুরুষদের ঘৃণা করি)।

‘বোঝে না সে বোঝে না’ নামে টেলিভিশনের সিরিয়ালে ‘পাখি’ চরিত্রের মাধ্যমে তুমুল জনপ্রিয়তা পাওয়া মধুমিতার বড় পর্দায় অভিষেক হয় ২০১৭ সালে ‘পরিবর্তন’ নামের একটি সিনেমায়। তবে তিনি পুরোদমে সিনেমায় আসেন ২০২০ সালের ‘লাভ আজ কাল পরশু’ দিয়ে। এরপর তাকে চিনি, টেংরা ব্লুজ প্রভৃতি সিনেমায় দেখা গেছে।




বাধা যখন দুর্নীতি

‘প্রবৃদ্ধি-উন্নয়নে অঙ্গীকারবদ্ধ’ শীর্ষক সমকালে ৭ জানুয়ারি প্রকাশিত ড. আতিউর রহমানের নিবন্ধটি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এ গভর্নর সরকারের কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০৪১ সালের মধ্যে আমাদের দেশ ডিজিটাল থেকে স্মার্ট হিসেবে গড়ে উঠবে। এটি নিঃসন্দেহে সাম্প্রতিক সময়ের গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত।
স্মার্ট সরকার ব্যবস্থায় সরকারের সব সেবা স্মার্ট পদ্ধতিতে হতে হবে, যেখানে কোনো ভোগান্তি ও হয়রানি থাকবে না। কিন্তু ডিজিটাল হওয়ার পরও আমরা কতটা সুষ্ঠুভাবে সেবা পাচ্ছি? শিক্ষাব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ স্মার্ট করে গড়ে তুলতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থা এখন চরম বিপর্যয়ের মধ্যে। দেশে মেধার চর্চা নেই বললেই চলে, রয়েছে শুধু নম্বর চর্চা।
এ ছাড়া যে বিষয়ে পড়াশোনা, সে বিষয় সংক্রান্ত চাকরির সুযোগ হাতেগোনা কয়েক জায়গায়। এই যে এক বিষয়ে পড়াশোনা করে অন্য বিষয়ে চাকরি করছি, এতে আমার অর্জিত বিশেষায়িত জ্ঞানের কোনো মূল্যায়ন হবে না। অসুস্থতায় যেন ঘরে বসেই অফলাইন ক্লাসের সঙ্গে যুক্ত হওয়া যায়, সে ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের সাইবার নিরাপত্তার জায়গা আগের চেয়ে কিছুটা উন্নত হয়েছে। আমাদের বাধ্যতামূলক আইসিটি শিক্ষার প্রচলন করতে হবে। কেননা, জাতি প্রযুক্তিতে দক্ষ না হলে কোনো কিছুতেই দক্ষ হবে না। স্কুল পর্যায়ে সরকার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করে দিলেও বিদ্যালয়ের কোনো কোনো শিক্ষক সেখানে অবৈধভাবে বাণিজ্যিক কোর্স করিয়ে থাকেন! এ ক্ষেত্রে আইটি কোর্স হওয়া উচিত বিনামূল্যে। সরকারি প্রকল্প ও নিয়োগের কথাও আলোচনায় আসতে পারে। বেশিরভাগ প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ে। যার অর্থ একদিকে কাজে গাফিলতি, অন্যদিকে টাকা আত্মসাৎ। এ ছাড়া চাকরির নিয়োগ প্রক্রিয়া হতে হবে অল্প সময়ে; কোনো ভোগান্তি ছাড়াই। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যেমন স্মার্ট কর্মকর্তা খোঁজা হয়, সরকারি নিয়োগেও চাই মেধার সঙ্গে স্মার্টনেসের সমন্বয়।
জাজিরা, শরীয়তপুর




নতুন মুদ্রানীতি কী করতে পারবে?

বাংলাদেশের মতো অনেক বিকাশমান অর্থনীতিতেই কভিড-পরবর্তীকালে, বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ শৃঙ্খলা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মূল্যস্ম্ফীতি অনেকটা প্রধান সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে নীতিভ্রম, আর্থিক খাতে তারল্য সংকট, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হার ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলা, এমনকি প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতায় সুশাসনের অভাব সাধারণ মানুষের জীবনমানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। নিম্ন সুদহার যেমন ক্ষুদ্র আমানতকারীদের নিরুৎসাহিত করছে, সেই সঙ্গে নিম্ন সুদে ভুল খাতে টাকা গিয়ে ঋণখেলাপি সংস্কৃতিকে চরমভাবে উৎসাহিত করছে।

আগেই যেমনটি বলেছি, শুধু বাংলাদেশ নয়, প্রায় সারাবিশ্বে এক নম্বর সমস্যা এখন মূল্যস্ম্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। বাংলাদেশে আবার ডলারের সংকটও এক বিরাট সমস্যা। সমস্যার সমাধানে মূল্যস্ম্ফীতি নিয়ন্ত্রণে জিনিসপত্র অতিরিক্ত ক্রয় নিয়ন্ত্রণ করা যায়, যাতে মানুষ প্রয়োজনের অতিরিক্ত পণ্য না কেনে। অন্যদিকে পণ্যের জোগান বাড়িয়ে ফেলা যায়।

এ দুটি ব্যবস্থা দিয়ে সাধারণত যে কোনো কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের বাজারে যে পরিমাণ অতিরিক্ত তারল্য থাকে, সেটি ধীরে ধীরে কমিয়ে ফেলার চেষ্টা করে। সারাবিশ্বে তা-ই ঘটছে। এখন মানুষের চাহিদা বেড়ে গেছে। এই অতিরিক্ত চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এটি করতে হলে অন্য অনেক দেশের মতো নীতি সুদহার বাড়াতে হবে।

এটিও আবার মনে রাখতে হবে- এ সময়ের মূল্যস্ম্ফীতি হলো অনেকটা আমদানি করা মূল্যস্ম্ফীতি। এটি নিয়ন্ত্রণ করতে হলে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার ব্যবস্থাপনাও খুব জরুরি। আমাদের দেশে একাধিক বিনিময় হার আছে। সেটিকে একটি বিনিময় হারে আনা যায় কিনা ভাবতে হবে।

যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক চেষ্টা করছে বলে কিছুদিন ধরে শোনা যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য এখনও দেখা যায়নি। আমাদের আমদানি অর্থবছরের গেল ছয় মাসে প্রায় ২২ শতাংশ কমেছে। রপ্তানিও বেড়েছে। তবে ডলারের সংকট কাটেনি। ঋণপত্র খোলা, এমনকি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের জন্য এখনও বিদেশে টাকা পাঠানো দুরূহ।

অনেকে মনে করেন, আমাদের দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল্যস্ম্ফীতি নিয়ন্ত্রণই একমাত্র লক্ষ্য হতে পারে না। বাংলাদেশের মতো উদীয়মান অর্থনীতিতে এটি হবে একটি উন্নয়নমুখী কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর বহু লক্ষ্য থাকতে হবে। এটি যেমন উৎপাদনশীল খাতের বিকাশে সাহায্য করবে, তেমনি জলবায়ুর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সবুজ অর্থায়নও জোরদার করবে।

বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হারের ক্ষেত্রেও আরও দক্ষতা দেখাতে হবে। সাম্প্রতিককালে মুদ্রানীতি নিয়ে আলোচনায় ক্যানভাস অনেক বড় হয়ে গেলেও, অনেকেই সব মিলিয়ে একটি ভারসাম্যপূর্ণ মুদ্রানীতি চেয়েছেন। অনেকেই এটিকে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বলতে নারাজ। বলছেন, উন্নয়ন সমর্থক একটি ভারসাম্যপূর্ণ মুদ্রানীতি। যেখানে মূল্যস্ম্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা এবং উন্নয়নকে সমর্থন করা হবে।

জানা কথা, আমাদের অর্থনীতির সামনে মূল্যস্ম্ফীতি আর ডলারের সংকট বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতি মন্দার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে উন্নত বিশ্বের এই মন্দার ধাক্কা উন্নয়নশীল বিশ্বেও পড়ছে এবং আরও পড়বে। যেসব অর্থনীতির দেশ রাশিয়ার জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল, তারা আরও বেশি মন্দার কবলে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যেমনটি বলেছি, আমরা ডলারের সংকট মোকাবিলার জন্য এ পর্যন্ত আমদানিকে চেপে রাখার চেষ্টা করছি। কিন্তু এটিও জানা, আমদানিকে এভাবে চেপে রাখলে নিকট ভবিষ্যতে উৎপাদন ব্যাহত হবে। এমনকি রপ্তানি খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই একে বেশিদিন জোর করে চেপে রাখা যাবে না। এ নীতি থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বের হতেই হবে।

বর্তমানে একটি মুদ্রানীতি চলমান। এখন দেখার বিষয় অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে যা ঘটেছে, বিশেষ করে মূল্যস্ম্ফীতির ক্ষেত্রে, তার ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাকি ছয় মাসের জন্য নীতিতে কী কী পরিবর্তন আনে। তাদের ভাবতে হবে করণীয় যতটুকুই হোক না, তাতে তারা কী করবে। এটিও সত্য, মূল্যস্ম্ফীতি নিয়ন্ত্রণ কোথাও শুধু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর পুরোপুরি নির্ভর করে না।

পত্রিকান্তরে জানা গেছে, সরকারের ঋণগুলো পুরোপুরি অর্থায়ন হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এবং এর পরিমাণ ইদানীংকালে বিরাট অঙ্কে বেড়েছে। যা টাকা ছাপিয়ে করা হয়েছে। ফলে রিজার্ভ মানির পরিমাণ বেড়ে যায়, যদিও এর প্রভাব এখনও মূল্যস্ম্ফীতির ওপর বিরাটভাবে পড়েনি। একটি কারণ হয়তো একদিকে যেমন কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারকে টাকা দিয়েছে, অন্যদিকে বড় অঙ্কের ডলার বিক্রি করেছে। বিপরীতে প্রচুর টাকা ব্যাংকিং চ্যানেল থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চলে এসেছে। মোট মুদ্রা সরবরাহের ওপরে তেমন প্রভাব পড়েনি। কিন্তু ডলার বিক্রি বাংলাদেশ ব্যাংক আর বেশি দিন করতে পারবে না। রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। সরকারের ঋণও ব্যাপকভাবে বাড়ছে। তাই বাজেট ঘাটতিতে যে অর্থায়ন করা হচ্ছে, তা নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক আমলে না নিলেও আমরা কয়েকজন অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকার বারবার বলছি- মুদ্রানীতিকে মূল্যস্ম্ফীতির কাজে ব্যবহার করতে হলে সুদহারের ওপরে যে ক্যাপ বা সীমা আছে, তা তুলে দিতে হবে। সুদহারের সীমা যদি বাজার বা মূল্যস্ম্ফীতির হারের অনেক নিচে থাকে, তাহলে মুদ্রানীতির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক মূল্যস্ম্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করবে কীভাবে? মুদ্রানীতি মূল্যস্ম্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কাজে আসে তখন, যখন সুদহার ওঠানামা করার সুযোগ থাকে।

এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক রেপো রেট দুই দফা বাড়িয়েছে। এটি বাড়িয়ে কোনো লাভ নেই, যদি ঋণের সুদহার অপরিবর্তিত থাকে। ব্যক্তিঋণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক পরোক্ষভাবে কিছুটা ছাড় দিয়েছে। যদিও এটির কোনো ঘোষণা বা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি। সব ব্যাংক তো একভাবে মৌখিক নীতি অনুসরণ করতে পারে না। এ ধরনের মৌখিক নীতি অনেকটাই অস্বচ্ছ, এমনকি ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই এটির ওপর ভরসা করতে পারছে না অনেক ব্যাংক।

বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ের ক্ষেত্রে যে বিভিন্ন হার চলছে, সেটিও চলতে পারে না। এটি ডলারের তারল্যে বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বারবার বলছে, তারা ভাসমান নীতিতে চলে আসবে। কিন্তু আসছে না। ভাসমান নীতি গত বছরের মার্চের আগেও কার্যকর ছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক হয়তো বলতে পারে- এটি তো আমরা করিনি, করেছে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা)। তবে প্রায় সবাই মনে করেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের আশীর্বাদেই বিভিন্ন বিনিময় হার নির্ধারণ করা হয়েছে। এটিও তেমনি আরেকটি অঘোষিত নীতি।

নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে এত লুকোচুরি রেখে আর দু-একজনের মেধার ওপর নির্ভর করে বাংলাদেশ ব্যাংক কীভাবে মুদ্রানীতি কার্যকর করবে- সেটিই হবে দেখার বিষয়।

মামুন রশীদ: ব্যাংকার ও অর্থনীতি বিশ্নেষক




চেলসিকে এবারও ধাক্কা দিল সিটিজেনরা

টমাস টুখেল যাওয়ার পরই সবকিছু দ্রুত গুছিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন গ্রাহাম পটার। লিগ ম্যাচে তার দল ভালো-খারাপের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল। তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দারুণ খেলেছে ব্লুজরা। লিগে আগের ম্যাচে নটিংহ্যামে ধরা খাওয়া চেলসির ঘরের মাঠে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে সেরাটা খেলতে হতো।

গত মৌসুমের লিগ চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে তারা সেরাটাই সম্ভবত খেলেছে। কিন্তু রিয়াদ মাহরেজের ৬৩ মিনিটের গোলে স্টামফোর্ড ব্রিজে ১-০ গোলে জিতেছে ম্যানচেস্টার সিটি। লিগ টেবিলে শীর্ষে থাকা আর্সেনালের সঙ্গে পয়েন্ট কমিয়ে পাঁচে নামিয়েছে পেপ গার্দিওয়ালার দল।

স্টামফোর্ডে চেলসির চেয়ে ভালো খেলেছে ম্যানসিটি। তারা বলের পজিশন বেশি রেখেছে। গোল মুখে তিনটি শট নিয়ে একটি বল জালে পাঠিয়েছে। লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নিয়েছে ছয়টি। অন্যদি চেলসি দুটি ভালো শট নিলেও গোল হয়নি। তাদের তিনটি আক্রমণ ব্যর্থ হয়েছে। 

এ নিয়ে প্রিমিয়ার লিগ ইতিহাসের দ্বিতীয় দল হিসেবে চেলসির বিপক্ষে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে চার দেখাতেই জয় পেয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। ১৯৫৮-১৯৬০ মৌসুমের মধ্যে বোল্টন ওয়ান্ডারাস চেলসির বিপক্ষে টানা চার ম্যাচেই জয়ের দেখা পেয়েছিল। ম্যানসিটির বিপক্ষে হেরে লিগ টেবিলে দশে নেমে গেছে ব্লুজরা।




ম্যানচেস্টার ডার্বিতে ইউনাইটেডের জয়

ওল্ড ট্রাফোর্ডে আজ নাটকীয় ম্যানচেস্টার ডার্বিতে ২-১ গোলে জিতেছে ইউনাইটেড। পিছিয়ে পড়েও চার মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল করে টেবিলের তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে এরিক টেন হাগের শিষ্যরা। ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে পেপ গার্দিওলার দল।

ম্যাচের ৩০ শতাংশ সময় বল দখলে এগিয়ে ছিল ম্যান ইউনাইটেড। যদিও একের পর এক আক্রমণ করলেও জালের দেখা না পাওয়ায় গোলশূন্য ছিল প্রথমার্ধ। এ অর্ধে ইউনাইটেড দুটি শট লক্ষ্যে রাখলেও সিটি পারেনি একটিও।

দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণাত্মক খেলে সিটি। ৫৭ মিনিটে ফিল ফোডেনের বদলি হিসেবে মাঠে নামেন জ্যাক গ্রিলিশ। মাঠে নামার ৩ মিনিটের মাথায় গোল পেয়ে যান ম্যানচেস্টার সিটির এ ইংলিশ তারকা। মাহরেজের কাছ থেকে বল পান বেলজিয়ান মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইনে। পরে ব্রুইনের ক্রস থেকে দুর্দান্ত হেডে গোল আদায় করেন গ্রিলিশ।

কিন্তু সেই লিড শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারেনি সিটি। পিছিয়ে পড়ে গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে স্বাগতিকরা। ৭৮ মিনিটে ক্যাসেমিরোর পাস থেকে ব্রুনো ফার্নান্দেজ গোল করলে সমতায় ফেরে ইউনাইটেড। 

এর দুই মিনিট পর গার্নাচোর এসিস্টে ইউনাইটেডের হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন মার্কাস রাশফোর্ড। এ নিয়ে টানা সাত ম্যাচে গোলের দেখা পেলেন রাশফোর্ড।  রোনালদোর (২০০৮ সাল) পর ইউনাইটেডের দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে এই কীর্তি গড়লেন তিনি। বাকি সময়ে রক্ষণ আগলে রেখে জয় নিশ্চিত করে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।