সরকারি কর্মচারী গ্রেফতারে পূর্বানুমতি বাতিলের রায় আপিলে স্থগিত

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্রেফতারে সরকারের পূর্বানুমতি নেওয়ার বিধান বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় আগামী ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

আজ সকালে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।

এর আগে, গত ২৫ আগস্ট সরকারি কর্মচারীদের গ্রেফতারে সরকারের পূর্বানুমতি নেওয়ার বিধান বাতিল করেন হাইকোর্ট। আদালত বলেন, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৪১(১) ধারা বেআইনি, সংবিধান পরিপন্থি ও মৌলিক অধিকার পরিপন্থি।

বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। পরে এই রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।




আজ বিএনপি’র ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

ঢাকা: বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী (১ সেপ্টেম্বর)। ১৯৭৮ সালের এই দিনে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি নামে এই রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কর্মসূচি: বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশে বিএনপির সব কার্যালয়ে ভোর ৬ টায় দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে।

দুপুর ১২টায় দলের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের (বীর উত্তম) শেরেবাংলা নগরস্থ মাজারে বিএনপির জাতীয় ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ফাতেহা পাঠ ও পুস্পার্ঘ অর্পণ করবেন।

বিকেল ৩ টায় নয়াপল্টনস্থ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের হবে। র‌্যালিতে বিএনপির জাতীয় নেতারাসহ সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নেবেন। দিবসটি উপলক্ষে ইতোমধ্যে পোষ্টার প্রকাশিত হয়েছে এবং আজ বিভিন্ন সংবাদপত্রে ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হবে।

এছাড়া ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আগামী শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলিস্থানস্থ মহানগর নাট্যমঞ্চে দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে জাতীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারাসহ দেশবরেণ্য ব্যক্তিরা অংশ নেবেন।

অনুরূপভাবে দেশব্যাপী জেলা ও মহানগরসহ সব ইউনিট বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কর্মসূচি গ্রহণ করবে। স্থানীয় সুবিধানুযায়ী আলোচনা সভা , র‌্যালি ইত্যাদি কর্মসূচি পালনে তারা উদ্যোগ নেবেন।

প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন,. রাজনীতিতে আসার আগেও জিয়াউর রহমানের একটি ঘটনাবহুল জীবন রয়েছে। সৈনিক জীবন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ, রাষ্ট্র পরিচালনা সবত্রই তাঁর একটি সমুজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে, যা জাতি কোনোদিন ভুলতে পারবে না।

জিয়াউর রহমানের শাহাদত বরণের পর দলের বর্তমান চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াও এক যুগ সন্ধিক্ষণে দলের দায়িত্ব নিয়ে একের পর এক ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেন। স্বৈরাচারী এরশাদের আমলে তিনি আন্দোলন করে আপসহীন নেত্রী উপাধি পান। তাঁর নেতৃত্বে বিএনপি তিনবার ক্ষমতায় আসীন হয়।
১৯৮৩: ওই বছরের ১ এপ্রিল বিএনপির বর্ধিত সাধারণ সভা থেকে খালেদা জিয়াকে দলের ভাইস চেয়ারম্যান মনোনীত করা হয়।

আগস্ট ১৯৮৪: বেগম খালেদা জিয়া বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন এবং বিএনপিতে নতুন প্রাণের সৃষ্টি হয়। নেতাকর্মীরা নতুন আশার আলোয় আবারো রাজপথে নেমে আসেন। এরপর খালেদা জিয়ার ওপর নানাবিধ হুমকি আসতে থাকে, চক্রান্ত চলতে থাকে তাকে ব্যর্থ করে দেওয়ার। কিন্তু অকুতোভয়, সাহসী, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ও গণতন্ত্রের পথে পথ চলতে আপসহীন ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি।

১৯৯০ স্বৈরাচারের পতন: স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে একলা এগিয়ে চলেন খালেদা জিয়া। এ সময় আন্দোলন করে অসহনীয় জুলুম নির্যাতন সহ্য করেন এবং ‘গণআন্দোলন’ সংগঠিত করেন। ১৯৯০ সালে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পতনের একদফা আন্দোলনের ডাকে দেশের মানুষ রাজপথে নেমে আসে। ফলে এরশাদ ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন। খালেদা জিয়ার গণআন্দোলন সফল হয়, দেশে ফিরে আসে গণতন্ত্র। সে সময় খালেদা জিয়ার আপসহীন নেতৃত্বের কারণে দেশবাসীর মাঝে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা তৈরি হয় এবং তিনি ‘দেশনেত্রী’ আখ্যায়িত হন।

১৯৯১ সাধারণ নির্বাচন: খালেদা জিয়ার আপসহীন নেতৃত্বে গণতন্ত্রের বিজয়ের ফলে ১৯৯১ সালের সাধারণ নির্বাচনে বিএনপি সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন লাভ করে এককভাবে সরকার গঠন করে। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।




মাধ্যমিকে ক্লাস চলবে যেভাবে

ঢাকা: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সপ্তাহে ২ দিন ছুটি কার্যকর হওয়ার প্রেক্ষিতে ৬ দিনের শ্রেণি কার্যক্রম সমন্বয় করে ৫ দিনের জন্য পরিমার্জিত সময়সূচি প্রণয়ন করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।

বুধবার (৩১ আগস্ট) মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এ নতুন শ্রেণি কার্যক্রম ঘোষণা করেছে। পরিমার্জিত সময়সূচি অনুযায়ী রোববার থেকে বৃহস্পতিবার ষষ্ঠ-দশম শ্রেণিতে প্রতিদিন ৭টি করে ক্লাস হবে।

এতে বলা হয়, ইতোমধ্যে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শুক্রবার ও শনিবার ২ দিন সাপ্তাহিক ছুটি কার্যকর করা হয়েছে । শিক্ষার্থীদের যাতে শিখন ঘাটতি সৃষ্টি না হয় এবং শিক্ষাক্রমের বিষয় কাঠামো অক্ষুণ্ন রেখে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রচলিত সময়সূচি পরিমার্জন করা হলো।
ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি: রোববার থেকে বৃহস্পতিবার প্রতিদিন ৭টি করে সপ্তাহে মোট ৩৫টি শ্রেণি কার্যক্রম (পিরিয়ড) পরিচালিত হবে।

এক শিফট বিশিষ্ট প্রতিষ্ঠানে শ্রেণি কার্যক্রমের ব্যাপ্তি দৈনিক সমাবেশ ১৫ মিনিট ও বিরতি ৩০ মিনিটসহ মোট ৬ ঘণ্টা ১০ মিনিট।

একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি: প্রতিটি শ্রেণি কার্যক্রমের  ব্যাপ্তি হবে ৫০ মিনিট। বাংলা, ইংরেজি এবং শাখাভিত্তিক ৩টি নৈর্বাচনিক বিষয়ের জন্য সপ্তাহে প্রতি বিষয়ে ৫ টি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের জন্য ৩টি শ্রেণি কার্যক্রম (পিরিয়ড) পরিচালিত হবে । অর্থাৎ সপ্তাহে মোট ২ টি (২৫ +৩) শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালিত হবে। ঐচ্ছিক বিষয়ের জন্য ৫টি শ্রেণি কার্যক্রম (পিরিয়ড) পরিচালিত হবে।




বাংলাদেশি গে ব্লগার কর্তৃক ইসলামকে অপমান

গতকাল ঢাকার সূত্রাপুর এলাকায় দুই বাংলাদেশি মুসলিম সমকামী ব্লগারকে হত্যার দাবিতে বিক্ষোভ করে বাংলাদেশি যুবকরা। ব্লগাররা তাদের ব্লগ সাইট www.freedomfriendss.com এ ইতু মোহাম্মদ সৌমিক এবং মোহাম্মদ আসাদুল্লাহ নাম ব্যবহার করেন।

প্রতিবাদকারীরা ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছড়ানোর জন্য ব্লগারদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান এবং বাংলাদেশের সিনিয়র মুসলিম ধর্মগুরুদের বিরুদ্ধে এই সত্য গোপন করার জন্য অভিযুক্ত করেছেন যে আল্লাহ সমকামীদের ভালোবাসেন।

তারা গবেষণার ভিত্তিতে তাদের যুক্তির ভিত্তি করে তারা বলেন যে হযরত ধুলকারনাইন (সাঃ) ছিলেন আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট, যিনি একজন উভকামী ছিলেন। বিক্ষুব্ধ প্রতিবাদকারীরা ব্লগারদের মৃত্যু দাবি করেন, যারা তাদের সাইটে নগ্ন হয়ে অঙ্গভঙ্গি করছে। পুলিশও নিয়ন্ত্রন প্রয়োগ করে তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ থামিয়ে দেয়। বিষয়টি তদন্তে থাকাকালীন পুলিশ বিক্ষোভকারীদের বিক্ষোভ ভাঙ্গার অনুরোধ জানায়।




আমাদের ভাষার এই সময়

বায়ান্ন সালের পর থেকে আমাদের সকল আন্দোলন, সমস্ত কিছুর সঙ্গে একুশে ফেব্রুয়ারির চেতনা জড়িত হয়ে গেছে- তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু যে কোনো আন্দোলনই মরে যায়। একটা সময় পরে তার আবেদন বা প্রাসঙ্গিকতা আর থাকে না। এ প্রসঙ্গে বলা যায় ফ্রেঞ্চ রেভ্যুলুশনের কথা। এত বড় প্রভাবশালী ঘটনা, অথচ এখন হয়তো সেই দিনটি পালিত হয় কি হয় না, তার ঠিক নেই।

আমাদের জাতিটা বড্ড বেশি বাক্যবাগীশ। সমাজ যে বদলাচ্ছে; সেই বদলের সঙ্গে আমাদের একুশের আন্দোলন-চেতনার যে সমন্বয় করা দরকার, পরিবর্তনটা দরকার- তা আর কেউ ভাবে না। কারণ ভাবলে অনেক কাজ করতে হবে। আমাদের সারাটা দেশ গরিব; মানুষ নিরক্ষর, মানুষের মনে কিছু নেই; কিছু মধ্যবিত্ত যুবক আছে, কিছু কাগজ ও টিভি চ্যানেল আছে। আর একুশে ফেব্রুয়ারি পালনের কিছু কমিটি আছে। তাই দিয়েই কিছু আয়োজন হয়। কিন্তু যদি বলি, শ্বাসে এবং মূলে আমাদের সমাজের ভেতরে একুশ কি ঢুকেছে? উত্তর না-ই আসবে।

সাতচল্লিশের পর থেকে এখন পর্যন্ত, জনসাধারণ যেখানে ছিল সেখানেই থেকে গেল। আর আমরা আশা করতে থাকলাম, জনসাধারণ একুশের চেতনায় জাগ্রত আছে- তাই কি হয়! আপনি গ্রামের মধ্যে নানান রকমের এটা-ওটা ব্যবসা, এনজিও ঢুকিয়ে দেবেন। তাহলে সেই গ্রামটা কি আর কোনোদিন প্রকৃতির সেই শুদ্ধ সাঁওতাল গ্রাম থাকবে! থাকবে না। প্রত্যেক বছরেই একবার এই যে আমাদের একুশের চেতনা, আমাদের ভাষা আন্দোলন আমাদের গৌরব বলে ঢাক-ঢোল পেটানো হয়; এই ‘আমাদের’ বলতে আসলে কাদের বোঝানো হয়? এই ‘আমাদের’টা আসলে কারা? ‘আমাদের’ শব্দ একটা অত্যন্ত অস্পষ্ট শব্দ। এই শব্দটি দিয়ে বহু কিছু এড়িয়ে যাওয়া যায়।
একুশে ফেব্রুয়ারি নিয়ে আমাদের সামগ্রিক পরিস্থিতি দেখলে মনে হয়, আমরা বিপরীত মেরুতে চলে এসেছি। একুশের চেতনার ঠিক উল্টো জায়গাটিতে এসে আমরা পৌঁছেছি। আমরা টেবিলের এপারে ছিলাম, টেবিলের ওপারে গিয়েছি- এর বেশি কিছু আসলে হয়নি। এরপর হয়তো এসবও হবে না। কিংবা গ্রামদেশে এখন এসবের কিছুই নেই। কেন থাকবে! থাকার কোনো কারণও নেই। একুশে ফেব্রুয়ারির চেতনা মানুষের মধ্যে কাজ যে করবে, সেটা কীভাবে? আজকে প্রায় সত্তর বছর পর কাজ করেছে, তবেই না আগামীতে করবে। তা না হলে মানুষ পিছু হটবে কীভাবে? মানুষ আসলে কেমন করে পিছু হটে?

এ সবকিছু নিয়ে একটা গোলমেলে সাংস্কৃতিক অবস্থা বিরাজ করছে। এর সঙ্গে অর্থনীতির কোনো সাযুজ্য নেই, শিক্ষার কোনো মিল নেই। এসবের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করার প্রথম দায়িত্ব আমরা যারা রাষ্ট্র চালাই, তাদের। তাই বাস্তবতার এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়ে গ্লানি বা হতাশা ছাড়া আর কিছু নেই। আমি কোনো আশার আলো দেখছি না। কারণ এখানে যা কাজ আছে, যা কাজ হচ্ছে, তাতে কোনো রকম পরিকল্পনা নেই চেতনা সংক্রান্ত। চেতনা আছে শুধু কিছু বুলি আউড়ানো আর টকশোর আস্ম্ফালনে। তবু কিচ্ছু হবে না- এ কথা আমার নয়।

একটা দেশের সংস্কৃতিকে উন্নত করতে না চাইলে এবং চাইলে- দু’ক্ষেত্রেই প্রথম কাজ হচ্ছে শিক্ষা। শিক্ষার অবস্থা ভালো আছে কি মন্দ- এ প্রশ্ন অনেক দিন ধরেই পড়ে আছে। আমাদের উচ্চশিক্ষার বাস্তব কার্যকারিতাও সবার কাছে অনিশ্চিত। একটা মানুষ এত পড়াশোনা করে কী করবে, আদৌ কী করার আছে এ ব্যাপারে; শেষ পর্যন্ত নিশ্চিত হতে পারে না। কেউ যদি আমাকে বলে যে, এত হতাশাবাদী হচ্ছো কেন? আমি বলব, আরে বাবা, হতাশাবাদী হবো না কেন!

সবার জন্য একমুখী শিক্ষা মুখে মুখে বলছি। কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার, ইংলিশ মিডিয়ামের স্কুলগুলোতে বাংলা বইগুলো ইংরেজিতে অনুবাদ করে পড়ানো হয়। বলা হচ্ছে, সবাইকে একই সিলেবাস পড়তে হবে। এ দেশের বড়লোক, এ দেশের ধান্ধাবাজ, এ দেশের আমলারা দেশটাকে বিদেশিদের বাজার বানাবার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। এদের মধ্যে সৃষ্টি বলে কিছু নেই। তারা লুটপাটে ব্যস্ত। আমরা তাদের মনঃতুষ্টির একটি সংস্কৃতি গড়ে তুলছি। রাষ্ট্রটি যে সাধারণ মানুষের নয়- তা ঢাকা শহরের দিকে তাকালেই বোঝা যায়।

ভাষা নিয়ে আমরা কী করেছি? আমরা মুখে মুখে অনেক কথা বলেছি। কিন্তু ভাষা নিয়ে কাজের কাজ কিছুই করতে পারিনি। যেমন কিছুটা স্ববিরোধী ভঙ্গিতেই আমি বলব, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাকে মাধ্যম করাটাই ভুল হয়েছে। এ কথা বললে লোকে আমাকে দেশদ্রোহী বলবে। বাংলাকে মাধ্যম করার আগে বোঝা দরকার ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা কী পড়াই। দর্শন এবং ইতিহাস পড়তে গিয়ে একজন বাংলায় যে বইগুলো পড়ে, তা কি পাঠযোগ্য? বাংলায় দর্শনের ওপরে কোনো ভালো বই নেই। একজন ছাত্র যখন বাংলা বইয়ের মাধ্যমে দর্শনকে বোঝার চেষ্টা করে তখন সেটা অর্থহীন হয়ে পড়ে। সে ইংরেজি না জানার কারণে দর্শন ভালো করে বোঝে না অথবা অপরদিকে অগোছালো বাংলায় দর্শনকে ভুলভাবে বোঝে। বাংলায় ফিলসফির কোনো বই পড়া যায়? কিন্তু এর মানে এই নয় যে, বাংলায় দর্শনচর্চা সম্ভব নয় বা বাংলায় বিজ্ঞানচর্চা সম্ভব নয়। যত্ন নিয়ে, শ্রম দিয়ে এসবই সম্ভব। আমরা এই ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যাব। বাংলা ভাষা অত্যন্ত সমৃদ্ধ একটি ভাষা। আমি মুষ্টিমেয় পণ্ডিতের ওপর অনাস্থা আনতে পারি, কিন্তু বাংলাভাষী কোটি কোটি মানুষের ভাষার ওপর আমার আস্থা গভীর।

বলা হয়েছিল, দেশের মানুষের শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করে দেবে, খাজনাহীন জমি করে দেবে। কিন্তু খাজনাহীন জমি তো দূরে থাক, খাসজমি- সেগুলো যেভাবে ছিল সেভাবেই পড়ে রইল ৫০ বছর ধরে। কী হবে আমাদের এখানে ভাষা চেতনা, কী হবে আমাদের এখানে আদিবাসীদের সমস্যা? এসবের কিছুই ঠিক করা হয়নি এখনও। আর করলে যে ঢাকার নিজেদেরই চলবে না। এটা হচ্ছে, at the cost of one class। তার মানে ব্যাপারটা দাঁড়াচ্ছে- : the hole country has become the country of few.

তবু বলি যে, বাংলাদেশে অন্ততপক্ষে ৩৪ কোটি হাত তো আছে। তাকে যদি প্রকৃত অর্থে কাজে লাগানো হয়, তাহলে আমাদের জন্য অসম্ভব তো কিছুই নয়। কিন্তু সেই সম্ভবটাকে বাস্তবে পরিণত করতে হলে যে সংস্কারগুলো দরকার, সেগুলো তো করতে হবে। সব হতাশার পরেও আমি মনে করি, ৩৪ কোটি হাত আছে। এমনকি কোনোদিন ঘটবেই না যে, এই হাতগুলো যখন যা করা দরকার তা করে ফেলবে; যে করছে না তাকে ছুড়ে ফেলে দেবে! নিশ্চয়ই করবে।
লেখক
কথাশিল্পী, শিক্ষাবিদ




জাতিসংঘের সামনে একুশ উদযাপন

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতির পেছনে প্রবাসী বাঙালিদের অবদানের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাঙালিদের অহংকারের একটি বিষয়ও আজ সারাবিশ্বে সমাদৃত। তা হলো জাতিসংঘের সামনে একুশের অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন। যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাঙালিরা ২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ১ মিনিটে জাতিসংঘের সামনে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন ১৯৯২ সাল থেকে।

১৯৯২ সালের জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই শুরু হয় ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ প্রক্রিয়া। এর মধ্যে স্প্যানিশ কার্পেন্টার আনা হলো। হোম ডিপো থেকে কাঠ কেটে আনা হলো। শিল্পী সজল পাল, বাঙালির চেতনা মঞ্চের হারুন আলী, আবদুর রহমান বাদশা, ছাখাওয়াৎ আলী, দিলদার হোসেন দিলু, শামীম হোসেনসহ আমরা সবাই মিনারের পাঁচটি স্তম্ভ সাত দিনের মধ্যেই মোটামুটি দাঁড় করাতে সক্ষম হলাম। কিন্তু ৮ ফুট ও ১০ ফুটের দুটি করে চারটি এবং ১২ ফুটের একটি স্তম্ভ মোট পাঁচটি মিনার আমরা কোনোভাবেই দাঁড় করানোর উপায় বের করতে পারছিলাম না। এ রকম একটি সিদ্ধান্ত ভাবা এবং তা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেওয়া খুবই কঠিন ছিল সে সময়।

১৯৯১ সালে আমেরিকায় এসে ক্ষুণ্ণিবৃত্তির সন্ধান করতে গিয়ে নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত প্রথম সাপ্তাহিক বাংলা সংবাদপত্র সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ সম্পাদিত ‘প্রবাসী’তে কাজে যোগ দিই। সেই সুবাদেই পত্রিকার উপদেষ্টা কথাশিল্পী জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত, কবি শহীদ কাদরী ও ড. জাফর ইকবালের সঙ্গে অতি অল্প সময়ের মধ্যে যোগাযোগ ঘটে।

‘প্রবাসী’তে কাজ করার পাশাপাশি ‘মুক্তধারা নিউইয়র্ক’ শুরু করতে গিয়ে বাঙালির চেতনা মঞ্চের কয়েকজন তরুণের সঙ্গে প্রথম পরিচয়। শহীদ মিনার স্থাপন করে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও উত্তর আমেরিকা বাংলা বইমেলা আয়োজনের কথা ওদের জানাই। ওরা জানাল, ‘বাঙালির চেতনা মঞ্চ’ ১৯৯২ সাল থেকেই এ কার্যক্রম শুরু করতে চায় মুক্তধারা নিউইয়র্কের সঙ্গে যৌথভাবে। তারপর শুরু হলো আলোচনা, কীভাবে এর বাস্তবায়ন হবে।

গত ২৯ বছর ধরে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে মুক্তধারা ও বাঙালির চেতনা মঞ্চ অনুষ্ঠান করে আসছে।

১৯৯১ সালের ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে নিউইয়র্কে প্রচণ্ড বরফ পড়া শুরু হয়। বাঙালির চেতনা মঞ্চের সদস্য ছাখাওয়াৎ আলীর বাড়ির বেজমেন্টেই শহীদ মিনারের কাজ শুরু করলাম। শিল্পী সজল পাল ১০ দিনের মধ্যে একটি শহীদ মিনার দাঁড় করালেন। সবাই মিলে সজলের বাসায় শহীদ মিনারটি দেখে সিদ্ধান্ত নিই, এ বছর কার্ডবোর্ডের মিনারেই একুশের ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করা হবে। সবাইকে একুশের শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে আমন্ত্রণ জানানো হলো। প্রচণ্ড বরফের মধ্যে রাত ১১টা থেকে কথাশিল্পী জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ফরিদা মজিদ, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নেতা ফরাছত আলী, প্রবাসী পত্রিকার সম্পাদক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, জাসদ নেতা আব্দুল মোসাব্বিরসহ নিউইয়র্ক প্রবাসী শত শত মানুষ সমবেত হন ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে।

ভাষাসংগ্রামী আবদুল মতিন, একুশের গানের রচয়িতা আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী, কবি শহীদ কাদরী, নির্মলেন্দু গুণ, সৈয়দ শামসুল হক, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সমরেশ মজুমদার, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, রাবেয়া খাতুনসহ জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং রাষ্ট্রদূত আনোয়ারুল করিম চৌধুরী, সাবেক তত্ত্বাবধারক সরকারের উপদেষ্টা ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা ড. নূরুন নবী, ডা. জিয়াউদ্দীন আহমেদ, কানাডা প্রবাসী রফিক আহমেদ, ইউনেস্কোর বিভিন্ন কর্মকর্তাসহ অনেক গুণী ব্যক্তি এই মিনারে শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। নিউইয়র্কে বাঙালির সংখ্যা ও সংগঠকের ধারাবাহিক ক্রমবিকাশে ঘরে ও বাইরে অনেক শহীদ মিনার হলেও জাতিসংঘের শহীদ মিনার উত্তর আমেরিকা অভিবাসীদের কাছে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মতো অমলিন।

১৯৯৬ সালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রস্তাবক মোহাম্মদ রফিক কানাডা থেকে আসেন জাতিসংঘের সামনে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে। ১৯৯৯ সালে তারই প্রস্তাবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি অর্জনের পর ২০০০ সাল থেকে জাতিসংঘের সামনের এ অনুষ্ঠানে যুক্ত হন ইউনেস্কো ও জাতিসংঘের কর্মকর্তাবৃন্দ। ২০১০ সালের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৫তম অধিবেশনে পাস হয়- প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করবে জাতিসংঘ। ২০১১ সাল থেকে জাতিসংঘের সামনের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে আমেরিকার মূলধারার রাজনীতিবিদদের যোগ দেওয়া শুরু হয়।

২০১৬ সাল ছিল জাতিসংঘের সামনে একুশ উদযাপনের ২৫ বছর। এ বছর জাতিসংঘের সামনে ফেব্রুয়ারির প্রথম দিনে স্থাপিত হয় মাসব্যপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ভাস্কর্য প্রদর্শনী। এ বছরই আমার আবেদনে ইউনাইটেড পোস্টাল সার্ভিস থেকে প্রকাশিত হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ওপর স্মারক ডাকচিহ্ন। ২৪ বছর পর্যন্ত রাত ১২টা ১ মিনিটে জাতিসংঘের সামনে শহীদদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হতো। ২০১৬ সাল থেকে ব্যাপক সংখ্যক আমেরিকার মূলধারার রাজনীতিবিদের অংশগ্রহণের ফলে বাংলাদেশের সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে আমেরিকায় দুপুর ১টা ১ মিনিটে শ্রদ্ধা জানানোর প্রথা শুরু হয়।

নিউইয়র্ক তথা উত্তর আমেরিকা থেকে প্রকাশিত বাংলা ভাষার সব সংবাদমাধ্যমসহ লেখক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পীসহ বাংলা ভাষাপ্রেমী সব বাঙালি অভিবাসী সমাজের নিরবচ্ছিন্ন ভালোবাসা না থাকলে কখনোই এ দীর্ঘ যাত্রা সম্ভব হতো না। আমরা এই বিশেষ দিনে অভিবাসী বাঙালি সমাজের কাছে আবেদন রাখছি, আসুন, আগে নিজের ঘর থেকে শুরু করি নিজ সন্তানদের সঠিক বাংলা শিক্ষাচর্চা। তাহলেই বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অর্জনের সার্থকতা পাবে।




কোম্পানীগঞ্জে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ সাংবাদিকের মৃত্যু

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটে গত শুক্রবারের সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ স্থানীয় সাংবাদিক বোরহান উদ্দিন মোজাক্কের ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

শনিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে মারা যান তিনি। নিহত সাংবাদিক মোজাক্কেরের বড় ভাই ফখরুদ্দিন সমকালকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

সাংবাদিক বোরহান দৈনিক বাংলা সমাচার ও বার্তা বাজার অনলাইন নিউজ পোর্টালের প্রতিনিধি। তিনি নোয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে মাস্টার্স শেষ করেছেন। মোজাক্কের কোম্পানীগঞ্জের চরপকিরায় ইউনিয়নের নোয়াব আলীর ছেলে।

গত শুক্রবার কোম্পানীগঞ্জের চাপারাশির হাটের পূর্ব বাজারে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদলের গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় নিউজ সংগ্রহের সময় সাংবাদিক মোজ্জাকেরসহ সাতজন গুলিবিদ্ধ হন। আহত সাংবাদিককে প্রথমে নোয়াখালী জেনারেল হাসাপাতলে এবং পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তিনি আইসিইউতে ছিলেন।

নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন সমকালকে জানান, গুলিবিদ্ধ সাংবাদিকের মৃত্যুর সংবাদ তিনি শুনেছেন। নিহতের পরিবারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।

সাংবাদিক বোরহান উদ্দিন মোজাক্কেরের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এক শোকবার্তায় মন্ত্রী মরহুমের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

এছাড়া শোক জানিয়েছেন নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুল আনম সেলিম চৌধুরী।




সবধরনের সম্মানসূচক পদবি হারাচ্ছেন প্রিন্স হ্যারি

সবরকম রাজকীয় উপাধি ও সম্মান হারাতে যাচ্ছেন ব্রিটেনের যুবরাজ হ্যারি। শুক্রবার বাকিংহ্যাম প্যালেস থেকে এ ঘোষণা দেয়া হয়।

ঘোষণায় বলা হয়, রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ এ মর্মে নিশ্চিত হয়েছেন যে, রাজকুমার ও তার স্ত্রী যে জীবন বেছে নিয়েছেন, সেখান থেকে তাদের ওপর অর্পিত রাজপরিবারের জনসেবামূলক দায়িত্ব ও কর্তব্যগুলো পালন করা সম্ভব নয়। তাই রাজপরিবারের পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। খবর এনডিটিভির।

প্রিন্স হ্যারি ও তার স্ত্রী মেগান আনুষ্ঠানিকভাবে ডিউক ও ডাচেস অব সাসেক্স হিসেবে পরিচিত। গত বছর তারা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সাধারণ জীবন যাপনের সিদ্ধান্ত নিলে ব্রিটিশ রাজতন্ত্রকে প্রবল ধাক্কা দিয়েছিল। পরিবারের সঙ্হেগ সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দেয়ার পর থেকে তারা এখন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় বাস করছেন। সে দেশে কয়েকটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নানা রকম কাজকর্মও শুরু করেছেন দম্পতি।

সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা আগেই দেয়া হয়েছিল। ২০২০ সালের গোড়ার দিকে রানীর সঙ্গে তাদের বৈঠক হয়। রানী তাদের সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার জন্য এক বছর সময় দিয়েছিলেন। কিন্তু এক বছর পর দম্পতি তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকার সিদ্ধান্ত জানালে রানী এই চিঠিতে তার নির্দেশনা জানান।

বাকিংহ্যাম প্যালেস এক বিবৃতিতে বলেছে, ডিউক ও ডাচেস অব সাসেক্স রানীকে নিশ্চিত করেছেন যে, তারা রাজপরিবারের সদস্য হিসেবে আর ফিরে আসবেন না। রানী এই ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে চিঠিতে বলেছেন, তাদের পক্ষে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন যখন সম্ভব হবে না, তখন তাদের পদবি ও সম্মান প্রত্যাহার করে নেয়া হবে।

প্রিন্স হ্যারির বেশ কিছু সম্মানসূচক সামরিক খেতাব রয়েছে। পাশাপাশি তিনি কমনওয়েলথে নিয়োগ কর্মকর্তার দায়িত্বও পালন করছেন। এছাড়া বেশকিছু প্রতিষ্ঠানকে পৃষ্ঠপোষকতা করে থাকেন রাজপরিবারের পক্ষ থেকে। তার স্ত্রী মেগানও যুবরাজের স্ত্রী হওয়ার পর কিছু সম্মানসূচক দায়িত্ব ও পদবি পেয়েছেন।




খুলনায় ট্রাকচাপায় ২ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

খুলনা মহানগরীর রূপসা সেতুর বাইপাস সড়কে ট্রাকচাপায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নির্মাণাধীন নতুন কারাগারের অদূরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, রায়েরমহল বড় মসজিদ এলাকার মো, শহিদের ছেলে সাইফুল (৩৫) ও রায়েরমহল পশ্চিমপাড়া এলাকার মোল্লা শরিফুলের ছেলে মোল্লা নাঈম (২৬)। নিহত সাইফুল মোটরসাইকেল গ্যারেজের কর্মচারী ও নাঈম দিনমজুর ছিলেন।

হরিনটানা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক বলেন, রায়েরমহল এলাকা থেকে মোটরসাইকেলটি খুলনার জিরো পয়েন্টের দিকে যাচ্ছিল। নির্মাণাধীন কারাগারের অদূরে বাইপাস সড়কে মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয় যশোরগামী একটি ট্রাক। এতে ঘটনাস্থলেই দুই আরোহী নিহত হন।

তিনি বলেন, দুর্ঘটনার পর ট্রাকটি দ্রুত পালিয়ে যায়। এছাড়া মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।




ঢাকা-সিলেট ছয় লেন রাস্তার দরপত্র প্রক্রিয়া চলছে: পরিকল্পনামন্ত্রী

ঢাকা-সিলেট ছয় লেন রাস্তার জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক মূলত চার লেন নয়, দুটি সার্ভিস লেনসহ এটি ছয় লেন প্রকল্প। এই প্রকল্পের কাজ শিগগিরই শুরু হবে।

বৃহস্পতিবার মাদকদ্রব্য নেশা নিরোধ সংস্থা (মানস) সিলেট শাখার উদ্যোগে আলোচনা সভা ও সিলেট কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, উন্নয়ন কাজের মাধ্যমে বিগত ১২ বছরে সারাদেশের আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। সিলেটের উন্নয়ন নিয়ে মন্ত্রী বলেন, বহুল প্রত্যাশিত সিলেট-সুনামগঞ্জ রেল সংযোগ স্থাপন করা হবে। হাওরের মধ্য দিয়ে রেললাইন যাবে। প্রথমে সিলেট থেকে সুনামগঞ্জ ও পরে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ পর্যন্ত রেললাইন বাড়ানো হবে।

সিলেট প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে মানস কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. অরূপ রতন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং কাসমির রেজার পরিচালনায় বক্তব্য দেন সিলেট লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য বনমালী ভৌমিক, বাংলাদেশ বেতার সিলেটের পরিচালক জাহিদ হোসেন, প্রেস ক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ফজলুল হক, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক, জেলা কমিটির সভাপতি হেলাল আহমদ, দৈনিক জৈন্তা বার্তার সম্পাদাক ফারুক আহমদ, বিটিভির সিলেট জেলা প্রতনিধি মুক্তাদীর আহমদ মুক্তা, অমিতা বর্ধন, শাহনুর হোসেন প্রমুখ।