অতিবৃষ্টি, তীব্র জোয়ারে কমলনগর-রামগতি প্লাবিত
লক্ষ্মীপুর : নিন্মচাপের প্রভাবে অতিবৃষ্টি ও তীব্র জোয়ারে রামগতি ও কমলনগরের অন্তত ২০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে উপকূলীয় রাস্তাঘাট। পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে ৪ হাজার পরিবার। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৬ শতাধিক কাঁচা ঘর, আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে ২ শতাধিক পরিবার। তীব্র জোয়ারে মেঘনা জেগে উঠা চর আবদুল্লাহ থেকে ১৫০টি মহিষ নিখোঁজ হয়। ভেসে গেছে মাছের ঘের ও উপড়ে পড়েছে গাছপাল। এদিকে মেঘনা নদীর ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। কমলনগর মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধ পড়েছে মারাতœক হুমকির মুখে। ভাঙনের শিকার হয়েছে অন্তত ৫০টি পরিবার।
বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হয়ে শনিবার (২১ অক্টোবর) বিকাল পর্যন্ত টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে লক্ষ্মীপুরের উপকূলে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
অতিবৃষ্টি, ঝড় ও তীব্র জোয়ারে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাম ইউনিয়নগুলো হলো-রামগতি উপজেলার চর আলেকজান্ডার, চর আলগী, চর আবদুল্লাহ, চর রমিজ, বড়খেরী, চর গাজী। কমলনগর উপজেলার চর ফলকন, সাহেবেরহাট, চর কালকিনি, পাটারিরহাট, চর মার্টিন, চর লরেন্স, হাজিরহাট, চর কাদিরা ও তোরাবগঞ্জ ইউনিয়। এসব ইউনিয়নের মেঘনা পাড়ের প্রায় ৩০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
রামগতি উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল ওয়াহেদ জানান, অতিবৃষ্টি, ঝড় ও তীব্র জোয়ারে রামগতির উপকূলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার চর আলগী, চর আবদুল্লাহ, চর রমিজ, বেড় খেরী ও চর গাজী ইউনিয়নের প্রায় ৬শ’ কাঁচা ঘর-বাড়ির ক্ষতি হয়েছে। বসত ঘরের উপর গাছ চাপা পড়ে সুরাইয়া বেগম নামের এক নারী আহত হয়েছেন। চর আলগী ও রড়খেরী ইউনিয়নে প্রায় দুই শতাধিক পরিবার দুইটি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। চর আবদুল্লাহ থেকে তীব্র জোয়ারের প্রায় ১৫০টি মহিষ ভেসে গেছে। এর মধ্যে ১১টি মহিষ উদ্ধার করে বড় খেরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যানের জিম্মায় রাখা হয়। মাছ চাষিদের প্রায় শতাধিক মাছের ঘের জোয়ারে ভেসে গেছে। বেশ কিছু গাছ পালা উপড়ে পয়েছে। ডুবে গেছে ফসলের মাঠ ও সবজি খেত।
এদিকে,কমলনগরের ফলকন, কালকিনি, পাটারিরহাট ও সাহেবেরহাট ইউনিয়নে নদী ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। গত দুই দিনের ভাঙনে ৫০ পরিবার নিঃস্ব হয়েছে। বিলীন হয়েছে ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট। মারাতœক হুমকির মুখে পড়েছে নদী তীর রক্ষা বাঁধ। আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে কমলনগরবাসী। এ উপজেলাতেও জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে দুই হাজার পরিবার পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে।
কমলনগরে চরফলকন ইউনয়িন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাজী হারুনুর রশিদ, সাহেবেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল খায়ের, কালকিনি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাইফ উল্লাহ ও পাটারিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন রাজু বলেন, অতিবৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে ৪টি ইউনিয়নের সব কয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানি বন্ধি হয়েছে শত শত পরিবার।