পর্যবেক্ষক না পাঠালেও সহায়তা দেবে বিদেশিরা

ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষক কম থাকলেও নির্বাচন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক করতে তাদের সবধরনের সহায়তা থাকবে। দেশীয় পর্যবেক্ষকদের নানাভাবে বিদেশিরা সহায়তা দেবে।

জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিদেশি পর্যবেক্ষক টানতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তবে কমিশনের উদ্যোগের পরেও নানা কারণে বিদেশি   পর্যবেক্ষকরা খুব একটা সাড়া দেননি। আগামী নির্বাচনে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২০ সদস্যের একটি পর্যবেক্ষক দল আসছে। এছাড়া ঢাকার বিভিন্ন মিশনের কর্মকর্তারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। একইসঙ্গে বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে দেশীয় পর্যবেক্ষকদের সহায়তা দেওয়া হবে।

পর্যবেক্ষক পাঠাবে না জাতিসংঘ
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতিসংঘ কোনো পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক জানিয়েছেন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ না করলেও জাতিসংঘ বাংলাদেশকে নির্বাচনে সহায়তা করছে। জাতিসংঘ বাংলাদেশ সংসদ নির্বাচন প্রকল্পে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে।

জাতিসংঘের মুখপাত্র আরো বলেছেন, আমরা বিশ্বাস করি কোনো ধরনের দমন-পীড়ন ছাড়া ইতিবাচক পরিবেশে বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত।

নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ইউরোপীয় ইউনিয়ের ভূমিকা
জাতীয় নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বৃহৎ আকারে নির্বাচনী পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। তবে এ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে তারা দুজন বিশেষজ্ঞ পাঠিয়েছে। দুই বিশেষজ্ঞ হলেন—ডেভিড নোয়েল ওয়ার্ড ও ইরিনা মারিয়া গৌনারি। এ দুই প্রতিনিধি গত ২৭ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। তারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণও করছেন। পর্যবেক্ষণ শেষে তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেবেন। এ দুই পর্যবেক্ষক আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন আনুষ্ঠানিকভাবেই জানিয়েছে, বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে না। নির্বাচনের প্রক্রিয়া এমনকি পরবর্তী ফল নিয়েও তারা মন্তব্য করবে না।

নির্বাচন পর্যবেক্ষণে যুক্তরাষ্ট্রের ১২ দল
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১২টি দল আগামী জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে। বাংলাদেশে গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে দেশীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাকে সহযোগিতা করবে দেশটি। নির্বাচন উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র ১২টি পর্যবেক্ষক দলকে পাঠানোর প্রস্তুতি নিয়েছে। প্রতিটি দলে দু’জন করে সদস্য থাকবেন। তারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেশীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাকে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হবে।

পর্যবেক্ষণ নিয়ে চীনের অবস্থান
বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার চীন মনে করে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের যথেষ্ট সক্ষমতা বাংলাদেশের রয়েছে। এছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্ন হবে বলেও প্রত্যাশা করছে চীন।

বাংলাদেশে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চীন  পর্যবেক্ষক পাঠাবে কিনা জানতে চাইলে চীনা রাষ্ট্রদূত জ্যাং জু বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য বাংলাদেশের যথেষ্ট সক্ষমতা রয়েছে।

অন্যান্য দেশও পাশে থাকবে
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে নির্বাচনী সহায়তা দেওয়া হবে। বিভিন্ন দেশ তাদের নানা সীমাবদ্ধতায় পর্যবেক্ষক পাঠাতে না পারলেও দেশীয় পর্যবেক্ষক সংস্থাকেও সহায়তা দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সুইজারল্যান্ডসহ দেশীয় নানা দেশে পর্যবেক্ষকদের আর্থিক সহায়তা দেবে।

আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচন সামনে রেখে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকরা  নির্বাচন পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম শুরু করেছেন।




মিরাজ-মাশরাফিদের দাপটে ক্যারিবীয়দের সংগ্রহ ১৯৮

মিরাজ, সাকিব ও অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাদের দাপটে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৯৮ রানের সংগ্রহ পেয়েছে। যদিও টানা দ্বিতীয় ম্যাচে সেঞ্চুরি করে ক্যারিবীয়দের দায়িত্ব একাই কাঁধে তুলে নেন শাই হোপ।




ড. কামাল হোসেনের গাড়িবহরে হামলার অভিযোগ

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের গাড়িবহরে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ শুক্রবার মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বের হওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে।

সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনে আসেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন জাসদের আ স ম আবদুর রব, রেজা কিবরিয়া, বিএনপির নেতাদের মধ্যে ছিলেন আবদুস সালাম, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।

গণফোরামের মিডিয়া উইং কর্মকর্তা লতিফুল বারী হামিম বলেন, ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রবসহ গণফোরামের নেতারা ছিলেন। তাঁরা শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বের হওয়ার সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী আসলামুল হকের সমর্থকেরা তাঁদের গাড়িবহরে হামলা চালান। এতে কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। কামাল হোসেনের গাড়ি আগে বের হয়। তাঁর পেছনের গাড়িতেই ছিলেন আ স ম আবদুর রব। হামলার ঘটনায় আ স ম আবদুর রবের গাড়ির চালক আহত হয়েছেন।

লতিফুল বারী অভিযোগ করেন, গণফোরামের নেতা জগলুল হায়দারের গাড়িসহ আরও কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনা নিয়ে আজ বেলা তিনটায় ঐক্যফ্রন্টের অস্থায়ী কার্যালয় পুরানাপল্টনের জামান টাওয়ারে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন ড. কামাল হোসেন।

প্রত্যদর্শীরা জানান, বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের প্রধান ফটকে ড. কামাল হোসেনের গাড়ি রাখা ছিল। তিনি যখন গাড়িতে বসতে যাচ্ছেন, তখন অতর্কিতে ওই গাড়ির গ্লাস ভাঙচুর করা হয়। আশপাশে যাঁরা তাঁর সঙ্গে হেঁটে আসছিলেন, তাঁদের মারধর করা হয়। এ ঘটনায় কয়েকজন টিভি সাংবাদিক আহত হন।

‘চুপ করো, খামোশ’
জামায়াতের বিষয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন। শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ড. কামালের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকেরা তাঁর কাছে জানতে চান, ‘জামায়াতের তো রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন বাতিল হয়েছে, এখন জামায়াত সম্পর্কে আপনাদের সর্বশেষ অবস্থান কী?’

এ প্রশ্নে ক্ষিপ্ত হন কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘কত টাকা পেয়েছ, এই প্রশ্নগুলো করার জন্য? শহীদ মিনারে এসেছ, শহীদদের কথা চিন্তা করা উচিত। কোন চ্যানেল থেকে এসেছ? চিনে রাখব। চুপ করো, খামোশ!’

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে কামাল হোসেন বলেন, ‘আজকে বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আমরা শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এসেছি। লাখো শহীদ জীবন বিসর্জন দিয়েছেন, সেই স্বাধীনতাকে আমরা ধরে রাখি। অর্থপূর্ণ করি সকলের জন্য। এই স্বাধীনতা ব্যক্তিস্বার্থ নিয়ে আখের গোছাতে চাচ্ছে তাদের জন্য নয়, সব মানুষের প্রাপ্য।’ তিনি বলেন, ‘শোষণমুক্ত সুন্দর সমাজের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। স্বাধীনতার স্বপ্নকে বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে যারা কাজ করছে, লোভলালসা নিয়ে লুটপাট করছে, তাদের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করবই।’




শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুক্রবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ৭টার দিকে তারা সেখানে শ্রদ্ধা জানান। প্রথমে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি। এর পরপরই শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পর রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এসময় বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়। এরপর তারা যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের খোঁজ-খবর নেন।

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নের্তৃত্বে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা জানানো শেষে সর্বস্তরের মানুষ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। শ্রদ্ধা জানান শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্যরাও। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ছাড়াও রাজধানীর স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

১৪ ডিসেম্বর বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক বেদনাঘন দিন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল পরাক্রমের সামনে পরাজয় নিশ্চিত জেনে এক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে।

তারা বেছে বেছে দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, দার্শনিক ও সংস্কৃতিক্ষেত্রের অগ্রগণ্য মানুষকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। পাকিস্তানি ঘাতকদের এ বর্বর হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেছিল রাজাকার-আলবদর বাহিনী।

মহান মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের মাত্র দুই দিন আগে ১৪ ডিসেম্বর এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ ঘটিয়েছিল ঘাতকেরা। বিজয় অর্জনের পর রায়েরবাজারের পরিত্যক্ত ইটখোলা, মিরপুরসহ বিভিন্ন বধ্যভূমিতে একে একে পাওয়া যায় হাত-পা-চোখ বাঁধা দেশের খ্যাতিমান এই বুদ্ধিজীবীদের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ পৃথক বাণী দিয়েছেন।




এক আসনে লড়ছেন চার দলের প্রধান!

আসছে ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এরই মধ্যে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রতীক পাওয়ার পরপরই প্রচারণাও শুরু হয়ে গেছে। স্বতন্ত্রসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থীরা কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে করছেন গণসংযোগ।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের হেভিওয়েট নেতারা নির্বাচন করছেন দেশের বিভিন্ন আসন থেকে। তবে একটি আসনকে ঘিরে এবার দেশজুড়ে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। সেটি হচ্ছে ঢাকা-১৭ আসন।
এই আসনে এবার লড়ছেন চারটি রাজনৈতিক দলের প্রধান নেতা। তাদের মধ্যে দু’জন বর্তমান সংসদের সদস্য। অপর দু’জন সাবেক সংসদ সদস্য। আসন্ন নির্বাচনে সংসদে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় কে থাকবেন এগিয়ে তা নিয়ে চলছে নানা হিসাবনিকাশ।

এ চার প্রার্থী হলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ)-এর প্রধান এসএম আবুল কালাম আজাদ এবং তৃণমূল বিএনপির সভাপতি ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। এ চার ভিআইপি প্রার্থীর কারণে ঢাকা-১৭ আসন এখন গোটা দেশের দৃষ্টিতে।

তবে এ আসনে রয়েছে আরও ৬ প্রার্থী।

এ আসনে লড়ছেন নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুক, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের প্রার্থী এসএম আহসান হাবিব (মই), প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল প্রার্থী আলি হায়দার (বাঘ), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আমিনুল হক তালুকদার (হাতপাখা), বিকল্প ধারা বাংলাদেশের প্রার্থী লে. কর্নেল ডা. (অব.) একেএম সাইফুর রশিদ (কুলা), জাকের পার্টির প্রার্থী কাজী মো. রাশিদুল হাসান (গোলাপফুল) লড়ছেন ভোটের মাঠে।

উল্লেখ্য, ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রথমে নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে খালেদা জিয়া আসনটি ছেড়ে দিলে উপ-নির্বাচনে মেজর (অব.) কামরুল ইসলাম এমপি হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে এ আসনের এমপি নির্বাচিত হন জাপা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। আর সর্বশেষ ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিটে বিএনএফের আবুল কালাম আজাদ নির্বাচিত হন।




উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে নৌকায় ভোট চাইলেন মান্নান

লক্ষ্মীপুর: শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন স্বর্ণ যুগে প্রবেশ করেছে উল্লেখ করে মহাজোটের শরিক বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব ও লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি-কমলনগর) আসনে নৌকার প্রার্থী মেজর (অব.) আবদুল মান্নান বলেন, উন্নয়নের এ ধারা অব্যাগত রাখতে আবারও নৌকায় ভোট দিন।

মঙ্গলবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে কমলনগর উপজেলার ফজুমিয়ার হাট এলাকায় নির্বাচনী জনসংযোগের সময় তিনি এসব কথা বলেন।

বিকল্পধারা মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের উন্নয়নের পাশাপাশি মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের হাত ধরে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এ উন্নয়নের অব্যাহত রাখতে আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কা ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী করতে হবে।

মেঘনার ভাঙনকে রামগতি ও কমলনগরের দুঃখ উল্লেখ করে মেজর (অব.) মান্নান বলেন, নদী ভাঙন প্রতিরোধে সরকার কাজ করছে। নৌকার বিজয় হলে ভাঙন রোধে অবশিষ্ট কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।

এ সময় জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম ফারুক পিঙ্কু, সাধারণ সম্পাদক নূর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুজ্জাহের সাজু,  রামগতির সাবেক পৌর মেয়র আজাদ উদ্দিন চৌধুরী, কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একে এম নূরুল আমিন মাস্টারসহ বিকল্পধারার নেতারা উপস্থিত ছিলেন।




ভোটকেন্দ্র ছাড়বে না বিএনপি-ঐক্যফ্রন্ট: এ্যানী

লক্ষ্মীপুর:

‘আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় একাদশ জাতীয় নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্র ছাড়বে না বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সবার ভোটাধিকার রক্ষা করবে নেতা-কর্মীরা। কোনো অন্যায় হতে দেওয়া হবে না। যেখানে অন্যায়-অনিয়ম সেখানে প্রতিরোধ করা হবে।’

সোমবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসন থেকে ধানের শীষের প্রতীক পাওয়ার পর  শহরের গোডাউন রোড এলাকার বাসার সামনে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী।

সদর উপজেলা বিএনপি আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এ্যানী বলেন, আওয়ামী লীগ মনে করছে ভোটের আগে বিএনপি নেতাকর্মীদের মামলা-হামলা দিয়ে এলাকা ছাড়া করবে। কিন্তু মামলা-হামলা দিয়ে কোনো লাভ হবে না। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এখন জেলে। তবুও বিএনপি শেখ হাসিনার রক্তচক্ষুকে ভয় পায় না। তারা আমাদের ভয় পায়। আমাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে ভয় পায়। তারেক রহমান নির্বাচনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তার ও ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্বে আমরা এখন ঐক্যবদ্ধ। আর তাই আগামি ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত।

কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক আরও বলেন, অস্বাভাবিক পরিস্থিতি আমরা মোকাবেলা করছি। একটি ক্রান্তিকাল আমাদের সামনে নেমে এসেছে। এসব অতিক্রম করার জন্য আমরা জিয়ার সৈনিকরা মাঠে-ময়দানে প্রস্তুত রয়েছি। জিয়াউর রহমানের আদর্শ আমাদের মূল শক্তি। এ শক্তি দিয়েই আমরা ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করবো। তাই, নির্বাচনের দিন প্রতিটি কেন্দ্র পাহারা দিতে হবে। বিএনপি, ঐক্যফ্রন্ট ভোটকেন্দ্র ছেড়ে যাবে না।

সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাইন উদ্দিন চৌধুরী রিয়াজের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চুর সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন- বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা সৈয়দ মোহাম্মদ শামছুল আলম, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া ও পৌর বিএনপির সভাপতি মাহবুবুর রহমান লিটন প্রমুখ।




কে এই বিশ্ব সুন্দরী ভেনেসা?

সবাইকে তাক লাগিয়ে ২০১৮ সালের বিশ্ব সুন্দরীর মুকুট উঠেছে মেক্সিকান সুন্দরী ভেনেসা পনসে দে লিওনের মাথায়। শনিবার চীনের সায়না সিটিতে অনুষ্ঠিত আসরের ফাইনাল মঞ্চে এই বিশ্ব সুন্দরীর নাম ঘোষিত হয়। বিশ্বের ১১৮টি দেশের প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে ‘মিস ওয়ার্ল্ড-২০১৮’র মুকুট জিতে নেন ২৬ বছর বয়সী ভেনেসা।

মেক্সিকোর এই বিশ্ব সুন্দরীর জন্ম ১৯৯২ সালের ৭ মার্চ। দেশটির গুনজুয়াটোতে জন্মগ্রহণ করেন ভেনেসা। ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি দীর্ঘের এই সুন্দরী ছোটবেলা থেকেই শোবিজের সঙ্গে জড়িত। নিজের দেশে নানা রকম সুন্দরী ও মডেল প্রতিযোগতায় নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
ভেনেসা প্রথম কোন মেক্সিকান যিনি বিশ্ব সুন্দরীর মুকুট পড়লেন। এর আগে ২০১৫ সালের ৫ মে তিনি মিস মেক্সিকান খেতাব জেতেন। যেখানে তার প্রতিদ্বন্দ্বি ছিল ৩২ জন। ভেনেসা সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গেও জড়িত। তিনি নিনেমি নামক একটি স্কুলের সাথেও জড়িত, যা আদিবাসী গোত্রের শিশুদেরকে আন্তঃশিক্ষার শিক্ষা দেয়।

ভেনেসা গুয়ানজাজুটো বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিভাগে অধ্যায়ন করছেন। পাশাপাশি মেয়েদের জন্য একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রের পরিচালনা পর্ষদেরও সদস্য এই বিশ্ব সুন্দরী। মানবাধিকার কর্মের উপর তার একটি ডিপ্লোমাও আছে।

মেক্সিকোর এই বিশ্ব সুন্দরী ‘মাইগ্রান্টেস এন এল ক্যামিনো’ নামের একটি সংস্থার স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য। তিনি গাড়িও ভালো চালাতে পারেন। পাশাপাশি ভলিবল খেলা ও ছবি আকার শখ রয়েছে তাঁর।




নাজমুল হুদার মনোনয়ন বৈধ

ঢাকা-১৭ আসনে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার বাতিল হওয়া মনোনয়নপত্রের আপিল-নিষ্পত্তির শেষ দিন শুনানি নিয়ে এ সিদ্ধান্ত দেয় ইসি।

ঢাকা-১৭ আসনে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার বাতিল হওয়া মনোনয়নপত্রের আপিল-নিষ্পত্তির শেষ দিন শুনানি নিয়ে এ সিদ্ধান্ত দেয় ইসি।
নাজমুল হুদা আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র নিয়েছিলেন। যদিও পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশনে যে মনোনয়নপত্র তিনি দাখিল করেছেন, তাতে কোনো দলের নাম কিংবা স্বতন্ত্র প্রার্থী, কোনোটাই উল্লেখ করেননি। রিটার্নিং কর্মকর্তা এজন্যই তার মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করেন।

উল্লেখ্য, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মন্ত্রী নাজমুল হুদা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। পরে বিএনপি থেকে বেরিয়ে তিনি প্রথমে বিএনএফ গঠন করেন, ওই দলের কর্তৃত্ব হারানোর পর তিনি গঠন করেন তৃণমূল বিএনপি




শেখ হাসিনার খোলা চিঠি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজ দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে খোলা চিঠি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষ করে তিনি দলের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে যারা বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী হয়েছেন তাদের উদ্দেশে তিনি বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন।

চিঠিতে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘আপনার কাছে আমার বিশেষ অনুরোধ, ঐক্যবদ্ধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্বার্থে মহাজোট প্রার্থীর পক্ষে আপনার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে মহাজোটকে বিজয়ী করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করবেন। আপনার ত্যাগ, শ্রম ও আন্তরিকতা সবকিছুই আমার বিবেচনায় আছে।’
আজ শনিবার দুপুরে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ গণমাধ্যমে একটি বিজ্ঞপ্তি পাঠান। বিজ্ঞপ্তিতে দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার স্বাক্ষর দেওয়া একটি চিঠি রয়েছে। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে যারা প্রার্থী হন, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে তারা ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হিসেবে চিহ্নিত হন।
চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীদের বলেছেন, বিএনপি জামায়াতের হিংস্র থাবা থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করে বাংলাদেশকে টেকসই গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে আমরা সমমনা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। তিনি বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাদের প্রাণপ্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়লাভ করে আবারও বাংলাদেশের জনগণের সেবা করার সুযোগ পাবে। সেই বিজয়ের অংশীদার হবেন আপনিও। আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, আওয়ামী লীগ যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে, তাহলে নৌকা মার্কাকে পরাজিত করার সাংগঠনিক শক্তি আর কারও নেই।
‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আশা করি, আগামী নির্বাচনে আপনার নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগ ও মহাজোট মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে আপনার সকল সাংগঠনিক দক্ষতা, শক্তি ও সামর্থ্য আওয়ামী লীগের বিজয়কে সুনিশ্চিত করবে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশের গত এক দশকের অর্জিত উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে সংগঠনের একজন আদর্শবান, ত্যাগী ও বিশ্বস্ত নেতা হিসেবে সর্বস্তরের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা ও সার্বিক কর্মকাণ্ডে আপনার স্বতঃস্ফূর্ত ও সক্রিয় অংশগ্রহণ একান্তভাবে প্রত্যাশা করছি।