নির্বাচনে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে রাশিয়া, অভিযোগ মার্কিন গোয়েন্দাদের

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়াসহ ‘প্রতিপক্ষ’ দেশগুলো হস্তক্ষেপের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মার্কিন গোয়েন্দারা। মঙ্গলবার তারা বলেছে, ওই দেশগুলো নির্বাচন নিয়ে জনগণের আস্থা নষ্ট করতে চায়। খবর বিবিসির।

মার্কিন গোয়েন্দাদের দাবি, প্রতিপক্ষ দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নানাভাবে তৎপরতা চালাচ্ছে। এর মাধ্যমে প্রতিপক্ষ দেশগুলো আমেরিকানদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করতে চায়।

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালকের কার্যালয় ওডিএনআই এবং সাইবার ও অবকাঠামো নিরাপত্তা সংস্থা যৌথ বিবৃতিতে এই দাবি করে।

বিবৃতিতে বলা হয়, নির্বাচনী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উস্কে দিতে নানা তৎপরতা চালাচ্ছে রাশিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গোষ্ঠী। ভোট কারচুপির মিথ্যা দাবি তুলে সেসব প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। ভোট গ্রহণ শুরুর ঠিক আগে এমন অভিযোগ তুলল দেশটির অভ্যন্তরীণ এই তিন গোয়েন্দা সংস্থা।




আমি খুব আত্মবিশ্বাসী, ভোট দিয়ে বললেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন রিপাবলিকান মনোনীত প্রার্থী এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভোট দিয়ে তিনি বলেন, জয়ের ব্যাপারে আমি খুব আত্মবিশ্বাসী।

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় পাম বিচে ম্যান্ডেল রিক্রিয়েশন সেন্টারে ভোট দেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প। খবর বিবিসির।

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে  আমি খুব আত্মবিশ্বাসী। তার দাবি, এমনকি তার কাছাকাছি ভোটও কেউ পাবে না।

ট্রাম্প বলেন, আমি খুব আত্মবিশ্বাসী বোধ করছি। আমি শুনেছি, আমরা সব জায়গায় খুব ভালো করছি।

তিনি বলেন, তিনটি প্রচারণার মধ্যে এটি ছিল সেরা।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। ২৪ কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষ এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন রিপাবলিকান দলীয় প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প আর ডেমোক্র্যাট দলীয় কমালা হ্যারিসের মাঝে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে যাচ্ছে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কানেকটিকাট, নিউ জার্সি, নিউইয়র্ক, নিউ হ্যাম্পশায়ার এবং ভার্জিনিয়াসহ আট রাজ্যের ভোটকেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে স্থানীয় সময় সকাল ৬টায়। এছাড়া দেশটির ইনডিয়ানা ও কেন্টাকি অঙ্গরাজ্যেও সকাল ৬টায় ভোটকেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় কিছু রাজ্যে সকাল ৭টায় ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় নিউ হ্যাম্পশায়ার অঙ্গরাজ্যের ছোট্ট শহর ডিক্সভিল নচের একটি ভোটকেন্দ্রে মধ্যরাতে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী কমালা হ্যারিস ও রিপাবলিকান দলীয় ডোনাল্ড ট্রাম্প সমসংখ্যক ভোট পেয়েছেন।




কেউ কেউ দেশে বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে: ইশরাক হোসেন

কেউ কেউ দেশে বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। তিনি বলেন, কেউ কেউ দেশের মধ্যে বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। অতীতের মতো প্রয়োজনে আবারও রাজপথে নেমে অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান অব্যাহত থাকবে।

অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকার পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে এ কথা বলেন তিনি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন মঙ্গলবার নগর ভবনের নীচতলায় এ সভার আয়োজন করে।

সভায় বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেন, জাতীয় নির্বাচন থেকে শুরু করে স্থানীয় সব নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। নির্বাচনের নামে প্রহসন করে অযোগ্যদের চেয়ারে বসানো হয়। দীর্ঘ ১৬ বছরের লড়াই সংগ্রামের পর কাঙ্ক্ষিত সফলতা এসেছে। যার নেতৃত্বে ছিলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মহান মুক্তিযুদ্ধ আওয়ামী লীগ মিথ্যা ইতিহাস রচনা করতে চাইলেও তা সফল হয়নি।

ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, ২০২০ সালে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলাম। কিন্তু পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আত্মীয় তাপস তার গুন্ডাবাহিনী ও পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে ফলাফল ছিনতাই করে নিয়ে যায়। পরে ঢাকা শহরকে বসবাসের অযোগ্য হিসেবে গড়ে তোলে এই তাপস। আগামী দিনে বাসযোগ্য ঢাকা গড়তে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য যুদ্ধ করেছিলেন এ দেশের সূর্য সন্তানেরা। সাদেক হোসেন খোকা ছিলেন, তাদের মধ্যে অন্যতম গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু আওয়ামী লীগ দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে বাকশাল কায়েম করেছিল। দীর্ঘ ১৬ বছর গুম, খুন, নির্যাতনের মাধ্যমে বিরোধী মত দমন করে সেই পতিত আওয়ামী লীগ।

ইশরাক হোসেন বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ পালিয়ে গেছে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপির নেতা-কর্মী, সমর্থকরা এবার স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছে। আগামী দিনেও এই তরুণ প্রজন্ম যে কোন ফ্যাসিবাদকে রুখে দেবে।

সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনসহ বিএনপি ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।




রাজধানীতে সর্বোচ্চ ২৩৭ মামলায় আসামি হাসিনা

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পলায়নের মধ্য দিয়ে পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ ১৫ বছরের বেশি সময়ের কর্তৃত্ববাদী শাসনের। গতকাল মঙ্গলবার ঐতিহাসিক এ গণঅভ্যুত্থানের তিন মাস পূর্ণ হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা হয়েছে। তবে খোদ শেখ হাসিনাসহ তাঁর মন্ত্রিসভার প্রভাবশালী অনেক নেতা এখনও বিদেশে পলাতক থাকায় তাদের গ্রেপ্তার করা যায়নি। অনেকে আবার গ্রেপ্তার হয়ে এখন আছেন কারাগারে।

আদালত ও পুলিশ সূত্র জানায়, গত তিন মাসে হত্যা, গুম ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে রাজধানীতে মামলা হয়েছে ৩৪৫টি। এর মধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেই ২৩৭টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন  ৩৫৩ জন। মামলায় আন্দোলনের সময় নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। হুকুমদাতা, অর্থদাতা এবং পরিকল্পনাকারী হিসেবে আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকেও।

সাবেক মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে যত মামলা
শেখ হাসিনার পর সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে হয়েছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২২৭টি হত্যা মামলা। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৮০টি মামলায় আসামি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সড়ক ও যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ ছাড়া সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বিরুদ্ধে ৬৭টি, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের বিরুদ্ধে ৬৭টি, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের বিরুদ্ধে ৬০টি, সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাতের বিরুদ্ধে ৬৪টি, শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে ৪১টি, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের বিরুদ্ধে ৫৯টি, উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৩৭টি, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপসের বিরুদ্ধে ৫৩টি, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বিরুদ্ধে ২৯টি, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে ৩৫টি, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনির বিরুদ্ধে ২৫টি, শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার বিরুদ্ধে ২০টি, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে ২২টি, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের বিরুদ্ধে ২৭টি, সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের বিরুদ্ধে ১৬টি, সাবেক মন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিমের বিরুদ্ধে ১৫টি, সাবেক যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপনের বিরুদ্ধে ৭টি মামলা হয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যত মামলা
পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে সাবেক আইজি আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ১২৩টি হত্যা মামলা হয়েছে। এ ছাড়া হারুন অর রশীদের বিরুদ্ধে ১১৮টি, বিপ্লব কুমারের বিরুদ্ধে ১০৮টি, হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ৯৫টি, মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৩০টি, শহীদুল হকের বিরুদ্ধে ১১টি, বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ৭টি মামলা হয়েছে।




জাতি বিশ্বাস হারায় এমন কিছু করবেন না

অন্তর্বর্তী সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, জাতিকে অন্ধকারে রেখে আপনারা যা খুশি তাই করবেন, আমরা তো তা মেনে নিতে পারব না। সুতরাং জাতিকে ধোঁয়াশায় রাখবেন না। জাতি আপনাদের ওপর থেকে বিশ্বাস হারায়– এমন কিছু করবেন না।

দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন গত ১৬ বছরের বিনা ভোটের সরকারকে মানেনি, এখন এই সরকারকেও দীর্ঘদিন মানবে না। রাষ্ট্র সংস্কার করতে কতদিন লাগবে, কোনো ছলচাতুরী ছাড়াই তা স্পষ্ট করে অবিলম্বে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করার আহ্বান জানান তিনি।

গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ সাবুর ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম ও প্রজন্ম একাডেমির যৌথ উদ্যোগে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মির্জা আব্বাস বলেন, আজকে দেশের পরিস্থিতি ঘোলাটে। সামনে আরও ঘোলাটে হতে যাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, এই সরকার অবশ্যই জাতিকে একটা আশার আলো দেখাবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, নির্বাচনের কথা বললেই আপনারা বলেন, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আমরা উদ্গ্রীব হয়ে পড়েছি। এখন উল্টো আমরা যদি বলি, আপনারা নির্বাচনের কথা না বলে ক্ষমতায় থাকার জন্য পাগল হয়ে গেছেন?

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বেশি সময় থাকবে, না যথাসময়ে দায়িত্ব পালন করে চলে যাবে– বুঝতে পারছি না। আপনারা আমাদের সহযোগিতা চান কিনা, সেটাও বুঝতে পারছি না। দেশবাসীর প্রত্যাশা, সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে।

প্রজন্ম একাডেমির সভাপতি কালাম ফয়েজীর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।




আবারও বিয়ে করলেন সানি লিওন

বলিউড অভিনেত্রী সানি লিওন আবারও বিয়ে করলেন। তবে সানির জীবনে নতুন কোন পুরুষ আসেনি। স্বামী ড্যানিয়েল ওয়েবারের সঙ্গেই আবারও বিয়ের বন্ধনে নিজেকে বেঁধেছেন।

গত ৩১ অক্টোবর মালদ্বীপের সৈকতে সেজে উঠেছিল তাদের বিয়ে আসর। এদিন তারা সবাই সাদা পোশাকে সেজেছিলেন। সানি-ড্যানিয়েলের এই বিয়েতে তার পাশে ছিল তিন সন্তান নিশা, নোয়া ও আশের।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমসের প্রতিবেদন অনুসারে, সানি ও ড্যানিয়েল দুজনেই চাইছিলেন তাদের সন্তানরা একটু বড় হলে, নতুন করে বিয়ে করবেন। সন্তানদের বিয়ে সম্পর্কে গুরুত্ব বোঝানোর লক্ষ্যেই এমনটা করার ইচ্ছে ছিল দুজনের। সে কারণেই প্রথম বিয়ের ১৩ বছর পর বিয়ে করলেন সানি ও ড্যানিয়েল।




বাংলাদেশে ব্লগারের পোস্ট থেকে ক্ষোভের সৃষ্টি, মৃত্যুদন্ড দাবি

বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে, বিক্ষোভকারীরা প্রকাশ্যে একজন বিতর্কিত ব্লগার কামরান হোসেনের ছবি পোড়াচ্ছে, যার বিরুদ্ধে ইসলাম ও ধর্মীয় পন্ডিতদের সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। বিক্ষোভে জামায়াত-ই-ইসলামী, ছাত্রশিবিরসহ অন্যান্যরা অংশগ্রহণ করেছে, সবাই হোসেনের মৃত্যুর আহ্বান জানিয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন যে হুসেন তার ওয়েবসাইট www.search70.com -এ তার শৈশবে জামায়াত-ই-ইসলামীর সদস্য, তার কুরআন শিক্ষকের দ্বারা যৌন নির্যাতনের কথা বর্ণনা করেছেন। তার ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নির্যাতনের বিস্তারিত নিবন্ধ রয়েছে। প্রতিবাদকারীরা এমন নিবন্ধগুলির দ্বারা ক্ষুব্ধ হয় যেখানে হোসেন বলেন যে কুরআন স্পষ্টভাবে ছেলেদের যৌন নির্যাতন নিষিদ্ধ করে নি, যার ফলস্বরূপ ধর্মগুরুরা নির্দ্বিধায় ছেলেদের নির্যাতন করতে পারছেন। হোসেন এমনকি এ পর্যন্ত বলে যে নবী মুহাম্মদ আজ বেঁচে থাকলে আয়েশার সাথে তার বিবাহের জন্য শিশু ধর্ষক হিসাবে বিবেচিত হতেন।

 

 

এই দাবিগুলি উলামা এবং অন্যান্য ধর্মীয় নেতারা হোসেনের লেখাকে ধর্মনিন্দা বলে নিন্দা জানায়, কঠোর পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে।




চোখের নিচে কালি জমেছে? দূর করবেন যেভাবে

অনেকেরই চোখের নিচে কালি পড়ে। এতে মুখের সৌন্দর্য অনেকটা ম্লান হয়ে যায়। সাধারণত অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, মানসিক চাপ, ঠিক মতো ঘুম না হওয়া, দূষণ এসব কারণে চোখের তলায় কালি পড়ে। কেউ কেউ চোখের নিচের কালি দূর করতে নানা ধরনের দামি প্রসাধনী ব্যবহার করেন। এতে সাময়িক মুক্তি মিললেও আবারও একই সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে ঘরোয়া কিছু সমাধান ব্যবহার করতে পারেন।

কী করবেন 

চোখের নিচে আলুর রস তুলায় ভিজিয়ে ২০ মিনিট ধরে লাগিয়ে রাখতে পারেন। এতে ডার্ক সার্কল বা চোখের নিচে কালি কমবে।

আমন্ড তেল বা বাদাম তেল ১ মিনিট ধরে আলতোভাবে ম্যাসাজ করার পরে ১৫ মিনিট রেখে দিতে হবে। এরপর পরিষ্কার পানি দিয়ে চোখ ধুয়ে ফেলতে হবে।

ঠান্ডা দুধের প্রলেপ দিলেও অনেকসময় চোখের নিচের কালি দূর হয়। এছাড়াও ব্যবহার করতে পারেন পুদিনা পাতার রস।

শসা আর টমেটো চোখের নিচের কালি দূর করতে বেশ কার্যকর। শসা গোল করে কেটে চোখের উপরে লাগিয়ে রাখলে উপকার পাবেন।




শিল্পা শেঠির মেদহীন শরীর ও লাবণ্যময় ত্বকের গোপন রহস্য

লিউড অভিনেত্রী শিল্পা শেঠির বয়স প্রায় পঞ্চাশ ছুঁইছুঁই। তিনি দুই সন্তানের মা। বয়স কিংবা জীবনের চাপ তার চেহারা ও শরীরে প্রভাব ফেলতে পারেনি। তিনি ধরে রেখেছেন চেহারার লাবণ্য এবং মেদহীন শরীর। শিল্পার রূপলাবণ্য ও সৌন্দর্যের নেপথ্যে অনেকাংশ জুড়ে রয়েছে তার ডায়েট ও শরীরচর্চার অভ্যাস। তিনি নিয়ম করে যোগাসন, কার্ডিয়ো, ওয়েট ট্রেনিংয়ের পাশাপাশি খাওয়াদাওয়া নিয়ে অতিমাত্রায় সচেতন।

তিনি খুবই ভোজনরসিক। ফুচকা, চটপটি, রসগোল্লা সবই খান তিনি। শিল্পার মতে, ডায়েট করা মানে না খেয়ে থাকা নয়।

শিল্পার সকাল শুরু হয় ঈষদুষ্ণ জলে লেবুর রস পান করে। কাঠবাদাম দুধ, কলা, মধু ও ওটস দিয়ে বানানো বিশেষ এক রকম স্মুদিও থাকে তার সকালের নাশতায়। জলখাবার ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খেতে পছন্দ করেন শিল্পা। কড়া করে ব্রাউন ব্রেড সেঁকে তাতে মোটা করে সাদা মাখন লাগিয়ে বেশ ভালবাসেন তিনি। প্রায়শই তার জলখাবারে এই পদটি থাকে। তা ছাড়া দোসা, সবজি দিয়ে স্যান্ডউইচও খান তিনি।
দুধ খেতে ভালবাসেন শিল্পা। গরুর দুধ নয়, বেশি আয়রনের জন্য মহিষের দুধই পছন্দ তার। তবে শিল্পার পরামর্শ, শরীর বুঝেই তা খাওয়া উচিত। গ্যাস-অম্বলের সমস্যা বা বদহজমের সমস্যা না থাকলে মহিষের দুধ খাওয়া যেতেই পারে।

ভালোমন্দ খেলেও বাড়িতে তৈরি খাবার খেতেই পছন্দ করেন অভিনেত্রী। মাঝেমধ্যে কেক-পেস্ট্রি খেলেও, তা পরিমিত পরিমাণে খেতেই পছন্দ করেন তিনি। যারা ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য শিল্পার পরামর্শ, পছন্দের খাবার সপ্তাহে এক দিন খাওয়া যেতেই পারে, তবে তা খেতে হবে পরিমিত।

যতই ব্যস্ততা থাক, দুপুরের খাবার ১২টা থেকে ১টার মধ্যেই খেয়ে নেন শিল্পা। সবজি দিয়ে খিচুড়ি এক কাপ, একটি সেঁকা পাঁপড় আর সামান্য রসুনের আচার— তার খুব প্রিয়। শিল্পা বলছেন, সাদামাঠা ভাত, ডাল আর সবজি খেতেই পছন্দ করেন তিনি। রাজমা-চালের সঙ্গে মাখো মাখো পনির খেতে দ্বিধা করেন না তিনি।

সারা দিনে যা-ই খান না কেন, রাতের খাবার নিয়ে যথেষ্ট সচেতন শিল্পা। রাত ৮টার পর পানি ছাড়া আর কিছুই খান না। সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে সামান্য স্যুপ খান। এ অভিনেত্রীর পরামর্শ, ওজন কমাতে হলে রাত ৮টার পরে আর কিছুই খাওয়া যাবে না। ফল বা দুধও না। ওই সময় পাকস্থলীকে বিশ্রাম দিতে হবে। তা হলে সারা দিনের খাবার ভালোভাবে হজম হবে।




উত্তেজনা বাড়াতে চায় না ইরান-ইসরায়েল

ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় শহর ইস্পাহানের কাছে সামরিক ঘাঁটিতে ইসরায়েলি ড্রোন হামলার চেষ্টা মূলত প্রতিশোধের অংশ। কারণ, গত ১৩ এপ্রিল অন্তত ৩০০ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে নজিরবিহীন হামলা চালায় ইরান। ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া নিয়ে বিশ্বনেতারা শঙ্কিত হলেও শুক্রবারের এই হামলার চেষ্টায় সামরিক স্থাপনার কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। অন্যদিকে, নতুন করে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি তেহরান। যদিও ইরানের কর্মকর্তারা বলে আসছিলেন, ইসরায়েল হামলা চালালে এক সেকেন্ডের মধ্যেই কঠিন জবাব দেওয়া হবে। দুই দেশের কর্মকর্তাদের ভাষ্যেই পরিষ্কার, নতুন করে উত্তেজনা বাড়াতে চায় না ইরান ও ইসরায়েল। খবর নিউইয়র্ক টাইমসের

টেলিভিশনের সংবাদ ও উভয় দেশের কর্মকর্তারা শুক্রবারের ওই হামলাকে খুব একটা গুরুত্ব দেননি। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা হামলাকে উত্তেজনা বৃদ্ধি এড়াতে পরিকল্পিত একটি সীমিত জবাব হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

ইসরায়েলের মর্নিং নিউজ শোতে বিশ্লেষকরা বলেছেন, এই হামলায় ইরানের সামরিক স্থাপনাগুলোতে উল্লেখ করার মতো কোনো ক্ষতি করতে পেরেছে বলে মনে হচ্ছে না।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলা হয়, ইসফাহানে সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনা নিরাপদ রয়েছে। হামলার চেষ্টাকে ‘বড় কিছু নয়’ বলে উল্লেখ করা হচ্ছে খবরে।

এদিকে ইরানের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত কিছু ব্যক্তিসহ দেশটির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা ইসরায়েলের এমন হামলার চেষ্টাকে উপহাস করে চলেছেন। শুক্রবার ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কোনো এক মেয়ে বিশাল আবাসিক ভবনে কাগজের তৈরি বিমান ছুড়ে মারছে। এ সময় এটিকে ইসরায়েলি হামলার সঙ্গে তুলনা করছে সে। কাগজের ওই বিমান যখন ভবনে আঘাত করে, তখন সে হাসছে।

ইরানের কর্মকর্তারা বলেছেন, ইসফাহানের কাছে একটি সামরিক বিমানঘাঁটিতে হামলা হয়েছে। কিন্তু ইস্পাহানের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল সিয়াভাশ মিহানদুস্ত রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, শুক্রবার সেখানে হওয়া বিস্ফোরণ ইসরায়েলি হামলার কারণে নয়। বরং তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘উড়ন্ত বস্তু’ গুলি করে ভূপাতিত করায় ওই শব্দ হয়েছে।

ইসরায়েল প্রতীকী এ হামলার কথা প্রকাশ্যে স্বীকার না করলেও দেশটির কিছু লোক আনন্দ-উল্লাস করেছেন। তাদের মধ্যে ডানপন্থি দলগুলোর নির্বাচিত নেতারাও ছিলেন। লিকুদ পার্টির এমপি ট্যালি গোটলিভ এক্সের পোস্টে লিখেছেন, ‘একটি সকাল, যেখানে আমাদের মাথা গর্বিত। ইসরায়েল শক্তিশালী দেশ।’ তবে ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন নিজেই ইরানে কথিত ইসরায়েলি হামলাকে ‘দুর্বল’ বলে অভিহিত করে তাদের উচ্ছ্বাসে পানি ঢেলে দিয়েছেন।

দ্বন্দ্বের শুরু যেভাবে

নতুন করে হামলা-পাল্টা হামলা মূলত দুই দেশের পুরোনো বিরোধের কারণে। মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ইসরায়েলকে ‘ছোট শয়তান’ এবং যুক্তরাষ্ট্রকে ইরান ডাকে ‘বড় শয়তান’ বলে। ইসরায়েলের অভিযোগ, ইরান ‘সন্ত্রাসী’ গোষ্ঠীকে অর্থায়নের পাশাপাশি ইহুদি বিরোধিতাকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে তাদের বিরুদ্ধে হামলা চালায়।
ইরান ও ইসরায়েলের সম্পর্ক ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত বেশ সৌহার্দ্যপূর্ণ ছিল। তবে আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি ইসলামী বিপ্লবের মাধ্যমে দেশটির ক্ষমতায় আসার পর সম্পর্ক খারাপ হয়। শুরুর দিকে ফিলিস্তিনকে ভাগ করে ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র গঠনের বিরোধিতা করেছিল ইরান। কিন্তু মিসরের পর তেহরান আবার স্বীকৃতিও দেয়। সেই সময় মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান মিত্র ছিল ইরান।

১৯৭৯ সালে পরিস্থিতি পুরোপুরি বদলে যায়। খোমেনি বিপ্লবের মাধ্যমে ইসরায়েল ও পাশ্চাত্য সমর্থিত রাজবংশ উৎখাত করে ইরানে ইসলামী প্রজাতন্ত্র গঠন করেন।

এই নতুন সরকারের পরিচয়ের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র ইসরায়েলের সাম্রাজ্যবাদ প্রত্যাখ্যান করা। এরপর নতুন সরকার ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে, ইসরায়েলের নাগরিকদের পাসপোর্টের বৈধতা বাতিল ও তেহরানে ইসরায়েলি দূতাবাস দখল করে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) কাছে হস্তান্তর করে। ওই সময় পিএলও ইসরায়েলি সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নেতৃত্বে ছিল।