আগামী ১২ মে থেকে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইনে ভর্তির আবেদন নেয়া হবে। ৩০ জুনের মধ্যে ভর্তি শেষ করে ১ জুলাই শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু করা হবে। এবারও কলেজের সব আসনে মেধার ভিত্তিতে ভর্তি করা হবে। এবারের এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগেই সরকার একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সময়সূচি নির্ধারণ করেছে। তবে এবার ভর্তি কার্যক্রমে সরকারি খাতের ব্যয় বাড়ছে। আবেদন নিশ্চায়ন (রেজিস্ট্রেশন) ফি ১৮৫ টাকার পরিবর্তে ১৯৫ টাকা করা হচ্ছে। ভর্তিতে বিলম্বের ভর্তি ৫০ টাকার স্থলে ১শ’ এবং অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের (ইয়ারলস) ফি ১ টাকার পরিবর্তে দেড়শ’ টাকা দিতে হবে।
প্রতিষ্ঠানে ভর্তিসহ অন্যান্য ফি গত বছরের মতোই রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভর্তিকালে কলেজ-মাদরাসাগুলো কত টাকা নেবে তা আগেভাগেই নোটিশ দিয়ে ঘোষণা করতে হবে। প্রতারণা করে ঘোষণা ছাড়া ভর্তির পর অর্থ নিলে এবং এর অভিযোগ পাওয়া গেলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঢাকা বোর্ডের একজন কর্মকর্তা বলেন, বিগত প্রায় দেড় দশক আগে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিসহ অন্যান্য ফি নির্ধারণ করা হয়েছিল। ভর্তি সংক্রান্ত কাজে ব্যয় বেড়ে গেছে। এ কারণে ফি কিছুটা বাড়ানো হচ্ছে।
ভর্তি কার্যক্রম নিয়ে সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ভর্তি নীতিমালা চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে নেয়া প্রাথমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১২ মে একাদশ শ্রেণির ভর্তির আবেদন নেয়া শুরু হবে। এবারও তিনটি ধাপে নেয়া হবে আবেদন। অনলাইন ও মোবাইল ফোনে এসএমএস করে ভর্তির আবেদন করা যাবে। কলেজ পছন্দের ঝক্কি দূর করতে এবার প্রথম ধাপের আবেদনের ফল প্রকাশ না করা পর্যন্ত আবেদন তালিকায় কলেজের পছন্দক্রম রদবদল করতে পারবে।
ভর্তির জন্য কলেজ পাওয়ার পর শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চায়ন (রেজিস্ট্রেশন) করতে হবে। এর জন্য গত বছর ১৮৫ টাকা নেয়া হয়। এবার এর সঙ্গে আরও ১০ টাকা বাড়িয়ে ১৯৫ টাকা নেয়া হবে। ভর্তি বিলম্ব ফি ৫০ টাকার বদলে ১০০ টাকা দিতে হবে। পাঠ বিরতি বা ইয়ার লস শিক্ষার্থীদের ১০০ টাকার বদলে ১৫০ টাকা ফি নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
খসড়া নীতিমালায় গত বছরের মতোই অনলাইন এবং এসএমএসের মাধ্যমে ভর্তির কার্যক্রম পরিচালিত হবে। অনলাইনে সর্বনিম্ন ৫টি এবং সর্বোচ্চ ১০টি কলেজ বা মাদরাসায় আবেদন করা যাবে। এর জন্য নেয়া হবে ১৫০ টাকা।
মোবাইল ফোনে প্রতি এসএমএসে একটি করে কলেজে আবেদন করা যাবে। এর জন্য ১২০ টাকা দিতে হবে। তবে এসএমএস এবং অনলাইন মিলিয়ে কোনো শিক্ষার্থী ১০টির বেশি প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে পারবে না। এবারও ভর্তি কার্যক্রমে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)।
নীতিমালায় একাদশ শ্রেণিতে সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি মফস্বল/পৌর (উপজেলা) এলাকায় এক হাজার টাকা, পৌর (জেলা সদর) এলাকায় দুই হাজার টাকা, ঢাকা ছাড়া অন্যান্য সব মেট্রোপলিটন এলাকায় তিন হাজার টাকা ধার্য করা হয়েছে।
তবে মেট্রোপলিটন এলাকায় অবস্থিত এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে পাঁচ হাজার টাকার বেশি আদায় করা যাবে না। মেট্রোপলিটন এলাকায় অবস্থিত আংশিক এমপিওভুক্ত বা এমপিওবহির্ভূত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা হিসেবে শিক্ষার্থীদের ভর্তির সময় ভর্তি ফি, সেশন চার্জ ও উন্নয়ন ফিসহ বাংলা মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৯ হাজার টাকা এবং ইংরেজি ভার্সনে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ভুয়া ভর্তি ও নিশ্চায়ন বন্ধে একটি মোবাইল থেকে একটি আবেদন হবে যাতে অভিভাবক হিসেবে বাবা অথবা মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর যুক্ত করতে হবে।
এবার ভর্তির সব আসনই মেধার ভিত্তিতে পূরণ করা হবে। তবে বিভিন্ন কোটার মধ্যে আছে- মুক্তিযোদ্ধা-রাজধানীতে ৫ শতাংশ, বিভাগীয় ও জেলা সদরে ৩ শতাংশ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধস্তন সব দফতরে ২ শতাংশ, বিকেএসপিতে ০.৫ এবং প্রবাসী ০.৫ শতাংশ করা হবে। যদি এসব কোটায় উপযুক্ত প্রার্থী না পাওয়া যায় তবে এ আসনে অন্য কাউকে ভর্তি করা যাবে না।