বিয়ের পর মা একটি বিশেষ পান খাইয়েছিলেন ভারতের আওরঙ্গবাদের মোহাম্মদ সিদ্দিকীকে। এরপরই সেই পানের প্রেমে পড়েন সিদ্দিকী। এক পর্যায়ে এই বিশেষ পান বানিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। সময়ের পরিক্রমায় সেই পান ভারতে পরিচিতি পেয়েছে ‘ভায়াগ্রা’ ও ‘কোহিনুর’ এই দুটি নামে। এর দামও আকাশছোঁয়া। সিদ্দিকী একটি পান বিক্রি করতে দাম ৫ হাজার রুপি। বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ ৬ হাজার টাকারও বেশি।
৫০ বছর ধরে ওই দোকানটিতে পানের ব্যবসা করে আসছেন তিনি। আওরঙ্গাবাদে ওই পানের দোকানটির নাম ‘তারা পান সেন্টার’। তার দোকানের পানের মেন্যুতে রয়েছে প্রায় ৫১ ধরনের পান। এর মধ্যে নববিবাহিতদের জন্য আছে এক রকম পান।
একে বলা হয় স্টার পান। এই পানের কদর অনেক বেশি। এই পানটিই স্থানীয়ভাবে ‘ভারতের ভায়াগ্রা’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। তবে এ পানটি ‘কোহিনুর’ পান নামে সবচেয়ে বেশি পরিচিত।
এই দোকানে কোহিনুর পান বানানো হয় বিশেষ সব উপাদান মিশ্রিত করে। এর মধ্যে রয়েছে বিশেষ ধরনের কস্তুরি, যার প্রতি কিলোগ্রামের দাম ৭০ লাখ রুপি। মিশানো হয় জাফরান, যার প্রতি কেজির দাম ৭০ হাজার রুপি। মিশানো হয় গোলাপ, যার প্রতি কেজির দাম ৮০ হাজার রুপি। এ ছাড়া এই পানে মিশানো হয় বিশেষ তরল। তাতে আছে ভিন্ন মাত্রার সুঘ্রাণ। এ জিনিসটি শুধু পশ্চিমবঙ্গেই পাওয়া যায়।
এরপরে যে জিনিসটি মিশানো হয় সেটিই এই পানের বিশেষত্ব। কি সেই উপাদান সে বিষয়টি কর্তৃপক্ষ প্রকাশ করে না। ব্যবসায়িক স্বার্থে তারা এ বিষয়টি গোপন রেখেছেন। এমনকি ওই দোকানে যেসব কর্মচারী কাজ করেন তারা পর্যন্ত জানেন না কি সেই গোপন উপাদান। এ গোপন উপাদানটি সম্পর্কে জানেন শুধু দু’জন। একজন হলেন দোকানের মালিক মোহাম্মদ সিদ্দিকী ও তার মা।
সিদ্দিকীর মা-ই এই ব্যবসার মূলে। তিনিই তার ছেলে সিদ্দিকীকে গোপন রেসিপি দিয়েছেন। সেই রেসিপি অনুসরণ করে তারা এখন ভারতজোড়া খ্যাতি পেয়েছেন। এমনকি বিদেশি অনেক অতিথিও তাদের দোকানে ভিড় জমান।
বিশেষ করে ‘ভারতীয় ভায়াগ্রা’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়ায় নবদম্পতি এবং যারা যৌন জীবনে অসুখী তারা পর্যন্ত ছুটে যান ওই দোকানে।
সিদ্দিকী বলেন, আমি বিয়ের আগে এই পান বিক্রি করি নি। আমার বিয়ের পর মা আমাকে এই পান দিয়েছিলেন। তিনি আমাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন এটা আমার খাওয়া উচিত। তারপর যদি আমার পছন্দ হয় তাহলে আমাকে এটা বিক্রি করার জন্য বলেন। তারপর থেকেই এই পানের ভক্ত হয়ে যান সিদ্দিকী। তিনি এই পানকে তার দোকানের মেন্যুতে যুক্ত করেন। ফলে তার দোকানে প্রতিনিয়ত ভিড় লেগে থাকে কোহিনুর পানের জন্য। কিন্তু দামটা একটু বেশিই হয়ে যায়। তাই কম দামেও এটি বিক্রি করার একটি বিকল্প পন্থা আবিষ্কার করেছেন সিদ্দিকী। এর দাম রাখা হয় ৩০০০ রুপি।
তার দোকানের একজন কর্মচারী বলেন, ৩০০০ রুপির একটি পান যদি আপনি খান তাহলে তার প্রভাব থেকে যায় তিন দিন। এই তারা পান সেন্টারে পুরুষদের পাশাপাশি আছে নারীদের জন্য কোহিনুর পান। প্রতিদিন এই দোকান থেকে বিক্রি হয় ১ হাজার পান।