দুপুরের রোদ থেকে যেন বের হচ্ছিল আগুনের হলকা। এমন রোদে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে গায়ে ফোসকা পড়ার মতো অনুভূতি হচ্ছিল। রাজধানীতে গতকাল বুধবার আগের দিনের তুলনায় তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমলেও গরমের কষ্ট কমেনি। আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, বাতাসে আর্দ্রতা বা জলীয় বাষ্প বেড়ে যাওয়ায় গরমে অস্বস্তিকর অনুভূতি বেড়ে গেছে।
গতকাল দেশের বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৭ শতাংশ। এ কারণে দেশের প্রায় অর্ধেক এলাকাজুড়ে গরমের অস্বস্তিকর অনুভূতি টের পাওয়া গেছে।
আর্দ্রতা ৫০ শতাংশের বেশি হলে তা জলীয় বাষ্পসহ শরীরে ঘাম ও চটচটে গরমের কষ্ট তৈরি করে। আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, সাধারণত গ্রীষ্মের এই সময়টাতে বাতাসে আর্দ্রতা ২০ থেকে ৩০ শতাংশের মধ্যে থাকে। ফলে তাপমাত্রা বাড়লেও তা বৃক্ষ আচ্ছাদিত এলাকায় থাকা ব্যক্তিদের জন্য খুব কষ্টের হয় না। আজ বৃহস্পতিবার আর্দ্রতার পরিমাণ আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহিনুর ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দেশের অনেক এলাকাজুড়ে যে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তা আজ কিছুটা কমতে পারে। অনেক এলাকায় তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসতে পারে। কিন্তু আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় গরমের কষ্ট কমার সম্ভাবনা নেই। আগামী তিন-চার দিন এমন অবস্থা চলমান থাকতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, গতকাল দেশের সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৩৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজশাহী, পাবনা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়ার ওপর দিয়ে তীব্র এবং ঢাকা, রংপুর, বরিশাল, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আজও ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও দমকা হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও কালবৈশাখী হতে পারে।
গতি কমানোর নির্দেশনা
বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, চলমান গরমে দেশের রেললাইনগুলোতে তাপমাত্রা গিয়ে ঠেকছে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তারও বেশি। এতে কোথাও কোথাও লাইন বেঁকে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ জন্য কর্তৃপক্ষ স্থান ও রেললাইনের বয়স বিবেচনায় ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানোর নির্দেশনা দিয়েছে।