গাজীপুর মহানগরের হারবাইদ পূর্বপাড়া গ্রামে একটি বাড়ি নির্মাণ করছিলেন ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে পড়ুয়া ইমতিয়াজ উদ্দিন আহমেদ ইফতি। পড়াশোনায় ব্যস্ত থাকায় ইফতি তাঁর বাড়ি নির্মাণের দায়িত্ব দেন মামাকে। নির্মাণের মাঝপথে এসে ইফতির মামার কাছে চাঁদা দাবি করে দুর্বৃত্তরা। চাঁদা না পেয়ে ইফতিকে হত্যার পরিকল্পনা করে তারা। গ্রামের বাড়িতে রাতে ঘুমিয়ে ছিলেন ইফতি। এই সুযোগে তাঁকে গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ঘটনার ৫ বছর পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে উন্মোচন হয়েছে ইফতি হত্যারহস্য।
মঙ্গলবার বিকেলে পিবিআইয়ের গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, দীর্ঘ তদন্ত শেষে ইফতি হত্যার সঙ্গে জড়িত মৃদুল হাসান ও ফরিদ আহমেদ নামে দু’জনকে রোববার সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার করা হয়। গত সোমবার সন্ধ্যায় আদালতে হাজির করা হলে ইফতি হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
গাজীপুর মহানগরের পুবাইল থানার হারবাইদ পূর্বপাড়া গ্রামের শামসুদ্দিন আহমেদ মারা যাবার পর সংসারের দায়িত্ব পালন করছিলেন তাঁর ছেলে ইফতি। বাবার রেখে যাওয়া জমির ওপর একটি বাড়ি নির্মাণ শুরু করেন তিনি। নির্মাণকাজের দেখভাল করেন তাঁর মামা মিজানুর রহমান।
পিবিআই জানায়, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মৃদুল ও ফরিদ জানিয়েছে, ঘটনার কয়েকদিন আগে ইফতির মামার কাছে তারা চাঁদা দাবি করেছিল। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তারা হুমকি দিয়ে চলে যায়। এরই মধ্যে ঢাকা থেকে বাড়িতে এসে নির্মাণাধীন ভবনেই রাতে ঘুমিয়ে পড়েন ইফতি। ২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর রাতের কোনো এক সময় তারা ওই বাড়িতে গিয়ে ঘুমন্ত ইফতির গলায় ছুরি চালায়। মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা তাঁর মোবাইল সেট নিয়ে পালিয়ে যায়। পরদিন সকালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
নিহত ইফতির মামা মিজান অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে পুবাইল থানায় মামলা করেন। থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে রহস্য উদ্ঘাটন করতে না পারায় পুলিশ সদরদপ্তর থেকে পিবিআইকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। পিবিআই গোয়েন্দা তথ্য ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে জামালপুরের মেলান্দহ থানার উত্তর আদিপুত গ্রামের মৃত আলাউদ্দিনের ছেলে মৃদুল হাসান ও টঙ্গী পূর্ব থানাধীন শিলমুন মণ্ডলবাড়ী এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে ফরিদ আহমেদকে ঢাকা ও টঙ্গী থেকে গ্রেপ্তার করে।