নিজস্ব প্রতিনিধি :
লক্ষীপুরে উৎসবের আমেজে উজ্জিবিত হয়ে উঠেছে জেলা যুবলীগ। দীর্ঘ ২৪ বছর পর আগামী ২৩ নভেম্বর আয়োজিত সন্মেলনকে ঘিরে লক্ষ্মীপুর জেলা যুবলীগ বেশ উদ্যোমী এবং সক্রিয়। তবে সম্মেলনকে সফল করতে পোস্টার, ডিজিটাল ব্যানার টানানো হয়েছে শহরের প্রাণ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন স্থানে। সম্মেলন ঘিরে তৃণমূল নেতা কর্মীদের মাঝে বেশ চাঙ্গাভাব দেখা দিয়েছে। ব্যানার ও ফেস্টুন ছড়িয়ে পড়ছে পুরো জেলায়। এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একের পর এক ষ্ট্যাটাস দিয়ে নিজেদের পছন্দনীয় নেতার অবস্থান জানান দিচ্ছে তাদের অনুসারীরা।
তবে এখন পর্যন্ত সভাপতি পদে কোন প্রতিদ্বন্ধী প্রাথী না থাকায়, বর্তমান জেলা যুবলীগের আহব্বায়ক এ কে এম সালাহ্ উদ্দিন টিপুই আগামী দিনে সভাপতি হিসেবে মনোনীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে সভাপতি পদে প্রতিদ্বদন্ধি প্রার্থী না থাকলেও সাধারণ সম্পাদক পদে আসীন হতে অনেক নেতার নাম শোনা যাচ্ছে। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার-প্রচারণায় সরগরম। প্রার্থীরা সভাপতি ছাড়া অন্যান্য মূল পদ পেতে দলীয় হাই-কমান্ডের কাছে ধরনা দিচ্ছেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। তবে একাধিক নেতাকর্মী বিনা প্রতিদ্বন্ধীতায় সরাসরি এ কে এম সালাহ্ উদ্দিন টিপুকে জেলা যুবলীগের সভাপতি হিসেবে দেখতে চায়।
লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সম্মেলনের প্রধান অতিথি ও উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরী। প্রধান বক্তা থাকবেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ। এছাড়াও লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর আসন) সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শাহজাহান লাক্ষ্মীপুর-৪ মো:আব্দুল্লাহ আল মামুন, মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য, দক্ষিণ এশিয়ার বিখ্যাত কন্ঠশিল্পী সংরক্ষিত সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: শাহাজান, আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব হারুনুর রশিদ, আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব হারুনুর রশিদ, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও লক্ষ্মীপুর পৌর মেয়র আলহাজ্ব আবু তাহের, সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন, বিশেষ অতিথি হিসেবে সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। এ ছাড়াও কেন্দ্রীয় যুবলীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। সম্মেলন সফল করতে গত শনিবার দলীয় কার্যালয় বর্ধিত সভা করেছে জেলা যুবলীগ। সম্মেলনকে ঘিরে প্রতিদিনই হচ্ছে মিছিল-মিটিং ও সভা-সমাবেশ।
জেলার প্রতিটি ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, পৌরসভা ও উপজেলায় সম্মেলনের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নেতা-কর্মীদের দেখে মনে হচ্ছে জেলা যুবলীগের সম্মেলন তাদের জন্য বইছে যেন আনন্দের জোয়ার।
সম্মেলন সফল করতে রাত-দিন কাজ করছেন দলের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। দলীয় সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর জেলা যুবলীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ১৯৯৩ সালে। এর পর দীর্ঘ দুই যুগ কেটে গেলেও লক্ষ্মীপুর জেলা যুবলীগের কোন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নী। দীর্ঘ দিন সম্মেলন না হওয়ায় দলের নেতা-কর্মীরা সংগঠন বিমূখ হতে থাকেন।
পরে গত সাত বছর আগে ২০১১ সালে লক্ষ্মীপুর জেলা যুবলীগের নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। তাতে সৈয়দ আহম্মদকে আহবায়ক, এ কে এম সালাহ্উদ্দিন টিপু ও এ্যাডভোকেট রহমতউল্যা বিপ্লবকে যুগ্ম আহবায়ক করা হয়। তখনকার আহবায়ক কমিটি পেয়ে যেন প্রাণ ফিরে প্রায় যুবলীগের নেতা-কর্মীরা।
মূলত তখনকার কমিটির যুগ্ম আহবায়ক এ কে এম সালাহ্উদ্দিন টিপু দায়িত্ব পাওয়ার পরে দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে দল গোছাতে কাজ শুরু করেন। তাতে তিনি সফল হয়েছেন অনেকটা। তার নেতৃত্বে দলের নেতা-কর্মীরা উজ্জিবিত হয়ে উঠেন। তখন দলের নেতা-কর্মীরা টিপুর নেতৃত্বে দল ও সরকারের সকল কর্মসূচিতে স্বতঃপূর্ত ভাবে অংশ গ্রহণ করেন।
এছাড়া ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী নির্বাচনের আগে ও পরে যখন বিএনপি-জামায়াত লক্ষ্মীপুুুরে আন্দোলনের নামে গাছকেটে-রাস্তাকেটে মানুষের মনে ভীতি ছড়ানোর চেষ্টা করে, তখন প্রায় প্রতিদিন যুবলীগ নেতা এ কে এম সালাহ্উদ্দিন টিপুর নেতৃত্বে সরকারের পক্ষে সংগ্রাম করেছে যুবলীগের নেতা-কর্মীরা।
সরকার বিরোধী সকল অপকর্ম প্রতিহত করতে রাজপথে মিছিল, মিটিং করেছিল যুবলীগ। এর পরে ২০১৬ সালে জেলা যুবলীগের আগের কমিটি ভেঙ্গে আবার নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। আগের কমিটির যুগ্ম আহবায়ক লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ্উদ্দিন টিপুকে আহবায়ক, শেখ জামাল রিপন ও বায়জিদ ভূঁইয়াকে যুগ্ম আহবায়ক করা হয়।
তাতে আরেকবার নতুন করে প্রাণ ফিরে পায় যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। জেলা যুবলীগের মূল নেতৃত্বে আসার পরে এ কে এম সালাহ্উদ্দিন টিপু আবার দলকে নতুন করে গোছানোর কাজ শুরু করেন। তার হাতের ছোয়ায় যুবলীগ জেলায় একটি কর্মী বান্ধব, সু-সংগঠিত সংগঠনে পরিণত হয়। আন্দোলন-সংগ্রাম ও সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডে টিপুর নেতৃত্বে যুবলীগ আগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।
এরই মধ্যে যুবলীগের প্রতিটি ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, পৌরসভা ও উপজেলা কমিটি গঠন করা হয়েছে। সম্মেলন সফল করতে ও সম্মেলনে দলের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নেতা-কমীদের নিয়ে রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছেন জেলা যুবলীগের আহবায়ক এ কে এম সালাহ্উদ্দিন টিপু।
এদিকে সম্মেলনে কে হচ্ছেন নতুন সভাপতি ও সম্পাদক তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। এখন পর্যন্ত সভাপতি পদে একক প্রার্থী থাকায় প্রায় নিশ্চিত আগামী দিনে লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি হচ্ছেন, জেলা যুবলীগের বর্তমান আহবায়ক, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান, যুবলীগের নিবেদিত প্রাণ, হাজারও কর্মী গড়ার কারিগর, আন্দোলন-সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া এ কে এম সালাহ্উদ্দিন টিপু।
এছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদে একাদিক প্রার্থী থাকায় আগামী দিনে কে হচ্ছেন জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে সাধারণ সম্পাদক পদে যাদের নাম আলোচনায় রয়েছে তারা হলেন- জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক বায়েজিদ ভূঁইয়া, জেলা যুবলীগের সদস্য আবদুল্যা আল নোমান।
সম্মেলনের প্রস্তুতি সর্ম্পকে জানতে চাইলে জেলা যুবলীগের আহবায়ক এ কে এম সালাহ্উদ্দিন টিপু বলেন, যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর নির্দেশে সম্মেলন সফল করতে যুবলীগের সকল ইউনিটের নেতা-কর্মীদের ইতিমধ্যে দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সেই মতে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। আশা করি কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে ও হাজার-হাজার যুবলীগের নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণে একটি সফল সম্মেলন উপহার দিতে পারবো।