দীর্ঘদিন ধরে কৃষিতে বিপুল সম্ভাবনাময় লক্ষ্মীপুর জেলায় কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের ৭৮ কর্মকর্তাসহ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মিলিয়ে প্রায় শতাধিক পদ শূন্য রয়েছে। এতে উৎপাদন-সংশ্লিষ্ট পরামর্শ ও সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এখানকার কৃষকরা। লোকবলের অভাবে কৃষিসম্প্রসারণ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ব্যাহত হচ্ছে।
কৃষকদের কল্যাণ ও দেশের কৃষি-অর্থনীতি আরও গতিশীল করতে জরুরি ভিত্তিতে লক্ষ্মীপুর কৃষি বিভাগের জনবল বৃদ্ধি করা এখন সময়ের দাবি।
লক্ষ্মীপুর একটি উপকূলীয় জেলা। এখানকার আবহাওয়া ও মাটি কৃষি উপযোগী। এজেলার উর্বর মাটিতে সয়াবিন, ধান, নারিকেল, সুপারি, পান, বাদাম, মরিচ ও শাকসবজিসহ বিভিন্ন ফসলের বাম্পার ফলন হয়।
লক্ষ্মীপুর সয়াবিন উৎপাদনের জন্য খ্যাতি অর্জন করেছে। এই জেলাকে ‘সয়াবিনের রাজধানী’ বলা হয়। দেশের উৎপাদিত মোট ৭৫ ভাগ সয়াবিন লক্ষ্মীপুরেই উৎপাদিত হয়ে থাকে।এ কারণে সয়াবিনের সাথে মিল রেখে লক্ষ্মীপুরের অলিখিত ব্র্যান্ড নেম রাখা হয়েছে ‘সয়াল্যান্ড’।
লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ থেকে জানা গেছে, জেলায় রামগতি, রায়পুর, কমলনগর, রামগঞ্জ ও সদরসহ পাঁচ উপজেলায় মোট ৫৮টি ইউনিয়ন ও চারটি পৌর এলাকায় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার মোট ১৭৮টি পদ রয়েছে। অথচ এসব পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ১১৫ জন; বাকি ৬৩ জনের পদ শূন্য। প্রত্যেক উপজেলায় একজন করে সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তার পদ থাকলেও রামগঞ্জ ছাড়া বাকি চার উপজেলায় পদগুলো শূন্য। প্রতি উপজেলায় দুইজন করে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তার স্থলে রামগঞ্জে ও সদরে দুইজন আছেন, আটটি পদে জনবল নেই। জেলায় উপ-পরিচালক শস্য, উদ্ভিদ সংরক্ষণ ও উদ্যান এই তিন পদও খালি; কেউ নেই। এছাড়া, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির বেশি কয়েকটি পদ শূন্য রয়েছে।
চরাঞ্চলের প্রান্তিক কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের তারা কখনোই কাছে পান না।
অপরদিকে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের বক্তব্য হচ্ছে, তিনজনের স্থলে ইউনিয়নে মাত্র একজনকে সব দায়িত্ব পালন করতে হয়। তাই একাই তাকে এতো এতো কাজ সামাল দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়।
লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. বেলাল হোসেন খাঁন বলেন, জনবল সংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।