মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায়, টানা শৈত্যপ্রবাহে জবুথবু জনজীবন

image_pdfimage_print

পঞ্চগড়ে বইছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। এর মধ্যে আজ শনিবার সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এ মৌসুমে সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার মৌসুমের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল চুয়াডাঙ্গায়।

আজ সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৫ শতাংশ। এর আগে ৫ জানুয়ারি থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত পঞ্চগড়ে টানা চার দিন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। ৯ জানুয়ারি তাপমাত্রা আরও কমে শুরু হয় মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। এর পর থেকে আজ শনিবার পর্যন্ত তেঁতুলিয়ায় দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি থেকে ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করেছে। তবে প্রায় প্রতিদিনই সকাল সকাল রোদের দেখা মিলেছে।

আজ মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার দিনে সকালে সূর্য উঁকি দিয়েছে। তবে সঙ্গে ছিল উত্তরের হাড়কাঁপানো হিমেল হাওয়া। শীত উপেক্ষা করেই গরু নিয়ে হালচাষে নেমেছেন পঞ্চগড় সদর উপজেলার ডুডুমারী এলাকার কৃষক কবির হোসেন (৫৮)। আজ সকাল ৯টার দিকে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। শীতের প্রসঙ্গ তুলতেই কবির হোসেন বলেন, ‘রাতিত যে ঠান্ডা ছিল, ওইখান ঠান্ডা এলা (এখন) থাকিলে কাজ করা কঠিন হয়ে গেল হয় বাপু। ভাগ্য ভাল সকালে রোদ উঠিচে, কাজ-কাম করা যাছে, কিন্তু মাটির ঠান্ডায় পাওলা (পা) পটপট করেছে। কষ্ট হলে কী করিবেন! হামরা কৃষক মানসি (মানুষ), কাজ তো করিবায় নাগিবে।’

তীব্র এই শীতে কবির হোসেনের মতো নিম্ন আয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন। উত্তরের হিমেল বাতাসের সঙ্গে কুয়াশার দাপটে জবুথবু হয়ে পড়েছে জনজীবন। সকাল পৌনে ১০টার দিকে রিকশাচালক মো. নুরনবী বলেন, ‘প্রত্যেক দিন বিকাল হইলে যে একখান ঠান্ডা বাতাস আচ্চে, ওই বাতাসে খুব ঠান্ডা হচ্চে। বেশি রাইত পর্যন্ত রিকশা চালা যায় না। এইতানে (এ জন্য) সকালে রোদ দেখে বাইর হইচু। বিকাল হইতে হইতে বাড়ি যাবা নাগিবে (লাগবে)।’

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ প্রথম আলোকে বলেন, তেঁতুলিয়ায় বর্তমানে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাত পর্যন্ত শীত কিছুটা কম অনুভূত হয়েছিল। তবে আজ ভোর থেকেই হঠাৎ তাপমাত্রা কমতে থাকে। তবে সকাল সকাল রোদ ওঠায় মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে। আকাশ মেঘ ও কুয়াশামুক্ত থাকায় সূর্যের তাপ ভূপৃষ্ঠে ছড়াতে পারছে। এতে শৈত্যপ্রবাহ থাকলেও শীত তুলনামূলক কম অনুভূত হচ্ছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

bn_BDবাংলা