২০১৯ সালের এপ্রিলের বেতন থেকে বেশিকদের ১০% কর্তনের প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে । বিষয়টি অযৌক্তিক, অমানবিক এবং বেশিকদের সাথে প্রতারনা ছাড়া আর কিছুই নয়। ক•অবসর প্রাপ্ত শিক্ষকদের অবসর ভাতা সমাধানের জন্য এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানা যায়।তথ্য মন্ত্রনালয়ের সূত্রে জানা যায় বর্তমানে ২৪৩৫৩ টি অবসর ভাতার আবেদন জমা আছে।এসব আবেদন সমাধানে প্রয়োজন ১৭৫৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা।২০১৮- ২০১৯ বাজেটে এই সমস্যা সমাধানে অনুদান পাওয়া গেছে ৫৩২ কোটি টাকা।এফডিআর হিসেবে জমা আছে ১২৮ কোটি টাকা। এসটিডি হিসেবে জমা আছে ২১৬ কোটি টাকা মোট ৫৩২+১২৮+২১৬=৮৭৬ কোটি টাকা। এই টাকা দিয়ে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত অবসর ভাতার ফাইল সমাধান করা সম্ভব।অথচ সরকার এখনো ২০১৫ সালে পড়ে আছে।বাকী ৯০০০ আবেদন সমাধানে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের আরেকটি অনুদান পেলেই সমস্যা সমাধান।কিন্তু সরকার গত বাজেটের মত ২০১৯ – ২০২০ বাজেটে অর্থ বরাদ্দ দিয়ে যেখানে ১০% কর্তন বন্ধ করে সমস্যার সমাধান করবে, তা না করেই আগেই জোর পূর্বক ১০% কর্তনে তৎপর।বিষয়টি রহস্যজনক।
খ•সরকার ২০২১ সালের মধ্যেই দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে (মাথাপিছু আয় ২০০০ ডলার )এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত আয়ের দেশে(১০০০০ ডলার) পরিনত করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।এজন্য সরকার জনসংখ্যাকে জন সম্পদে পরিনত করার পরিকল্পনা নিয়েছে। প্রশ্ন হল কারা এই জনসংখ্যাকে জন সম্পদ বানাবে? নিশ্চয় শিক্ষক।তাহলে নতুন বাজেট আসতে ৩মাস বাকী।নতুন বাজেটে অবসর ভাতা সমস্যার সমাধান না করে কার স্বার্থে বর্তমানে ১০% কর্তন?
গ• প্রাইমারি স্কুলের পিয়নের চেয়ে এমপিওভুক্ত একজন শিক্ষকের বেতন কম,যা বেতন পান মাসের ২০দিন যেতে না যেতেই শেষ,বাকী ১০ দিন নুন আনতে পান্তা ফুরায় তাদের অবসর সমস্যার সমাধানে ৩ মাস পরবর্তী ২০১৯-২০ অর্থ বছরে সমাধান না করেই ১০% কর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়ে সাড়ে পাঁচ লাখ বেশিকদের সাথে প্রতারনা করছে।
ঘ• অন্যদিকে জানা যায়,৪% বাড়তি অর্থ কর্তন ঠেকাতে সরকারের বাড়তি অর্থের প্রয়োজন প্রায় ৩৬০ কোটি টাকা(তথ্য অর্থ মন্ত্রনালায়) ।২০১৮- ২০১৯ অর্থবছরের বাজেটে ৩৮২৬২ টি এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে ৫% ইনক্রিমেন্ট ও ২০% বৈশাখি ভাতার জন্য বরাদ্দ দিয়েছিল ৫০০ কোটি টাকা।খরচ হয়েছিল যথাক্রমে ৪০০ কোটি ৮৪ লাখ + ১৩৩ কোটি=৬০০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।১৪৫ কোটি টাকা সহজেই বাড়তি থাকার পরও সমাধান হয়েছিল।গত বাজেটে এত বিশাল সমস্যা সমাধান করা গেলে নতুন ৩ মাস পর বাজেটে ৩৬০ কোটি টাকার সমাধান করা যেত না? তা না করেই ১০% কর্তনের অন্যায় সিদ্ধান্ত।
ঙ•জাতীয় নির্বাচনের আগে ১০% কর্তন স্থগিত করা হয়।কারন প্রিসাইডিং,সহকারি প্রিসাইডিং, পোলিং অফিসারদের ৯০% বেশিক।এই শিক্ষকদের মাধ্যমেই সরকার আজ ক্ষমতায়।আর তাদের সাথেই নির্বাচনের আগে একরকম পরে আরেক রকম মনোভাব প্রতারনা নয় কী?
চ•দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার শতকরা ৮০% সফলতা এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সম্ভব হচ্ছে।যাদের হাতেই তৈরি হয়েছে এদেশের রাষ্ট্রপতি,প্রধানমন্ত্রী, আমলা- সচিব,সরকারের নীতি নির্ধারকরা আজ নীতি নির্ধারকদের সকল সুবিধা ঠিক রেখে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শিক্ষকদের প্রতি ২০১৮ -১৯ বাজেটে ৫% ইনক্রিমেন্ট দিয়ে ৪% কর্তন কোন যুক্তিতে।পরিশেষে প্রাচ্যের নতুন তারকা, বিশ্ব মানবতার বিবেক,বিরল মানবতাবাদী নেতা, বিশ্ব মানবতার আলোকবর্তিকা,নারী অধিকারের স্তম্ভ,মানবিক বিশ্বের প্রধান নেতা,জোয়ান অফ আর্ক,মাদার অফ হিউম্যানিটি,ক্যারিশম্যাটিক লিডার মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সমীপে আরজ ২০১৯-২০ অর্থ বাজেটে ৩৬০ কোটি বাড়তি বরাদ্দ দিয়ে ৪%বাড়তি কর্তন বাদ দিয়ে সাড়ে পাঁচ লাখ বেশিকদের প্রতি ন্যায় বিচার করুন।
ফিরোজ আলম,প্রভাষক ও বিভাগীয় প্রধান,আয়েশা (রা:) মহিলা কামিল( অনার্স,এম এ) মাদ্রাসা, লক্ষীপুর ও সাধারন সম্পাদক বিএমজিটিএ লক্ষীপুর জেলা শাখা।