আগামী ১০ অক্টোবর পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেদিন ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা স্টেশন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হবে। রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এ তথ্য জানিয়েছেন।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ, চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রেললাইন, খুলনা-মোংলা রেলপথ এবং বাংলাদেশের আখাউড়া থেকে ভারতের আগরতলা পর্যন্ত রেলপথ উদ্বোধন করা হবে। উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সময় চেয়ে সারসংক্ষেপ পাঠানোর কথা গত সপ্তাহে সমকালকে জানান রেল রেল সচিব ড. হুমায়ুন কবীর। রেলওয়ের মহাপরিচালক কামরুল আহসান সমকালকে বলেছেন, এখনও সারসংক্ষেপ ফেরত আসেনি।
চীনের ঋণে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকার কমলাপুর থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণ করা হচ্ছে। আগামী মাসে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার রেলপথ চালু হচ্ছে। প্রকল্প পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী বছর জুনে যশোর পর্যন্ত ট্রেন চলবে।
আগামী ৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেনের পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু হবে। চীন থেকে যে নতুন ১০০ বগি কেনা হচ্ছে, তার ছয়টি দিয়ে পরীক্ষামূলক যাত্রা হবে। তবে ট্রেনটি চলবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা ইঞ্জিনে। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করার সপ্তাহখানেক পর থেকে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে।
গত ৩১ আগস্ট চিঠি দিয়ে নতুন এই ট্রেন (রেক) চেয়েছে পদ্মা সেতু রেল সংযোগের প্রকল্প পরিচালক। প্রস্তাব অনুযায়ী, শুরুতে পদ্মা সেতুতে দিনে একটি ট্রেন চলতে পারে রাজবাড়ি পর্যন্ত। ভাঙ্গা-রাজশাহী রুটের ‘মধুমতি এক্সপ্রেস’ ঢাকা পর্যন্ত আনা হতে পারে পদ্মা সেতু হয়ে। ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত স্টেশন সংখ্যা ৯টি। তবে শুরুতে মাওয়া, জাজিরা ও শিবচর এই তিনটি স্টেশনে ট্রেন থামতে পারে। পুরো সংকেত ব্যবস্থা চালুর পর বাকি স্টেশনগুলো চালু হবে।
আগামী মাসে প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে যাচ্ছেন। সেই সময়ে দিল্লী থেকে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তিনি আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ উদ্বোধন করতে পারেন। রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দিনক্ষণ ঠিক হয়নি। তবে ১০ সেপ্টেম্বরের দুপুরের দিকে উদ্বোধনের সময় পাওয়া যোতে পারে।
প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণধানী চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত নির্মাণাধীন ১০০ কিলোমিটার রেলপথ অক্টোবরের শেষভাবে উদ্বোধনের জন্য সরকার প্রধানের সময় চাওয়া হয়েচে। এবারের বন্যায় রেলপথটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিভিন্ন অংশে রেল এমব্যাংকমেন্ট এবং পাথর ধুয়ে গেছে। তা মেরামত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান।
চার হাজার ২৬০ কোটি টাকায় মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে খুলনা পর্যন্ত রেললাইন অক্টোবরের প্রথমভাগে উদ্বোধনের সময় চেয়ে সারসংক্ষেপ পাঠনো হয়েছে। এক যুগ আগে অনুমোদিত এই প্রকল্প ভারতীয় ঋণে (এলওসি) বাস্তবায়ন করা হয়েছে।