মিয়ানমারের সাম্প্রতিক ইস্যু এখন রোহিঙ্গা নির্যাতন ও গণহত্যা। দেশটির আরকান রাজ্যে বসবাসরত মুসলিম রোহিঙ্গাদের উপর নির্মম নির্যাতন আর বিভৎস ঘটনার জন্ম দিচ্ছে সে দেশের সেনাবাহিনী।
বিষয়টি নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই চলছে প্রতিবাদ। এ নিয়ে দীর্ঘদিন নিশ্চুপ থাকালেও উল্টো সেনাবাহিনীকে সমর্থন করে বক্তব্য দেয়ায় দেশটির ক্ষমতাসীন দলের নেতা অং সান সু চি তীব্র সমালোচনার মুখে রয়েছেন। মানবাধিকারের কথা বলে ক্ষমতায় আসা সু চি কেন এখন মানবতাবিরোধী এমন একটি সরকারি কর্মকাণ্ডকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
তার বিরুদ্ধে দেশে দেশে বিক্ষোভ মিছিল, র্যালি হলেও সমালোচনা থেমে নেই তার ফেইসবুক পেইজে’ও। শান্তিতে নোবেল পাওয়া এই নেত্রীকে নিজের ফেসবুক পেজেই বিভিন্ন পোস্টে কটাক্ষ আর প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। অনেকেই তার নোবেল পুরস্কার কেড়ে নেয়ার দাবি করেছেন। তবে এসব কিছুকেই পাত্তা দিচ্ছেনা না তিনি। সম্প্রতি জাতিসংঘের অধিবেশনেও যোগ না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সু চি।
রবিবার সু চির ফেসবুক ভেরিফাইড পেইজে গিয়ে দেখা যায়, তার কভার ফটোতে নানা সমালোচনা, প্রতিবাদ আর কটাক্ষে ভরপুর। বিকালে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সু চি’র পেজের শুধু কাভার ফটোতেই মন্তব্য পড়েছে সাড়ে ১৭ হাজারের মতো, যার সিংহভাগই করা হয়েছে রোহিঙ্গাদের উপর সেনাবাহিনীর নিপীড়ন বন্ধের দাবি জানিয়ে। এছাড়া ছবিটি শেয়ার করেও অনেকে মন্তব্য করেছেন।
২০১৬ সালে ১৩ এপ্রিল পোস্ট করা কাভার ফটোতে দেখা যাচ্ছে সু চি শপথ নিচ্ছেন। ছবিটিতে মন্তব্যকারী সবাই যে রোহিঙ্গা ঢলে আক্রান্ত বা উদ্বিগ্ন বাংলাদেশি তা নয়। সবাই মুসলিমও নন। কিন্তু নির্যাতন বন্ধের ইস্যুতে তারা প্রায় সবাই-ই একমত।
এছাড়াও অনেকের বক্তব্য ছিল, তারা আগে অং সান সু চি’কে খুব পছন্দ করতেন। এমনকি মানবাধিকারের জন্য লড়াই করা গৃহবন্দী সু চি’কে ভালোও বাসতেন তারা। মানবতার পক্ষে লড়াইয়ের প্রতীক মনে করতেন। কিন্তু এখন সু চি তাদের কাছে ঘৃণিত একটি নাম।
এভাবে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা, বোঝানো, ধমকানো, তর্কবিতর্ক ছাড়াও রোহিঙ্গাদের বিপদমুক্তি এবং সু চি ও তার সরকারের শুভবুদ্ধির উদয়ের প্রার্থনা জানিয়েও কমেন্ট করেছেন বহু ফেসবুক ব্যবহারকারী।