ব্যক্তিগত সফরে গত ২৯ জুলাই সপরিবারে লন্ডন যান আনিসুল হক। আগস্টেই তার ফেরার কথা ছিল। কিন্তু তিনি আর ফেরেননি। সব মায়া কাটিয়ে সবাইকে ছেড়ে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা ২৩ মিনিটে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসযন্ত্র খুলে নিয়ে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
মেয়র আনিসুল হক সেরিব্রাল ভাসকুলাইটিসে (মস্তিষ্কের রক্তনালীর প্রদাহ) আক্রান্ত হয়েছিলেন। আগস্টে অসুস্থ হয়ে পড়ায় লন্ডনে একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। প্রথমে এই সমস্যা ধরা পড়েনি। হাসপাতালে ভর্তির আগে প্রায় দুই মাস মস্তিষ্কজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। রোগ ধরা পড়ার পর চিকিৎসকরা পুরোপুরি বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দেন। কথা বলতেও নিষেধ করেন।
তারপরও আশঙ্কামুক্ত ছিলেন। শিগগিরই দেশে ফিরবেন- এমন আশায় ছিল দেশবাসী। কিন্তু সে আশা আর পূরণ হয়নি।
সেরিব্রাল ভাসকুলাইটিস রোগটির আরেক নাম সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম ভাসকুলাইটিস। এটি খুবই জটিল এবং বিরল রোগ। মস্তিস্কের রক্তনালীতে সাধারণত এ ধরনের সমস্যা দেখা যায় না। এতে মস্তিষ্কের রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং রক্ত প্রবাহে বাধার সৃষ্টি হয়। মস্তিস্কে রক্তক্ষরণের মতো ভয়াবহ ঘটনাও ঘটতে পারে। অনেক সময়ই প্রাথমিকভাবে এ ভয়াবহ রোগটির তেমন কোনো উপসর্গ চোখে পড়ে না।
সেরিব্রাল ভাসকুলাইটিস রোগীদের মস্তিস্ক ছাড়াও সব সময় দুর্বল অনুভব করা, অনুভূতি লোপ পেতে থাকা, মাথা ব্যথা, স্কিন র্যাশ বা ত্বকে দানা বের হওয়া, জয়েন্ট পেইন, চলাফেরা করতে কষ্ট হওয়া, এমনকি আচরণগত সমস্যার মতো নানা নিউরোলজিক্যাল সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিভিন্ন রোগের জটিলতা হিসাবেও সেরিব্রাল ভাসকুলাইটিস হতে পারে এবং এটির ডায়ালাইসিসও বেশ দুরূহ।