ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় ইসফাহান শহরের একটি বিমানঘাঁটিতে ইসরাইলের চালানো হামলায় সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি স্যাটেলাইটে প্রকাশিত কিছু দৃশ্যে দেখা গেছে। রোববার (২১ এপ্রিল) সকাল পর্যন্ত সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় ধারণ করা হয় এসব দৃশ্য।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ভেরিফাই দুটি দৃশ্য বিশ্লেষণ করেছে। এতে দেখা যায়, হামলায় ইসফাহানের ওই বিমানঘাঁটির একটি প্রতিরক্ষাব্যবস্থার আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
চলতি মসের শুরুতে সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে হামলা চালায় ইসরাইল। হামলায় ইরানের কয়েকজন শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। ওই হামলার জবাবে গত ১৩ এপ্রিল রাতে ইসরাইলকে লক্ষ্য করে ৩০০ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি)।
পাল্টা জবাবে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ভোরে ইসরাইল ইরানের ইসফাহানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। তবে ইরান সরকার তা অস্বীকার করেছে। ইসরাইলের পক্ষ থেকেও আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে নিশ্চিত করা হয়নি।
মার্কিন এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবিসি নিউজকে বলেন, শুক্রবার ভোরে ইরান সীমান্তের বাইরে থেকে ইসরাইলি জঙ্গি বিমান তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।
নাম প্রকাশ না করে ইরানের কর্মকর্তাদের বরাতে নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়, বিমানঘাঁটিতে ওই হামলা ছাড়াও ইষফাহানের প্রায় ৫০০ মাইল উত্তরে তাবরিজ এলাকা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। তবে এ হামলা নস্যাৎ করা হয়েছে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে ইষফাহানে বিকট শব্দে একাধিক বিস্ফোরণ ঘটে। এ সময় আকাশে দেখা দেয় আলোর ঝলকানি। এ ঘটনার পর রাজধানী তেহরানসহ ইরানের পশ্চিমাঞ্চলের আকাশসীমা সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়।
এদিকে তেহরান ও তেল আবিব চলমান উত্তেজনার মধ্যেই ইসরাইলকে টিপ্পন্নী কেটে মন্তব্য করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির আবদুল্লাহিয়ান। এনবিসি নিউজের এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, শুক্রবারের হামলা ইরানের কাছে কোনো ঘটনাই নয়। ইসরাইল যে অস্ত্র ব্যবহার করে তা ইরানের শিশুদের কাছে খেলনার মতো।
মূলত ওই হামলায় যে ধরনের ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে তা নিয়েই উপহাস করেছেন ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ইসরাইলের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক প্রতিশোধ নেয়ার কোনো পরিকল্পনা তেহরানের নেই। তবে তাদের পরমাণবিক স্থাপনা ক্ষতির মুখে পড়লে তার চরম মূল্য দিতে হবে তেল আবিবকে।
আবদুল্লাহিয়ান আরও জানান, গত সপ্তাহে ইসরাইলকে লক্ষ্য করে চালানো হামলা ছিল কেবল একটা সতর্কতা মাত্র। ইরান চাইলে তাদের আল হাইফা, তেল আবিবের মত বড় শহরগুলোর পাশাপাশি বাণিজ্যিক বন্দরগুলো টার্গেট করতে পারত। কিন্তু বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেছে তারা।