ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষক কম থাকলেও নির্বাচন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক করতে তাদের সবধরনের সহায়তা থাকবে। দেশীয় পর্যবেক্ষকদের নানাভাবে বিদেশিরা সহায়তা দেবে।
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিদেশি পর্যবেক্ষক টানতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তবে কমিশনের উদ্যোগের পরেও নানা কারণে বিদেশি পর্যবেক্ষকরা খুব একটা সাড়া দেননি। আগামী নির্বাচনে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২০ সদস্যের একটি পর্যবেক্ষক দল আসছে। এছাড়া ঢাকার বিভিন্ন মিশনের কর্মকর্তারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। একইসঙ্গে বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে দেশীয় পর্যবেক্ষকদের সহায়তা দেওয়া হবে।
পর্যবেক্ষক পাঠাবে না জাতিসংঘ
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতিসংঘ কোনো পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক জানিয়েছেন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ না করলেও জাতিসংঘ বাংলাদেশকে নির্বাচনে সহায়তা করছে। জাতিসংঘ বাংলাদেশ সংসদ নির্বাচন প্রকল্পে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে।
জাতিসংঘের মুখপাত্র আরো বলেছেন, আমরা বিশ্বাস করি কোনো ধরনের দমন-পীড়ন ছাড়া ইতিবাচক পরিবেশে বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত।
নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ইউরোপীয় ইউনিয়ের ভূমিকা
জাতীয় নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বৃহৎ আকারে নির্বাচনী পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। তবে এ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে তারা দুজন বিশেষজ্ঞ পাঠিয়েছে। দুই বিশেষজ্ঞ হলেন—ডেভিড নোয়েল ওয়ার্ড ও ইরিনা মারিয়া গৌনারি। এ দুই প্রতিনিধি গত ২৭ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। তারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণও করছেন। পর্যবেক্ষণ শেষে তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেবেন। এ দুই পর্যবেক্ষক আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন আনুষ্ঠানিকভাবেই জানিয়েছে, বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে না। নির্বাচনের প্রক্রিয়া এমনকি পরবর্তী ফল নিয়েও তারা মন্তব্য করবে না।
নির্বাচন পর্যবেক্ষণে যুক্তরাষ্ট্রের ১২ দল
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১২টি দল আগামী জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে। বাংলাদেশে গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে দেশীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাকে সহযোগিতা করবে দেশটি। নির্বাচন উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র ১২টি পর্যবেক্ষক দলকে পাঠানোর প্রস্তুতি নিয়েছে। প্রতিটি দলে দু’জন করে সদস্য থাকবেন। তারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেশীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাকে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হবে।
পর্যবেক্ষণ নিয়ে চীনের অবস্থান
বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার চীন মনে করে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের যথেষ্ট সক্ষমতা বাংলাদেশের রয়েছে। এছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্ন হবে বলেও প্রত্যাশা করছে চীন।
বাংলাদেশে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চীন পর্যবেক্ষক পাঠাবে কিনা জানতে চাইলে চীনা রাষ্ট্রদূত জ্যাং জু বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য বাংলাদেশের যথেষ্ট সক্ষমতা রয়েছে।
অন্যান্য দেশও পাশে থাকবে
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে নির্বাচনী সহায়তা দেওয়া হবে। বিভিন্ন দেশ তাদের নানা সীমাবদ্ধতায় পর্যবেক্ষক পাঠাতে না পারলেও দেশীয় পর্যবেক্ষক সংস্থাকেও সহায়তা দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সুইজারল্যান্ডসহ দেশীয় নানা দেশে পর্যবেক্ষকদের আর্থিক সহায়তা দেবে।
আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচন সামনে রেখে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকরা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম শুরু করেছেন।